আমদানি ব্যয়ের চাপে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি বাড়ছে। ডলারের দামও লাগামহীন। এমন পরিস্থিতিতে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি কমাতে নতুন শর্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার (১০ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি’ বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে এখন থেকে গাড়ি ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সের পণ্য আমদানির বিপরীতে ঋণপত্র স্থাপনের (এলসি) নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ সংরক্ষণ করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য এলসির ক্ষেত্রে মার্জিন হার ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে আর্থিক খাতের এই নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। তবে শিশুখাদ্য, জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানির ঋণপত্র এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে।
আগে আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিনের হার নির্ধারণের নির্দেশনা ছিল। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে আমদানির চাপ বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত আমদানি চাপ কমাতে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল জরুরি পণ্য ছাড়া বিলাসী পণ্য আমদানিতে নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম ২৫ শতাংশ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু তাতেও আমদানি চাপ কমাতে না পারায় নতুন নির্দেশনা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোটর কার (সেডান কার, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল ইত্যাদি), হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, শিশুখাদ্য, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, উৎপাদনমুখী স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য সরাসরি আমদানি করা মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল, কৃষি খাত-সংশ্লিষ্ট পণ্য এবং সরকারি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য আমদানি করা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্যের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে হবে।
এ নির্দেশনা জারির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ এপ্রিলের নির্দেশনা রহিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।