জাপান সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে

বাংলাদেশ-জাইকা সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের অবকাঠামো ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে জাপান সব সময় পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে; এটি তাদের দৃঢ় প্রত্যয়। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়েও বাংলাদেশের পাশে আছে জাপান। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। জাইকার অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই দেশের নীতিনির্ধারকেরা এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কিচিরো নাকাজাওয়া, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওয়াকি ইতো, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর উত্তরাধিকার হিসেবে আমরা দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করেছি। বিদেশি ঋণসহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে জাপান অন্যতম একটি সহায়। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে এ সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকৃত অর্থেই চোখে পড়ার মতো। এ সময় অনেক রাস্তাঘাট হয়েছে। সেতু হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, যমুনা রেল সেতু—এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের চেহারা বদলে যাবে। তিনি বলেন, প্রাণভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে কিন্তু বিষয়টি এভাবে চলতে পারে না। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাপান।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অসাধারণ কিছু অর্জন আছে। সে অর্জনের সহযোগী হতে পারে জাপান কৃতজ্ঞ বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইউহো হায়াকাওয়া। তিনি বলেন, এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর মধ্যে জাপান ছিল প্রথম কাতারে। জাপান শুধু বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নেই নয়, শিক্ষা ও কৃষিতেও অবদান রেখেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিল জাপান। দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেবল অবকাঠামো উন্নয়নবিষয়ক নয়, এই সম্পর্ক দুই দেশের মানুষের মধ্যেও। জাপানের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আমূল বদলে যাবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।

ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে জাপানের অবদান অনস্বীকার্য। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দিয়েছে তারা। তাদের এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তাঁর আশাবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here