সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বর্তমানে স্মরণকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা সূচকে সম্প্রতি এ তথ্য উঠে আসে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জেরে বিগত কয়েক দশক ধরেই গোটা পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত তাপমাত্রার সিংহভাগ শোষণ করছে সাগর-মহাসাগরগুলো। যার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা। বছরের এই সময়ে সাধারণত যেই গড় তাপমাত্রা বিরাজ করে বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরিভাগের তাপমাত্রা তার চেয়ে অন্তত এক ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘ তিন বছর ধরে ‘লা নিনা’ বিরাজ করছে। লা নিনার মতো শীতল আবহাওয়া বিরাজ করা সত্ত্বেও তাপমাত্রার বৃদ্ধি উষ্ণায়ন পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। আশঙ্কা করা যাচ্ছে যে, চলতি বছরের শেষে প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো আবহাওয়া বিরাজ করলে গড় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
চার দশকের উষ্ণতা বৃদ্ধির ধরন পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ২০২২ সালে একটি গবেষণা প্রকাশ করে অ্যাডভান্সেস ইন অ্যাটমোস্ফরিক সায়েন্সেস। গবেষণায় দেখা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরের ২ হাজার মিটারে তাপমাত্রা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২২ সালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে এনওএএ এর সাম্প্রতিক তথ্য এটাই প্রমাণ করে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরিভাগে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন দ্রুত এবং ব্যাপক আকারে কমাতে না পারলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। তবে শিপিং খাত অনেক বেশি কার্বননির্ভর। সেসঙ্গে পরিবেশবান্ধব বিকল্প জ্বালানি ও প্রযুক্তি অপ্রতুল এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় দ্রুত অধিক মাত্রায় কার্বন ব্যবহার কমানো প্রায় অসম্ভব।