ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক, ভারতের বিধিনিষেধসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশের পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় আছে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে তেমনটাই দেখা গেছে। এ মাসে ৪৭৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল মঙ্গলবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মে ১১ মাসে মোট ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসের মধ্যে ৭ মাসেই ৪ বিলিয়ন তথা ৪০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়। আগস্টে ৪০৩ কোটি, অক্টোবরে ৪১৩ কোটি, নভেম্বরে ৪১২ কোটি, ডিসেম্বরে ৪৬৩ কোটি, জানুয়ারিতে ৪৪৪ কোটি, মার্চে ৪২৫ কোটি ও মে মাসে ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত মাসে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। অন্যদিকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, আসবাব ও বাইসাইকেল রপ্তানি কমেছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, মোট পণ্য রপ্তানির ৮২ দশমিক ৭২ শতাংশই তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। গত মে মাসে ৩৯২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের মে মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি।
চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের জুলাই-মে ১১ মাসে ৩ হাজার ৬৫৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৩ হাজার ৩১৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ১০৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। শুধু মে মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ১২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। গত বছরের মে মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৯ কোটি ২৭ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য।
এদিকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে রপ্তানি মে মাসে ৮ শতাংশ কমেছে। এ মাসে ৬ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়। অবশ্য চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৯৩ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানিতে গত মাসে ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৮২ কোটি ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৭৭ কোটি ডলারের পাট ও পাটপণ্য, ৪৯ কোটি ডলারের চামড়াবিহীন জুতা, ৫০ কোটি ডলারের প্রকৌশল পণ্য, ৪১ কোটি ডলারের হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি হয়েছে।