জ্বালানিতে সবুজ বিপ্লবে নজর

জলবায়ু পরিবর্তন এখন মানবজাতির জন্য বড় এক উদ্বেগের বিষয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী করে গড়ে তুলতে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। উষ্ণায়ন প্রতিরোধে অন্যান্য খাতের মতো সমুদ্র পরিবহন খাতেও নিঃসরণ কমানো সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি খাতসংশ্লিষ্টরা ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারছে। তাই তো পরিচ্ছন্ন নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর এখন সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে।

বড় হচ্ছে অফশোর ফার্মের বাজার

নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিশ্বজুড়ে গভীর সমুদ্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের প্রকল্পের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে কলেবর। টার্বাইনের আকার বড় হচ্ছে। সাগরের আরও গভীরে যাচ্ছে সাইটগুলো। ফাউন্ডেশনের আকারও দিন দিন বড় হচ্ছে। মোটকথা, এতদিন যেসব অফশোর উইন্ড প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে, নতুন প্রকল্পগুলো তার চেয়ে অনেক বড় পরিসরের হতে যাচ্ছে।

১৯৯১ সালে ডেনমার্কে প্রথম গভীর সমুদ্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প হিসেবে ৫ মেগাওয়াট ভিন্ডেবি উইন্ড ফার্মের যাত্রা হয়। এতে প্রতিটি ৪৫০ কিলোওয়াট সক্ষমতার ১১টি টার্বাইন স্থাপন করা হয়েছিল। ২০২০ সাল শেষে বিশ্বের ১৮ দেশে স্থাপিত অফশোর উইন্ড ফার্মগুলোর সম্মিলিত সক্ষমতা ছিল প্রায় ৩২ গিগাওয়াট। ২০৩০ সাল নাগাদ তা ২৩৫ গিগাওয়াটে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বটম-ফিক্সড ইনস্টলড ক্যাপাসিটি দাঁড়াতে পারে ২২৬ গিগাওয়াট।

ওয়েস্টউড গ্লোবাল এনার্জি গ্রুপের সাম্প্রতিক একটি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দেড় বছরে গভীর সমুদ্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত ২০১৯-২০ মেয়াদের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বাড়বে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে প্রায় ২০ দশমিক ৪ গিগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা যোগ হবে। এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উদীয়মান অফশোর উইন্ড মার্কেটগুলো।

ভিয়েতনামে বড় আকারের অফশোর উইন্ড প্রজেক্টের কাজ এরই মধ্যে চলমান। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ৩ দশমিক ৪ গিগাওয়াট থাং লং ও ৩ দশমিক ৫ গিগাওয়াট লা গ্যান অফশোর উইন্ড ফার্ম। দক্ষিণ কোরিয়ায় সম্প্রতি ৮ দশমিক ২ গিগাওয়াটের একটি প্রকল্পের ঘোষণা সম্প্রতি দেওয়া হয়েছে, যার কাজ শেষ হবে ২০৩০ সাল নাগাদ। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো।

উইন্ড ফার্মগুলোর কলেবর বাড়ার অর্থ এগুলো স্থাপনের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যাওয়া। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে উইন্ড টার্বাইন ইনস্টলেশন ভেসেলের (ডব্লিউটিআইভি) যে আন্তর্জাতিক বহর রয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই ২০২৫ সাল নাগাদ প্রযুক্তিগতভাবে অকার্যকর হয়ে পড়বে। তাহলে নতুন যে প্রকল্পগুলোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন হবে কীভাবে? তার জন্য নতুন ভেসেল তৈরি করতে হবে এবং বিদ্যমান জাহাজগুলোর সংস্কারের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

ওয়ার্ল্ড এনার্জি রিপোর্টস কর্তৃক প্রকাশিত সর্বশেষ ‘ইন্টারন্যাশনাল উইন্ড টার্বাইন অ্যান্ড ফাউন্ডেশন ইনস্টলেশন ভেসেল মার্কেট’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্ধিত চাহিদা পূরণে ৬০টির বেশি ডব্লিউটিআইভির প্রয়োজন হবে, যা প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান, জাহাজনির্মাতা, কনভারশন ইয়ার্ড, যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী, সেবা প্রদানকারী ও সমুদ্রসম্পদ খাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সম্ভাবনাময় বাজার তৈরি করেছে।

এতদিন উইন্ড ফার্মগুলোর ইনস্টলেশন চাহিদার বেশির ভাগ পূরণ করে এসেছে জ্বালানি তেল ও গ্যাস ফিল্ডগুলোর জন্য নকশাকৃত ডব্লিউটিআইভি ও হেভি লিফটগুলো। তবে এখন সময় এসেছে এই খাতের জন্য উপযোগী উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ভেসেল ও হেভি লিফট নির্মাণের।

কপ২৬ সম্মেলনে সামুদ্রিক জলবায়ুর সুরক্ষার পালে হাওয়া

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন (কপ২৬) শেষের চুক্তিতে সামুদ্রিক জলবায়ুকে আনুষ্ঠানিকভাবে কৌশলগত কর্মসূচির জন্য বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সামুদ্রিক পরিবেশবাদীরা বলছেন, সমুদ্র খাতে পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে এটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

কপ২৬ সম্মেলন শেষে গ্লাসগো ক্লাইমেট প্যাক্ট গ্রহণ করা হয়, যেখানে ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) অধীনে সাগরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে সামুদ্রিক জলবায়ুও এই ফ্রেমওয়ার্কের জন্য বিবেচিত হবে। এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে জাতিসংঘের সব কর্মীবাহিনী ও অংশীজন সংস্থাকে সামুদ্রিক জলবায়ুর সমন্বিত ও টেকসই সুরক্ষায় অবদান রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

চুক্তিতে সাগরকেন্দ্রিক পদক্ষেপকে আরও জোরালো করার জন্য বার্ষিক সংলাপ আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে প্রতি বছরের মে/জুন মাসে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এই সংলাপের ফলাফল বছর শেষের জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

এবারের জলবায়ু সম্মেলনে ‘বিকজ দ্য ওশান’ ডিক্লারেশনের তৃতীয় কিস্তিতে ২০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই ডিক্লারেশনের মূল প্রতিপাদ্য হলো প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে সাগর, জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের মধ্যে সংযোগ আরও সমুন্নত করা।

লক্ষ্য কার্বন নিরপেক্ষ শিপিং খাত

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নেতৃত্বে বৈশ্বিক শিপিং খাতে চলছে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জোর প্রচেষ্টা। আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন খাতে নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা প্রাথমিক প্রস্তাবনার দ্বিগুণ করা হচ্ছে। আইএমওর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল নিঃসরণের মাত্রা ২০৫০ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশ কমানোর। তবে এখন এই লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৫০ শতাংশের পরিবর্তে শতভাগ নিঃসরণ কমানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রবাণিজ্যে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য আইএমওর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ২০০৫ সালের অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রার ঘোষণা দেন। গত বছরের ২২ এপ্রিল বিশ^ ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক কনফারেন্সে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর আগে ২০৩৫ সাল নাগাদ কার্বনমুক্ত শক্তি খাত গড়ে তোলার পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এই যে নিঃসরণ কমানোর বাড়তি প্রচেষ্টা, তার জন্য চাই গবেষণা ও উন্নয়নে বাড়তি বিনিয়োগ। এ কারণে খাতটিতে ৫০০ কোটি ডলার তহবিল বরাদ্দ চায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিপিং সংগঠনগুলো। আর এই অর্থের সংস্থানের পথও বাতলে দিয়েছে তারা। সেটি হলো কার্বন কর আরোপ।

এই দাবিকে খুব একটা হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ যেসব শিপিং সংগঠন এই প্রস্তাব দিয়েছে, তারা সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক সমুদ্র বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশির প্রতিনিধিত্ব করে। এদের মধ্যে রয়েছে বাল্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল (বিমকো), ক্রুজ লাইনস ইন্টারন্যাশনালঅ্যাসোসিয়েশন, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং ও ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিল।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কার্বন শুল্ক আরোপের মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন সম্ভব তো হবেই না, বরং নিঃসরণ আরও বেড়ে যাবে। জীবাশ্ম জ¦ালানি থেকে পরিবেশবান্ধব জ¦ালানি ব্যবস্থায় রূপান্তর প্রক্রিয়াটি বেশ ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই এতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। ফলে কার্বন শুল্ক আরোপের মতো কঠোর অবস্থানে না গেলে রূপান্তর প্রক্রিয়াটি গতি পাবে না।

আর্কটিক অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনে অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্ল্যাক কার্বন। তুলনামূলক ভারী এই দূষক পদার্থ বাতাসে না মিশে বরফের আস্তরণের ওপর পড়ে যায়। এটি সূর্যের তাপ দ্রুত শোষণ করে। ফলে এর সংস্পর্শে আসা বরফও দ্রুত গলে যায়।

তবে আশার কথা হলো, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই ব্ল্যাক কার্বন নিঃসরণ প্রতিরোধের ওপর বেশ জোর দিয়েছে। আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৭৭তম বৈঠকে আর্কটিক অঞ্চলে ব্ল্যাক কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে নতুন একটি পদক্ষেপ অনুমোদিত হয়েছে।

কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১১টি দেশ আর্কটিক অঞ্চলে চলাচলকারী জাহাজগুলোয় পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ঐচ্ছিক ও অবাধ্যতামূলক ব্যবহারের আহ্বান জানায়। এমইপিসির বৈঠকে এই প্রস্তাব ২৭টি সদস্যরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়েছে।

সমুদ্র পরিবহনের ফলে জলবায়ুর ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তার প্রায় ২০ শতাংশের জন্য দায়ী ব্ল্যাক কার্বন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আর্কটিক অঞ্চলে জাহাজ চলাচল যেমন বেড়েছে, তেমনই বেড়েছে ব্ল্যাক কার্বন নিঃসরণের হার। ২০১৫ থেকে ২০১৯Ñএই সময়ের মধ্যে সেখানে ব্ল্যাক কার্বন নিঃসরণের মাত্রা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

বিকল্প জ্বালানি হিসেবে অ্যামোনিয়ার ব্যবহার নিয়ে গবেষণা

আইএমওর নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছে সবাই। আর অল্টারনেটিভ মেরিন ফুয়েল হিসেবে অ্যামোনিয়ার নাম রয়েছে প্রথম সারিতেই। অ্যামোনিয়া জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলো থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে গবেষণা চালাবে জ্বালানি, মাইনিং, পাওয়ার ইউটিলিটি, কেমিক্যাল, টার্মিনাল, শিপিং, জাহাজ নির্মাণ, ম্যানুফ্যাকচারিং, বাংকারিং ও ক্লাসিফিকেশন খাতের মোট ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি গ্রুপ। এরই মধ্যে তারা একটি ফ্রেমওয়ার্কও তৈরি করে ফেলেছে।

বিকল্প জ্বালানি হিসেবে অ্যামোনিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রশ্ন সামনে চলে আসে। যেমনÑএটি ব্যবহারের ফলে জাহাজের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কিনা, অ্যামোনিয়া বাংকারিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কোনো ইস্যু রয়েছে কিনা, অ্যামোনিয়া উৎপাদনের সময় কী পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয় ইত্যাদি। মূলত এসব প্রশ্নের উত্তর জানতেই যৌথ গবেষণা পরিচালনা করবে গ্রুপটি।

পরিবেশবান্ধব বন্দর প্রকল্পে ইইউর তহবিল সহায়তা

শিপিং খাতসংশ্লিষ্ট ৪৫টি কোম্পানি, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি আন্তর্জাতিক জোট গত বছর একটি নতুন প্রকল্পে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তরফ থেকে তহবিল সহায়তা পেয়েছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বন্দর পরিচালনা কার্যক্রমকে আরও পরিবেশবান্ধব করা।

ইইউর ইউরোপিয়ান হরাইজন ২০২০ কর্মসূচি থেকে গবেষণা সহায়তা হিসেবে ৩ কোটি ডলার তহবিল বরাদ্দ পেয়েছে পাইওনিয়ারস নামে পরিচিতি পাওয়া এ প্রকল্প। পাঁচ বছরের প্রচেষ্টার ফসল এই প্রকল্প। ইইউর কাছ থেকে পাওয়া সহায়তা দিয়ে জোটটি বেশ কয়েকটি পাইলট ও ডেমোনস্ট্রেশন প্রকল্পের কাজ করবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির উৎপাদন ও সরবরাহ, টেকসই বন্দর নকশা প্রণয়ন, মোডাল শিফট, অপটিমাইজেশন অব ফ্লোজ, ডিজিটাল রূপান্তর ইত্যাদি।

কনসোর্টিয়ামের নেতৃত্বে রয়েছে পোর্ট অব রটারডাম কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটির ঘোষণায় তারা বলেছে, বর্তমানে বেশকিছু নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শক্তির উৎস নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রিন হাইড্রোজেন, বৃহদাকার ইলেকট্রিক ব্যাটারি, অ্যামোনিয়া, বায়ো-এলএনজি ইত্যাদি। এগুলোর প্রত্যেকটিরই সুবিধার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পোর্ট অব রটারডাম কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রকল্পের অংশীজনরা এখন জ্বালানি রূপান্তরের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন সলিউশন নিয়ে গবেষণা ও বাস্তবায়নে কাজ করবে।

বাল্টিকে পরিবেশবান্ধব বাংকার হাব প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব

বাল্টিক অঞ্চলে একটি গ্রিন বাংকার হাব প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম। এই হাবে জাহাজগুলো পরিবেশবান্ধব জ্বালানি রিফুয়েল করতে পারবে। এই কনসোর্টিয়ামে রয়েছে ওরস্টেড, মোলসলিনজেন, হ্যালডর টপসো, বাংকার হোল্ডিং গ্রুপ, ওয়ার্টসিলা, র‌্যামবোল, ব্যুরো ভেরিতাস ও পোর্ট অব রনে।

এর আগে ডেনিশ সরকার বাল্টিক সাগরের মাঝবরাবর অবস্থিত বর্নহোম আইল্যান্ডে এ অঞ্চলের জন্য একটি হাব গঠনের সুপারিশ করেছিল। টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থা গড়ে তোলার যে মহাপরিকল্পনা দেশটির রয়েছে, তারই অংশ হিসেবে এ সুপারিশ করা হয়। ডেনিশ সরকারের সেই সুপারিশের ধারাবাহিকতাতেই কনসোর্টিয়ামটি এই হাব তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে। তারা বর্নহোমে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি রিফুয়েলিংয়ের জন্য একটি বাংকারিং স্টেশন স্থাপনের কী কী সুযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here