আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় একটি নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে পুনরায় আলোচনায় বসেছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো। গতকাল (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ইন্টারগভর্নমেন্টাল কনফারেন্সের পঞ্চম সেশন। চলবে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত। এই কনফারেন্সে সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ‘হাই সিজ ট্রিটি’ নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসবেন।
গত এক দশক ধরেই হাই সিজ হিসেবে পরিচিত আন্তর্জাতিক জলসীমার সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা চলে আসছে। সর্বশেষ গত মার্চে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে এ বিষয়ে চতুর্থ দফার আলোচনা হয়, যেখানে অভিন্ন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে খানিকটা অগ্রগতি অর্জন হয়েছিল। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য ও আন্তরিকতা দেখা গিয়েছিল, যা আগের বৈঠকগুলোয় দৃশ্যমান ছিল না। মার্চের বৈঠকেই প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের অধীনে একটি কার্যকর হাই সিজ ট্রিটি প্রণয়নের বিষয়ে আশার আলো দেখা যায়। এবারের বৈঠকে সেই অগ্রগতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বের সাগর-মহাসাগরগুলোর দুই-তৃতীয়াংশ আন্তর্জাতিক জলসীমার অন্তর্ভুক্ত। জাতিসংঘের আলোচনায় উপকূল থেকে ৩২০ কিলোমিটার বা ২০০ মাইল-পরবর্তী সমুদ্রাংশকে হাই সিজ বিবেচনা করা হচ্ছে। এই অংশে সব দেশেরই মৎস্য আহরণ, জাহাজ চলাচল ও গবেষণা পরিচালনা করার অধিকার রয়েছে।
একটি দেশ তার নিজস্ব সমুদ্রসীমার সম্পদ ব্যবহারের পাশাপাশি এর সুরক্ষারও ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু যেহেতু আন্তর্জাতিক জলসীমার কোনো একক মালিকানা নেই, সেহেতু এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার দায়িত্বও এককভাবে কোনো দেশের ওপর বর্তায় না। এ কারণে প্রায় সময়ই আন্তর্জাতিক জলসীমার পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যায়। কেবল আন্তর্জাতিক আইনই পারে এই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমার বাস্তুতন্ত্র নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সবসময় তুলে ধরা হয় না। এ কারণে এই অংশের জীববৈচিত্র্য কী অবস্থায় রয়েছে, সেই বিষয়েও সঠিক তথ্য জানা যায় না। তাদের আশঙ্কা, এমন পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে যে, কোনো একটি প্রজাতি আবিষ্কারের আগেই তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে গেছে।