চলমান খরা দীর্ঘায়িত হলে জাহাজ চলাচল আরো কমিয়ে আনবে পানামা খাল। ১২ সেপ্টেম্বর পানামা খাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এ কথা জানায়।
বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৫ শতাংশ পানামা খাল দিয়ে পরিবাহিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে খরার কারণে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে জাহাজ চলাচলের পরিমাণ এবং ড্রাফট লেভেল কয়েক দফা কমিয়েছে। ড্রাফট লেভেল কমানোয় জাহাজগুলোকে বাধ্য হয়ে সীমিত পরিমাণ কার্গো বহন করতে হয়। এতে পণ্য পরিবহন খরচ দিনদিন বেড়েই চলেছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে সম্প্রতি ভোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলমান পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ৩৬টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করলেও বর্তমানে এই সংখ্যা ৩২ এ নেমে এসেছে। অন্যদিকে ড্রাফটের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ থেকে কমিয়ে ৪৪ ফুট করা হয়েছে। জাহাজ চলাচলের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে জাহাজজট। যানজট নিরসণের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি গাতুন লেকের পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে।
পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনায় জাহাজজট আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর আগস্টের শুরুতে ১৬০টি জাহাজ অপেক্ষমাণ অবস্থায় থাকলেও মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই সংখ্যা ১১৬তে নেমে এসেছে।
পানামা ক্যানেল অথরিটির প্রধান রিকোর্তে ভাসকেজ জানান, সীমিত সংখ্যক কার্গো বহন করলে শিপিং কোম্পানিগুলোর পণ্য পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পায়। খরার প্রকোপ বাড়লে শিপিং কোম্পানিগুলোর ব্যয় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিবেচনা করে ড্রাফট লেভেল না কমিয়ে জাহাজ চলাচলের সংখ্যা সীমিত করা হবে জানান তিনি। তবে এখনই (চলতি মাসে) জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণের কোন পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের নেই।
চলতি বছর এল নিনোর মারাত্মক প্রভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের তাপমাত্রা। অন্যদিকে সামনের দিনগুলোতে বৃষ্টির কোন সম্ভবনাও নেই। এমতাবস্থায় অক্টোবরে শুরু হওয়া অর্থবছরে কঠোরভাবে জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ। সেসময় দৈনিক ৩০ থেকে ৩১ টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করবে বলে পূর্বাভাস ব্যক্ত করেন ভাসকেজ।
প্রলম্বিত খরা
গাতুন লেক থেকে পানামা খালে পানি সরবরাহ করা হলে এই নৌপথ দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেপ্টেম্বর মাসে গাতুন লেকে পানির স্তর সাধারণত ২৬ দশমিক ৬ মিটার হলেও খরার কারণে বর্তমানে সেটা ২৪ দশমিক ২ মিটারে নেমে এসেছে।
ভাসকেজ বলেন, টানা বারো মাস খরা চলমান থাকলে বাধ্য হয়ে নিয়ম-কানুন আরো কঠোর করতে হবে। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সব সময় কার্যক্রম চালিয়ে যাবার নিশ্চয়তা প্রদান করেন তিনি। ভাসকেজের মতে, চলমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। সেজন্য গাতুন লেকের পানি প্রবাহের ধরণে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি।



