Home Blog Page 10

গত অর্থবছরে ৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা সমমূল্যের ৯১ হাজার মেট্রিক টন মাছ বা মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে ‘মৎস্য সম্পদের স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন এবং সর্বোত্তম ব্যবহার’ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে খুলনায় বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় আরও জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হিসেব অনুযায়ী দেশে মাছের মোট উৎপাদন হয়েছে ৫০ দশমিক ১৮ লাখ মেট্রিক টন। দেশের ১৪ লাখ নারীসহ ২ কোটির বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য সেক্টরের সঙ্গে জড়িত। দেশের মোট জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান প্রায় ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এখাতের অবদান প্রায় ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ। বাংলাদেশ ইলিশ আহরণে প্রথম, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে দ্বিতীয় ও তেলাপিয়া মাছ উৎপাদনে পঞ্চম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বিপুল কুমার বসাক।

সভায় বক্তারা বলেন, বিদেশে মানসম্মত মৎস্যপণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। তবে পণ্যের মান ধরে রাখতে না পারলে অথবা মাছে অপদ্রব্য মেশালে মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির আন্তর্জাতিক বাজার হারাতে হবে। তাই মাছের পোনা সংগ্রহ, চাষ, আহরণ, বাজারজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণসহ সব পর্যায়ে আদর্শমান ঠিক আছে কিনা তা নিয়মিত পরীক্ষা করা আবশ্যক।

তারা আরও বলেন, দেশের মোট রপ্তানি আয়ে মৎস্যখাত এক সময় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদান রাখতো, এখন সেটা সপ্তম স্থানে নেমে এসেছে। আমরা এ অবস্থার পরিবর্তন চাই। ভালো মানের পোনা সরবরাহ নিশ্চিতে মৎস্য বিভাগ আরও সক্রিয় হবে বলে আশা করা যায়। কার্প জাতীয় মাছ চাষের পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় গৃহীত উদ্যোগগুলোর কার্যকর বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন।

খুলনা বিএফএফইএয়ের সাবেক সহ-সভাপতি এস হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান, মৎস্য অধিদপ্তরের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ম্যানেজার মো. জাহিদুল হাসান এবং মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তর খুলনার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আবুল হাসান।

সভায় মৎস্যখাতে খুলনা অঞ্চলের অবদান, লাভজনক ও মানসম্মতভাবে মাছচাষ, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন-২০২০ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তরের মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপ্টন সরদার।

খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় আয়োজিত সভায় মাছচাষি, মাছ ব্যবসায়ী ও রপ্তানিখাত-সংশ্লিষ্টরা অংশ গ্রহণ করেন।

লজিস্টিকস সূচকে বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে

আন্তর্জাতিক লজিস্টিকস সূচকে সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা অগ্রগতি হলেও, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এখনও সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। অ্যাগিলিটি ইমার্জিং মার্কেটস লজিস্টিকস ইনডেক্স (এইএমএলআই) অনুযায়ী, লজিস্টিকস খাতে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করেছে। ২০২২ সালে ৫০টি উদীয়মান দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৯তম, যা ২০২৩ সালে ৩৫তম এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে আরো দুই ধাপ এগিয়ে ৩৩তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।

রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হাইটস হোটেলে দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস আয়োজিত ‘চ্যালেঞ্জস, অপরচুনিটিজ অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড ইন শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকস ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. মো. মামুন হাবিব। দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের লজিস্টিকস পারফরম্যান্স ইনডেক্স (এলপিআই) ২০২৩ অনুযায়ী ১৩৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম, যেখানে স্কোর ছিল ৫-এর মধ্যে মাত্র ২.৬। তালিকায় ভারতের অবস্থান ৩৮ এবং শ্রীলংকার অবস্থান ৭৩।

এছাড়া, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের কনটেইনার পোর্ট পারফরম্যান্স ইনডেক্স (সিপিপিআই) ২০২৩ অনুযায়ী, শ্রীলংকার কলম্বো বন্দর বিশ্বব্যাপী ৪০তম স্থানে রয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ৩৩৯তম। এ সূচক বন্দরের কার্যক্ষমতা মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়, যেখানে জাহাজের আগমন, টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম এবং সামগ্রিক দক্ষতা বিবেচনা করা হয়।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘লজিস্টিকস উন্নয়নে দেশ পাঁচ দশক পিছিয়ে আছে। সাম্প্রতিক লজিস্টিকস কৌশল শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই খাতে সঠিক কোনো নীতি, নিয়ন্ত্রক কাঠামো বা বাজার উন্নয়ন ছিল না। মার্কিন শুল্ক এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে রপ্তানি ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি হলেও, লজিস্টিকস-এর দক্ষতা বাড়িয়ে তা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। দক্ষতা বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরকে বেসরকারি অপারেটরদের জন্য উন্মুক্ত করা জরুরি। চট্টগ্রাম বন্দরে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একজন বৈশ্বিক অপারেটরকে যুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই’।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘চট্টগ্রামের বে টার্মিনালে একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিকস হাবের নির্মাণ কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। পরিকল্পিত ব্যবস্থার মাধ্যমে রেল, সড়ক ও সমুদ্রপথকে সমন্বয় করে এটি কার্যকরভাবে পরিচালনা করা হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বে টার্মিনাল ব্রেকওয়াটার প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। বে টার্মিনালের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন এক থেকে দুই মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০৩৬ সালের মধ্যে বে টার্মিনাল ৫.৩৬ মিলিয়ন টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করতে সক্ষম হবে’।

নৌপরিবহন সচিব আরো বলেন, ‘বে টার্মিনাল একটি পিপিপি মডেলে জিটুজি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত একটি বে টার্মিনাল ঠিকাদারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নিউ মুরিং কন্টেইনার টার্মিনালও একটি স্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে অক্টোবরের মধ্যে একজন বৈশ্বিক অপারেটরের কাছে হস্তান্তর করা হবে’।

জাতীয় লজিস্টিকস নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি শীঘ্রই সংশোধন করা হবে এবং প্রধান উপদেষ্টার ও মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে দুটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি ইতিমধ্যেই গঠন করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে এই নীতির অধীনে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হবে’।

বন্দরে বিদেশি অপারেটরের বিরোধিতা নয়, সমর্থন করা উচিত: মোহাম্মদ হাতেম

দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বাড়াতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না করে বরং সমর্থন করা উচিত বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে স্থানীয় জনবল আধুনিক প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থাপনা শিখতে পারবে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘লজিস্টিক খাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন মোহাম্মদ হাতেম। অনুষ্ঠান আয়োজন করে ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইউসুফ এবং সভাপতিত্ব করেন পত্রিকাটির সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য অবকাঠামোগত ঘাটতি পূরণ জরুরি উল্লেখ করে বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, বে-টার্মিনাল দ্রুত চালু করতে হবে। পাশাপাশি মোংলা ও পায়রা বন্দরের সক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগানো গেলে সহজেই ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।’

মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, শুধু বন্দর নয়, গ্যাস ও বিদ্যুৎসংকট নিরসন, নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দরকার। রপ্তানি বৃদ্ধিতে এর বিকল্প নেই।

সভায় লজিস্টিক খাতের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে কথা বলেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

বিশেষ উৎসাহ বোনাস পাচ্ছেন চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে আগের বছরের চেয়ে চার শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এজন্য বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেককে দেয়া হচ্ছে এক লাখ টাকা করে বিশেষ উৎসাহ বোনাস।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে এ বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বছরজুড়ে বন্দরে প্রায় ৩৩ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১ লাখ ২৭ হাজার টিইইউ বেশি। সেই সঙ্গে দেশের সবচেয়ে বড় কাস্টমস স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় করেছে ৭৫ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৯ হাজার কোটি টাকা। আর এই সময়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বা ১০ শতাংশের কাছাকাছি।

জাহাজ থেকে খালাসের দিনেই আইসিডিগামী কনটেইনার স্থানান্তরের নির্দেশনা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে খালাস হওয়া ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি)/অফডকগামী কনটেইনারগুলো একই দিনে নির্ধারিত ডিপোতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনও চালানের সব কনটেইনার প্রথম দিনে স্থানান্তর সম্ভব না হলে— দ্বিতীয় দিনের মধ্যে অবশ্যই স্থানান্তর সম্পন্ন করতে হবে।

এনবিআরের সার্কুলারে উল্লেখ আছে, চালানের সব কনটেইনার অফডকে স্থানান্তরিত হওয়ার পরই চার্জ প্রযোজ্য হবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতি বা ধারণক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কমিশনার “ডুয়াল ডেলিভারি” অনুমোদন দিতে পারবেন।

নির্দেশনা এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (শুল্ক, রফতানি নীতি ও বন্ড) মো. আল আমিন জারি করেন এবং তা আইসিডি মালিকসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে এবং বাণিজ্য সহজীকরণের স্বার্থে আগে থেকেই চলমান সমস্যাগুলো যেমন- বিলম্ব, জটিলতা ও সীমিত ধারণক্ষমতা সমাধান করা হবে।

আমদানি সহজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলার

আমদানি-লেনদেনে বিদ্যমান সব নির্দেশনা একত্রিত করে একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আমদানি-সংক্রান্ত নীতিমালা আরও সহজতর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জারি করা এ মাস্টার সার্কুলারটি এক বছর কার্যকর থাকবে।

এতে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট), রেমিট্যান্স, ক্রয় চুক্তির আওতায় আমদানি, সরবরাহকারী ও ক্রেতার ঋণ, সফটওয়্যারের ই-ডেলিভারি, বৈদেশিক মুদ্রায় অভ্যন্তরীণ এলসি, ইপিজেড, অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক এবং স্বর্ণ, রৌপ্য ও গয়নার আমদানিসহ বিভিন্ন বিষয়ের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে অপপ্রচারকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান

চট্টগ্রাম বন্দরের আবাসিক এলাকাগুলোতে বোমা বিস্ফোরণ, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হচ্চে এমন তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ছবি-ভিডিও এডিটিং করে এসব ছবি-ভিডিও বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশের মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এসব ঘৃণিত কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত না থাকতে এবং গুজবে কান না দিয়ে সকলকে সজাগ থাকতে বন্দর প্রশাসন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছে।

বিজ্ঞেপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের কোন আবাসিক এলাকায় এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেনি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের কতিপয় বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ-পদায়নের বিষয়টি নিয়েও একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলশ্রুতিতে বন্দরের কর্মকর্তাদের মনোবল ও কর্মস্পৃহা হ্রাস পাচ্ছে। এ ধরণের অপপ্রচার থেকে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়োগ-পদোন্নতি বন্দরের প্রবিধানমালা ও সরকারের বিধি-বিধান এবং নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রতি কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ডসহ নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে বন্দরের সুনামহানির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

শেখ বশিরউদ্দীন

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা একথা জানান।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার জন্য সরকারের সব মহল থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সে আলোচনা এখনো চলমান। চূড়ান্ত চুক্তির আগে সেটা হতে পারে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি আশা করছি শুল্ক কমতে পারে। তবে এটা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কারণ যে শুল্ক আরোপ করেছে (যুক্তরাষ্ট্র) বিষয়টি তার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চূড়ান্ত চুক্তির কোনো তারিখ এখনো পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের হার ২০ শতাংশের ঘোষণা এলেও দেশটির সঙ্গে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তি এ মাসের শেষে হতে পারে। চুক্তির খসড়া তৈরির কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর)।

চট্টগ্রাম বন্দরে ৫-জি প্রযুক্তির সমীক্ষা করবে এক্সেনটেক

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনায় ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে একটি সমীক্ষা কাজ শুরু হচ্ছে শীঘ্রই। এই সমীক্ষা পরিচালনা করবে মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার সহযোগী কোম্পানি এক্সেনটেক। রোববার চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ ও এক্সেনটেকের মধ্যে এ–সংক্রান্ত এক চুক্তি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সভা কক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি ফাইভ-জি ভিত্তিক প্রাইভেট নেটওয়ার্ক নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে এক্সেনটেক। বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ, স্মার্ট অ্যাকসেস কন্ট্রোলিংয়ের মতো সেবা প্রদানের প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হবে। এ ছাড়া বন্দরের টেস্টিং ল্যাব অটোমেশন এবং যানবাহন ও গ্যান্ট্রি ক্রেন স্মার্ট পদ্ধতিতে পরিচালনার সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, এক্সেনটেকের এমডি ও সিইও আদিল হোসেন নোবেল, বন্দরের পর্ষদ সদস্যবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই অপারেটর নিয়োগ

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন পরিচালনার জন্য অপারেটর নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। রোববার বন্দরের ৪ নম্বর ফটকে ব্যবহারকারীদের জন্য শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক্স অনলাইন ডেস্ক উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ডিসেম্বরের মধ্যে বন্দরগুলোতে আমরা কিছু রূপান্তর করে দিয়ে যেতে চাই। কিছু চুক্তি সই করে দিতে চাই। এমন একটা জায়গায় আমরা নিয়ে যাব, যেখানে চাকা ঘোরানো শুরু করে দিলে এরপর এই চাকাটা থামানো সম্ভব হবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার আসবে। তাদের থিতু হতে সময় লাগবে। ওই সময়ে যাতে কোনো কাজ থেমে না থাকে, সে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে একদম ওপরে নিয়ে যেতে হবে উল্লেখ করে আশিক চৌধুরী বলেন, বন্দরকে র‌্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে নিয়ে যেতে হলে আমাদের বেস্ট অপারেটর এখানে নিয়ে আসতে হবে। বন্দরে বেশ কিছু সংস্কার হচ্ছে। যেমন আমরা একটা সফটওয়্যার উদ্বোধন করেছি। এটি দারুণ একটি উদ্যোগ। কেননা এর মাধ্যমে সবকিছু অটোমেটেড হয়ে যাবে। এ জন্য কার্যক্রম পরিচালনার সময়ও কম লাগবে। আগে সশরীর বন্দরে এসে কাগজ জমা দিয়ে যে কাজটি করতে হতো, সেটি এখন এক ক্লিকেই করা সম্ভব হবে। দুর্নীতি ও হেনস্তার যে অভিযোগ আগে শোনা যেত, সেসবও কমে যাবে। এ ছাড়া এক সময় হয়তো আমরা বন্দরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার দেখতে পাব।

বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আগে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য পরিচালনা করছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। বর্তমান পরিচালনা নিয়েও কথা বলেন আশিক চৌধুরী। তিনি বলেন, বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেডকে হস্তান্তর করার পর প্রথম এক মাসে কনটেইনার ওঠানামার হার প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এটি বিরাট সাফল্য। আবার জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের সময় প্রায় ১৩ শতাংশ কমে এসেছে। গত অর্থবছরের এই টার্মিনালে ১৩ লাখ কনটেইনার ওঠানো-নামানো হয়েছে। যদি বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা যায়, তাহলে বছর শেষে এটি বেড়ে ১ দশমিক ৭০ মিলিয়নে (১৭ লাখ) চলে যাবে।

আশিক চৌধুরী বলেন, সব মিলিয়ে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল ২০৩০ সালের মধ্যে বন্দরের সক্ষমতা চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে যাবে। এ ছাড়া দেশ থেকে একটা পণ্য ইউরোপে নিয়ে যেতে বাড়তি সময় লাগে বলে আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারী ও দেশি রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে একটা অভিযোগ শুনি। একই পণ্য বাংলাদেশ থেকে নিতে যে সময় লাগে, ভিয়েতনাম থেকে নিতে তার চেয়ে তিন থেকে চার গুণ কম সময় লাগে। ২০৩০ সালের দিকে হয়তো ভিয়েতনামের চেয়ে কম সময়ে বন্দরের পণ্য খালাস হবে। আমরা ওদের থেকে বেটার হতে চাই।

এর আগে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। এজেন্ট ডেস্ক উদ্বোধন ছাড়াও তিনি ভেহিক্যাল ও কনটেইনার ডাটা এক্সচেঞ্জ সিস্টেমের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।