Home Blog Page 11

৩৯৩ কোটি টাকার ২৪টি যন্ত্রপাতি যোগ হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বন্দরসহ বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়ে গেছে। আমাদের পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, বে-টার্মিনাল, পায়রা বন্দর এগুলো আমাদের সক্ষমতার উদাহরণ। দেশ-বিদেশে নয়, আমরা বিশ্বের সাথে থাকতে চাই। বিশ্বের সুনামধন্য দেশগুলো চট্টগ্রাম বন্দর বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করে আমরা এগিয়ে যাব। নৌপরিবহন খাত এগিয়ে যাচ্ছে। মেরিটাইমকে বাদ দিয়ে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে বিষয়টির প্রতি জোর দিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সংগৃহীত সাত ধরনের ২৪টি যন্ত্রপাতি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী পরে বন্দর ট্রেনিং কমপ্লেক্সে স্থাপিত ট্রেনিং সিমুলেটর ও নবনির্মিত অফিসার্স ডরমেটরি ভবন উদ্বোধন করেন। সিমুলেটর ক্রয়ে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সিমুলেটর রিপেয়ার, মেইনটেনেন্স, ট্রেনিং ও খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহে খরচ হয়েছে এক কোটি সাতাশি লাখ টাকা। অফিসার্স ডরমেটরি ভবনটি ১০ তলা বিশিষ্ট ৩২ ইউনিটের।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করার জন্য প্রায় ৯১৪ কোটি টাকা দিয়ে ১০৪ টি যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় ৩৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের সাত ধরনের ২৪টি যন্ত্রপাতি বন্দরের অপারেশনাল কাজে যুক্ত হয়েছে। অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি পর্যায়ক্রমে যুক্ত হবে।

নতুন সংগৃহিত যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে ২৪৩ কোটি টাকা মূল্যের চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন, ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন, ১৪ কোটি টাকায় চারটি রিচ স্ট্যাকার, ২৫ কোটি টাকার চারটি ভেরিয়েবল রিচ ট্রাক, সাত কোটি টাকার দুটি কনটেইনার মুভার, ২০ কোটি টাকার দুটি মোবাইল ক্রেন (১০০ টন) এবং ১১ কোটি টাকায় দুটি মোবাইল ক্রেন (৫০ টন)। ক্রয়কৃত চারটি কি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ বন্দরের বহরে বর্তমানে ১৮ টি গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউস, জেনারেল কার্গো ওঠানামা হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ টন। জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৪ হাজার ২৫৩টি।

প্রতিমন্ত্রী পরে বন্দর স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ অন্ধকারে চলে গিয়েছিল। দেশ আলোর মুখ দেখেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন অন্ধকার থেকে আলোর পথে উঠে এসেছে। আমাদের আলোর পথের দিশারী হলেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ বর্তমানে মান, মর্যাদা নিয়ে অবস্থান করছে। বঙ্গবন্ধু অতিদরিদ্র বাংলাদেশকে হিমালয়সম উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই হিমালয় থেকে ৭৫ এ বাংলাদেশ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হয়। এখন আমরা গর্ব করে বলতে পারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে আলোর পথে ধাবিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেলফি তুলতে চায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নৌকায় বেড়াচ্ছেন, ঢাকার রাস্তায় হাঁটছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য হায়দ্রাবাদ হাউসে অপেক্ষা করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন-এগুলো আমাদের গর্বের জায়গা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পেরিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য আমরা গর্বিত। বিশ্বের বড় বড় অপারেটররা বাংলাদেশে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ করতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যখন এগিয়ে যাচ্ছে। মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতু, ঢাকায় তৃতীয় বিমানবন্দর টার্মিনাল, পায়রা পোর্ট, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যখন নির্মিত হচ্ছে তখন স্বার্থান্বেষীরা দেশকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মানবাধিকারের কথা বলে উন্নয়নকে টেনে ধরতে চায়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ফিলিস্তিনে পাখির মত মানুষ মারছে সেখানে মানবাধিকারের কথা বলার লোক নাই। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি। চট্টগ্রাম বন্দর সমগ্র দেশে অর্থনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আগামীতে আরো বেশি ভূমিকা রাখবে।

পরে প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ মেজবানে অংশ নেন। বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক, স্টেকহোল্ডার সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের জন্য মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে।

সমুদ্রযাত্রায় কনটেইনারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের নতুন যন্ত্র

সমুদ্র যাত্রায় জাহাজ থেকে কনটেইনার হারিয়ে যাওয়া রোধ করতে স্যামসাং হেভি ইন্ডাট্রিজ (এসএইচআই) নতুন একটি যন্ত্র তৈরি করেছে। সহজে ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রটি জাহাজের ধারণক্ষমতাকে অপরিবর্তিত রেখে কনটেইনার হারানোর হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে সক্ষম বলে দাবী করছে স্যামসাং। ‘স্পেশাল স্ট্রাকচার অ্যান্টি-কনটেইনার লস’ নামক যন্ত্রটি বর্তমানে পেটেন্টভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ পণ্য সমুদ্রপথে পরিবহন করা হয়।মূলত বৈরী আবহাওয়া এবং ‘প্যারামেট্রিক রোলিং’-এর কারণে সমুদ্রযাত্রার সময় জাহাজ থেকে কনটেইনার পানিতে পড়ে যায়। সাগরের ঢেউয়ের কারণে স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়ে জাহাজ একদিক থেকে অন্যদিকে কাত হওয়াকেই রোলিং বলে। ভুল উপায়ে জাহাজে কনটেইনার মজুদ করায় প্যারামেট্রিক রোলিংয়ের কারণে প্রতি বছর শত শত কনটেইনার সাগর গর্ভে হারিয়ে যায়।

ওয়ার্ল্ড শিপিং কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে প্রায় ছয় হাজার, ২০২০ সালে প্রায় চার হাজার এবং ২০২১ সালে দুই হাজারের অধিক কনটেইনার সাগরে তলিয়ে গেছে। তবে ২০২২ সালে কনটেইনার হারানোর প্রবণতা কিছুটা হ্রাস পায়। গত বছর সাগর গর্ভে মাত্র ৬৬১টি কনটেইনার হারিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কনটেইনার হারানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা শিপিং ইন্ডাস্ট্রিই নড়ে চড়ে বসেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস নির্ণয়ের জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের চেষ্টা করছে শিপিং কোম্পানিগুলো। তবে জটিল এই সমস্যার সহজ একটি সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছে স্যামসাং।

বিশাল আকারের পণ্যবাহী জাহাজগুলোয় র‍্যাক এবং ল্যাশিং ব্রিজের সাহায্যে ভারী কনটেইনারগুলো একটার ওপর আরেকটা স্তুপ করে রাখা হয়। স্যামসাংয়ের স্পেশাল স্ট্রাকচার অ্যান্টি-কনটেইনার লস যন্ত্রটি ল্যাশিং ব্রিজের সাথে জুড়ে দিলে তীব্র ঝাঁকুনিতেও ভারী কনটেইনারগুলো তেমন একটা নড়বে না। নতুন এই যন্ত্রটি ঝড়ো আবহাওয়া ও প্যারামেট্রিক রোলিংয়ের সময়ও কনটেইনারের নড়াচড়া অনেকাংশে কমিয়ে দিতে সক্ষম।

স্যামসাং জানায়, স্পেশাল স্ট্রাকচার অ্যান্টি-কনটেইনার লস যন্ত্রটি এরই মধ্যে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চারটি ক্লাসিফিকেশন সংস্থার (ডিএনভি, এবিসি, এলআর ও কেআর) সনদ লাভ করেছে। যন্ত্রটির জন্য কোরিয়ার বাইরে দশটিরও বেশি পেটেন্ট আবেদন করেছে স্যামসাং।

বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কনটেইনার শিপিং কোম্পানিগুলোর আগ্রহে পরিণত হওয়া যন্ত্রটি এখন চূড়ান্ত সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের পরিবর্তন-পরিবর্ধন ছাড়াই কার্যক্ষম জাহাজগুলো যেন যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে বর্তমানে সেদিকে গুরুত্বারোপ করছে স্যামসাং। যন্ত্রটিকে সহজে ল্যাশিং ব্রিজে প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে এর আকার ও ওজন কমিয়ে আনা হচ্ছে।  

যন্ত্রটির প্রটোটাইপ কাঠামোটি বর্তমানে পুসান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। স্পেশাল স্ট্রাকচার অ্যান্টি-কনটেইনার লসের সক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সেখানে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হচ্ছে। সব ধরনের যাচাই-বাছাই শেষে বছরখানেকের ভেতর পণ্যটির বিপণন শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী স্যামসাং।

বাল্টিক সাগরে ডার্ক ফ্লিটের আনাগোনা বেড়েছে

মেরিটাইম আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কোম্পানি উইন্ডওয়ার্ডের সাম্প্রতিক প্রতিবদেন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বাল্টিক সাগরে জাহাজের ডার্ক অ্যাক্টিভিটি বা অজ্ঞাতসার কর্মকাণ্ড ৫৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব জাহাজ তাদের অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) অকার্যকর করে অজ্ঞাতসারে কার্যক্রম পরিচালনা করে, শিপিং খাতে সেসব জাহাজ ‘ডার্ক শিপ’ হিসেবে পরিচিত। রাডার, স্যাটেলাইট বা পাবলিক মনিটরিং সিস্টেমগুলোইয় এ ধরনের জাহাজের গতিবিধি ধরা পড়ে না।

উইন্ডওয়ার্ডের বিশ্লেষণে জানা যায়, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে ডার্ক শিপের সংখ্যা ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অজ্ঞাতসার জাহাজের সংখ্যার দিক দিয়ে বাল্টিক অঞ্চল পৃথিবীর অন্যান্য যেকোনো প্রান্তকে ছাড়িয়ে গেছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালানোর পর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। পশ্চিমা বিশ্বের এই নিষেধাজ্ঞার জেরে রুশ বন্দরগুলোও ডার্ক ফ্লিটের আনাগোনা বেড়েছে।

তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক ডার্ক ফ্লিটের শীর্ষ গন্তব্যস্থল রাশিয়ায় এক হাজারের বেশি পোর্ট কল করা হয়েছে। রুশ বন্দরে পোর্ট কলের পর ট্যাংকার জাহাজগুলোর অজ্ঞাতসার কার্যক্রম ২৭ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে সিঙ্গাপুরে ডার্ক ফ্লিটের পোর্ট কলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩ শতাংশ।

ডার্ক ফ্লিটের কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথগুলোর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। এমন অবস্থায় নিরাপদে কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে অনেক শিপিং কোম্পানিই তথ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান শিপিং কোম্পানিগুলোকে ডার্ক ফ্লিটের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে।

প্রসঙ্গত, ডার্ক ফ্লিটের কার্যক্রম-সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে সম্প্রতি এনার্জি ট্রেড ফ্লো অ্যানালিটিক্স কোম্পানি গ্যাস ভিস্তা কিনে নিয়েছে স্যাটেলাইট ডাটা অ্যানালিটিক্স কোম্পানি সিনম্যাক্স।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার দেশগুলো থেকে তেল কিনে লাভবান চীন: রয়টার্স

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন দেশ থেকে রেকর্ড পরিমাণ তেল কিনেছে চীন। আর এর মাধ্যমে চলতি বছর প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার সাশ্রয় করেছে দেশটি। সম্প্রতি বিভিন্ন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রাশিয়া, ইরান ও ভেনিজুয়েলার তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো প্রকৃতপক্ষে তাদের অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের জন্য সুবিধাই করে দিয়েছে। বরাবরই এই ধরনের বহুপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞাকে অনৈতিক হিসেবে দাবি করে আসা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি সেসব দেশ থেকে কম মূল্যে তেল আমদানি করে বেশ লাভবান হয়েছে।

ট্যাংকার ট্র্যাকার ভোরটেক্সা ও কেপলারের পরিসংখ্যানের গড় হিসাব করে রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রাশিয়া, ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে প্রতিদিন রেকর্ড ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে চীন। আলোচ্য সময়ে তাদের মোট তেল আমদানির প্রায় ২৫ শতাংশ এসেছে এই তিন দেশ থেকে। ২০২২ সালে এই হার ছিল ২১ শতাংশ। আর ২০২১ সালে হিস্যা ছিল অর্ধেকেরও কমÑ১২ শতাংশ।

রাশিয়া, ইরান ও ভেনিজুয়েলা থেকে তেল কিনে চীন যে কেবল নিজেদের অর্থই সাশ্রয় করেছে, তা নয়। বরং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও বিনিয়োগ ঘাটতির মধ্যে দেশ তিনটির অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রেও বড় অবদান রেখেছে চীন।

পানিতে ভাসল মায়েরস্কের নতুন মিথানল-চালিত কনটেইনার জাহাজ

ডেনিশ শিপিং জায়ান্ট মায়েরস্কের জন্য ১২টি মিথানল-চালিত কনটেইনার জাহাজ নির্মাণ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ। এর মধ্যে প্রথম জাহাজটিকে সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে পানিতে ভাসানো হয়েছে।

৩৫০ মিটার দীর্ঘ জাহাজটি ১৬ হাজার ২০০ টিইইউ কনটেইনার পরিবহন করতে সক্ষম। প্রতিটি কনটেইনার পরিবহন করতে জাহাজটি ২০ শতাংশ কম জ্বালানি ব্যবহার করবে। জাহাজটিতে ১৬ হাজার ঘনমিটারের একটি মিথানল ট্যাংক রয়েছে। ফলে এটি একবার গ্রিন মিথানল বাংকারিং করে এশিয়া-ইউরোপ রুটে একটি রাউন্ড ট্রিপ সম্পন্ন করতে পারবে।

বিশেষ নকশা ব্যবহার করে জাহাজটিতে কার্গো পরিবহন সক্ষমতা ৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর ক্রুদের থাকার জায়গা ও ব্রিজ একেবারে সামনের অংশে (বাও) এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এর ফানেল বা চিমনি স্থাপন করা হয়েছে জাহাজের পেছনের দিকে, তাও আবার কেবল একপাশে। জাহাজটির লাইফবোট ও নেভিগেশনাল লাইটের অবস্থানগত সজ্জায় পরিবর্তন আনা হবে। এছাড়া নেভিগেশনের সময় ক্যাপ্টেনের দেখার সুবিধার্থে নতুন ক্যামেরা বসানো হবে।

জাহাজটি ২০২৪ সালের শুরুর দিকে মায়েরস্কের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।

টাইটানের ধ্বংসাবশেষ ও অভিযাত্রীদের দেহাবশেষ উদ্ধারের দাবি মার্কিন কোস্টগার্ডের

উত্তর আটলান্টিকে করুণ পরিণতি বরণ করে নেওয়া ডুবোযান টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের দাবি করেছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। বাহিনীটি আজ (১০ অক্টোবর) জানিয়েছে, তাদের মেরিন বোর্ড অব ইনভেস্টিগেশনের (এমবিআই) প্রকৌশলীরা টাইটানের ধ্বংসাবশেষ ও ডুবোযানটির অভিযাত্রীদের সম্ভাব্য দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে। বর্তমানে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি) ও ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড অব কানাডার সঙ্গে যৌথভাবে এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। উদ্ধারকৃত নমুনার মধ্যে রয়েছে টাইটানের পেছনের দিকের টাইটানিয়ামের তৈরি অংশবিশেষ। এছাড়া যাত্রীদের দেহাবশেষ বলে অনুমান করা হচ্ছে এমন কিছু নমুনা মার্কিন চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য।

গত জুনে ঐতিহাসিক জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাঁচ আরোহী নিয়ে ডুব দিয়েছিল আরওভি টাইটান। কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের সেন্ট জোনস থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানের আয়োজক ছিল মার্কিন কোম্পানি ওশানগেট এক্সপেডিশন। শেষ পর্যন্ত অভিযানটি সফল হয়নি। গভীর সাগরে পানির অন্তর্মুখী চাপের কারণে বিধ্বস্ত হয় টাইটান। এর পাঁচজন অভিযাত্রীর সবাইকে করুণ মৃত্যু বরণ করে নিতে হয়। তারা হলেন ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হারডিং, ফরাসি ডুবুরি পল-হেনরি নারজিওলেট, পাকিস্তানি বিলিওনেয়ার শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলাইমান দাউদ এবং ওশানগেটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টকটন রাশ।

১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিকে হিমবাহের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় সে সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ টাইটানিক। ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্কের পথে প্রথম যাত্রাতেই এই দুর্ঘটনায় পড়ে জাহাজটি। টাইটানিকের ২ হাজার ২২৪ জন আরোহীর মধ্যে দেড় হাজারের বেশি আরোহীর সলিল সমাধি হয়েছিল সেদিন। শান্তিপূর্ণ সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে মর্মান্তিক সমুদ্র দুর্ঘটনা বিবেচনা করা হয় একে। একশ বছরের বেশি সময় ধরে সাগরের তলদেশে পড়ে থাকা সেই টাইটানিকই পরোক্ষভাবে আরও পাঁচটি জীবন কেড়ে নেয় টাইটান দুর্ঘটনার মাধ্যমে।

প্রবৃদ্ধির গতি হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা আমদানি, কমল পূর্বাভাস

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির পর থেকেই ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা পণ্য আমদানি। প্রতি মাসেই আমদানির পরিমাণ আগের মাসকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আমদানির পরিমাণ ২০১৯ সালে করোনা-পূর্ব সময়ের চেয়েও বেশি রয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধির গতি অনেকটাই কমেছে। এ অবস্থায় বাজার বিশ্লেষকরা বছরের বাকি সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা আমদানির পূর্বাভাস কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা পণ্য আমদানির প্রায় পুরোটাই হয় কনটেইনারে করে। এ কারণে কনটেইনার আমদানির তথ্য বিশ্লেষণ করলেই খুচরা আমদানির হালচাল জানতে পারা যায়। চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৫৭ লাখ টিইইউ কনটেইনার আমদানি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর আগের পূর্বাভাসে ৫৯ লাখ টিইইউ আমদানির কথা বলা হয়েছিল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছরের শেষের মাসগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা আমদানি আর নাও বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, আমদানি কমার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

কাস্টমসের নথিপত্র দেখে আমদানি-রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করে ডেসকার্টেস। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কনটেইনার আমদানি সেপ্টেম্বরেও বেড়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশেরও কম। অর্থাৎ আগস্টের প্রায় সমানই ছিল সেপ্টেম্বরের আমদানির পরিমাণ। গত মাসে মোট ২২ লাখ টিইইউ কনটেইনার আমদানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এটি গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় এখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে ডেসকার্টেস। এছাড়া ২০২১ ও ২০২২ সালের জোয়ারের তুলনায় কম থাকলেও গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা আমদানি হয়েছে ২০১৯ সালের গড়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ডেসকার্টের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটির কনটেইনার আমদানি বেড়েছে ২৭ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশনের (এনআরএফ) ধারণা, ২০২৩ সালে পুরো বছরে কনটেইনার আমদানির মোট পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২ কোটি ২১ লাখ টিইইউ, যা গত বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ কম।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের জেরে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংঘর্ষের জেরে আজ (সোমবার) ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেল প্রতি ২ ডলার ২৫ সেন্ট সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৮৬ ডলার ৮৩ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি আড়াই ডলার বেড়ে ৮৫ ডলার ৩০ সেন্ট হয়েছে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন তেল উৎপাদন না করলেও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলো বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ তেল সরবরাহ করে। হামাস-ইসরায়েলের হামলা-পাল্টা হামলা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকেই অস্থিতিশীল করে তুলেছে। চলমান সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করলে অত্র অঞ্চলের তেল উৎপাদন ও সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন যুদ্ধের আশঙ্কায় অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেছে।

সৌদি আরব ও ইরানের মতো নিকটবর্তী তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোতে এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে তেলের বাজারে সেটা ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশ্লেষক সল ক্যাভোনিক। তিনি বলেন, চলমান সংঘাতে ইরান জড়িয়ে পড়লে ৩ শতাংশের বেশি বৈশ্বিক তেলের সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়বে।

পারস্য উপসাগরের অর্থনীতি তেল ও গ্যাস উৎপাদন ও রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে উৎপাদিত তেল পারস্য উপসাগরের সঙ্গে ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সংযোগস্থাপনকারী হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বব্যাপী রপ্তানি করা হয়। ক্যাভোনিক বলেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের দরুণ গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথটি বাধাঁপ্রাপ্ত হলে বৈশ্বিক তেল সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ‘আটকা পড়ে’ যাবে। এর ফলে তেলের বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর সামরিক হামলা চালানোর পর তেলের দাম বেড়ে যায়। গত বছর জুনে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলারে পৌঁছে গেছিলো। চলতি বছরের মে মাসে তেলের দাম কমে ৭০ ডলারে নেমে আসে। পরবর্তীতে তেলের দাম চাঙ্গা করার লক্ষ্যে সৌদি আরব ও ওপেকভুক্ত অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো তেলের উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

বৈশ্বিক বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে ডব্লিউটিও

বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস অর্ধেকে নামিয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডবিøউটিও)। এর প্রধান কারণ হিসেবে তারা ভোক্তা চাহিদার পতনের কথা জানিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দফায় দফায় সুদহার বাড়িয়েছে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় ব্যয় কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার ভোক্তারা। পূর্বাভাস কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে চীনের আবাসন খাতের চলমান সংকট এবং ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাবকেও বিবেচনায় নিয়েছে ডব্লিউটিও।

গত এপ্রিলে ২০২৩ সালের জন্য বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্যে ১ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল ডব্লিউটিও। সর্বশেষ পূর্বাভাসে তা শূন্য দশমিক ৮ শতাংশে নামানো হয়েছে। সংস্থাটির মতে, চলতি বছরে লোহা, ইস্পাত, টেলিকম যন্ত্রপাতি ও তৈরি পোশাক বাণিজ্যে মন্দাভাব বিরাজ করতে পারে। তবে মহামারি-পরবর্তী সময়ে চাঙ্গা থাকা গাড়ির বাজার সামনের দিনগুলোতেও বিদ্যমান ধারা বজায় রাখবে।

আগামী সপ্তাহে বিশেষ আলোচনায় বসবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমও) ও বিশ্বব্যাংক। উভয় সংস্থাই বৈশ্বিক অর্থনীতির পূর্বাভাস কমিয়ে ফেলতে পারে। ২০২২ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি বছরের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে ৩ শতাংশ এবং আগামী বছরের জন্য ২ দশমিক ৮ শতাংশ।

এদিকে ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পিটারসন ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, আগামী বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার দেখা যেতে পারে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার কমানো শুরু করতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাবাস দিয়েছে ডব্লিউটিও।

ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলোয় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরছে

রুশ হামলার হুমকি সত্তে¡ও পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে ইউক্রেনের প্রধান তিনটি বন্দর। দেশটিতে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যে কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর তিনটি সচল করা হয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর আগে কৃষ্ণসাগর দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খাদ্যশস্য রপ্তানি করত ইউক্রেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিরাপদে রপ্তানি কার্যক্রম চালিয়ে নিতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ স্বাক্ষর করে ইউক্রেন। তবে চলতি বছর জুলাইয়ে সেই চুক্তি থেকে সরে আসে রাশিয়া।

ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন। যুদ্ধের কারণে প্রধান বাণিজ্য পথ অবরুদ্ধ থাকায় চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে (জুলাই-জুন) এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি ২৪ শতাংশ কমেছে।

৪ অক্টোবর দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬৮ লাখ ২০ হাজার টন শস্য রপ্তানি করেছে ইউক্রেন, যেখানে ২০২২-২৩ মৌসুমের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৯ লাখ ৯০ হাজার টন।

ব্যবসায়ী ও কৃষক সমিতিগুলোর মতে, রাশিয়া ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে রাখায় এবং দানিয়ুব নদীর তীরবর্তী বন্দরগুলোয় হামলা চালানোর কারণে রপ্তানির পরিমাণ এতটা হ্রাস পেয়েছে। শস্য রপ্তানি চাঙ্গা করতে এবং ইউক্রেনের বন্দরগুলোয় আটকা পড়া জাহাজগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছনোর সুযোগ করে দিতে গত আগস্টে কৃষ্ণসাগরে একটি অস্থায়ী মানবিক করিডোর ঘোষণা করে কিয়েভ। ইউক্রেন ঘোষিত এই করিডোরটির অবস্থান কৃষ্ণসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে। এটি ন্যাটোভুক্ত দেশ রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ার উপকূল ঘেঁষে গেছে।

মানবিক করিডোর চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০টি জাহাজ এই পথ দিয়ে কৃষ্ণসাগর পাড়ি দিয়েছে। দেশটির নৌবাহিনী জানায়, বর্তমানে ১২টি জাহাজ এই পথ ব্যবহার করে ইউক্রেনে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বিদেশী বীমাকরী প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে এই পথে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে বীমা কভারেজের আওতায় আনতে শুরু করেছে।

মানবিক করিডোর ব্যবহারকারী জাহাজগুলো ক্লিয়ারওয়াটার ডায়নামিকসের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ঝুঁকিযুক্ত অঞ্চলে জাহাজগুলোকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।