Home Blog Page 13

ড্যানিয়েলে ক্ষতিগস্ত হয়নি লিবিয়ার তেল উৎপাদন

ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের পর দেরনা বন্দর। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি।

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সম্মুখীন হয়। প্রলয়ংকরী বন্যায় উপকূলীয় শহর দেরনাসহ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তেল উৎপাদন বাধাপ্রাপ্ত হয়নি বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন (এনওসি)।

এনওসির চেয়ারম্যান ফারহাত বেংদারা জানান, পূর্বাঞ্চলের তেল রপ্তানিকারক বন্দরগুলো ঘূর্নিঝড় ড্যানিয়েলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং ঘূর্ণিঝড়ের পর সেসব বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এনওসির তথ্য মতে, বর্তমানে দৈনিক ১২ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করছে লিবিয়া। লিবিয়ার দুইটি গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে ইতালির বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি ইএনআই এসপিএ। বন্যার কারণে লিবিয়ায় তাদের কার্যক্রমেও ছেদ পড়েনি বলে জানিয়েছে ইএনআই। 

তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৯ সেপ্টেম্বর সতর্কতামূলকভাবে তেল রপ্তানিকারক প্রধান চারটি বন্দর ব্রেগা, এস সিদ্রা, রাস লানুফ ও জুইতিনার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ব্লুমবার্গ রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের জ্বালানিবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আমোস হক্সটিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর তেল রপ্তানিকারক বন্দরগুলোর কার্যক্রম কিছুটা গুটিয়ে আনা হয়। তবে ঝড়ের তাÐব কেটে গেলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্দরগুলো পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে।

ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল লিবিয়ার তেল শিল্পকে আরও একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এল। তেল মজুদের দিক থেকে লিবিয়া আফ্রিকা মহাদেশে প্রথম ও বিশ্বে নবম অবস্থানে রয়েছে। বিপুল পরিমান তেল মজুদ থাকা সত্ত্বেও অস্ত্রধারী বিভিন্ন গ্রæপের কারণে বহু বছর ধরেই লিবিয়ার তেল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে ২০২০ সালের মাঝামাঝি দেশটিতে গৃহযুদ্ধে যুদ্ধবিরতি দেওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। ২০২৩ সালে দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করেছে লিবিয়া।

আমদানির ঋণপত্র খুলতে দিতে হবে বিস্তারিত তথ্য

ডলার সংকট কাটাতে আমদানি কড়াকড়ির পাশাপাশি আমদানি পণ্যের মূল্য যাচাই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় আমদানি পণ্যের আরও বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এতে পণ্যের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেডের পাশাপাশি আরও তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে। আমদানিকারকেরা যাতে এসব শর্ত মানেন, সে জন্য বিভিন্ন ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যের আমদানিকারক-রপ্তানিকারক, প্রস্তুতকারক দেশের নাম এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সংশ্লিষ্ট পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে ঋণপত্র খোলার নিয়ম রয়েছে। এ ছাড়া আমদানি পণ্যের নাম, বিবরণ, পরিমাণ, মূল্য ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ তথ্য ও বর্ণনা দেওয়ার বিষয়েও নির্দেশনা রয়েছে।

নতুন করে আরও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঠিকভাবে আমদানি পণ্যের দাম যাচাইয়ের সুবিধার্থে রপ্তানিকারকদের এদেশীয় এজেন্টের সরবরাহ করা নথিতে আমদানি পণ্যসম্পর্কিত আরও কিছু বিষয় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে পণ্যের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ, মান, ব্র্যান্ড, উৎপাদনের তারিখ, প্যাকেজিং সংক্রান্ত তথ্য ও গ্রেড যা দ্বারা পণ্যের গুণগত মান পৃথক করা যায়। এ ছাড়া ইউনিট প্রতি মূল্য ও পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে।

একই নথির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সাধারণভাবে সব পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট ইউনিট (কেজি, লিটার অথবা পিস) পরিমাপ না করে তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রযোজ্য ইউনিটে উপস্থাপন করতে হবে।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অনুমোদিত আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য বেঁধে দেওয়া নিয়ম এবং পরিবহনভাড়া যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে। আমদানি পণ্য সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে এইচএস কোড ৬ ডিজিট ও পরের ২ ডিজিট উল্লেখ করতে হবে।

জটিল রোগে আক্রান্ত কর্মচারীদের সহায়তা দিয়েছ চট্টগ্রাম বন্দর

সহায়তার অর্থ তুলে দিচ্ছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল

জটিল ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ৫ কর্মচারীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল সহায়তার অর্থ কর্মচারীদের হাতে তুলে দেন।

সহায়তার অর্থ তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পর্ষদ সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশিদ, আইন কর্মকর্তা সমরেশ শীল, পারসোনেল অফিসার মো. নাহিদ মোস্তফা, সিবিএ সভাপতি মো. আজিম, সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

টানা ১১ মাস কমেছে সিঙ্গাপুরের রপ্তানি

মূল্যস্ফীতির চাপ ও চাহিদার নিম্নমুখিতার যুগল প্রভাবে বেশ মন্দাভাব যাচ্ছে সিঙ্গাপুরের রপ্তানি খাতে। আগস্টে দেশটির জ্বালানি-বহির্ভূত রপ্তানি বছরওয়ারি ২০ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে টানা ১১ মাস রপ্তানিতে পতন দেখল বাণিজ্য-নির্ভর অর্থনীতির দেশটি। জুলাইয়ে সিঙ্গাপুরের রপ্তানি কমেছিল বছরওয়ারি ২০ দশমিক ৩ শতাংশ।

সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সিঙ্গাপুর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও চীনে ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রনিকস-বহির্ভূত উভয় ধরনের পণ্যের রপ্তানি কমেছে।

গত মাসে সিঙ্গাপুর সরকার দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। এর আগের পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে বলা হলেও নতুন পূর্বাভাসে তা কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা হয়েছে।

সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৭৪ কোটি ডলার

ডলার সংকটের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রবাসী আয়। তবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১০২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এই ১৫ দিনে গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার মার্কিন ডলার প্রবাসী আয়।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ডলার বা প্রায় ১৯ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে সরকারি মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৫ কোটি ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৯ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ডলার।

এর আগে জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১.৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৮.৫০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার বেশি। এটি আগের মাস জুনের তুলনায় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমেছে ২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের মাস জুনে রেমিট্যান্সে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি কম : ইআইইউ

দক্ষিণ এশিয়ার আর্থিক ঝুঁকি মূল্যায়নে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পেছনে বাংলাদেশ, বলছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এশিয়ায় আর্থিক ঝুঁকি কমে এলেও পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এখনো উচ্চঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে সে তুলনায় কম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।

‘নো রিটার্ন টু চিপ মানি’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সুদহারের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। এর ফলে ২০২২ সালে ছয়টি দেশ সার্বভৌম ঋণখেলাপি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আরো কিছু দেশ ঋণখেলাপি হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ উচ্চ সুদহার।

বাংলাদেশ নিয়ে পূর্বাভাসে বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি হতে পারে। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশের বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫.১ শতাংশের বেশি হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে দেশের সরকারি ঋণ কিছুটা পরিমিত হতে পারে, যা হবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০ শতাংশের কম। এ অর্থবছরে জিডিপি অনুপাতে বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারি ঋণ হবে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে পণ্য রপ্তানি, প্রাথমিক আয় ও রেমিট্যান্সের শতাংশ হিসাবে মোট বৈদেশিক ঋণ পরিষেবা ১০ শতাংশের কম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এতে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশের বেশি।

এর আগে ইআইইউয়ের আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়াও স্থান পাবে। ফলে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে।

তাতে বলা হয়, বাংলাদেশের বাজারের আকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে ইলেকট্রনিক ভোগ্য পণ্য, তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, টেলিযোগাযোগ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও গাড়ির কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে কোন দেশগুলো চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হতে পারে, তাদের নিয়ে একটি র‌্যাংকিং করেছে ইআইইউ। সেই র‌্যাংকিং বা ক্রমতালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বাদশ। এক দশক আগে ২০১৩ সালেও এমন একটি র‌্যাংকিং করা হয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫২তম। অর্থাৎ গত এক দশকে চীনের বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ১০ বছরে ৫২তম স্থান থেকে ১২তম স্থানে উঠে আসা এর প্রমাণ।

ইউক্রেনের মানবিক করিডোর দিয়ে প্রথমবারের মতো দেশটিতে যাচ্ছে দুটি জাহাজ

ইউক্রেন ঘোষিত অস্থায়ী মানবিক করিডোর ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো দুটি জাহাজ খাদ্যশস্য বোঝাইয়ের জন্য দেশটির কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। সেখানে বোঝাইকৃত খাদ্যশস্য আফ্রিকা ও এশিয়ার বাজারে রপ্তানি করা হবে। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ওলেকজান্দার কুবরাকোভ এ কথা জানিয়েছেন।

গত মাসে কৃষ্ণ সাগরে এই মানবিক করিডোরের ঘোষণা দেয় ইউক্রেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে যেসব জাহাজ দেশটির বন্দরে আটকা পড়ে ছিল, সেগুলোকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতেই মূলত এই করিডোরের ঘোষণা দেয়। তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে রাশিয়া সরে যাওয়ার পর কৃষ্ণ সাগর নতুন করে জাহাজগুলোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ইউক্রেন ঘোষিত এই করিডোরটির অবস্থান কৃষ্ণ সাগরের পশ্চিমাঞ্চলে। এটি রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া উপকূল ঘেঁষে গেছে। করিডোরটি চালুর পর থেকে এখন পর্যন্তপাঁচটি জাহাজ ওডেসা বন্দর ছেড়ে গেলেও ইউক্রেন অভিমূখে জাহাজ যাচ্ছে এবারই প্রথম।

কুবরাকোভ জানান, জাহাজ দুটির নাম রেজিলিয়েন্ট আফ্রিকা ও আরোয়াত। বাল্ক ক্যারিয়ার দুটি ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে প্রায় ২০ হাজার টন গম নিয়ে আফ্রিকা ও এশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গত বছর চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দেশটির ভোক্তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন পণ্য কেনাকাটা কমিয়ে দেন। তার প্রভাবে বিদায়ী ২০২২–২৩ অর্থবছরে এই বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যায়। তবে চলতি অর্থবছরে রপ্তানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গত দুই মাসে এই বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান দিয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৭৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি। গত বছরের প্রথম দুই মাসে ১৪১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। এ দেশের রপ্তানি হওয়া মোট পোশাকের ১৮ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। গত ২০২২-২৩ অর্থবছর বাজারটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৮৫২ কোটি ডলারের। এই রপ্তানি তার আগের বছরের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ কম। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ৯০১ কোটি ডলারের পোশাক।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নেও (ইইউ) বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছর এই বাজারে ২ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। তখন প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে ইইউতে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৯ দশমিক ১৪ শতাংশ। এই বাজারে রপ্তানি হয়েছে ৯৭ কোটি ডলারের পোশাক। গত বছরের জুলাই-আগস্টে যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়েছিল ৮১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। আরেক প্রচলিত বাজার কানাডায় গত দুই মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৪ কোটি ডলারের পোশাক। দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২২ শতাংশ।

এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে অপ্রচলিত বাজারেও তৈরি পোশাকের রপ্তানি ২২ শতাংশ বেড়েছে। সম্মিলিতভাবে রপ্তানি হয়েছে ১৪৭ কোটি ডলারের পোশাক। তার মধ্যে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছে জাপানে, ২৯ কোটি ডলার। দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ শতাংশ। অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ২২ কোটি ডলারের পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৮ কোটি ডলারের পোশাক। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ কম।

লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল শিপিং উইকে প্রাধান্য পেয়েছে ডিকার্বনাইজেশন

বৈশ্বিক সমুদ্র শিল্পের প্রায় ৩০ হাজার শীর্ষ প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো দশম লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল শিপিং উইক (এলআইএসডব্লিউ)। ১১-১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে শিপিং খাতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগকে গতিশীল করা এবং তহবিল সংগ্রহের মতো বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

এবারের লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল শিপিং উইকের প্রতিপাদ্য ছিল ‘শোকেস ফর গ্রিন শিপিং’। প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়োজনটিতে পরিবেশবান্ধব সমুদ্র পরিবহন খাত বিনির্মাণে সবুজ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

মেরিটাইম ইউকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্রিস শির্লিং-রুক জানান, ডিকার্বনাইজেশন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখতে হলে শিপিং খাতসংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একত্রে কাজ করতে হবে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে হলে মেরিটাইম খাতকে সরকারগুলোর সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করতে হবে এবং সরকারগুলোকেও এই খাতের অংশীজনদের পাশে থাকতে হবে। সমুদ্র পরিবহন খাতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে রূপান্তর প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলে মনে করেন তিনি।

পরিবেশবান্ধব জ্বালানি তুলনামূলক ব্যয়বহুল হওয়ায় সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তর প্রক্রিয়া বেশ খরুচে। অধিকাংশ ভোক্তা বাড়তি এই খরচ বহন করতে রাজি। তবে কনটেইনার শিপিংয়ের ক্ষেত্রে জাহাজ মালিক ও সেবা গ্রহণকারীদের পারষ্পারিক সম্পর্কে স্বচ্ছতা না থাকায় ডিকার্বনাইজেশন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রক্রিয়া নিরবচ্ছিন্ন করতে আইএমও ২০২০ সালফার নিয়ন্ত্রণ নীতির মতো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন।

পারস্য উপসাগরে আবারও বিদেশী পতাকাবাহী জাহাজ আটক ইরানের

জ্বালানি চোরাচালানের অভিযোগ এনে পারস্য উপসাগর থেকে আরও দুটি বিদেশী জাহাজকে আটক করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোয় এই ঘটনাকে ‘তেলের ট্যাংকার আটক’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এগুলো আন্তর্জাতিক রুটে তেল পরিবহনকারী কোনো ট্যাংকার নয়। বরং এগুলো ছোট আকারের আঞ্চলিক জাহাজ হয়ে থাকতে পারে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইরান পারস্য উপসাগর থেকে কয়েকটি বিদেশী জাহাজ আটক করেছে। প্রতিবারই তারা অবৈধভাবে তেল পরিবহনের অভিযোগ এনেছে জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) নেভির একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে তাসমিন নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পানামায় নিবন্ধিত জাহাজ স্টিভেন ও তাঞ্জানিয়ায় নিবন্ধিত ক্রোনকে আটক করা হয়েছে। জাহাজ দুটি ইরানের তেল ও গ্যাস পাচার করার চেষ্টা চালাচ্ছিল।

কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, আইনি সংস্থার আদেশক্রমে প্রক্রিয়া মেনেই জাহাজ দুটিকে আটক করা হয়েছে। এ সময় সেগুলোয় মোট ৩৭ জন ক্রু ছিলেন। তাদের বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।