Home Blog Page 14

বে টার্মিনাল এলাকায় তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণ হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

‘তেল ও গ্যাস টার্মিনাল’ নির্মাণ সংক্রান্ত বৈঠকে সভাপতিত্ত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

গ্যাস ও জ্বালানি তেলের আমদানি, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মেগা প্রকল্প বে-টার্মিনাল এলাকায় তেল ও গ্যাস টার্মিনাল নির্মাণ হতে যাচ্ছে। এ টার্মিনাল দেশে আপদকালীন সময় জ্বালানি তেলের সংকট মোকাবেলায় গ্যাস ও জ্বালানির স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি এবং তরল জ্বালানি ও ভোজ্য তেল সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ ব্যবস্থায় সহায়ক হবে।

১৪ সেপ্টেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘তেল ও গ্যাস টার্মিনাল’ নির্মাণ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী, ইস্ট কোস্ট গ্রুপ কোম্পানির চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ‘তেল ও গ্যাস টার্মিনাল’ নির্মাণে পজিটিভ আছি। দেশের সার্বিক অর্থনীতির কথা চিন্তা করে দ্রুত এ টার্মিনাল নির্মাণ করা উচিৎ। এটি নির্মিত হলে বন্দরগুলোও বেনিফিট পাবে।

‘তেল ও গ্যাস টার্মিনাল’ নির্মাণে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন।

টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে হাইড্রোকার্বন ও নবায়নযোগ্য সেক্টরে সক্রিয় দেশের অন্যতম বৃহৎ ইস্ট কোস্ট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইসি হোল্ডিংস লিমিটেড। বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় ‘তেল ও গ্যাস টার্মিনাল’ স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ইস্ট কোস্ট গ্রুপের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই এমওইউ’র আলোকে বন্দরের বে-টার্মিনাল এলাকায় সংরক্ষিত জমি থেকে ‘তেল ও গ্যাস টার্মিনালের’ জন্য দু’শত একর জমিতে রেফ্রিজারেটেড এলপিজি টার্মিনাল, ল্যান্ড বেইজড এলপিজি টার্মিনাল, পেট্রোকেমিক্যাল প্রসেসিং টার্মিনাল, পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট স্টোরেজ টার্মিনাল, ভেজিটেবল অয়েল টার্মিনাল স্থাপনের জন্য কারিগরি সম্ভাব্যতা ও বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ করে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি-বিদেশি বিনিয়োগসহ মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ঘূর্ণিঝড় ও প্রলয়ংকরী বন্যায় মৃত্যুপুরী লিবিয়ার বন্দরনগরী দারনা

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) লিবিয়ার উত্তর উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্নিঝড় ড্যানিয়েল। ঘূর্নিঝড়ের আঘাতে দুইটি বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় দেখা দেয় প্রলয়ংকরী বন্যা। প্রায় বিশ ফুট উঁচু ঢেউয়ের তোড়ে বহুতল ভবন, গাছপালা ও হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে ভেসে যায়।

আকস্মিক এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এক লাখ বাসিন্দার বন্দরনগরী দারনা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দারনা শহরে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে মৃত্যের সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ হাজার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দারনার মেয়র আবদুলমেনাম আল-গাইথি।

লিবিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার পর সমুদ্র থেকে শত শত লাশ ভেসে আসছে। বিপুল সংখ্যক লাশের পরিচয় শণাক্ত করে অ্যন্তোষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। লাশের জন্য দাফনের কাপড় এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে লাশবাহী ব্যাগও যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। মৃতদের অনেককে গণকবরে সমাহিত করা হচ্ছে। যেসব লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি কর্তৃপক্ষ তাদের ছবি সংগ্রহ করে রাখছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) জানায়, এখনো অন্তত দশ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোতে জীবিত মানুষের অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে গোটা শহরটা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ায় উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

অন্যদিকে ঘূর্নিঝড় কারণে শনিবার সতর্কতামূলকভাবে লিবিয়ার তেল পরিবহনকারী প্রধান চারটি বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্দর প্রতিনিধি আল ওমরান জানান, মঙ্গলবার পূর্বাঞ্চলীয় ব্রেগা, এস সিদ্রা ও রাস লানুফ বন্দর এবং বুধবার (আজ) জুইতিনা বন্দর পুনরায় চালু করা হয়েছে।

ওপেকের তেল উৎপাদনের ঘাটতি এবং ঘূর্নিঝড়ে লিবিয়ার বন্দরগুলোর কার্যক্রম দীর্ঘ মেয়াদে বন্ধ থাকার আশঙ্কায় তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। বিগত দশ মাসের মধ্যে বুধবার তেলের দাম সর্ব্বোচ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

মিথানল উৎপাদনে নতুন কোম্পানি চালু এপি মোলার-মায়েরস্কের

সমুদ্র পরিবহন খাতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে গ্রিন মিথানল ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে অনেকদিন ধরে। এই জ্বালানির উৎপাদন, সংরক্ষণ ও সরবরাহ অবকাঠামোর উন্নয়ন, সম্ভাবনা ও উপযোগিতা নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে জোরেশোরে। এমন কর্মতৎপরতার মধ্যেই নতুন একটি ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিপিং অপারেটর মায়েরস্কের সিংহভাগ মালিকানাধারী ডেনিশ শিল্পগ্রুপ এপি মোলার হোল্ডিং (এপিএমএইচ)।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা নতুন একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে, যেটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্রিন মিথানল উৎপাদন করবে। সম্প্রতি মিথানলচালিত বিশ্বের প্রথম কনটেইনার জাহাজের নামকরণ অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।

এপিএমএইচ জানিয়েছে, নতুন কোম্পানিটির নাম সিটুএক্স। এটি মিশরের সুয়েজ খালের নিকটবর্তী একটি প্রকল্প, স্পেনের হুয়েলভাসহ বেশ কয়েকটি অবস্থানে বাণিজ্যিক মাত্রায় গ্রিন মিথানল তৈরি করবে। কোম্পানিটিতে মায়েরস্কের মালিকানা থাকবে ২০ শতাংশ।

গ্রিন মিথানল প্রথাগত জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় কনটেইনার জাহাজের কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ ৬০ থেকে ৯৫ শতাংশ কমাতে পারে। ২০৫০ সাল নাগাদ শিপিং খাতকে নিঃসরণমুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম এই সবুজ জ্বালানিটি।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিএনভির পূর্বাভাস বলছে, ২০২৮ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে মিথানলচালিত জাহাজের বহর চলতি বছরের ৩০টি থেকে বেড়ে দুই শতাধিক হতে পারে। এই সংখ্যক জাহাজের চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় মিথানল উৎপাদনের অবকাঠামো নির্মাণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে মায়েরস্কের সদরদপ্তরে সম্প্রতি বিশ্বের প্রথম মিথানলচালিত কনটেইনার জাহাজের নামকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত জুলাইয়ে কোরীয় শিপইয়ার্ডের কাছ থেকে জাহাজটি বুঝে পায় মায়েরস্ক। ১৭২ মিটার দীর্ঘ ২ হাজার ১৩৬ টিইইউ কনটেইনার পরিবহনে সক্ষম জাহাজটির নাম রাখা হয়েছে লরা মায়েরস্ক।

খরা অব্যাহত থাকলে জাহাজ চলাচল আরও কমিয়ে আনবে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ

চলমান খরা দীর্ঘায়িত হলে জাহাজ চলাচল আরো কমিয়ে আনবে পানামা খাল। ১২ সেপ্টেম্বর পানামা খাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এ কথা জানায়।

বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৫ শতাংশ পানামা খাল দিয়ে পরিবাহিত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে খরার কারণে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে জাহাজ চলাচলের পরিমাণ এবং ড্রাফট লেভেল কয়েক দফা কমিয়েছে। ড্রাফট লেভেল কমানোয় জাহাজগুলোকে বাধ্য হয়ে সীমিত পরিমাণ কার্গো বহন করতে হয়। এতে পণ্য পরিবহন খরচ দিনদিন বেড়েই চলেছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে সম্প্রতি ভোক্তাদের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলমান পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। 

স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ৩৬টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করলেও বর্তমানে এই সংখ্যা ৩২ এ নেমে এসেছে। অন্যদিকে ড্রাফটের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ থেকে কমিয়ে ৪৪ ফুট করা হয়েছে। জাহাজ চলাচলের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে জাহাজজট। যানজট নিরসণের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি গাতুন লেকের পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে।

পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনায় জাহাজজট আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর আগস্টের শুরুতে ১৬০টি জাহাজ অপেক্ষমাণ অবস্থায় থাকলেও মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই সংখ্যা ১১৬তে নেমে এসেছে।

পানামা ক্যানেল অথরিটির প্রধান রিকোর্তে ভাসকেজ জানান, সীমিত সংখ্যক কার্গো বহন করলে শিপিং কোম্পানিগুলোর পণ্য পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পায়। খরার প্রকোপ বাড়লে শিপিং কোম্পানিগুলোর ব্যয় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিবেচনা করে ড্রাফট লেভেল না কমিয়ে জাহাজ চলাচলের সংখ্যা সীমিত করা হবে জানান তিনি। তবে এখনই (চলতি মাসে) জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণের কোন পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের নেই।

চলতি বছর এল নিনোর মারাত্মক প্রভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের তাপমাত্রা। অন্যদিকে সামনের দিনগুলোতে বৃষ্টির কোন সম্ভবনাও নেই। এমতাবস্থায় অক্টোবরে শুরু হওয়া অর্থবছরে কঠোরভাবে জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ। সেসময় দৈনিক ৩০ থেকে ৩১ টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করবে বলে পূর্বাভাস ব্যক্ত করেন ভাসকেজ।

প্রলম্বিত খরা

গাতুন লেক থেকে পানামা খালে পানি সরবরাহ করা হলে এই নৌপথ দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেপ্টেম্বর মাসে গাতুন লেকে পানির স্তর সাধারণত ২৬ দশমিক ৬ মিটার হলেও খরার কারণে বর্তমানে সেটা ২৪ দশমিক ২ মিটারে নেমে এসেছে।

ভাসকেজ বলেন, টানা বারো মাস খরা চলমান থাকলে বাধ্য হয়ে নিয়ম-কানুন আরো কঠোর করতে হবে। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সব সময় কার্যক্রম চালিয়ে যাবার নিশ্চয়তা প্রদান করেন তিনি। ভাসকেজের মতে, চলমান পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। সেজন্য গাতুন লেকের পানি প্রবাহের ধরণে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

অক্টোবরে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল চালুর সম্ভাবনা

পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল চালু হতে যাচ্ছে আগামী অক্টোবরে। এর ফলে বড় জাহাজ থেকে সড়কপথে বন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন শুরু হবে। টার্মিনালটি চালু হলে পায়রা বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। চলতি বছর ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পর মাদার ভেসেলগুলো পায়রা বন্দরের পাশের পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটি ব্যবহার শুরু করে।

এ বিষয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আজিজুর রহমান বলেন, বন্দরের প্রথম টার্মিনালে পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দিনরাত কাজ করছে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

তিনি আরও বলেন, রাবনাবাদ চ্যানেলের চারিপাড়ায় এ টার্মিনালে একই সঙ্গে ২০০ মিটারের তিনটি মাদার ভেসেল ভেড়ানোর সক্ষমতা থাকবে। এ ছাড়া, ৬৫০ মিটার দীর্ঘ মূল টার্মিনাল, তিন লাখ ২৫ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড ও ১০ হাজার বর্গমিটার সিএফএস সুবিধা থাকছে এতে।

পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ শেষে গত ২৬ মার্চ দেশের গভীরতম চ্যানেলটি বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে বিদেশি ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি লুন। এর পর থেকে বন্দরের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ভিড়তে শুরু করে ১০ দশমিক ৫০ মিটার ড্রাফটের পণ্যবাহী জাহাজ।

বন্দরের ইনার-আউটার বারে মার্কিং ও বয়া বাতি বসানো হয়েছে। ইনার বারে ১৫টি জাহাজ রাখা যাবে। সেখানে লোডিং-আনলোডিং কার্যক্রম চলবে।

বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বেশ কয়েকজন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বন্দরের কনফারেন্স রুমে ওই সভায় বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রেইড ফরোয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশন ও বন্দরের সীমানার মধ্যে ঘাটগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

পায়রা বন্দরের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত সফলভাবে ৩৩৯টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ, এক হাজার ৪৫৯টি দেশীয় লাইটারেজ জাহাজসহ মোট এক হাজার ৭৯৮টি জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম শেষ করেছে। এ থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ৯১৩ কোটি ১৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭২ টাকা রাজস্ব আয় করেছে।

বিএসবিওএ’র নতুন কমিটি

শামসুজ্জামান রাসেল

বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিওএ) দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন একেএম শামসুজ্জামান রাসেল। এ ছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম ও আসাদ খান দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সম্প্রতি নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান তারেক কামাল, সদস্য আনোয়ার হোসেন মজুমদার শিমুল ও সদস্য আশীষ ভট্টাচার্য নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন। কমিটিতে নির্বাচিত পরিচালকরা হলেন- জসিম উদ্দীন ভূঁইয়া, মো. নাছির উদ্দিন, খলিলুর রহমান নাহিদ, নুর-উন-নবী ইমরান, মোহাম্মদ দস্তগীর, জহির উদ্দিন জুয়েল, হাজী জান-ই-আলম, জুবায়ের হাসান চৌধুরী ও ফুয়াদ হাসান ইরাম।

সমুদ্রপথে বিশ্বের সর্ববৃহৎ উদ্ধার অভিযান

৯ই সেপ্টেম্বর, ২০০১। গ্রীষ্মের শেষে এক রৌদ্রকরোজ্জ্বল সকাল। অন্যসব দিনের মতোই আলস্য ভেঙ্গে একটু একটু করে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠছিলো ম্যানহাটন। আচমকা সকালের সেই নীরবতা ভেঙ্গে দিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর টাওয়ারে (৯৩ থেকে ৯৯ তলার মধ্যে) সজোরে আঘাত হানে একটি যাত্রীবাহী বোয়িং ৭৬৭ জেট বিমান। সময় তখন সকাল ৮টা বেজে ৪৬ মিনিট।

ম্যানহাটনবাসী ঘটনার ভয়াবহতা অনুধাবন করার আগেই সকাল ৯টা ৩ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে দ্বিতীয় দফা হামলা চালানো হয়। যাত্রীবাহী বোয়িং ৭৬৭ বিমান এবার দক্ষিণ টাওয়ারে ৭৭ থেকে ৮৫ তলার মধ্যে আঘাত হানে। মুর্হমুহু বিমান হামলায় গোটা ম্যানহাটন জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

হামলার দুই ঘন্টার মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার্স এবং আরও একটি ৪৭ তলা ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা ধুলোয় ডেকে যায়। সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় দিক বিদিক ছুটতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। নিরাপত্তার খাতিরে সাবওয়ে, টানেল, ব্রিজসহ স্থলপথে যোগাযোগের সকল পথ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ভয়াবহ সেই সময়ে ম্যানহাটনবাসী বুঝতে পারে সমুদ্রপথ ছাড়া এই দ্বীপ থেকে বেরোনোর আর কোন বিকল্প তাদের কাছে নেই। প্রায় শত বছর পর সমুদ্রপথ আবারো একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমে পরিণত হয়। আতঙ্কগ্রস্থ অনেকে দ্বীপ থেকে বেরোনোর জন্য নৌযান না পেয়ে সাগরেই ঝাপিয়ে পড়েন।

ম্যানহাটন থেকে প্রায় ১৮ মাইল দূরে অবস্থিত স্ট্যাটন আইল্যান্ডে নিজ অফিসে বসে প্রথম বিমান হামলার ঘটনাটি দেখেন কোস্ট গার্ডের লেফটেন্যান্ট মাইকেল ডে। সেসময় একটা কথা প্রচলিত ছিলো যে, বোয়িং ৭০৭ বিমানও যদি টুইন টাওয়ারে আঘাত করে সেটা কাটিয়ে উঠার সক্ষমতা ভবনটির রয়েছে। এছাড়া এ ধরনের দুর্ঘটনায় কোস্ট গার্ডের তেমন কিছু করার নেই বলে গোটা বিষয়টিকে প্রথমে খুব একটা আমলে নেননি তিনি।  তবে কাজের ফঁকে ফাঁকে টুইন টাওয়ার থেকে বেরিয়ে আসা ধোয়ার কুন্ডলি পর্যবেক্ষণ করছিলেন ডে। দ্বিতীয় বিমানটি আঘাত হানার পর দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করে।

ভবন দুটি ধ্বসে পড়ায় গোটা এলাকা ধুলোর চাদরে ঢেকে যায়। পুরু ধুলোর কারনে পোতাশ্রয়ের কিছুই তখন কোস্ট গার্ডের রাডারে দেখা যাচ্ছিলো না। আতঙ্কগ্রস্থ লোকজনের ব্যাটারি পার্কে জড়ো হবার খবর পেয়ে ম্যানহাটনে যাবার সিদ্ধান্ত নেন ডে। নিকটবর্তী একটি ডক থেকে স্যান্ডি হুক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন ক্রু এবং পাইলটকে সাথে নিয়ে লোয়ার ম্যানহাটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। সেসময় ডে ধারণাও করেননি যে, পরবর্তী কয়েক ঘন্টায় পৃথিবীর ইতিহাসে সমুদ্রপথে পরিচালিত সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে যাচ্ছেন তিনি।

১৮৪ ফুট দীর্ঘ পাইলট শিপ নিউ ইর্য়ক নিয়ে ডে যখন ব্যাটারি পার্কে পৌঁছান ততক্ষণে অনেকগুলো জাহাজ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে রেডিওতে সাহায্যবার্তা প্রচারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। লোয়ার ম্যানহাটনের উদ্ধারকার্যে অংশগ্রহণের জন্য আশপাশে থাকা সকল নৌযানকে গর্ভনরস আইল্যান্ডে রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে নানা ধরনের, নানা আকারের নৌযান পোতাশ্রয়ে জড়ো হতে থাকে।

লঞ্চ, মাছ ধরা জাহাজ, পর্যটন জাহাজ, ক্রুজ শিপসহ নানা আকারের ১৩০টির বেশি নৌযান উদ্ধারকারী নৌবহরে যুক্ত হয়। সেসঙ্গে ৩৩টি ফেরি, ৫০টি টাগবোট এবং নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, নিউইয়র্ক সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট ও কোস্ট গার্ডের অসংখ্য উদ্ধারকারী জাহাজ অভিযানে যুক্ত হয়।

উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া অ্যাম্বারজ্যাক ভিয়ের ক্যাপ্টেন ভিনসেন্ট আরদোলিনো বলেন, ‘টেলিভিশনে ঘটনাটা দেখে প্রথমে আমার মনে হচ্ছিলো হয়ত কোন সিনেমার দৃশ্য দেখছি। পরে খেয়াল করে দেখলাম টুইন টাওয়ারে হামলা চালানো হয়েছে। ভয়ে আতঙ্কে দিশেহারা মানুষ যেকোন উপায়ে তখন ম্যানহাটন ছাড়তে চাচ্ছেন। কিন্তু সমুদ্রপথ ছাড়া আর কোন যাতায়াতের রাস্তা খোলা নেই। মানুষের সেই চরম বিপদের মুহুর্তে আমার পক্ষে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা সম্ভব হয়নি।’ টেলিভিশনে অন্যান্য নৌযানকে উদ্ধারকার্যে অংশ গ্রহণ করতে দেখে আরদোলিনোও তাতে সামিল হন।

আরদালিনোর মতো সাধারণ নাবিক এবং জেলেরাই সেদিন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধার করে ব্রুকলিন, স্ট্যাটন আইল্যান্ড এবং নিউ জার্সিতে পৌঁছে দেন তারা। ব্যাটারি পার্ক, পোতাশ্রয়, পিয়ার ১১ ও ওয়াল স্ট্রিট টার্মিনালে উদ্ধারকারী নৌযানগুলোর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ডে এবং স্যান্ডি হুকের পাইলটররা সেদিন ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেন।

অংশগ্রহণকারী জাহাজগুলো সেদিন নানা নিয়ম-কানুন ভেঙ্গে উদ্ধারকার্য পরিচালনা করেন। নাবিক থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনীর সদস্য সবাই সেদিন মানুষের প্রাণ রক্ষাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় মাত্র নয় ঘন্টায় প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করা হয়।

কোস্ট গার্ড ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা আহত নাগরিকদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নিউ জার্সি, স্ট্যাটন আইল্যান্ড এবং অন্যান্য নিকটবর্তী স্থানে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। ডে জানান, আহতদের সেবা দিতে এলিস আইল্যান্ড সেদিন ৪০টির বেশি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করে রেখেছিলো। ধীরে ধীরে লোয়ার ম্যানহাটন থেকে সকল নাগরিকদের সরিযে নেওয়ার পর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উদ্ধারকারী নৌযানে করে নিউ জার্সি থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং উদ্ধারকারী দল ম্যানহাটনের আসতে শুরু করে।

সারাদিনের ক্লান্তিকর অভিযান শেষে সেদিন সন্ধ্যায় লেফটেন্যান্ট ডে এবং স্যান্ডি হুকের পাইলটেরা যখন প্রথমবারের মতো লোয়ার ম্যানহাটনে প্রবেশ করেন চারপাশের ধ্বংসযজ্ঞ তখন তাদের হতবিহ্বল করে দেয়। ছাইয়ে ঢাকা গোটা এলাকা তাদের কাছে অচেনা মনে হয়। ডে বলেন, সেদিন দিনভর আমরা কয়েক লাখ মানুষকে উদ্ধার করেছি কিন্তু সেই ধ্বংসস্তুপে পৌঁছানোর পর যেসব হতভাগ্য মানুষ সেদিন প্রাণ হারিয়েছেন তাদের হাহাকারটাই আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিলো।

সময়ের পরিক্রমায় ৯/১১ হামলার ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও দুর্বিষহ সেই দিন এখনো মার্কিনীদের বুকে রক্তক্ষণ ঘটায়। প্রতি বছর এই দিনে হাজার হাজার মানুষ টুইন টাওয়ার হামলায় নিহত ২ হাজার ৭৬৩ জনের স্মরণে রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের জন্য প্রার্থনার আয়োজন করেন।

তবে এত বছর পেরিয়ে গেলেও সেদিনের সেই মানবিক উদ্ধার অভিযান, সাধারণ মানুষের একে অপরকে সাহায্য করার আদিম প্রবৃত্তি, কোস্ট গার্ড ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরলস পরিশ্রম এবং সর্বোপরি সম্ভাব্য হামলার ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ নাবিক ও জেলেদের পরিচালিত সেই দুঃসাহসী কমর্যজ্ঞ অনেকটাই প্রচারের আলোর বাইরে রয়ে গেছে।

এখনো অনেকেই জানেন না যে, সমুদ্র পথে পরিচালিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযান কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ছাড়া স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিচালিত হয়েছিলো। একই দিনে সেদিন বিশ্ববাসী ঘৃণা ও ভালোবাসার এক অনন্য নির্দশন পরিলক্ষীত করে। তবে বরাবরেই মতো সেদিনও ভালোবাসা, মানবিকতাই জয়ী হয়। মানুষের প্রতি মানুষের সেই অকৃত্রিম ভালোবাসাই হাজার বছর ধরে পৃথিবীর বুকে মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রেখেছে।

খাদ্যশস্য রপ্তানিতে ক্রোয়েশিয়ার বন্দর ব্যবহার করছে ইউক্রেন

কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে। কিন্তু গত বছর রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর একদফা এবং জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে মস্কোর পিছু হটার পর আরেকদফা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বন্দরগুলো। এতে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানিও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিকল্প রপ্তানি রুট খুঁজছে কিয়েভ। এরই অংশ হিসেবে ক্রোয়েশিয়ার সমুদ্র বন্দরগুলো ব্যবহার করে শস্য রপ্তানি শুরু করেছে ইউক্রেন। দেশটির কর্মকর্তারা সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছেন।

গত জুলাইয়ের শেষের দিকে ক্রোয়েশিয়া সফর করেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা। এ সময় তিনি জানান, দানিয়ুব নদী ও আদ্রিয়াটিক সাগরের তীরে ক্রোয়েশিয়ার বন্দরগুলো ব্যবহার করে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির সম্ভাবনার বিষয়ে দেশদুটি একমত হয়েছে।

সম্প্রতি এক লিখিত বিবৃতিতে ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ইউলিয়া ভিরিদেঙ্কো বলেছেন, ‘ইউক্রেন এরই মধ্যে ক্রোয়েশিয়ার বন্দরগুলো দিয়ে শস্য রপ্তানি শুরু করেছে। এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’ অবশ্য ঠিক কী পরিমাণ শস্য এখন পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া হয়ে রপ্তানি হয়েছে, সেটি জানাননি ইউলিয়া।

ইউক্রেনের খাদ্যশস্যের কিছু চালান রেলপথে ইউরোপীয় বন্দরগুলোয় পাঠানো হচ্ছে। তবে দেশটির ব্রোকাররা জানান, সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পাঠাতে যে খরচ হয়, তার চেয়ে এই প্রক্রিয়া বেশি ব্যয়বহুল।

ইউক্রেনিয়ান গ্রেইন অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাভাস বলছে, চলতি বছর দেশটির খাদ্যশস্য ও তেলবীজ উৎপাদন ৮ কোটি টন ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে প্রায় ৫ কোটি টন চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে রপ্তানি করা যাবে। ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, চলতি মৌসুমের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটি থেকে মোট ৪৫ লাখ টন খাদ্যশস্য ও তেলবীজ রপ্তানি হয়েছে।

উপকূলের সুরক্ষা নিয়ে গবেষণায় নতুন প্রতিষ্ঠান চালু সিঙ্গাপুরে

উপকূল রক্ষা ও বন্যা ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ পেশাজীবী তৈরির লক্ষ্যে নতুন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে সিঙ্গাপুর। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির সমস্যা মোকাবিলায় দেশীয় জনবলের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন করা হয়।

২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর নিচু ভূমি, সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বেড়ে যাওয়া এবং দৈনিক জোয়ার-ভাটার মতো প্রভাবক যুক্ত হলে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাণ ৪ থেকে ৫ মিটারে উন্নীত হতে পারে।

সিঙ্গাপুরের জাতীয় ওয়াটার এজেন্সি পিইউবি ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের (এনইউএস) যৌথ উদ্যোগে কোস্টাল প্রটেকশন অ্যান্ড ফ্লাড রেজিলিয়েন্স ইনস্টিটিউট (সিএফআই সিঙ্গাপুর) নামের নতুন প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়েছে। পিইউবির প্রধান নির্বাহী গোহ সি হোউ জানান, সংস্থাটির ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের কোস্টাল প্রটেকশন অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট রিসার্চ প্রোগ্রামের কেন্দ্রে রয়েছে এই ইনস্টিটিউট।

২০৩০ সাল নাগাদ মোট পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ৩০-৪০% লাগবে শিপিং খাতে : ডিএনভি

২০৩০ সাল নাগাদ সমুদ্র পরিবহন খাতে বার্ষিক ১ কোটি ৭০ লাখ টন তেলের সমপরিমাণ পরিবেশবান্ধব জ্বালানির চাহিদা তৈরি হবে, যা হবে বিশ্বজুড়ে মোট পরিচ্ছন্ন জ্বালানি চাহিদার ৩০-৪০ শতাংশ। ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি ডিএনভির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ‘মেরিটাইম ফোরকাস্ট টু ২০৫০’-তে এ কথা বলা হয়েছে।

ডিএনভি বলছে, কার্বনমুক্ত জ্বালানি প্রাপ্যতায় আকাশ ও সড়ক পরিবহনসহ আরও কিছু খাতের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে সমুদ্র পরিবহন খাতকে। এ অবস্থায় খাতটিতে নিঃসরণ কমানোর যে লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও), তা পূরণ করতে হলে সবুজ জ্বালানির উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়াতে হবে।

নিঃসরণ কমানোর পথে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি প্রাপ্যতার এই যে প্রতিবন্ধকতা, তা দূর করতে জাহাজ পরিচালনায় জ্বালানি কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে ডিএনভি। এয়ার লুব্রিকেশন সিস্টেম ও উইন্ড অ্যাসিস্টেড প্রপালশনের মতো প্রযুক্তি এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এরই মধ্যে ২৮টি বড় জাহাজে বাতাসের শক্তি কাজে লাগানো যায় এমন প্রপালশন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ৫-৯ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের প্রমাণ মিলেছে। জাহাজগুলোয় এই প্রযুক্তির সর্বব্যাপী ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে জ্বালানি সাশ্রয়ের হার ২৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছে।