Home Blog Page 17

দার্দানেলসে জাহাজ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা

উপকূলীয় বনভূমিতে তৈরি হয়েছে তীব্র দাবানল। নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে আগুন দ্রুত তীরবর্তী শহরের দিকে ছুটে আসছে। এ অবস্থায় সম্ভাব্য বিপদ থেকে সুরক্ষার জন্য দার্দানেলস প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে তুরস্কের কর্তৃপক্ষ।

দেশটির উপকূলীয় নিরাপত্তা অধিদপ্তর (কেইজিএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দাবানল খুব দ্রুত চানাক্কালে শহরের দিকে এগুচ্ছে। শহরটি দার্দানেলস প্রণালীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। সেই জায়গায় প্রণালীটির প্রশস্ততা সবচেয়ে কম। এই অবস্থায় জাহাজ চলাচল করতে গিয়ে যেন কোনো বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেই সাবধানতা থেকেই সাময়িক সময়ের জন্য প্রণালীটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দাবানল নিয়ন্ত্রণের জন্য হেলিকপ্টারে করে সাগরের পানি নিয়ে উপদ্রুত এলাকায় ছিটানো হচ্ছে। এর পরও যদি কোনোভাবে দাবানল প্রণালীর তীরের কাছে চলে আসে, তখন আগুন নেভানোর কাজে সহায়তার জন্য ফায়ারবোট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এজিয়ান ও মর্মর সাগরকে যুক্তকারী দার্দানেলস আন্তর্জাতিক শিপিং রুট হিসেবে ব্যবহৃত বিশ্বের সরু প্রাকৃতিক প্রণালীগুলোর একটি। কোথাও কোথাও এর প্রশস্ততা আধা মাইলের কিছু বেশি। কৃষ্ণ সাগর ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে চলাচলকারী জাহাজগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট হলো এই প্রণালী।

তুরস্কের বন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চানাক্কালে প্রদেশের অন্তত নয়টি শহর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে নয় মাইল লম্বা একটি ফায়ার লাইন তৈরি করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২২ আগস্ট স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মোট ২৯টি জায়গায় আগুন লাগে, যার মধ্যে ২৬টি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু বাকি তিনটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে দাবানলের আকার ধারণ করে।

চট্টগ্রাম বন্দরে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানোর পরিকল্পনা

রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, ওএসপি, এনইউপি, পিপিএম, পিএসসি

২০২৪ সালের মধ্যে ১১ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাছাইয়ের কাজ চলছে। এখন জেটিতে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারে। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের অনেক বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে। এ কারণে নদীর গভীরতা দিন দিন কমছে। অনেক বর্জ্য আমরা সরিয়েছি। এটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। আগামী বছরের মধ্যে ১১ মিটার বা সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বন্দর জেটিতে ভেড়ানো সম্ভব হবে আশা করি। এর জন্য নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে দিন নেই, রাত নেই, কোনো হলিডে নেই। ২৪ ঘণ্টা সাত দিন সচল থাকে। আমাদের বন্দর সারাবিশ্বে সমাদৃত। বিভিন্ন দেশ ব্যাপক বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আগামী তিন বছরে ৫-৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে আশা করি। একইসাথে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো।

রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ডিসেম্বরে বন্দরের নতুন কেমিক্যাল শেড চালু করা সম্ভব হবে, বহুতল কারশেড নির্মিত হয়েছে। পিসিটি পরীক্ষামূলক চলছে। বে টার্মিনাল ও এর ব্রেক ওয়াটারের ডিজাইনের কাজ শেষ পর্যায়ে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে শিগগিরই। এখন টেন্ডার নেগোসিয়েশনের কাজ চলছে। সরকারের অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করতে পারব।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিকনির্দেশনায়, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ দেশের সমুদ্রপথে বহির্বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

মতবিনিময়কালে বন্দরের পর্ষদ সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. হাবিবুর রহমান, সদস্য (অর্থ) মো. শহীদুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশিদ ও সচিব মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

এইচএমএম অধিগ্রহণের বিষয়ে চিন্তা করছে হ্যাপাগ-লয়েড

হ্যাপাগ লয়েড ও এইচএমএম; প্রথমটি বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ সমুদ্র পরিবহন সংস্থা, আরেকটি অষ্টম। এখন এই দুটি সত্তার এক হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ কোরীয় শিপিং অপারেটর এইচএমএমে থাকা নিজেদের সিংহভাগ শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। আর এই শেয়ারই কিনে নেয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে তাদের জার্মান প্রতিদ্বন্দ্বী হ্যাপাগ-লয়েড।

দক্ষিণ কোরিয়ার একমাত্র বৈশ্বিক কনটেইনার ক্যারিয়ার হিসেবে টিকে রয়েছে এইচএমএম। এর সিংহভাগ শেয়ার রয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত কোরিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (কেডিবি) ও সরকারি মেরিটাইম ফিন্যান্স কোম্পানি কোরিয়া ওশান বিজনেস করপোরেশনের কাছে। ২০১৬ সালে দক্ষিণ কোরীয় অপারেটর হানজিন শিপিংয়ের পতনের পর এইচএমএমের সরকারি বেইলআউট কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মালিকানা পায় তারা।

কনভার্টিবল বন্ড শেয়ারে পরিণত হওয়ায় উভয় প্রতিষ্ঠান এইচএমএমের ৭৫ শতাংশ শেয়ারের সমান ভাগ পায়। এর মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

এইচএমএমের এই নিয়ন্ত্রণমূলক শেয়ার বিক্রির নিলাম চলতি মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। হ্যাপাগ-লয়েড জানিয়েছে, নিলামে অংশগ্রহণের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখছে তারা। অবশ্য এক্ষেত্রে তাদের সামনে কিছু প্রতিযোগী থাকবে। এরই মধ্যে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাদের সবাই দক্ষিণ কোরিয়ার। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-ছোট শিপিং ক্যারিয়ার এসএম লাইনের মালিক এসএম গ্রুপ, বাল্কার ফার্ম প্যান ওশানের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হারিম, লজিস্টিকস ফার্ম এলএক্স হোল্ডিংস ও ডংওন গ্রুপ এবং ভোগ্যপণ্য রপ্তানিকারক গ্লোবাল সায়-এ।

পেঁয়াজের আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ বিটিটিসির

ভারত অভ্যন্তরীণ বাজার সামাল দিতে গত শনিবার পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। তাতে দেশের বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম যেন অস্বাভাবিকভাবে না বাড়ে, এ জন্য পেঁয়াজের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।

বিটিটিসির পক্ষ থেকে সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাণিজ্যসচিব বরাবর এক চিঠি দিয়ে এই সুপারিশ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্যে স্থিতিশীলতা আনার জন্য পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে। বিটিটিসির চিঠিতে বিকল্প উৎস থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিটিটিসির চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সাধারণত দেশে প্রতিবছর আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পেঁয়াজের আমদানি বৃদ্ধি পায়। ১৯ আগস্ট ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ শুল্ক বহাল থাকবে। বর্তমানে ভারতে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের দাম ২৮০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার। নতুন শুল্ক আরোপের ফলে এ দাম বেড়ে দাঁড়াবে ৪০০ থেকে ৪২০ মার্কিন ডলার। তাতে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা বিটিটিসির। কারণ, দেশের বাজারে প্রতিবছর যে ৩০ শতাংশের মতো পেঁয়াজে ঘাটতি হয়, তার প্রায় পুরোটা ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। এ জন্য ভারতের বিকল্প আমদানি উৎস হিসেবে মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য টিসিবি ও বেসরকারি আমদানিকারকদের উৎসাহিত করা যায় বলেও মন্তব্য করেছে বিটিটিসি।

বিটিটিসির হিসাবে, দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের মতো। দেশীয় কৃষকদের সুরক্ষা দিতে গত জুন পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া বন্ধ রেখেছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। তবে মে মাসের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৪০-৪৫ থেকে ৮০-৯০ টাকা হয়ে যায়। ফলে আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু হয়।

যেকোনো দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে : কৃষিমন্ত্রী

ভারত তাদের পেঁয়াজ রপ্তানি নিরুৎসাহিত করার জন্য রবিবার (২০ আগস্ট) ৪০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের বাজারে একদিনেই অনেক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা দরে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে ভারত ছাড়াও বিশ্বের যেকোনও দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপিও) দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

সোমবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা জানান।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, খোলাবাজার অর্থনীতিতে আপনি কতটা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন? এটা তো রেজিমেন্টেড সরকার না, রাশিয়া ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সরকার নয়। ইচ্ছা করলেই আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। এটা চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।

তিনি আরও বলেন, দুটি উপায়ে আমরা এ সমস্যাটা সমাধান করতে চাচ্ছি। এক হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয় হচ্ছে, পেঁয়াজকে দীর্ঘ সময় পচন থেকে রক্ষা করা।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যা সমাধানে আমাদের হাতে কিছু নেই। একটাই আছে, তা হলো অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাজার শক্তভাবে মনিটর করতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

কবে নাগাদ আমদানি করা হবে, এ প্রশ্নে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা আমদানি করে তারা কাল থেকেই করতে পারে। যে কেউ যদি ইমিডিয়েট চীন, জাপান, ইরান থেকে পেঁয়াজ আনতে চায়, আমরা তাদের আইপিও দেবো।

বাংলাদেশের রিজার্ভ থেকে ধার নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা

কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) থেকে ধার নেওয়া অর্থ ফেরত দিতে শুরু করেছে শ্রীলঙ্কা। ইতিমধ্যে ২০ কোটি ডলার ঋণের মধ্যে ৫ কোটি ডলার ফেরত দিয়েছে। ২০২১ সালের মে মাসে এক বছর মেয়াদে এই ঋণ নিয়েছিল দেশটি। দেশের গণমাধ্যমগুলো এ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর দিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, দেশটি ঋণ পরিশোধে এর আগে বারবার সময় নিলেও নতুন করে আর সময় বাড়ানো হয়নি। তারা ৫ কোটি ডলার গত বৃহস্পতিবার জমা দিয়েছে। চলতি মাসে আরও ১০ কোটি ডলার এবং আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ৫ কোটি ডলার ঋণ ফেরত দেওয়ার সূচি রয়েছে। তারা এই সূচি অনুযায়ী অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শ্রীলঙ্কার পর্যটন খাত ব্যাপক ক্ষতিতে পড়েছিল। বৈদেশিক বিনিময়ে প্রতিনিয়ত মান হারানো শুরু করে দেশটির মুদ্রা রুপি। এতে টান পড়ে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে ডলার ধার করে শ্রীলঙ্কা। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালের মে মাসে বাংলাদেশ সরকারও ২০ কোটি ডলার ধার দেয় দেশটিকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এই ডলার দেওয়া হয়।

মুজিব চিরন্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ২০২১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এসেছিলেন। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ওই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ডব্লিউ ডি লক্ষ্মণ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে ডলার চেয়ে চিঠি দেন। এরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

ফ্ল্যাগ স্টেটের শীর্ষস্থান দখলের লড়াইয়ে পানামা ও লাইবেরিয়া

গ্রস টনেজের ভিত্তিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে পানামা ও লাইবেরিয়ার মধ্যে

বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর নিবন্ধনকারী শীর্ষ দেশ (ফ্ল্যাগ স্টেট) হিসেবে জায়গা করে নেওয়ার তীব্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে পানামা ও লাইবেরিয়া। গত দুই দশক ধরে এই শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে পানামা। তবে তাদের জন্য জায়গাটি নড়বড়ে করে তুলেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়া। একটি মানদণ্ডে তারা এরই মধ্যে পানামাকে ছাড়িয়ে গেছে। তবে বাকি মানদণ্ডগুলোয় মধ্য আমেরিকার দেশটি এখনও সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে অথবা সমতায় রয়েছে।

মেরিটাইম ও শিপিং খাতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্লার্কসন রিসার্চ সম্প্রতি জুলাই মাসের বাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, মোট গ্রস টনেজের দিক থেকে নিবন্ধনকারী দেশ হিসেবে পানামাকে পেছনে ফেলেছে লাইবেরিয়া। বর্তমানের দেশটির পতাকাবাহী জাহাজগুলোর মোট গ্রস টনেজ ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টন, যা পানামার চেয়ে প্রায় ১ শতাংশ বেশি। অবশ্য দেশ দুটির বাজার অংশীদারিত্ব সমান-১৬ শতাংশ।

তবে জাহাজের সংখ্যার দিক থেকে পানামার চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে লাইবেরিয়া। পানামার বহরে রয়েছে ৮ হাজার ২০০ টির বেশি জাহাজ। অন্যদিকে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা পাঁচ হাজারের সামান্য বেশি।

এদিকে আইএইচএস মার্কিটের প্রতিবেদনে পানামা এখনো ফ্ল্যাগ স্টেটের শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, পানামায় নিবন্ধিত জাহাজগুলোর মোট গ্রস টনেজ ২৪ কোটি ৯৮ লাখ টন, যা লাইবেরিয়ার চেয়ে ১ শতাংশ বেশি। মার্কিটের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত লাইবেরিয়ার জাহাজ নিবন্ধন বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। এদিকে বছরের প্রথমার্ধে পানামার গ্রস টনেজ নিবন্ধন বেড়েছে ৫৯ লাখ টন।

এসব পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে জাহাজ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে পানামা ও লাইবেরিয়ার পরষ্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা কতখানি। উভয়েই তাদের অবস্থান আরও সুসংহত করা এবং জাহাজমালিকদের জন্য উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ দূর করার বিষয়ে উদ্যোগ নিচ্ছে। সুতরাং এ কথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে শীর্ষ ফ্ল্যাগ স্টেট হওয়ার যে প্রতিযোগিতা দেশ দুটির মধ্যে শুরু হয়েছে, তা সহসাই শেষ হচ্ছে না।

জ্বালানি রপ্তানি বাড়াতে বন্দর অবকাঠামো সম্প্রসারণ করবে নামিবিয়া

নামিবিয়ার সম্ভাবনাময় জ্বালানি খাতের বিকাশে সহায়তার জন্য বন্দর অবকাঠামো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নামিবিয়ান পোর্টস অথরিটির (নামপোর্ট) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান্ড্রু ক্যানিমে বলেছেন, এই সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ২১০ কোটি ডলারের বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে।

সম্প্রসারণের বেশিরভাগ কাজই হবে নামিবিয়ার শীর্ষ বন্দর ওয়ালভিস বে-তে। এছাড়া উপকূলীয় শহর লুদারিজেও একটি বন্দর স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটির অবস্থান হবে ওয়ালভিস বে বন্দর থেকে ২৫০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে। ক্যানিমে জানান, আগামী বছরের শেষ প্রান্তিকে বন্দর অবকাঠামো সম্প্রসারণের কাজ শুরু এবং পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার আশা করছেন তারা।

জ্বালানি কোম্পানি শেল ও টোটাল এনার্জিস সম্প্রতি নামিবিয়ার আটলান্টিক উপকূলীয় অরেঞ্জ বেসিনে বিপুল পরিমাণে তেল ও গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে। সেখানে প্রায় ৭০০ কোটি ব্যারেল তেল রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই সম্পদ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে নামিবিয়া আফ্রিকার পঞ্চম বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশে পরিণত হবে।

ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর ছেড়ে যাওয়া জাহাজ নিরাপদে তুরস্ক পৌঁছেছে

ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ ভেস্তে যাওয়ার পর রাশিয়ার গোলাবর্ষণের ঝুঁকির মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ছেড়ে যাওয়া জাহাজ জোসেফ শুলতে নিরাপদে তুরস্ক পৌঁছেছে। এদিকে তুর্কী সরকার জানিয়েছে, তারা ক্রেমলিনকে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক করেছে, যার কারণে উত্তেজনা আরও বেড়ে যেতে পারে।

চীনা মালিকানাধীন হংকংয়ের পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজটি ১৬ আগস্ট ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওডেসা ছাড়ে। কিয়েভ ঘোষিত ‘মানবিক করিডোর’ ব্যবহার করে জাহাজটি পরের দিন নিরাপদে তুরস্ক পৌঁছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই ওডেসা বন্দরে আটকে ছিল।

ইউক্রেন জানিয়েছে, তাদের বন্দরগুলোয় আটকে থাকা জাহাজগুলোর জন্যই প্রধানত এই করিডোর চালু করা হয়েছে। দেশটির দাবি, এই করিডোর যেন কোনো সামরিক কাজে ব্যবহৃত না হয়, সেই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে তারা। এর আগে ইউক্রেন জানিয়েছিল, তারা করিডোরটির পরিকল্পনা এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কাছে জমা দিয়েছে।

গত মাসে নিরাপদে খাদ্যশস্য পরিবহনের চুক্তি ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাশিয়াকে খাদ্য ও সার রপ্তানিতে সুযোগ-সুবিধা ঠিকমতো দেওয়া হচ্ছে না-এমন অভিযোগ থেকেই চুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। এর আগে গত ১৮ মে চুক্তির মেয়াদ দুই মাসের জন্য বাড়াতে সম্মত হয় রাশিয়া।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ সেনারা। এতে সমুদ্রপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিকভাবে খাদ্য সংকট ও মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়। এ সংকট দূর করতে গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তি স্বাক্ষর হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। চুক্তিটির ফলে যুদ্ধকালীন দামামার মধ্যে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে খাদ্যশস্য পরিবহনের নিরাপদ করিডোর তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু রাশিয়া সরে আসার পর থেকেই ইউক্রেনের বন্দরগুলো আবার অনিরাপদ হয়ে ওঠে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলোর পরিবর্তে রোমানিয়া হয়ে খাদ্যশস্য রপ্তানির লক্ষ্যে দানিউব নদীর তীরে অবস্থিত অভ্যন্তরীণ বন্দরগুলো ব্যবহার করতে শুরু করেছিল ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়া হামলা চালায় সেখানেও। চলতি মাসেই দানিউব তীরবর্তী ইজমাইল বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ সেনারা।

চলতি বছর ৩০ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা যোগ করবে ডিপি ওয়ার্ল্ড

বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত নিজেদের কার্যক্রমে গ্রস কনটেইনার হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা ১০ কোটি টিইইউতে উন্নীত করার পথে রয়েছে দুবাইভিত্তিক পোর্ট অপারেটর ও লজিস্টিকস জায়ান্ট ডিপি ওয়ার্ল্ড। চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রায় ৩০ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের নতুন সক্ষমতা যোগ করবে তারা।

বর্তমানে ডিপি ওয়ার্ল্ডের কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের মোট সক্ষমতা ৯ কোটি ৬ লাখ টিইইউ, যা বৈশ্বিক সক্ষমতার প্রায় ৯ শতাংশ। শীর্ষ পাঁচ বৈশ্বিক পোর্ট অপারেটরের একটি তারা।

নতুন সক্ষমতা যোগ হবে যেসব বন্দরে সেগুলো হলো-ডমিনিকান রিপাবলিকের কুসেডো বন্দরে ১২ লাখ টিইইউ, তুরস্কের ইয়ারিমকায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার, মিশরের সোখনায় ৫ লাখ ও সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে ২ লাখ টিইইউ।

এছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রার বেলাওয়ান নিউ কনটেইনার টার্মিনালের (বিএনসিটি) কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে ডিপি ওয়ার্ল্ডের। আপাতত টার্মিনালটির কনটেইনার হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা ৬ লাখ টিইইউ হলেও শিগগিরই তা ১৪ লাখ টিইইউতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির।