Home Blog Page 205

করোনা আক্রান্ত নাবিক থাকায় জাহাজ কোয়ারেন্টিনে

চীন থেকে সার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা একটি বিদেশি জাহাজের ৭ নাবিকের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় জাহাজটি থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রাখার পাশাপাশি জাহাজের সব নাবিককে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ২৪ আগস্ট নাবিকদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছে বন্দর স্বাস্থ্য বিভাগ।

বাহামাস পতাকাবাহী কার্গো জাহাজ এমভি সেরেন জুনিপার চীন থেকে ডিএপি (ডায়ামোনিয়াম ফসফেট) সারের চালান নিয়ে গত ১২ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। এরপর যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পণ্য খালাস শুরু করে। গত ২১ আগস্ট জাহাজটির ক্যাপ্টেন স্থানীয় শিপিং এজেন্টের কাছে পাঠানো এক মেইল বার্তার মাধ্যমে জাহাজের ৭ জন নাবিকের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার কথা জানায়।

বিষয়টি শিপিং এজেন্ট বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে বন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ পণ্য খালাস বন্ধ রাখা ও নাবিকদের সম্পূর্ণ কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশনা দেয়। এরপর থেকে ওই জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যায়।

পায়রাতেও ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল করতে চায় সরকার

গ্যাসসংকট কাটাতে মহেশখালীর পর এবার পায়রাতেও ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে প্রতিদিন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির জন্য দুটি টার্মিনাল বানানো হবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং বেসরকারি কোম্পানি সামিট পাওয়ার এলএনজি টার্মিনাল দুটি নির্মাণ করবে।

ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দুটির ক্ষমতা হবে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। পটুয়াখালী থেকে একটি পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে। খুলনা পর্যন্ত নির্মিত পাইপলাইনটি জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে এলএনজি টার্মিনাল দুটিকে সংযুক্ত করবে। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ সহজ হবে।

আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশে গ্যাসের ঘাটতি প্রকট আকার নেবে। এখনই উদ্যোগ না নিলে সামাল দেওয়া কঠিন হবে। এজন্য নতুন করে আবারও এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে ঘাটতি শুরুর আগেই প্রকল্প দুটির কাজ শেষ হবে।

পায়রাতে তাদের ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রটি আমদানি করা গ্যাস দিয়ে চালানো হবে। তবে সহসাই কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে না।

এর বাইরেও কোম্পানিটি খুলনায় একটি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। এনডব্লিউপিজিসিএ এর চাহিদা মিটিয়ে বাকি গ্যাস তারা পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি করবে। অন্যদিকে সামিটের টার্মিনালের পুরো গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হবে।

পায়রাতে নাব্য সংকটের কারণে বন্দরের আশপাশে টার্মিনাল নির্মাণ করা সম্ভব নয়। বন্দর জেটি থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে থাকবে টার্মিনাল দুটি। সেখান থেকে সাগরের মাঝে পাইপলাইন দিয়ে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

বর্তমানে মহেশখালীতে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। প্রতিটি টার্মিনালে এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তরের ক্ষমতা রয়েছে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সর্বোচ্চ ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত এলএনজি সরবরাহ করা হয়েছে।

পেট্রোবাংলা বলছে, ১৮ ও ১৯ আগস্ট দেশে এলএনজি সরবরাহ হয়েছে ৭১১ মিলিয়ন ঘনফুট। ওই সময়ে দেশীয় গ্যাস সরবরাহ হয়েছে ১ হাজার ৫৬৩ মিলিয়ন ঘনফুট।

পুনঃতফসিলে ৪% সুদে ঋণ চান জাহাজ নির্মাতারা

দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পুনঃতফসিল করতে ৪ শতাংশ সুদে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চান জাহাজ নির্মাণ ও শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা। পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্মত।

অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড শিপ বিল্ডার্স ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (এইওএসআইবি) পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৯ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, এ ব্যাপারে তাদের কোনো নেতিবাচক মতামত নেই। জাহাজ নির্মাণশিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নের সময় শিল্প মন্ত্রণালয়কেও গত বছর এ কথা জানানো হয় বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাণিজ্য সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, নতুন করে ঋণ নিয়ে বিদ্যমান ঋণের দায় পরিশোধ বা সমন্বয় করা শৃঙ্খলাপরিপন্থী। এক বছর আগেই এ ব্যাপারে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো তা পরিপালন করছে কিনা, তা তদারকও করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণশিল্পের ঋণ ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক হিসাব করে ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে কোনো ডাউন পেমেন্ট ছাড়া ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়া হয়। বলা হয়, তিন বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ পরের ১০ বছরে অর্থাৎ মোট ১৩ বছরে ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে।

কোভিড-১৯ এর কারণে চলতি ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ঋণের স্থিতির পরিমাণ বিবেচনায় ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মেয়াদি ঋণের অবশিষ্ট মেয়াদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সময় বাড়ানো যাবে। তবে এই সময়সীমা কোনোভাবেই দুই বছরের বেশি হবে না। সেই হিসাবে ১৩ বছরের সঙ্গে আরও দুই বছর যোগ হয়।

শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসকাজে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতি। ২৩ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই অনুরোধ করেন সমিতির নেতারা।

সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে সংগঠনের সহসভাপতি জহির উদ্দিন আহমেদ এবং ডায়মন্ড সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল খালেক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সমিতির নেতারা বন্দর চেয়ারম্যানকে জানান, সাগরে বর্তমানে ৩২টি শিপ হ্যান্ডলিং প্রতিষ্ঠান বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কাজ করছে। বছরে সাগরে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল খালাস হয় প্রায় সোয়া তিন কোটি টন।

পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ ১৭ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন

এর মধ্যে যেসব সিমেন্ট শিল্প-কারখানার লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিপ হ্যান্ডলিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের টনপ্রতি পণ্য খালাসে খরচ পড়ে ২৭ টাকা। যেসব সিমেন্ট কারখানার শিপ হ্যান্ডলিং প্রতিষ্ঠান নেই, তাদের খরচ পড়ে ৫২ টাকা। ফলে সিমেন্ট শিল্পের উদ্যোক্তারা নিজেদের মধ্যেও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে বহির্নোঙরে পণ্য খালাসের কাজের জন্য নতুন লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানানো হয়।

কনটেইনার পরিবহন কমায় বৈশ্বিক তালিকায় পিছিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর

করোনার কারণে গত বছর বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহনে ধাক্কা লেগেছিল। সেই ধাক্কায় বৈশ্বিক ক্রমতালিকায় পিছিয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। এক বছরের ব্যবধানে কনটেইনার পরিবহনে ৯ ধাপ পিছিয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক শিপিংবিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম লয়েড’স লিস্টে ব্যস্ত বন্দরগুলোর তালিকা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২৩ আগস্ট তালিকাটি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ২০২০ সালে সারা বিশ্বের বন্দরগুলোর ব্যস্ততা, অর্থাৎ কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে শীর্ষ ১০০টি বন্দরের তালিকা তৈরি করেছে লয়েড’স লিস্ট।

লয়েড’স লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্ব ৬৩ কোটি ২০ লাখ একক কনটেইনার পরিবহন হয়েছে। এই সংখ্যা ২০১৯-এর তুলনায় শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ কম। আর একই সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন কমেছে ৮ শতাংশ।

তালিকায় পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ, বন্দরটি দিয়ে কনটেইনারে বৈদেশিক বাণিজ্য কমেছে। সমুদ্রপথে দেশের কনটেইনার পরিবহনের ৯৮ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। এতে একক বন্দর হিসেবে চট্টগ্রামের অবস্থান পিছিয়ে যাওয়ার অর্থ বৈদেশিক বাণিজ্যও কমে, যা বৈশ্বিক ক্রমতালিকা প্রকাশ করে আসছে। ২০১৩ সালে কনটেইনার পরিবহনে বিশ্ব চট্টগ্রামের অবস্থান ছিল ৮৬তম। এরপর টানা সাত বছর এগিয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর।

পরিমাণে এক-চতুর্থাংশ পণ্য পরিবহন হলেও কনটেইনারে বেশির ভাগ শিল্পের কাঁচামাল, বাণিজ্যিক পণ্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়। আবার সমুদ্রপথে রপ্তানির পুরোটাই যায় কনটেইনারে।

লয়েড’স লিস্টের তালিকায় বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে চীনের সাংহাই। এর পরের অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর বন্দর। এ তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ ১০ বন্দরের মধ্যে ৭টিই চীনের।

দ্রুত কনটেইনার খালাস নিলে বন্দরে জট হওয়ার কোনো শঙ্কাই নেই

‘দ্রুততম সময়ে আমদানিকারকেরা কনটেইনার খালাস নিলে বন্দরে জট হওয়ার কোনো শঙ্কাই নেই। সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের কোনো সংকট তৈরি হয়নি, হবেও না।’ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে আসা সংগঠনটির ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাথে ১৭ আগস্ট মতবিনিময়কালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এসব কথা বলেন। বন্দর ভবনের সম্মেলন কক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানি কনটেইনারের সংকট ও রপ্তানি প্রক্রিয়া দ্রুততর করার বিষয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমদানি কনটেইনার বন্দরে আসার পর যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যেতে হবে। কনটেইনার বন্দরে পড়ে থাকলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর কোথাও এফসিএল কনটেইনার বন্দর থেকে খালাস হয় না। তারপরও আমরা এটি অ্যালাও করি। তাই যত দ্রুত কনটেইনার খালাস হবে, বন্দরের কাজের গতি তত বেশি হবে।’

এ সময় তিনি বিজিএমই নেতৃবৃন্দকে সমুদ্রপথে ক্রেতা দেশসমূহে সরাসরি জাহাজ চালুর বিষয়ে এমএলও’দের সাথে আলোচনা করা, বায়ারদের পণ্য পরিবহনে নির্দিষ্ট শিপিং লাইন নির্ধারণ না করা ও ২৪ ঘণ্টা কাট-অফ টাইমের মধ্যে পণ্য বন্দরে পৌঁছানোর অনুরোধ করেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সেটি সমাধানে আমরা শিপিংলাইন ও বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলোর এদেশীয় প্রধানদের সাথে আলাপ-আলোচনা করছি। যাতে কোনো একটি শিপিংলাইনকে পণ্য পরিবহনে নির্দিষ্ট করে দেওয়া না হয়। বায়াররা ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে কনটেইনারে পণ্য রপ্তানি চান, সেটি যাতে ২০ ফুট কনটেইনারেও করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।’

এ সময় তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো জট নেই বলে বিভিন্ন দেশের বায়ারদের জানিয়েছেন বলেও জানান।

মতবিনিময় সভার শুরুতে বন্দরের বর্তমান কার্যক্রমের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম। এ সময় তিনি জানান, গত ১৫ দিন অর্থাৎ ১ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বহির্নোঙরে আসা মাত্রই বার্থিং পাচ্ছে কনটেইনারবাহী জাহাজ। কনটেইনারবাহী জাহাজ না থাকায় কার্গোবাহী জাহাজের পণ্যও খালাস করা হচ্ছে কনটেইনার জেটিতে। যেখানে কলম্বো ও সিঙ্গাপুর বন্দরে বার্থিং করতে ৭ দিন, চীনে ১০ থেকে ১২ দিন ও আমেরিকার বন্দরগুলোতে ২০ থেকে ২২ দিন লাগছে।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাছির উদ্দিন, মঈনউদ্দিন আহমেদ মিন্টু, সাবেক পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ। সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্ষদ সদস্যবৃন্দ. পরিচালকগণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনলাইনে ফি দিয়ে বন্দরে ঢুকতে পারবে গাড়ি

পণ্য খালাসের জন্য আনা গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে গেট পাস নিতে হয়। এ জন্য নগদ টাকা দিয়ে ফি পরিশোধ করতে হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নগদ টাকা দিয়ে গেট পাস নেওয়ার পরিবর্তে অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধ করে গেট পাস নিতে হবে।

বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ ২ আগস্ট চিঠি দিয়ে ব্যবহারকারীদের জানিয়েছে, ফটক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির মাধ্যমে বন্দরের নর্থ কনটেইনার ইয়ার্ডে প্রবেশে অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধের ব্যবস্থা চলমান আছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ জুলাই থেকে অনলাইনে আবেদন করে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্রেইলার বন্দরে প্রবেশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ জন্য বন্দরের আটটি ফটকের পাস কাউন্টারে সেবা ডেস্ক চালু হয়েছে।

নির্দিষ্ট বন্দরের মাধ্যমে রাসায়নিক আমদানি-রপ্তানি চায় বিএনএসিডব্লিউসি

দেশে তফসিলভুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যের আমদানি-রপ্তানিকে আরও সুসংহত করতে নির্দিষ্ট বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি করার পরামর্শ দিয়েছে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশনের (বিএনএসিডব্লিউসি) চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ৯ আগস্ট বিএনএসিডব্লিউসির ১৭তম সাধারণ সভায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থেকে ৪২ জন সদস্য এ সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বিএনএসিডব্লিউসির বর্তমান কাজগুলো পর্যালোচনা করা হয় এবং বাংলাদেশে রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (সিডব্লিউসি) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ফলে দেশে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রাসায়নিক দুর্ঘটনার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সাড়াদানকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যাপারে চেয়ারম্যান গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া বাংলাদেশে কার্যকরী রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত জাতীয় নীতিমালা ও কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে সভায় আলোচনা করা হয়। সিডব্লিউসিকে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য এবং দেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা আরও সুসংহতকরণের জন্য বর্তমানে প্রচলিত আইন বা বিধিমালা ও নীতিমালাগুলোর প্রয়োজনীয় ও যুগোপযোগী সংশোধনের ব্যাপারে সবাই মত প্রকাশ করেন।

রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন-সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালাগুলো দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ আইন, ২০০৬-কে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এ অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে আলোচনা হয়।

বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময়

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময়। রক্তাক্ত বাংলাদেশ, ছিল না কোনো শাসনতন্ত্র। নেই রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে তিনি দেশকে শাসনতন্ত্র দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘সেই সাড়ে তিন বছর শাসনামলের গবেষণায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। ’৪৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের কোনো ভুল নেই। ৯ আগস্ট ঢাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও বৃক্ষরোপণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের মতো পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো রাজনৈতিক পরিবার দেশ গঠনে এত আত্মত্যাগ করেনি। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুজব রটিয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত। পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল।’

বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার মহিউদ্দিন রতন, সিবিএ নেতা মহসিন ভূঁইয়া এবং মির্জা মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য দেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির অগ্রগতির জন্য দোয়া করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরে জাতীয় শোক দিবস পালন

যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৫ আগস্ট সকালে বন্দর ভবন চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান ও পর্ষদ সদস্যবৃন্দ। এরপর বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, বিভাগীয় প্রধানগণ ও সিবিএ নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শোক দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। পরে তিনি বন্দর কর্মচারী পরিষদ (সিবিএ) আয়োজিত খতমে কোরআন, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

জাতীয় শোক দিবসে ১৫ আগস্ট জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পর্ষদ সদস্যবৃন্দ

আলোচনাকালে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন বাংলাদেশের উন্নয়নে চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব কতটুকু। এজন্যই তিনি স্বাধীনতার পরে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রপতিকে বলেছিলেন দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন অপসারণ করে যেন চালু করা যায়। বঙ্গবন্ধুর কথাতেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশেষ টিম পাঠিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর সচল করেছেন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত একদিনের জন্যও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়নি।’

এ সময় তিনি করোনা অতিমারির সময়ও নিরবচ্ছিন্নভাবে বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং কর্মরত অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

বন্দর কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিকের সঞ্চালনায় ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আজিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্ষদ সদস্যগণ, পরিচালকগণ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

আলোচনা সভার আগে খতমে কোরআন করা হয় এবং আলোচনা শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বন্দরের পরিচালনাধীন মসজিদসমূহে বাদ জোহর দোয়া এবং মন্দির ও বৌদ্ধবিহারে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরের মেরিটাইম-বিষয়ক প্রকাশনা বন্দর বার্তার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে।