Home Blog Page 21

নতুন শ্রমচুক্তি নিয়ে কানাডায় ডক শ্রমিক ও নিয়োগদাতাদের মধ্যে সমঝোতা

অবশেষে কানাডার ওয়েস্ট কোস্ট বন্দরগুলোর ডক শ্রমিক ও তাদের নিয়োগদাতারা নতুন একটি শ্রমচুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে নতুন করে শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরুর আশঙ্কা আপাতত দূর হলো। বিষয়টিকে ডক শ্রমিক ও নিয়োগদাতাদের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বিরোধ ও দেশটির ব্যস্ততম বন্দরগুলোর কার্যক্রমে স্থবিরতা দূর করার ক্ষেত্রে অনেক বড় একটি অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত নতুন চুক্তির শর্তগুলো সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। কানাডা ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন বোর্ড (সিআইআরবি) আজ সোমবার (৩১ জুলাই) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চুক্তিটির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন বাকি রয়েছে এখনো। এর জন্য ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। আগামী শুক্রবারের মধ্যেই তা হওয়ার কথা রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল লংশোর অ্যান্ড ওয়্যারহাউস কানাডা ইউনিয়ন (আইএলডব্লিউইউ) এই ভোট গ্রহণের আগ পর্যন্ত ধর্মঘট পুনরায় শুরু না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এদিকে রোববার (৩০ জুলাই) প্রায় সাড়ে সাত হাজার ডক শ্রমিকের প্রতিনিধিত্বকারী আইএলডব্লিউইউ ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়া মেরিটাইম এমপ্লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) উভয়েই দ্রুত চুক্তিটি অনুমোদন ও কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছে।

শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে কানাডার ব্যস্ততম তিনটি বন্দরের মধ্যে দুটি বন্দরের কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। বন্দর দুটি হলো ভ্যাঙ্কুভার ও প্রিন্স রুপার্ট পোর্ট। কানাডা থেকে খনিজ সম্পদ ও ভোগ্যপণ্য রপ্তানি এবং দেশটিতে বিভিন্ন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে গেটওয়ে হিসেবে কাজ করে বন্দর দুটি।

গত কয়েক মাস ধরে নতুন শ্রমচুক্তি, মজুরি অসন্তোষ দূর করা, টার্মিনালের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ইউনিয়নের এখতিয়ার বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে আসছে আইএলডব্লিউইউ ও বিসিএমইএ। দীর্ঘদিনেও এসব বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় চলতি মাসে ১৩ দিনের ধর্মঘট পালন করেছে আইএলডব্লিউইউ ।

আরব সাগরে বিপদগ্রস্ত ভারতীয় গবেষণা জাহাজ উদ্ধার

আরব সাগরে গোয়া উপকূলে বিকল হয়ে পড়া একটি গবেষণা জাহাজকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড। প্রতীকূল আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভাসতে থাকা জাহাজটিকে টেনে গোয়ার বেজ পোর্টে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বাহিনীটির একাধিক সহায়তাকারী জাহাজ।

বিকল হয়ে পড়া জাহাজটির নাম আরভি সিন্ধু সাধনা। ৪ হাজার ১৫৪ গ্রস টনের জাহাজটি ভারতের একমাত্র সমুদ্রগামী গবেষণা জাহাজ। এটি পরিচালনা করে কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অব দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি (সিএসআইআর-এনআইও)। এক দশক আগে যাত্রা করা জাহাজটি আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও ওশানোগ্রাফিক রিসার্চের কাজে ব্যবহৃত হয়।

২৬২ ফুট দীর্ঘ সিন্ধু সাধনা একটানা ৪৫ দিন পর্যন্ত গভীর সাগরে কার্যক্রম চালাতে সক্ষম। এর স্বাভাবিক গতি ১৩ দশমিক ৪ নটিক্যাল মাইল। জাহাজটিতে সমুদ্র গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু সেন্সর ও সরঞ্জাম সংযুক্ত রয়েছে। জাহাজটির বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি সাগরের গভীর অংশের তলদেশ থেকেও পলির নমুনা সংগ্রহ করতে পারে, যা নতুন খনিজ পদার্থ, হাইড্রোকার্বন সম্পদ এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ অনুসন্ধানে বড় ভূমিকা রাখে।

সিন্ধু সাধনার অটোমেটিক আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম (এআইএস) তথ্য থেকে জানা যায়, ২৪ জুলাই এটি গোয়ার মোরমুগাও বেজ পোর্ট থেকে গভীর সাগরের উদ্দেশে রওনা হয়। ২৭ জুলাই জাহাজটির কাছ থেকে একটি সাহায্যবার্তা পায় কোস্ট গার্ড। সে সময় এটি উপকূল থেকে আনুমানিক ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে স্রোতের টানে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে প্রায় ৩ নটিক্যাল মাইল গতিতে ভাসছিল। এক সময় জাহাজটি বাস্তুতান্ত্রিকভাবে সংবেদনশীল কারওয়ার উপকূলে গিয়ে আটকা পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। জাহাজটিতে আটজন বিজ্ঞানী ও ৩৬ জন ক্রু ছিলেন।

বার্তা পেয়ে কোস্ট গার্ড ঘটনাস্থলে একাধিক সাহায্যকারী জাহাজ পাঠায়। পরে তারা সিন্ধু সাধনাকে টেনে নিরাপদে গোয়ার বেজ পোর্টে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পানামা খালে জাহাজ চলাচলের সংখ্যা কমিয়ে আনছে কর্তৃপক্ষ

চলমান খরায় বাধ্য হয়ে পনামা খাল দিয়ে জাহাজ চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার পানামা খাল কর্তৃপক্ষ (এসিপি) জানিয়েছে, তারা নিও-প্যানাম্যাক্স কনটেইনার জাহাজের সর্বোচ্চ গভীরতার সীমা কমিয়ে ৪৪ ফুট বা ১৩ দশমিক ৪১ মিটার নির্ধারণ করেছে। এছাড়া বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই প্যাসেজ দিয়ে দৈনিক জাহাজ চলাচলের সংখ্যা ৩২ টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

সাধারণত বর্ষাকালে গড়ে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৩৬টি জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। প্রতিটি জাহাজের খালের লকগুলো অতিক্রমের সময় প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ গ্যালন পানি ব্যবহৃত হয়। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযোগকারী ৮০ কিলোমিটারের এই জলপথ দিয়ে বিশ্বের মোট সমুদ্র বাণিজ্যের প্রায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়।

এসিপি জানিয়েছে,আবহাওয়া পরিস্থিতিতে যতদিন পর্যন্ত না বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, জাহাজের সর্বোচ্চ গভীরতার এই সীমা ততদিন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

সাধারণত জুলাই মাসে পানামায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। তবে চলতি বছর বৃষ্টিপাতে এত তীব্র ঘাটতি দেখা গেছে, যা ইতিহাসে অভূতপূর্ব।

প্রথমার্ধে প্রডাক্ট ট্যাংকার নির্মাণের কার্যাদেশে চাঙ্গাভাব

নতুন ট্যাংকার, বিশেষ করে প্রডাক্ট ট্যাংকার নির্মাণের কার্যাদেশে মন্দা চলছিল অনেকদিন ধরেই। তবে চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রডাক্ট ট্যাংকারের কার্যাদেশে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। বাল্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিলের (বিমকো) হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে যে পরিমাণ প্রডাক্ট ট্যাংকারের কার্যাদেশ এসেছে, তা ২০২২ সালে পুরো বছরের কার্যাদেশের চেয়ে বেশি।

সমুদ্র পরিবহন বিশ্লেষক ফিলিপ গৌভেইয়া বলেছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশেষ করে রাশিয়ার অয়েল প্রডাক্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রডাক্ট ট্যাংকারের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। রাশিয়া থেকে ইউরোপে পাইপলাইনের মাধ্যমে অয়েল প্রডাক্ট পরিবহন বন্ধের পর এখন সমুদ্রপথে পরিবহনের পরিমাণ ও দূরত্ব বেড়েছে। এতে ফ্রেইট রেট ও নতুন ট্যাংকারের চাহিদা দুটোই বাড়তির দিকে রয়েছে।’

বিমকোর হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে মোট ৮৯ লাখ ডিডব্লিউটি প্রডাক্ট ট্যাংকারের কার্যাদেশ এসেছে। বছরওয়ারি তা ৩৩৭ শতাংশ বেশি। নতুন কার্যাদেশের এই পরিমাণ বিদ্যমান বহরের ৯ শতাংশের বেশি, যেখানে এক বছর আগে এই হার ছিল ৫ শতাংশের সামান্য বেশি।

নতুন কার্যাদেশের বেশিরভাগই এসেছে এলআর টু ক্যাটাগরির। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ডিডব্লিউটির প্রডাক্ট ট্যাংকারগুলো এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত। বিমকো জানিয়েছে, প্রথমার্ধে মোট ৫৬ লাখ ডিডব্লিউটি এলআর টু নির্মাণের কার্যাদেশ এসেছে, যা বিদ্যমান বহরের ২১ শতাংশ।

এছাড়া ৪৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার ডিডব্লিউটির ছোট আকারের এলআর ওয়ান ক্যাটাগরির ১০টি নতুন ট্যাংকার নির্মাণের কার্যাদেশ এসেছে প্রথমার্ধে। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম এলআর ওয়ান ক্যাটাগরির নতুন প্রডাক্ট ট্যাংকার নির্মাণের কার্যাদেশ পেল ইয়ার্ডগুলো।

ফুয়েলইইউ উদ্যোগে ইউরোপীয় কাউন্সিলের অনুমোদন

বিকল্প ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানি ব্যবহারের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রয়াস ফুয়েলইইউ মেরিটাইম ইনিশিয়েটিভ আলোর মুখ দেখতে চলেছে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ইউরোপীয় কাউন্সিল উদ্যোগটিতে অনুমোদন দিয়েছে। এটি ছিল ফুয়েলইইউ কার্যকরের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বশেষ অনুমোদন।

বছর দুয়েক আগে নিঃসরণবিরোধী বৃহত্তর উদ্যোগ ফিট ফর ৫৫ প্যাকেজ ঘোষণা করে ইইউ। এই কর্মসূচিরই একটি অংশ হলো ফুয়েলইইউ। ফিট ফর ৫৫ প্যাকেজে ২০৩০ সাল নাগাদ ইইউর গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ৫৫ শতাংশ কমানো এবং ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বিকল্প ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির অবদান রাখার পথ তৈরি করে দেবে ফুয়েলইইউ।

সমুদ্র শিল্পে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনসহ (আইএমও) অন্যান্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় ইইউর ফুয়েলইইউ উদ্যোগকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরিবেশবাদীরাও উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ফুয়েলইইউতে কার্বন ইনটেনসিটি পর্যায়ক্রমে কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে ২০২৫ সাল নাগাদ ইনটেনসিটি মাত্র দুই শতাংশ কমানোর কথা বলা হলেও ২০৫০ সাল নাগাদ তা ৮০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহারে আর্থিক অনুদান প্রদানের পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ওপর শুল্ক আরোপের বিধান রাখা হয়েছে ফুয়েলইইউতে। কার্বন শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে যে তহবিল জমা হবে, সেটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও গবেষণা, ব্যবহারে প্রণোদনাসহ সার্বিকভাবে সমুদ্র শিল্পকে কার্বনমুক্ত করার প্রক্রিয়ার সহায়তায় কাজে লাগানো হবে।

৫ দেশ থেকে ১৭ লাখ টন জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত

সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ১৭ লাখ টন জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীন, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে কেনা হবে এসব জ্বালানি। এতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৮৫০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বুধবার (২৬ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত জ্বালানি বিভাগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, একই সঙ্গে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মিস্টার ওয়েস্ট জুনিয়রের জন্য ১৩ কোটি ১৬ লাখ ১৯ হাজার ২১৪ টাকা ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

তিনি জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে এ জ্বালানি তেল কিনতে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক বিভিন্ন দেশের ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান (পিটিটিটি থাইল্যান্ড, ইএনওসি আরব আমিরাত, পেট্রোচিনা চীন, বিএসপি ইন্দোনেশিয়া, পিটিএলসিএল মালয়েশিয়া ও ইউনিপেক চীন) থেকে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ের জন্য ১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইসসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৮৫০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

তিনি জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল) কর্তৃক এলএনজি সংক্রান্ত কার্যক্রমে সহায়তার জন্য লিগ্যাল কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত মিস্টার ওয়েস্ট জুনিয়রকে অ্যামেন্ডমেন্ট-১ বাবদ অতিরিক্ত ১৩ কোটি ১৬ লাখ ১৯ হাজার ২১৪ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পিএসসির খসড়া অনুমোদন

জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গভীর ও অগভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ‘বাংলাদেশ অফশোর মডেল প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি) ২০২৩’–এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বুধবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহমুদ খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বৈঠকের পাশাপাশি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন পাঁচ প্রকল্পে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদিত হয়।

নেদারল্যান্ডস উপকূলে গাড়িবাহী জাহাজে আগুন, নিহত ১

নেদারল্যান্ডসের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে একটি গাড়িবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজন ক্রুর প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নেদারল্যান্ডসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) মধ্যরাতের দিকে ফ্রিম্যান্টল হাইওয়ে নামের ১৮ হাজার ৫৪৯ ডিডব্লিউটির জাহাজটিতে আগুন লাগে। এটি ভাড়া করেছিল জাপানের অপারেটর কে লাইন। জার্মানির ব্রেমারহ্যাভেন থেকে ২ হাজার ৮৫৭টি গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি। সুয়েজ খাল হয়ে এটির সিঙ্গাপুর পৌঁছনোর কথা ছিল বলে জানিয়েছে কে লাইন। ২০১৩ সালে নির্মিত ৬৫৬ ফুট দীর্ঘ জাহাজটি পানামায় নিবন্ধিত।

ডাচ কোস্টগার্ড জানিয়েছে, কী কারণে ফ্রিম্যান্টলে আগুন লেগেছে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে জাহাজটিতে ২৫টি বৈদ্যুতিক গাড়ি ছিল, যেগুলো থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত জাহাজটি থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঘটনার কথা জানা যায়নি। তবে ডাচ কোস্ট গার্ড প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে এরই মধ্যে একটি তেল ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণকারী জাহাজ দুর্ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে।

লোহিত সাগরে জীর্ণ এফএসও সেফার থেকে তেল অপসারণ শুরু

লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূলে নোঙর করে রাখা পুরনো একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অফশোর (এফএসও) ইউনিট থেকে ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। জাতিসংঘ আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এ কথা জানিয়েছে।

অনেকদিন ধরেই সেফার নামের ওই এফএসওকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সতর্ক করে আসছে জাতিসংঘ। এফএসওটি কোনো দুর্ঘটনায় পড়লে সেটি থেকে ১৯৮৯ সালে আলাস্কায় সংঘটিত এক্সন ভালদেজ দুর্ঘটনার চেয়ে চারগুণ বেশি তেল সাগরের পানিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।  

লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূল থেকে ৪ দশমিক ৮ নটিক্যাল মাইল গভীরে রাস ইসা অঞ্চলে ১৯৮৮ সাল থেকে নোঙর করে রাখা আছে সেফারকে। এটি আসলে একটি রূপান্তরিত সুপার ট্যাংকার। ইয়েমেনের মারিব তেলক্ষেত্র থেকে আসা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল গ্রহণ, সংরক্ষণ ও রপ্তানির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল ইউনিটটি। তবে ২০১৫ সালে ইয়েমেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে ইউনিটটিতে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়নি।

এফএসও ইউনিটটির কাঠামোগত অবস্থা ক্রমেই খারাপ হওয়ায় এটি আর ঠিক করাও যাবে না বলে মনে করে জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা আইএমও। ইউনিটটি ভেঙে পড়লে বা সেখানে কোনো বিষ্ফোরণ ঘটলে যে পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়বে, তা আটকানোর সক্ষমতা ইয়েমেনের নেই। এ কারণে সম্ভাব্য সেই বিপর্যয় ঠেকানোর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছিল সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, জরুরি ভিত্তিতে সেফার থেকে শিপ-টু-শিপ ট্রান্সফার পদ্ধতিতে তেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ভেরি লার্জ ক্রুড ক্যারিয়ার (ভিএলসিসি) কিনেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

ইউক্রেনীয় বন্দরের শস্য মজুদাগারে রাশিয়ার ড্রোন হামলা

ইউক্রেনের রেনি শহরে দানিয়ুব নদীর তীরের ছোট একটি নৌবন্দরে অবস্থিত একটি শস্য মজুদাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই ঘটনায় সেখানকার একটি সাইলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং একটি ট্যাংক ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড সাউথ এ কথা জানিয়েছে।

আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সকালের দিকে ইরানে তৈরি শাহেদ-১৩৬ সুইসাইড ড্রোন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনে দানিয়ুব নদীর মোহনায় অবস্থিত কোনো নৌবন্দরে এই প্রথম হামলা চালাল রাশিয়া। এই হামলার অর্থ হলো, দানিয়ুব নদীর ইউক্রেনীয় তীর দিয়ে নিরপেক্ষ জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে হতে পারে। রেনির বন্দরে হামলার পর আনুমানিক ৩০টি জাহাজ ইজমাইল উপকূলে নোঙর করে হামলার প্রভাব সম্পর্কে জানার অপেক্ষায় রয়েছে।

রাশিয়ার এই হামলার পর গমের মূল্য বেড়ে গেছে। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে একদিনের মধ্যেই খাদ্যশস্যটির দাম ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহের নিরাপদ করিডোর চুক্তি ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে নতুন করে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।