Home Blog Page 213

গালফ অব গিনি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারীর সংখ্যা বাড়ছে

গালফ অব গিনি ডিক্লারেশন অন সাপ্রেশন অব পাইরেসিতে প্রায় সাড়ে তিনশ স্বাক্ষর জমা পড়েছে। বাল্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল (বিমকো) জানিয়েছে, বিশ্বের শীর্ষ তিন ফ্ল্যাগ স্টেট, প্রথম সারির জাহাজের মালিক কোম্পানি, শীর্ষ শিপিং অ্যাসোসিয়েশন, ইউক্রেন থেকে শুরু করে নাইজেরিয়ার বিভিন্ন আঞ্চলিক কোম্পানি ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে।

বিমকোর আহ্বানে গত ১৭ মে জাহাজের মালিকদের একটি গ্রুপ গালফ অব গিনি ঘোষণাপত্রের খসড়া তৈরি করে। এর মূল লক্ষ্য হলো গিনি উপসাগরে জলদস্যুতার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সেই বিষয় নিয়ে কথা বলা এবং একটি কার্যকর সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের একত্র করা।

বিমকোর মহাসচিব ও প্রধান নির্বাহী ডেভিড লুসলি বলেছেন, ‘গালফ অব গিনি ডিক্লারেশনে স্বাক্ষরকারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে আমরা এমন আশা করতেই পারি যে, নাবিকদের আর দায়িত্ব পালনকালে নিজেদের জীবন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।’

বর্তমানে গালফ অব গিনি ঘোষণাপত্রে মোট স্বাক্ষরকারীর সংখ্যা ৩৪২। শিগগির তা সাড়ে তিনশ ছুঁয়ে ফেলবে বলে আশা করা যায়। এতে স্বাক্ষরকারী সংস্থাগুলোর অন্যতম ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, শিল্প খাতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের জন্য মানুষ ও পণ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা অবশ্য করণীয় একটি বিষয়।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে বিশ্ব জুড়ে মোট ১৩৫ জন ক্রুকে তাদের জাহাজ থেকে অপহরণ করা হয়েছে। এর ৯৫ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে গিনি উপসাগরে। ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারীরা ২০২৩ সাল নাগাদ জলদস্যুর হামলার ঘটনা অন্তত ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনতে চাইছে।

২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে জাহাজের অপেক্ষমাণ সময়

নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম প্রবাহে স্থবিরতা নেমে এসেছিল বিশ্ব বাণিজ্যে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ফের চাঙ্গা হতে শুরু করেছে ভোক্তা চাহিদা। ফলে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় তৈরি হয়েছে বাড়তি চাপ। সেই চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাওয়ার জোগাড় বৈশ্বিক শিপিং খাতের। বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ায় বন্দরগুলোয় পণ্য ও জাহাজজটের ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ব্যস্ততম বন্দরগুলোর নিয়মিত চিত্র এটি। আইএইচএস মার্কিটের বিশ্লেষণ বলছে, বর্তমানে কনটেইনার জাহাজগুলোকে বার্থিংয়ের জন্য গড়ে যতটা সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে, ২০১৯ সালের তুলনায় তা দ্বিগুণের বেশি।

চলতি বছরের শুরুতে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বন্দরগুলোয় রেকর্ড সংখ্যক জাহাজকে টার্মিনালে জায়গা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। এছাড়া সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়া ও চীনের ইয়ানতিয়ান বন্দরের অচলাবস্থা বৈশ্বিক শিপিং খাতের এই জটের অন্যতম কারণ।

আইএইচএস মার্কিট বলছে, ভোক্তা চাহিদা বেড়ে যাওয়া, যন্ত্রপাতির সংকট ও মহামারির অন্যান্য প্রভাবের কারণেই মূলত বন্দরে জাহাজগুলোর বার্থিংয়ে বিলম্ব হচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্য পুনরুদ্ধারের গতি আরও ত্বরান্বিত হওয়া এবং এর ব্যাপকতা বেড়ে যাওয়ায় বন্দরের এই জটিলতা কিছুদিন অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইএইচএস মার্কিটের পোর্ট পারফরম্যান্স ডাটা বলছে, চলতি বছরের মে মাসে উত্তর আমেরিকার বন্দরগুলোয় জাহাজগুলোকে গড়ে সবচেয়ে বেশি ৩৩ ঘণ্টা সময় অ্যাংকরিংয়ে কাটাতে হয়েছে, ২০১৯ সালের একই সময়ে যা ছিল মাত্র আট ঘণ্টা। পোর্ট অব লং বিচ ও লস অ্যাঞ্জেলেসের বন্দরগুলোয় বিলম্ব সবচেয়ে বেশি হয়েছে। আইএইচএস মার্কিট বলছে, উত্তর আমেরিকার এই বন্দরগুলোর মতো অবস্থা বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষ বন্দরেরই।

অনৈতিক মৎস্য আহরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ দুই দশকের উদ্যোগ সফল হওয়ার অপেক্ষায়

দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে চলে আসা আলোচনায় অবশেষে সফল পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে, যার মাধ্যমে জলজ বাস্তুসংস্থানের জন্য ক্ষতিকর উপায়ে মৎস্য আহরণ কর্মকান্দে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ বন্ধ হবে। বৈশ্বিক মৎস্য আহরণ শিল্পে নতুন নিয়ম চালু করা সম্ভব হবে এই চুক্তির ফলে।

সম্প্রতি ডব্লিউটিও সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রী ও জাতীয় প্রতিনিধি দলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে চুক্তির বিষয়ে এই অগ্রগতি হয়েছে। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলনের (এমসি১২) আগেই এ বিষয়ে বাকি আলোচনা সেরে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জোটটির সদস্যরা। তারা জানিয়েছে, বর্তমানে যেসব এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেগুলোকে ভিত্তি ধরেই চুক্তি চূড়ান্ত করা হতে পারে।

ডব্লিউটিওর প্রধান এনগোজি ওকোনজো-ইওয়েলা বৈঠক শেষে বলেন, ‘এটি ছিল আমাদের জন্য সফল একটি দিন। দুই দশকের আলোচনায় আমরা এর আগে কখনোই এমন ইতিবাচক পরিসমাপ্তির কাছাকাছি উপনীত হইনি। টেকসই সমুদ্র অর্থনীতি গঠনে এই সিদ্ধান্ত খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

অতিরিক্ত মাত্রায় মৎস্য আহরণ বৈশি^ক সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ। অথচ কিছু দেশের সরকার এ ধরনের কার্যক্রমে ভর্তুকি দিয়ে আসছে। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কমিটি অন ফিশারিজের তথ্য অনুসারে, প্রতি বছর বৈশ্বিক মৎস্য খাতে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২ হাজার কোটি ডলার দেওয়া হয় জ্বালানি ভর্তুকি ও কর মওকুফের মতো কর্মসূচির অধীনে।

এই অনৈতিক চর্চা বন্ধের লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে আলোচনা চালিয়ে আসছে ডব্লিউটিও। কিন্তু সদস্য সরকারগুলোর মধ্যকার মতানৈক্যের কারণে এই দীর্ঘ সময়েও কোনো সুরাহা মেলেনি।

২০২০ সালে একটি চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে আরোপিত বিধিনিষেধ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের জুলাইয়ে আরেক দফা দিনক্ষণ বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যও পূরণ হয়নি। গত মার্চে প্রথম নারী হিসেবে ডব্লিউটিওর মহাপরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ইওয়েলা। তিনি চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই আলোচনায় চূড়ান্ত পরিসমাপ্তি দেখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ইওয়েলার দাবিকৃত সময়ের মধ্যে কোনো চুক্তি হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ইস্যুটি ডব্লিউটিওর জন্য মর্যাদার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ কেবল এই একটিই নয়, বরং আরও বেশ কয়েকটি ইস্যুতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। এই অনৈক্য দূর করে অভিন্ন স্বার্থে সরকারগুলোকে কতখানি একাট্টা করতে পারে ডব্লিউটিও, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ইনফোগ্রাফিক্স- জুলাই, ২০২১

জুলাই, ২০২১

খতিয়ান- জুলাই, ২০২১

২০২০ ও ২০২১ সালের তুলনামূলক চিত্র।

উদ্ভাবক পুরস্কার পেলেন বন্দরের পর্ষদ সদস্য মো. জাফর আলম

উদ্ভাবনী কাজে বিশেষ অবদানের জন্য সরকারের যুগ্ম সচিব ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্ষদ সদস্য মো. জাফর আলমসহ মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ছয়জন কর্মকর্তাকে ‘উদ্ভাবক পুরস্কার ২০২১’ দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ২৯ জুন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী।

‘রি-ইঞ্জিনিয়ারিং অব সিপিএ ওয়ান স্টপ সার্ভিস: এ সাসটেইনেবল সলিউশনস টু কমব্যাট প্যানডেমিক (কোভিড-১৯) সিচুয়েশন’ উদ্ভাবনের জন্য মো. জাফর আলম এ পুরস্কার পান। এছাড়া কোভিড-১৯ প্রতিরোধে জনবান্ধব (নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর, ডিজইনফেক্ট্যান্ট ওভেন, অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার)’ উদ্ভাবনের জন্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক ও বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির প্রদর্শক মু. খালেদ সালাউদ্দিন, ‘আইসিটি ইকুইপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর জন্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও বাজেট) ড. আ ন ম বজলুর রশীদ ও সিস্টেম এনালিস্ট জিএম ফয়সাল আহমদ এবং ‘সভাকক্ষ ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন এবং আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ সহজীকরণ’-এর জন্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পুরস্কার পান।

অনুষ্ঠানে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘উদ্ভাবনী পদক্ষেপ সব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তির কারণে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা একটি শক্তি। এই শক্তির প্রয়োজন আছে। এ শক্তি সঞ্চয় করতে পারলে উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে।’

সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, দক্ষতা আর প্রযুক্তিগত উন্নয়ন চট্টগ্রাম বন্দরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লক্ষ্য অর্জনের দিকে

মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট খাতকে সর্বোতভাবে টেকসই করে গড়ে তুলতে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পোর্ট কল অপটিমাইজেশনের ওপর বেশ জোর দেওয়া হচ্ছে। জাহাজগুলোকে যাত্রাপথে প্রয়োজনের খাতিরেই বিভিন্ন বন্দরে যাত্রাবিরতি দিতে হয়। কখনো শিডিউলের মধ্যে থেকে, আবার কখনো পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে। আবার বন্দরগুলোকেও একই সময়ে একাধিক জাহাজকে সেবা দিতে হয়। ফলে অনেক সময় দেখা যায়, ব্যস্ত বন্দরগুলোয় জাহাজের অপেক্ষমাণ থাকার সময়টা দীর্ঘতর হচ্ছে। এই সমস্যা নিরসনে পথ দেখাচ্ছে পোর্ট কল অপটিমাইজেশন। এটি শিপিং কোম্পানি, টার্মিনাল ও অন্য সেবাদানকারীদের পরিবেশগত বিরূপ প্রভাব কমানো এবং সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা উন্নতকরণের সুযোগ করে দেয়।

প্রথাগতভাবে এতদিন বন্দরগুলোয় ‘আগে আসলে আগে সেবা’ মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে সেবা দেওয়া হলেও এখন বিভিন্ন বন্দর কর্তৃপক্ষ পূর্বপ্রতিশ্রুত সময়ে সেবা প্রদানের নীতিতে হাঁটতে চাইছে। আর এই যুগান্তকারী পরিবর্তনের পরিকল্পনা সাজাতে বন্দর কর্তৃপক্ষগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ লাইফ লাইন হিসেবে কাজ করছে আগে থেকে অনুমান করার সক্ষমতা। পোর্ট কল অপটিমাইজেশনের একটি বড় সুবিধাই হলো প্রেডিক্টেবিলিটি বা অনুমেয়তা বৃদ্ধি, যা শিপিং কোম্পানিগুলোর শিডিউলিং ও প্ল্যানিংয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। আর পোর্ট কল অপটিমাইজেশনের সাফল্য নির্ভর করে বন্দরের তথ্য ব্যবস্থাপনার ওপর। পোর্ট কল অপটিমাইজেশন ও কার্যকর তথ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েই আমাদের এবারের মূল আয়োজন।

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির চাহিদা পূরণে চট্টগ্রাম বন্দরকে প্রতিনিয়তই নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে হচ্ছে, বাড়াতে হচ্ছে সক্ষমতা। জনবলের সর্বোত্তম ব্যবহার আর প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হচ্ছে। সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, দক্ষতা আর প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের একাগ্রতা চট্টগ্রাম বন্দরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালের লয়েড’স লিস্টে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের শত ব্যস্ত বন্দরের মধ্যে ৫৮তম অবস্থানে রয়েছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়েও নতুন নতুন মাইলফলক পেরিয়ে যাচ্ছে। অতিমারির মতো বৈশ্বক সংকটকালেও থেমে থাকেনি বন্দরের অগ্রযাত্রা। বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কনটেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের তিনটি সূচকেই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। নানা সীমাবদ্ধতা নিয়েও এই সফলতা এমনি এমনি আসেনি, এর পেছনে রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট ও সুবিন্যস্ত কর্মপরিকল্পনা, তার যথাযথ বাস্তবায়ন এবং বন্দরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। আর এই কাজটিই করছে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বা অ্যানুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)।

সরকারি দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, ফলাফলধর্মী কাজে উৎসাহ প্রদান এবং কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কার্যসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় এপিএ প্রবর্তন করে সরকার। প্রতিষ্ঠানের রূপকল্প, অভিলক্ষ্য ও কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন এপিএর অগ্রাধিকারে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যেসব বিষয়কে এপিএতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, তার মধ্যে অন্যতম রূপকল্প-২০৪১, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা। মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ মনিটরিং ও কর্তৃপক্ষের নিরলস প্রচেষ্টায় সর্বশেষ অর্থবছরে (২০২০-২১) এপিএর ৭টি পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য শতভাগ অর্জন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এগুলো হলো সংরক্ষণ ড্রেজিং, কার্গো হ্যান্ডলিং, কনটেইনার হ্যান্ডলিং, ৩০ হাজার বর্গমিটার নতুন কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ, সার্ভিস জেটি নির্মাণ, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। বিগত বছরগুলোতেও এপিএর লক্ষ্যমাত্রা পূরণের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিক ও যুগোপযোগী হওয়ার চলমান প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে। পাশাপাশি ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রচলন করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং দক্ষতা বাড়ানোও সম্ভব হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত রয়েছে বিশেষ রচনায়।

দেরিতে হলেও এই প্রথম শিপিংয়ের অভিভাবক সংস্থা আইএমও মেরিটাইম সেক্টরে কর্মরত নারীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় কোনো জরিপ করছে। ‘উইমেন ইন মেরিটাইম-আইএমও অ্যান্ড উইসটা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভে-২০২১’ শীর্ষক এ জরিপে ইন্ডাস্ট্রিতে নারীদের সংখ্যা, নারী-পুরুষ অনুপাত, কোন পদে তাঁদের অংশগ্রহণ কত, কোন ধরনের পদে তাঁরা তুলনামূলক পিছিয়ে আছেন, প্রতিষ্ঠান-দেশ-মহাদেশভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা-অগ্রগতি-বৈষম্যের একটা সার্বিক চিত্র পাওয়া যাবে। টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রিতে কীভাবে আরও বৈচিত্র্যময় জনশক্তি গড়ে তোলা যায়, সে জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ সকল কার্যাবলির অংশ হিসেবে আয়োজিত এ জরিপে বৈচিত্র্য এবং লৈঙ্গিক সাম্য অর্জনে কতখানি এগোনো গেল, সেটাও পরিষ্কার বোঝা যাবে। ‘অন্য আলো’ বিভাগে এ নিয়ে রয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন।

প্রিয় পাঠক, আমরা চাই এ দেশের মেরিটাইম চর্চাকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে। বৈচিত্র্যময় আঙ্গিকে, সমৃদ্ধ কলেবরে বন্দরবার্তার পথচলা বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতের বিকাশে আরও সহায়ক হবে- সেই প্রত্যাশা।

ছবিতে সংবাদ – জুলাই

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল ২ জুন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এর সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় বন্দরের পর্ষদ সদস্য মো. জাফর আলম, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম ও বন্দর সচিব ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ ৩ জুন বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান এর সাথে ২৯ জুন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন নৌবাহিনীর কমডোর সোয়াড্স কমান্ডের কমডোর এম মঞ্জুর হোসেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের হাই কমিশনার শিরুজিমাথ সামির ১৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ২০ জুন বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।

রিজার্ভ ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে

প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের ওপর ভর করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত নতুন উচ্চতায় উঠেছে। ২৯ জুনের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৬ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকার মতো। এর আগে গত মে মাসের শুরুতে রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, সেভাবে পণ্য আমদানিতে খরচ হচ্ছে না। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিনিয়ত রিজার্ভ বাড়ছে। পণ্য আমদানিতে চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রবণতা চলবে।

আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। আশার কথা হলো, দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা রিজার্ভ দিয়ে ১১ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব (প্রতি মাসে ৪০০ কোটি ডলার ধরে)। এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৫৫০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ৬০০ কোটি ডলার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।