Home Blog Page 22

নেদারল্যান্ডস উপকূলে গাড়িবাহী জাহাজে আগুন, নিহত ১

নেদারল্যান্ডসের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে একটি গাড়িবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজন ক্রুর প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নেদারল্যান্ডসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) মধ্যরাতের দিকে ফ্রিম্যান্টল হাইওয়ে নামের ১৮ হাজার ৫৪৯ ডিডব্লিউটির জাহাজটিতে আগুন লাগে। এটি ভাড়া করেছিল জাপানের অপারেটর কে লাইন। জার্মানির ব্রেমারহ্যাভেন থেকে ২ হাজার ৮৫৭টি গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছিল জাহাজটি। সুয়েজ খাল হয়ে এটির সিঙ্গাপুর পৌঁছনোর কথা ছিল বলে জানিয়েছে কে লাইন। ২০১৩ সালে নির্মিত ৬৫৬ ফুট দীর্ঘ জাহাজটি পানামায় নিবন্ধিত।

ডাচ কোস্টগার্ড জানিয়েছে, কী কারণে ফ্রিম্যান্টলে আগুন লেগেছে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে জাহাজটিতে ২৫টি বৈদ্যুতিক গাড়ি ছিল, যেগুলো থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত জাহাজটি থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঘটনার কথা জানা যায়নি। তবে ডাচ কোস্ট গার্ড প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে এরই মধ্যে একটি তেল ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণকারী জাহাজ দুর্ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে।

লোহিত সাগরে জীর্ণ এফএসও সেফার থেকে তেল অপসারণ শুরু

লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূলে নোঙর করে রাখা পুরনো একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অফশোর (এফএসও) ইউনিট থেকে ১০ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। জাতিসংঘ আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এ কথা জানিয়েছে।

অনেকদিন ধরেই সেফার নামের ওই এফএসওকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সতর্ক করে আসছে জাতিসংঘ। এফএসওটি কোনো দুর্ঘটনায় পড়লে সেটি থেকে ১৯৮৯ সালে আলাস্কায় সংঘটিত এক্সন ভালদেজ দুর্ঘটনার চেয়ে চারগুণ বেশি তেল সাগরের পানিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।  

লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূল থেকে ৪ দশমিক ৮ নটিক্যাল মাইল গভীরে রাস ইসা অঞ্চলে ১৯৮৮ সাল থেকে নোঙর করে রাখা আছে সেফারকে। এটি আসলে একটি রূপান্তরিত সুপার ট্যাংকার। ইয়েমেনের মারিব তেলক্ষেত্র থেকে আসা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল গ্রহণ, সংরক্ষণ ও রপ্তানির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল ইউনিটটি। তবে ২০১৫ সালে ইয়েমেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে ইউনিটটিতে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়নি।

এফএসও ইউনিটটির কাঠামোগত অবস্থা ক্রমেই খারাপ হওয়ায় এটি আর ঠিক করাও যাবে না বলে মনে করে জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা আইএমও। ইউনিটটি ভেঙে পড়লে বা সেখানে কোনো বিষ্ফোরণ ঘটলে যে পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়বে, তা আটকানোর সক্ষমতা ইয়েমেনের নেই। এ কারণে সম্ভাব্য সেই বিপর্যয় ঠেকানোর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছিল সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, জরুরি ভিত্তিতে সেফার থেকে শিপ-টু-শিপ ট্রান্সফার পদ্ধতিতে তেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ভেরি লার্জ ক্রুড ক্যারিয়ার (ভিএলসিসি) কিনেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

ইউক্রেনীয় বন্দরের শস্য মজুদাগারে রাশিয়ার ড্রোন হামলা

ইউক্রেনের রেনি শহরে দানিয়ুব নদীর তীরের ছোট একটি নৌবন্দরে অবস্থিত একটি শস্য মজুদাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই ঘটনায় সেখানকার একটি সাইলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং একটি ট্যাংক ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড সাউথ এ কথা জানিয়েছে।

আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সকালের দিকে ইরানে তৈরি শাহেদ-১৩৬ সুইসাইড ড্রোন দিয়ে এই হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনে দানিয়ুব নদীর মোহনায় অবস্থিত কোনো নৌবন্দরে এই প্রথম হামলা চালাল রাশিয়া। এই হামলার অর্থ হলো, দানিয়ুব নদীর ইউক্রেনীয় তীর দিয়ে নিরপেক্ষ জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে হতে পারে। রেনির বন্দরে হামলার পর আনুমানিক ৩০টি জাহাজ ইজমাইল উপকূলে নোঙর করে হামলার প্রভাব সম্পর্কে জানার অপেক্ষায় রয়েছে।

রাশিয়ার এই হামলার পর গমের মূল্য বেড়ে গেছে। শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে একদিনের মধ্যেই খাদ্যশস্যটির দাম ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য সরবরাহের নিরাপদ করিডোর চুক্তি ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর ফলে নতুন করে ইউক্রেনীয় বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

রপ্তানিতে নগদ সহায়তা পেতে নতুন তিন শর্ত

বিদেশ থেকে প্রত্যাবাসিত বস্ত্র খাতে রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। তবে জাহাজ ভাড়া, বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ্য কমিশন, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি বাদ দিয়ে এ সহায়তা দেওয়া হবে বলে নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রবিবার (২৩ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বস্ত্রখাতে সিএমটি (কাট, মেক অ্যান্ড ট্রিম) পদ্ধতিতে রপ্তানি প্রণোদনা প্রসঙ্গে সার্কুলারটি জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রচলিত আমদানি নীতি আদেশে বর্ণিত বিধিবিধান পরিপালন সাপেক্ষে অন-নো-কস্ট ভিত্তিতে উপকরণ সংগ্রহের মাধ্যমে তৈরি পোশাক বা বস্ত্র সামগ্রী রপ্তানির বিপরীতে সিএমটি মূল্যের ওপর প্রযোজ্য রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা হিসাবায়নের সুবিধার্থে নিম্নলিখিত নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে-

(ক) বিদেশ থেকে প্রত্যাবাসিত সিএমটি মূল্যের ওপর জাহাজ ভাড়া (রপ্তানিকারক পরিশোধ করলে), বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ্য কমিশন, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি বাদ দিয়ে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে।

(খ) অন-নো-কস্ট ভিত্তিতে আমদানিকৃত উপকরণের কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মূল্যায়িত মূল্য, রপ্তানিতে ব্যবহৃত ব্যাক-টু-ব্যাক পদ্ধতির আওতায় সংগৃহীত অন্যান্য উপকরণের (যদি থাকে) মূল্যের সঙ্গে প্রত্যাবাসিত সিএমটি মূল্য (উপরোল্লিখিত ‘ক’ অনুসারে) যোগ করে রপ্তানি পণ্যের নিট এফওবি মূল্য নির্ণয় করতে হবে।

(গ) রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রাপ্যতার জন্য স্থানীয় মূল্য সংযোজনের প্রযোজ্য হার বজায় রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের হার নিম্নরূপ হবে-

রপ্তানিতে ব্যবহৃত ব্যাক-টু-ব্যাক পদ্ধতির আওতায় সংগৃহীত স্থানীয় অন্যান্য উপকরণের (যদি থাকে) সঙ্গে যোগ করতে হবে সিএমটি মূল্য (জাহাজ ভাড়া রপ্তানিকারক বহন করলে, বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধযোগ্য কমিশন, ইন্স্যুরেন্স বাদে) এবং রপ্তানি পণ্যের নির্ণিত নিট এফওবি মূল্য দিয়ে ভাগ করতে হবে। এর সঙ্গে ১০০ পূরণ করে মূল্য সংযোজনের হার বের করতে হবে।

মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান

জাপান বাংলাদেশের বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ এবং স্মার্ট দেশ গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, জাপান সরকার এ অগ্রযাত্রায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় করেছেন বলে জানান মন্ত্রী।

রবিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সফররত জাপানের অর্থনীতি ও বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

টিপু মুনশি বলেন, জাপান দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে পাশে আছে। তারা আমাদের দেশের অনেক বড় বড় প্রজেক্টে বিনিয়োগ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়েছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত অনুসন্ধান করার ওপরও দুই মন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাপান-বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (ইপিএ) কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে জাপানে এ সংক্রান্ত প্রথম রাউন্ড আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৫-২৬ তারিখে ঢাকায় দ্বিতীয় রাউন্ড আলোচনা হবে। খুব শিগগিরই এই চুক্তি সম্পাদিত করার বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।

সাক্ষাৎকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ দুই দেশের সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউক্লিয়ার প্রপালশন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা এবিএসের

আমেরিকান ব্যুরো অব শিপিং (এবিএস) সম্প্রতি বড় আকারের দুটি জাহাজে নিউক্লিয়ার প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে।

জাহাজে নিউক্লিয়ার শক্তির ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। তবে বাণিজ্যিক জাহাজে এর ব্যবহার আগে দেখা যায়নি। তবে কার্বনমুক্ত প্রপালশন ব্যবস্থা হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক জাহাজেও নিউক্লিয়ার শক্তির ব্যবহার নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তির অধীনে হেবার্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের সাথে মিলে দুটি নিয়মিত ক্লাসের জাহাজে নিউক্লিয়ার প্রপালশন সিস্টেম পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করে এবিএস। জাহাজ দুটির একটি হলো ১৪ হাজার টিইইউ ধারণক্ষমতার পোস্ট-প্যানাম্যাক্স কনটেইনার জাহাজ ও অন্যটি হলো ১ লাখ ৫৭ হাজার ডেডওয়েট টনের সুয়েজম্যাক্স ট্যাংকার।

কনটেইনার জাহাজটিতে প্রতিটি ৩০ মেগাওয়াট শক্তি সরবরাহকারী ফাস্ট টুইন রিঅ্যাক্টর ব্যবহার করা হয়, যা মোট ৬০ মেগাওয়াট (৮০ হাজার হর্সপাওয়ার) শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। পরীক্ষায় দেখা যায়, এই প্রপালশন সিস্টেম কনটেইনার জাহাজের কার্গো পরিবহন সক্ষমতার পাশাপাশি জাহাজের অপারেটিং স্পিডও বাড়িয়ে দিতে সক্ষম।

এদিকে সুয়েজম্যাক্স ট্যাংকারটিতে স্থাপিত পাওয়ার কনফিগারেশন ছিল একটু ভিন্ন। এতে প্রতিটি ৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার চারটি হিট-পাইপ মাইক্রেরিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়, যেগুলোর সম্মিলিত শক্তি সরবরাহের সক্ষমতা ২০ মেগাওয়াট (২৭ হাজার হর্সপাওয়ার)। গবেষণায় দেখা যায়, এই সিস্টেম ট্যাংকারের গতি তো বাড়িয়ে দেয়, কিন্তু এর কার্গো পরিবহন সক্ষমতা খানিকটা কমে যায়।

তাইওয়ান উপকূলে কনটেইনার জাহাজ ডুবে গেছে, ক্রুরা নিরাপদে উদ্ধার

তাইওয়ানের কাওসিউং বন্দর উপকূলে নোঙ্গর করে থাকা অবস্থায় একপাশে কাত হয়ে যাওয়া কনটেইনার জাহাজ অ্যাঞ্জেল শেষ পর্যন্ত ডুবে গেছে। স্যালভেজ টিম জাহাজটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলেও শুক্রবার (২১ জুলাই) সকালের দিকে সেটি ডুবে যায়। এতে জাহাজটিতে থাকা ১ হাজার ৩০০-এর বেশি খালি কনটেইনার সাগরের ব্যস্ত চ্যানেলে ছড়িয়ে পড়েছে।

কাওসিউং বন্দর কর্তৃপক্ষ আগের দিনই বন্দর চ্যানেলের একটি প্রবেশমুখ বন্ধ ঘোষণা করেছিল। শুক্রবার তারা বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় প্রবেশমুখও বন্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়া ছড়িয়ে পড়া কনটেইনারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

পালাউয়ে নিবন্ধিত ২১ বছর বয়সী কনটেইনার জাহাজটি চীনের দালিয়ান থেকে রওনা করে ৪ জুলাই সেটি তাইওয়ান পৌঁছে এবং কাওসিউং হারবার থেকে ২ দশমিক ৮ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙ্গর করে ছিল।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকালে অ্যাঞ্জেলের মাস্টার কাওসিউং হারবার ব্যুরোর কাছে একটি সাহায্যবার্তা পাঠায়, যেটিতে বলা হয় যে জাহাজটি বামপাশে প্রায় ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি কৌণিকভাবে কাত হয়ে পড়েছে, অন্তত ছয়টি কনটেইনার জাহাজ থেকে পানিতে পড়ে গিয়েছে এবং জাহাজের হালে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

জাহাজটির হালে একটি ফাটল তৈরি হয়েছে বলে কিছু প্রতিবেদনে জানানো হয়। দুর্ঘটনার সময় জাহাজটির কনটেইনারগুলো খালি ছিল এবং এটি পণ্য বোঝায়ের জন্য অপেক্ষমান ছিল বলে জানা গেছে।

৫৬৪ ফুট দীর্ঘ জাহাজ অ্যাঞ্জেলে প্রায় ৫০০ টন লো সালফার ফুয়েল ও লাইট ডিজেল ভর্তি ছিল। তেল ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ জাহাজটির চারিদিকে দুটি কনটেইনমেন্ট বুম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

কানাডায় ধর্মঘটে ফেরার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার আইএলডব্লিউইউর

প্রধানমন্ত্রীর সম্পৃক্ততায় কানাডার পশ্চিম উপকূলীয় বন্দরগুলোয় পুনরায় ধর্মঘট শুরুর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে ইন্টারন্যাশনাল লংশোর অ্যান্ড ওয়্যারহাউজ ইউনিয়নের (আইএলডব্লিউইউ) কর্মীরা। ফলে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ৩০টি টিার্মিনাল ও বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সচল রয়েছে।

কানাডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস বোর্ড গত মঙ্গলবার রায় দেয় যে, ডককর্মীরা পিকেটিং লাইনে ফিরে গেলে সেটি অবৈধ কার্যক্রম হবে। এই রায়ের পর আইএলডব্লিউইউর প্রায় ৭ হাজার ৪০০ সদস্য বুধবার বিকালে কাজে যোগ দেয়।

ডককর্মীদের ২২ জুলাই আবার ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। এদিকে খবর প্রকাশ হয় যে কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রিমিয়ার ডেভিড এবির সঙ্গে সেখানকার চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। উভয় নেতা নিয়মিত পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং ট্রুডো একটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স গ্রুপ গঠন করেছেন।

কানাডীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সম্পৃক্ততার খবর প্রকাশের পর আইএলডব্লিউইউ একটি বিবৃতিতে জানায়, ২২ জুলাই থেকে পুনরায় ধর্মঘট শুরুর বিষয়ে যে ৭২-ঘণ্টার নোটিশ জারি করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া কানাডার বৃহত্তম আমদানি-রপ্তানি গেটওয়ে। সেখানে ডককর্মীদের ধর্মঘট দেশটির সামগ্রিক সমুদ্র বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতায় মায়েরস্ককে পেছনে ফেলার পথে সিএমএ সিজিএম

মেডিটারেনিয়ান শিপিং কোম্পানি (এমএসসি) গত বছরই পেছনে ফেলেছিল, এবার কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতার দিক থেকে মায়েরস্ককে টেক্কা দিতে চলেছে ফরাসি শিপিং জায়ান্ট সিএমএ সিজিএম। আলফালাইনারের বাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিগগিরই মায়েরস্ককে পেছনে ফেলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কনটেইনার লাইনার হতে যাচ্ছে সিএমএ সিজিএম।

আলফালাইনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মায়েরস্কের বহরে রয়েছে ৬৮২টি জাহাজ, যেগুলোর মোট কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতা ৪১ লাখ টিইইউর কিছু বেশি। অন্যদিকে সিএমএ সিজিএমের ৬২৫টি জাহাজ মিলে বর্তমানে প্রায় ৩৫ লাখ টিইইউ কনটেইনার পরিবহন করতে পারে। দুই ও তিন নম্বরে থাকা কোম্পানি দুটিকে অনেকটা পেছনে ফেলে গত দেড় বছর শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এমএসসি। বর্তমানে তাদের জাহাজ রয়েছে ৭৭০টি, যেগুলোর সম্মিলিত পরিবহন সক্ষমতা ৫২ লাখ টিইইউ কনটেইনার।

গত বছরের জানুয়ারিতে মায়েরস্ককে পেছনে ফেলে কনটেইনার পরিবহন খাতের শীর্ষস্থান দখল করে এমএসসি। আসলে মায়েরস্ক এখন তাদের বহরের আকার বাড়ানোর চেয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ লজিস্টিকস কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। এর ফলশ্রুতিতে গত দেড় বছরে তাদের বহর ও পরিবহন সক্ষমতা না বেড়ে উল্টো কমেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তাদের জাহাজ ছিল ৭৩৮টি। কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতা ছিল প্রায় ৪৩ লাখ টিইইউ।

এদিকে সিএমএ সিজিএম তাদের বহর সম্প্রসারণের ওপর বেশ জোর দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা নতুন যেসব জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ দিয়ে রেখেছে, সেগুলোর সম্মিলিত সক্ষমতা বিদ্যমান ফ্লিট ক্যাপাসিটির প্রায় ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আলফালাইনার জানিয়েছে, কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতা ১০ লাখ টিইইউ থেকে ২০ লাখ টিইইউতে নিয়ে যেতে সাত বছর সময় লেগেছিল সিএমএ সিজিএমের। অথচ বর্তমানে তাদের অর্ডারবুকে রয়েছে ১২ লাখ ৪০ হাজার টিইইউ, যেগুলো ২০২৬ সাল নাগাদ হস্তান্তর হওয়ার কথা। অর্থাৎ মাত্র তিন বছরের কম সময়ের মধ্যেই ১০ লাখ টিইইউর বেশি সক্ষমতা যোগ করতে যাচ্ছে তারা। এর মধ্যে আগামী দেড় বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ মোট ৫ লাখ টিইইউ সক্ষমতার কনটেইনার জাহাজ কোম্পানিটির বহরে যোগ হবে বলে আলফালাইনার জানিয়েছে।

পোশাক শিল্পের চালান খালাসে সন্দেহের ভিত্তিতে কাটিং তদারকি না করার দাবি বিজিএমইএ’র

রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য আমদানীকৃত কাপড় ও অন্যান্য কাঁচামাল কাস্টম হাউজে খালাসের সময় উপযুক্ত কারণ ছাড়া সন্দেহের ভিত্তিতে কাটিং তদারকির শর্ত আরোপ না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ ধরনের শর্ত বাস্তবায়ন করা সময়সাপেক্ষ এবং এর মাধ্যমে রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এ দাবি জানানো হয়।

চিঠিতে বিজিএমইএ আরও জানায়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজসহ সব কাস্টম হাউজের মাধ্যমে পোশাক শিল্পের কাঁচামাল কাপড় ও আনুষঙ্গিক দ্রব্যাদি আমদানির ক্ষেত্রে শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কাটিং তদারকি ও অন্যান্য তদারকির শর্ত আরোপ করে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। ফলে আমদানি-পরবর্তী উৎপাদন প্রক্রিয়া ও রপ্তানির ক্ষেত্রে নানাবিধ জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, কাটিং ও অন্যান্য তদারকির শর্ত আরোপ করা হলে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেট থেকে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সমন্বয় করে এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা সময়সাপেক্ষে ব্যাপার। এতে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং সঠিক সময়ে পণ্য উৎপাদন করে রফতানি করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই দেশের রফতানির বৃহত্তর স্বার্থে ও মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার কথা বিবেচনা করে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কাটিং তদারকিসহ অন্যান্য তদারকির শর্ত আরোপ না করার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজসহ সব কাস্টম হাউজকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করার জন্য জানিয়েছে বিজিএমইএ।