Home Blog Page 228

পণ্য পরিবহনে নতুন দুটি জাহাজ ভাসাল মেঘনা গ্রুপ

সমুদ্রে পণ্য পরিবহনের জন্য নতুন দুটি জাহাজ ভাসাল মেঘনা গ্রুপ। সাগরে আরও দুটি জাহাজে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাসে ১০ মার্চ বঙ্গোপসাগরে নতুন এই দুই জাহাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

বিশালাকার জাহাজ দুটি হলো ‘এমভি মেঘনা প্রিন্সেস’ এবং ‘এমভি মেঘনা অ্যাডভেঞ্চার’। প্রতিটি জাহাজ লম্বায় প্রায় ২০০ মিটার। প্রতিটি ৬২ হাজার টন পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম। নতুন জাহাজ দুটিতে মেঘনা গ্রুপ বিনিয়োগ করেছে ৪৬ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩৯১ কোটি টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশ। জাহাজ দুটিতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪২ জন দেশীয় নাবিকের। নতুন হওয়ায় দুটি জাহাজ বিশ্বের যেকোনো বন্দরে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে রাখা ‘এমভি মেঘনা প্রিন্সেস’ জাহাজের ডেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে জাহাজ দুটি বিশ্বের এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে যাবে। শুধুই ব্যবসা নয়, বিশে^র বন্দরে বাংলাদেশের দূত হিসেবে কাজ করবে দুটি জাহাজ। বাংলাদেশকে মানুষ চিনবে। এটা আমাদের জন্যই গর্বের।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাহাজ পরিচালনা খাতে উদ্যোক্তারা এগিয়ে এসেছেন। আগামী ৫-১০ বছরে আমাদের বহরে ৫০০ জাহাজ দেখতে চাই। এই খাতে এখনো যেসব সীমাবদ্ধতা আছে, তা দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগের দরজা খুলে দিয়েছেন।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘সমুদ্র অর্থনীতির প্রধান খাত হলো শিপিং। শিপিং খাতে বিনিয়োগ করে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনার পথ ধরে অন্যরাও এই খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে।’ বাল্ক জাহাজের পাশাপাশি কনটেইনার জাহাজেও বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, ‘করোনায় বৈশ্বিক মন্দার সময় প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সুযোগ নিতে বলেছিলেন। সেই সুযোগ গ্রহণ করেছে মেঘনা। নতুন এ দুটির পাশাপাশি আরও চারটি জাহাজ যুক্ত হবে আগামী বছর। এসব জাহাজে অন্তত ১০ শতাংশ কম ব্যয় হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক, এইচএসবিসি বাংলাদেশের হোলসেল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধাম কেভিন গ্রিন, এমভি মেঘনা প্রিন্সেস জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান বক্তব্য দেন। মেঘনার নতুন জাহাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের বহরে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩।

চট্টগ্রামে বেসরকারি জেটিতে ভিড়েছে প্রথম জাহাজ

চট্টগ্রামের জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান ‘কর্ণফুলী ড্রাই ডক লিমিটেডের’ জেটিতে ৩০ মার্চ প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে আসা পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়েছে। জেটিতে ভেড়ানোর পর জাহাজ থেকে রডের কাঁচামাল পুরোনো লোহার টুকরা খালাস করা হয়। বেসরকারি জেটিতে ভেড়ানো জাহাজটি ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপের কাঁচামাল নিয়ে এসেছে।

আমদানি পণ্যবাহী জাহাজের অপেক্ষমাণ সময় কমাতে বেসরকারি জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর যে উদ্যোগ চট্টগ্রাম বন্দর নিয়েছে, এটি তারই প্রথম পদক্ষেপ।

কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারায় কর্ণফুলী ড্রাই ডকের দুটি জেটি রয়েছে। একটি নির্মাণাধীন। আরেকটি জেটির নির্মাণ শেষ হয়েছে এ মাসে। এই জেটিতেই ‘এমভি দিনা ওশেন’ নামের জাহাজটি ভেড়ানো হয়। প্রায় ১৫৪ মিটার লম্বা জাহাজটি জাপান থেকে ১৫ হাজার ২২১ টন পুরোনো লোহার টুকরা নিয়ে আসে।

কর্ণফুলী ড্রাই ডক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রশিদ বলেন, ‘নির্মাণাধীন জেটিটিও অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রস্তুত হবে। তখন একসঙ্গে দুটো জাহাজ ভেড়ানো যাবে। তাতে দুই জেটিতে মাসে ১০-১২টি জাহাজ ভেড়ানো যাবে। ’

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়তে থাকায় কয়েক মাস ধরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সব জেটি ব্যবহারের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে এই জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো হলো।

বিএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, ‘বন্দরের খুবই ভালো পদক্ষেপ এটি। কারণ, জেটির অভাবে বহির্নোঙরে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতো। এ পদক্ষেপে কিছুটা হলেও জট কমবে। বন্দরের চেয়ে এই জেটি ব্যবহারে ঘুরপথে পণ্য কারখানায় নেওয়ার জন্য খরচ একটু বেশি হবে। এরপরও কাঁচামালের অভাবে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হবে না।’

কয়েক বছর ধরে অনিয়মিতভাবে নৌবাহিনী পরিচালিত জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাই ডকের জেটি ব্যবহার করে আসছে বন্দর। এ ছাড়া আমদানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী বিচ্ছিন্নভাবে মাঝেমধ্যে আরও কয়েকটি সরকারি সংস্থার বিশেষায়িত জেটি ব্যবহৃত হতো।

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনের ৪৪ বছর

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে পণ্য পরিবহনের ৪৪ বছর পূর্ণ হয়েছে ২২ মার্চ। ১৯৭৭ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ‘এস এস টেনাসিটি’ নামক জাহাজে ছয়টি কনটেইনারে পণ্য আমদানির মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এখন বছরে ২৮ লাখ কনটেইনার পরিবহন হচ্ছে।

কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা দিয়ে কোনো দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বিবেচনা করা হয়। কারণ, কনটেইনারে যেমন মূল্যবান রপ্তানি পণ্য পরিবহন হয়, তেমনি শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতিসহ বাণিজ্যিক পণ্যও আমদানি হয়।

কনটেইনারে পণ্য পরিবহন চালু করার মূল উদ্দেশ্য ছিল, বন্দর থেকে সরাসরি কারখানা বা গুদামে পণ্য নিয়ে যাওয়া এবং সেখান থেকে বন্দরে জাহাজে পৌঁছে দেওয়া। বর্তমানে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনারের ৬৫ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর চত্বরে খালাস করা হয়। এই পদ্ধতিতে কনটেইনার খুলে ট্রাকে বোঝাই করে পণ্য নেওয়া হয়। এতে প্রতিদিন বন্দর চত্বরে বিপুলসংখ্যক ট্রাক প্রবেশ করায় কনটেইনার পরিচালন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বন্দরের মূল চত্বরেও গাড়ির জট লেগে থাকছে। বাকি ৩৫ শতাংশ কনটেইনার সরাসরি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো ও রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় অবস্থিত কারখানায় নিয়ে খালাস করা হয়। জাহাজ থেকে নামানোর পর সরাসরি বন্দরের বাইরে নেওয়া হয় বলে এসব কনটেইনার ব্যবস্থাপনায় বন্দরের পরিচালন কার্যক্রমে চাপ পড়ে না। তাই বন্দরের বাইরে পণ্য খালাসের হার বাড়ানো গেলে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবহারকারীরা কনটেইনার পরিবহনের সুফল পাবে বলে মনে করা হয়।

কনটেইনারে পণ্য পরিবহনের ‘জনক’ বলা হয় ম্যালকম ম্যাকলিনকে। ১৯৫৬ সালের ২৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে তিনি পণ্য পরিবহনের এই বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন।

মৃত মোংলা বন্দরকে জীবিত করেছেন শেখ হাসিনা: নৌ প্রতিমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা, তিনি মৃতপ্রায় মোংলা বন্দরকে জীবিত করেছেন। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার নৌ-চ্যানেল ড্রেজিং করার উদ্যোগ তিনিই নিয়েছেন। এর ফলে আগামী দিনের উন্নত বাংলাদেশ তৈরির পথযাত্রা শুরু হলো। বেশি ড্রাফটের বিদেশি জাহাজ প্রবেশের সুবিধার্থে মোংলা বন্দরে ইনার বার ড্রেজিং প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে ১৩ মার্চ নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মোংলা বন্দরে ইতিমধ্যে ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এই বন্দরের সঙ্গে রেললাইন যুক্ত হচ্ছে, বন্দর চ্যানেলে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। সবকিছু মিলে এখানে বিশাল এক কর্মযজ্ঞ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে।’

এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বেগম হাবিবুন নাহার, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা প্রমুখ।

দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে মোংলার সম্ভাবনা অসীম হলেও নাব্যতা সংকটে এখানে বেশি ড্রাফটের বিদেশি জাহাজ ভিড়তে পারতো না । পুরোদস্তুর ব্যবসাবান্ধব সমুদ্রবন্দর হতে হলে এখানে অনায়াসে প্রবেশ করতে হবে সাড়ে ৯ থেকে ১০ মিটারের গভীরতার জাহাজ। কিন্তু সেখানে সাত মিটারের গভীরতার জাহাজ ছাড়া প্রবেশ করতে না পারায় সংকট দেখা দেয়। আর সেই সংকট মোকাবিলায় নদী খননের উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ৭৯৩ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না সিভিল করপোরেশনকে এ কাজটি দেওয়া হয়েছে। তারা ২০২২ সালের জুন মাসে কাজটি সম্পন্ন করবে। এই ড্রেজিংয়ের ফলে বন্দর চ্যানেলের নাব্যতা সংকট দূর হবে এবং পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজ আগমন বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিকভাবে গতিশীলতা বাড়বে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিন উদ্যাপন

যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। দিবসটি উপলক্ষে ১৭ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ বন্দর ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, পায়রা অবমুক্ত এবং কেক কাটেন। এ সময় বন্দরের সকল বিভাগীয় প্রধানসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সিবিএ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ বিষয়ের ওপর আয়োজিত রচনা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চবক চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের ওপর ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বন্দরের পরিচালনাধীন সকল মসজিদ, এবাদতখানা, মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয় এবং বন্দর হাসপাতালে অভ্যন্তরীণ রোগীদের উন্নত মানের খাদ্য পরিবেশন করা হয়। এদিন বিকালে চট্টগ্রাম বন্দর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বন্দরের পর্ষদ সদস্য কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এ ছাড়া ১৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বন্দর ও বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।

বিশ্বের প্রথম শূন্য নির্গমন কার্গো জাহাজ

বায়ু ও হাইড্রোজেন শক্তিচালিত বিশশ্বের প্রথম শূন্য নির্গমন কার্গো জাহাজ নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা এখন শেষ। প্রকল্পের নাম ‘উইথ অর্কা’, চলবে শুধু প্রকৃতির শক্তিতে। ছয় মাসের প্রতিযোগিতা শেষে আগ্রহী ৩১টি জাহাজনির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয়েছে বিজয়ীকে। আশা করা হচ্ছে, এ বছরেই শেষ হবে ডিজাইনের কাজ, যেন ২০২৪ সালেই সাগরে ভাসতে পারে জাহাজটি।

জাহাজটির প্রয়োজনীয় শক্তির বড় অংশ আসবে বায়ুশক্তি থেকে। দুটি বিশাকৃতির রোটর সেল বায়ুশক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করবে। জাহাজটি চলবে মূলত উত্তর সাগরের উন্মুক্ত জলরাশিতে, যেখানকার বায়ু এ ধরনের প্রপ্রালশনের উপযোগী। বায়ুশক্তির পাশাপাশি থাকবে হাইড্রোজেন-জ্বালানির অভ্যন্তরীণ কমবাশান ইঞ্জিন। সংকুচিত আকারে এ হাইড্রোজেন জাহাজেই থাকবে।

প্রকল্পটির অংশীদারিত্বে রয়েছে নরওয়ের দুটি কোম্পানি: হাইডেলবার্গ সিমেন্ট নরওয়ে এবং ফেলেস্কিপেত এগ্রি।

অফশোর বায়ুবিদ্যুতে নজর যুক্তরাষ্ট্রের

২০৩০ নাগাদ অফশোর বায়ুশক্তি খাতে ৩০ গিগাওয়াট স্থাপিত সক্ষমতার এক জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন। আগামী এক দশকে এ খাতে লাখখানেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

উচ্চাভিলাষী এ বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প ৭৭ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শ্রমের সুযোগ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি দেশটির উভয় উপকূল ঘিরে প্রতি বছর বিনিয়োগ হবে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার। ২০৩০ লক্ষ্যমাত্রার সঠিক বাস্তবায়ন ২০৫০ নাগাদ ১১০ গিগাওয়াট বা তারও বেশি অফশোর বায়ুশক্তি উৎপাদনের রূপরেখাটি তুলনামূলক সহজ করে তুলবে। সে সময় এ খাতে কর্মসংস্থান হবে ১ লাখ ৩৫ হাজারের।

লক্ষ্য অর্জনে দেশটির ব্যুরো অব ওশান এনার্জি ম্যানেজমেন্ট ইজারা প্রদানের বিষয়টি যেমন এগিয়ে নেবে, তেমনি ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত ১৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শেষে চালু দেখতে চায়। এ প্রকল্পগুলো থেকে বিদ্যুৎ আসবে ১৯ গিগাওয়াট।

বাড়তি বাংকার সারচার্জে গলদ্ঘর্ম শিপাররা

জ্বালানির উচ্চ ব্যয় ওশান ক্যারিয়ারগুলোর বাংকার সারচার্জ বাড়িয়ে তুলছে। তাতে নাভিশ্বাসে শিপাররা, যারা এরই মধ্যে রেকর্ড ফ্রেইট রেট ও অতিরিক্ত বিভিন্ন ফি’র কারণে বিপর্যস্ত।

স্বল্প সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের (এলএসএফও) দাম এখন ৫০০ ডলার ছুঁই ছুঁই। বছর শুরুর চেয়ে যা ২৫ শতাংশ বেশি আর গত নভেম্বরের তুলনায় ৬০ শতাংশ। এদিকে স্ক্রাবার ব্যবহারকারী যে জাহাজগুলো জ্বালানি তেল ব্যবহার করে, সেই ভারী জ্বালানি তেল (এইচএফও) এবং স্বল্প সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের দামের পার্থক্য নভেম্বরের টনপ্রতি ৫০ ডলার থেকে এখন ১০০ ডলার। অন্যদিকে এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের মধ্যে কনটেইনার স্পট রেট মাত্র বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২৫০ শতাংশের বেশি। আর এশিয়া থেকে উত্তর ইউরোপে বেড়েছে ৪ গুণ। বাংকার সারচার্জ বাড়াতে এ দুটি বিষয় মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খনন ব্যয় কমাবে রোবট

তেল ও গ্যাস খাতে খননকাজে ২০৩০ নাগাদ লাখ লাখ কর্মীর জায়গা নিতে পারে রোবট। তাতে খনন ব্যয় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কমতে পারে বলে জানিয়েছে নরওয়ের এনার্জি ইন্টেলিজেন্স ফার্ম রিস্টাড এনার্জির এক প্রতিবেদন।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এমনকি করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে আমরা যখন পুরোপুরি মুক্ত হব, তখনো অপারেটরদের ব্যয় কমানোর নতুন নতুন পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে, যেন ভবিষ্যতে বাজার পড়ে গেলেও ভালো অবস্থায় থাকা যায়।

পেট্রোলিয়াম খাতে রোবোটিকসের ব্যবহার নিয়ে তৈরি ওই প্রতিবেদনে রিস্টাড দেখেছে, বিদ্যমান উদ্ভাবন বা সলিউশনগুলোই ২০৩০ নাগাদ বৈশ্বিক তেল ও গ্যাস খাতের লাখ লাখ কর্মীর জায়গায় কাজ করতে পারে, যেখানে ব্যয় কমানো সম্ভব শত শত কোটি ডলার। তবে এ রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে গোটা শিল্পের পক্ষ থেকে এক সামগ্রিক প্রচেষ্টা বা উদ্যোগ।

সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে ভারতীয় সমুদ্রবন্দর

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি দেশটির বিদ্যুৎ খাতে চীনসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সাইবার আক্রমণ প্রতিহত করেছে। তবে আক্রমণের বিস্তার শুরু বিদ্যুৎ খাতে সীমিত নেই, নতুন খবর হচ্ছে ভারতের এক সমুদ্রবন্দরও ওই গোষ্ঠীর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে রয়েছে।

মার্কিন প্রতিষ্ঠান রেকর্ডেড ফিউচারের উদ্ধৃতি দিয়ে ড্রাইঅ্যাড গ্লোবালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় একটি বন্দরের নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ন্যূনতম একটি সংযোগে ঢুকে পড়ে ওই হ্যাকাররা এবং বেশ কিছুদিন ধরেই তারা সিস্টেমে সক্রিয় ছিল। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রেকর্ডেড ফিউচারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টুয়ার্ট সলোমন জানান, তারা ‘রেডইকো’ নামের চীনসংশ্লিষ্ট একটি হ্যাকারগ্রুপ এবং ভারতীয় এক বন্দরের মধ্যে ‘হ্যান্ডশেক’ বা ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ প্রত্যক্ষ করেছে। এর আগে রেডইকো ভারতের পাওয়ার গ্রিড স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালায়।