Home Blog Page 235

শিল্পের কাঁচামালের নামে পর্দা ও সোফার কাপড় আমদানি

ইপিজেডের রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডের নামে কাপড়ের জন্য কাঁচামাল আনার ঘোষণায় চীন থেকে দুই কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। তবে কায়িক পরীক্ষায় দেখা যায় কনটেইনার দুটিতে কাঁচামাল আমদানির পরিবর্তে প্রায় ৪০ টন পর্দা ও সোফার কাপড় আনা হয়েছে। দেড় কোটি টাকা মূল্যের এ চালানে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়েছে।

একটি কনটেইনার আসার প্রায় দেড় মাস এবং অন্য কনটেইনার আসার পর ২০ দিন অতিবাহিত হলেও পণ্য খালাসের জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পরে কনটেইনারে ঘোষণা-বহির্ভূত পর্দা ও সোফার কাপড় আছে এমন গোপন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে কনটেইনার দুটির বিএল ব্লক করে পণ্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমদানিকারকের প্রতিনিধিকে মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমদানিকারকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কনটেইনার দুটি তাদের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানীকৃত নয় এবং কেউ তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে পণ্যের চালান দুটি আমদানি করেছে। পরে কমিশনারের নির্দেশে কনটেইনার দুটি ফোর্স কিপ ডাউন করে কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নেন এআইআর শাখার কর্মকর্তারা। ১৩ জানুয়ারি কায়িক পরীক্ষায় ঘোষিত নির্দিষ্ট পণ্যের কাঁচামালের পরিবর্তে পর্দা ও সোফার কাপড় পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (এআইআর) রেজাউল করিম বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ।’

বাল্কহেডে পণ্য পরিবহন বন্ধের দাবি কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের

সিরিয়ালবিহীন জাহাজ চলাচল ও অবৈধ বাল্কহেডে পণ্য পরিবহন বন্ধ করতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর ২৬ জানুয়ারি স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। স্মারকলিপিতে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ মালিকদের আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

এর আগে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ মালিকরা। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল হক বলেন, ‘অবৈধভাবে পণ্যবাহী জাহাজ পরিচালনা ও অবৈধ বাল্কহেডের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের কারণে এ খাতে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। এই নৈরাজ্যের কারণে প্রকৃত জাহাজ মালিকরা লোকসান দিতে দিতে দেউলিয়া হতে চলেছেন।’ এ সময় কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পণ্যবাহী জাহাজ শ্রমিকরাও তাদের এই আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

খতিয়ান- ফেব্রুয়ারী, ২০২১

অনুমোদন ছাড়া এক লাখ ডলার বিদেশে পাঠানো যাবে

অন্য দেশের সঙ্গে ব্যবসার সংযোগ রয়েছে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলো এখন প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই সর্বনিম্ন ১ লাখ ডলার বিদেশে পাঠাতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ ৪ জানুয়ারি এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এর আগে বিদায়ী ২০২০ সালের নভেম্বরে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়কর বিবরণীতে ঘোষিত বিগত বছরের বিক্রির ১ শতাংশ পরিমাণ অর্থ বিদেশি মুদ্রায় পাঠানোর আওতা বাড়ানো হয়। এতে শুধু প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ ফির মধ্যে সীমিত না রেখে অন্যান্য যৌক্তিক ব্যয় বাবদ অর্থ বিদেশে পাঠানোর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনায় অডিট ফি, সার্টিফিকেশন ফি, কমিশনিং ফি, টেস্টিং ফি, মূল্যায়ন ফি বিদেশে পাঠানো যাবে বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর্মরত যেসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয় মুদ্রায় স্থানীয় বাজারে পণ্য বিক্রি করে, তারা বিক্রির ১ শতাংশ অর্থ বিদেশে পাঠাতে পারবে বলে ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। তবে যেসব ব্যয় বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, তা ওই প্রজ্ঞাপনের আওতায় থাকবে না। এছাড়া রয়্যালটি, কারিগরি জ্ঞান বা সহায়তা ফি ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অনুমোদনের প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয় ওই নির্দেশনায়।

প্রজ্ঞাপনে বিগত বছরের বিক্রির ১ শতাংশ অর্থের সঙ্গে ১ লাখ ডলারের সীমা রাখা হয়েছে। এ দুটির মধ্যে যেটি বেশি হবে, তা চলতি ব্যয় নির্বাহের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদেশে পাঠাতে পারবে। এর ফলে বিক্রি পর্যাপ্ত না হলেও যৌক্তিক প্রয়োজনে হঠাৎ বেশি করে অর্থ বিদেশে পাঠানোর দরকার হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশে সময়মতো অর্থ পাঠানো যাবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে যারা আমদানিনির্ভর ব্যবসা করে ও কাঁচামালের বড় অংশ আমদানি করে, এর ফলে তারা উপকৃত হবে। এতে প্রতিবার টাকা পাঠানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেতে হবে না।

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্ক

আকর্ষণীয় সুবিধা দেওয়ার কারণে তুরস্কের বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে বলে জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি পণ্যের ডাইভারসিফিকেশনের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণও বৃদ্ধি করতে চায় তুরস্ক।’

২০ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানে ইবিএল প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকটির সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তুরস্ক ওষুধ প্রস্তুত শিল্প, আইটি, কৃষিশিল্প, হালকা প্রকৌশল, সেবা খাতে, পর্যটন ও স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার উপায় খুঁজছে। শিগগিরই এফবিসিসিআই এবং তুরস্কের ফরেন ইকোনমিক রিলেশন্স বোর্ডের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।’

বর্তমানে তুরস্ক-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রতি বছর তুরস্কে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পাট রপ্তানি করে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে তুর্কি বিনিয়োগ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘শীর্ষস্থানীয় তুর্কি প্রতিষ্ঠান আইগাজিস চট্টগ্রামের এলপিজি সেক্টরে বড় আকারের বিনিয়োগ নিয়ে আসছে।’ দু’দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হতে যাচ্ছে বলেও জানান তুর্কি রাষ্ট্রদূত।

রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রযুক্তি উন্নয়নে পাঁচ শতাংশ সুদে ঋণ

রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ৫-৬ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হবে না, এমন প্রযুক্তি উন্নয়নে এই ঋণ দেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ শতাংশ (ব্যাংক হারের চেয়ে ১ শতাংশ কম) সুদে তহবিল থেকে ঋণ পাবে। আর তারা গ্রাহককে পাঁচ বছর মেয়াদি সেই ঋণ দিতে পারবে সর্বোচ্চ বাড়তি ২ শতাংশ সুদ যোগ করে। ৫ থেকে ৮ বছর মেয়াদি ঋণে সুদের ব্যবধান হবে সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ এবং ৮ থেকে ১০ বছর মেয়াদি ঋণে এ হার হতে পারবে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার ৫-৬ শতাংশের মধ্যেই থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফিন্যান্স বিভাগ সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত জানায়। এই তহবিলের ঋণ নিতে প্রথমে আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের জন্য তহবিলটি গঠন করেছে, যাতে উৎপাদন বেড়ে শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও তা টেকসই হয়। এই তহবিল হবে পুনঃঅর্থায়ন ও আবর্তনশীল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রপ্তানিনীতির আওতায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া ও বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতের পাশাপাশি আরো ১১টি খাতে এই ঋণ বিতরণ করা যাবে। খাতগুলো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পের মুখ্য উৎপাদন, জ¦ালানি দক্ষ বা নবায়নযোগ্য জ¦ালানি; বিজনেস প্রসেসিং রি-ইঞ্জিনিয়ারিং/বিজনেস প্রসেস অটো-সংক্রান্ত; অপারেশন ম্যানেজমেন্ট; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; বায়ু ব্যবস্থাপনা; তাপ ব্যবস্থাপনা; কর্মপরিবেশ (অগ্নিব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা) ব্যবস্থাপনা; পানি ব্যবহার ব্যবস্থাপনা; মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত আধুনিক প্রযুক্তি; হিসাবায়ন ও ইনভেনটরি ব্যবস্থাপনা; বিপণন, বিক্রয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার অটোমেশন।

পাঁচ বছরে নিলাম থেকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের আয় ২৬৫ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম বন্দরে অখালাসকৃত পণ্য নিলামে বিক্রি করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস গত পাঁচ বছরে আয় করেছে ২৬৫ কোটি ৬১ লাখ টাকার বেশি। এই পাঁচ বছরে বন্দরে বাজেয়াপ্ত পণ্য নিয়ে নিলাম হয়েছে ৬৪টি। যার মধ্যে ১০ হাজার ১৬০ লট পণ্য ছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে নিলাম হয়েছে নযটি। এ সময় মোট ২ হাজার ৩৮৩ লটের পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আয় হয় ২৬ কোটি ৭০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮৫ টাকা। এরপর ২০১৭ সালে ১১টি নিলামে ১ হাজার ৮৮৫ লট পণ্য নিলামে বিক্রি করে আয় হয় ৩৫ কোটি ১৬ লাখ ৫ হাজার ৮৪ টাকা। পরবর্তী বছর ২০১৮ সালে ২০টি নিলামে পণ্য ওঠে ২ হাজার ২৪৫ লটে। ওই বছর আয় হয় ৬৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৭৯ টাকা। ২০১৯ সালে নিলাম সংখ্যা কম হলেও আয় হয় আগের তুলনায় বেশি। ওই বছর ১১টি নিলামে ১ হাজার ৯৮৫ লটে পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ৭০ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭৬ টাকা। সর্বশেষ গত বছর করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ১৩টি নিলাম হয়। সেখানে ১ হাজার ৬৬২ লটের পণ্য বিক্রি করে আয় হয় ৬৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৪ হাজার ২৯৮ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফখরুল আলম বলেন, ‘নিলামে পণ্য বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব আয়ও বেশি হচ্ছে। এছাড়া এতে বন্দরের অভ্যন্তরে পড়ে থাকা কনটেইনারে দখলকৃত জায়গা মুক্ত হচ্ছে। এর বাইরে বহু বছর পড়ে থাকা অকশন গোলাটিও খালি হচ্ছে।’

অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক বসিয়েছে পাকিস্তান

বাংলাদেশ থেকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানির ওপর সম্প্রতি অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে পাকিস্তান। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি একথা বলেন। পাকিস্তানের এ ধরনের পদক্ষেপ বাণিজ্য বিকাশে বাধা বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সচিবালয়ে ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকীর সঙ্গে মতবিনিময়কালে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বস্ত্রশিল্পে ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক উপাদান। ভারত ও পাকিস্তানের বস্ত্রশিল্পে বাংলাদেশি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের চাহিদা বেশ ভালো। পাকিস্তানের দুটি কোম্পানিও এই রাসায়নিক পণ্য উৎপাদন করে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই পাকিস্তান এই শুল্ক আরোপ করেছে।

উৎপাদনকারী দেশ তার নিজস্ব বাজারের চেয়ে কম দামে অন্য দেশে পণ্য রপ্তানি করলে সেটাকে বলা হয় ডাম্পিং। তখন আমদানিকারক দেশ ওই পণ্যের ওপর অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করতে পারে। তবে এজন্য দেশটিকে নিজস্ব শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রমাণ দেখাতে হয়। পাকিস্তানের দাবি, বাংলাদেশ থেকে ডাম্পিংয়ের কারণে সে দেশের কোম্পানিগুলোর মুনাফা, উৎপাদিত পণ্যের দাম ও উৎপাদনশীলতা কমেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানি হয়, তার ৮০ শতাংশের বেশি যায় পাকিস্তান ও ভারতে, যা থেকে বছরে আয় হয় প্রায় ১ কোটি ডলার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী আশাবাদী যে, আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার বিরাজমান যেকোনো সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। সে অনুযায়ী দুই দেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে এই সমস্যারও সমাধান করা সম্ভব।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। সেগুলো দূর করা গেলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরো বাড়বে। ব্যবসায়ীরা পারস্পরিক দেশ সফর করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারেন।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন করে এগিয়ে যেতে চায়।’

মহেশখালীতে বিনিয়োগ করতে চায় মার্কিন কোম্পানি

কক্সবাজারের মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাক ওয়ান ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। সেখানে তেল পরিশোধন করে এশিয়ার বাজারে রপ্তানি করতে চায় তারা। মহেশখালীতে ৫০০ একর জমি চেয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কাছে ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠিয়েছে ম্যাক ওয়ান। জমি পেলে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কোম্পানিটির ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমির ব্যবস্থা হলে তারা সেখানে প্রতিদিন দুই লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করে তা শুধু এশিয়ার বাজারে রপ্তানি করবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে আগামী এপ্রিলে বাংলাদেশে আসার আগ্রহ দেখিয়েছেন ম্যাক ওয়ান ডেভেলপমেন্টের প্রেসিডেন্ট কেরি ম্যাকেনা।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাক ওয়ান কোম্পানি পুরোপুরি রপ্তানিমুখী একটি প্রতিষ্ঠান। তারা যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে, এটাই আমাদের জন্য বেশ ইতিবাচক। তাদের বিনিয়োগের আগ্রহ দেখানো মানে হলো, বাংলাদেশ নিয়ে তারা চিন্তা করছে। তারা আগামী এপ্রিলে বাংলাদেশে আসতে চায়। বাকি আলোচনা হবে সরাসরি।’ মহেশখালীতে বিনিয়োগ করতে এরই মধ্যে ম্যাক ওয়ান কোম্পানি একটি সমীক্ষাও সম্পন্ন করেছে। জমি পেলে কোম্পানিটি ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করবে। যদি প্রথম পর্যায়ে নেওয়া প্রকল্প সফল হয়, তবে প্রস্তাবিত তেল পরিশোধন প্রকল্পে সাত হাজার দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। বাংলাদেশ থেকেই নেওয়া হবে শ্রমিক। প্রাথমিক যে সমীক্ষা করা হয়েছে, তাতে তেল শোধনাগারের পাশাপাশি একটি জেটিরও প্রয়োজন হবে।

মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি কমেছে

মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি কমে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘শুল্ক ব্যবস্থাপনা আধুনিক হওয়ায় মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করার প্রবণতা এখন কমে এসেছে। তবে শুল্ক পদ্ধতির আরো আধুনিকায়নে বন্দরগুলোতে স্ক্যানার মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো জরুরি।’

২৬ জানুয়ারি ঢাকার সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সভাকক্ষে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের সেমিনার ও ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন (ডব্লিউসিও) সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য অধিক নিরাপদ করা ও ব্যবসা সহজীকরণে বন্দরের শুল্ক ব্যবস্থার পুরোপুরি অটোমেশন হওয়া জরুরি। তাহলে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে কেউ পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুযোগ পাবে না। কাগজপত্র যাচাই করাও সহজ হবে।’

অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া সাত রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মরণোত্তর ডব্লিউসিও সার্টিফিকেট অব মেরিট প্রদান করা হয়। এছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ অবদান রাখায় এনবিআরের ১০ কর্মকর্তা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকেও (বিএমএ) এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।