Home Blog Page 239

বন্দর ও মেরিটাইম অংশীজনদের ডেটা বিনিময়

অনড় কোনো তথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিজ্ঞতার মুখে আমাদের কতটা পড়তে হয়? ধরুন একটা ছাপা কাগজ, যাতে লিপিবদ্ধ আছে কোনো বন্দরে জাহাজের আগমন ও ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য সময়। কিংবা ধরুন বার্থিংয়ের জন্য সংরক্ষিত তালিকা। এসব তথ্যসংবলিত কাগজটি যতক্ষণে ছাপা হচ্ছে, ততক্ষণে হয়তো তথ্যগুলো আর নতুন থাকছে না।

ডিজিটাল উদ্ভাবন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিসরে গৃহীত হচ্ছে। রিয়েল-টাইম ডেটায় এই প্রবেশ আরো কিছু অন্বেষণের সুযোগ এনে দিচ্ছে, যা কার্যক্রমের প্রথাগত ধরনকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে। আগামী দিনের কোম্পানির সাফল্য তাই কেবল স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে নিহিত নেই। প্রথাগত ভূমিকা ও পদ্ধতিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মধ্যেও এর সাফল্য লুকিয়ে আছে।

ডিজিটাল ডেটা প্রবাহে ক্রমবর্ধমান প্রবেশগম্যতার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন শিল্পের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সবকিছুই এখন স্মার্ট হওয়ার দাবি করছে যেমন স্মার্ট শিপ, স্মার্ট পোর্ট, স্মার্ট কোম্পানি ইত্যাদি। বিভিন্ন পক্ষ এখন স্থানীয় ও হরিজোন্টাল তথ্য বিনিময় (কোনো প্রতিষ্ঠানের সমপর্যায়ের কর্মী, বিভাগ ও ইউনিটের মধ্যে একই তথ্য বিনিময়) কমিউনিটি প্রতিষ্ঠায় সামিল হচ্ছে, যাতে করে তারা তথ্য সম্পর্কে হালনাগাদ থাকার সুযোগ পায়। অনেকে এটা করলেও সেটা কি স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিজেদের সক্ষম করে তোলার প্রয়োজনে, অথবা মেরিটাইম পরিবহন সেবায় সত্যিকারের সহযোগিতার ভিত্তিতে, সেই প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই।

বলা যায়, মেরিটাইম পরিবহন ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সেবা প্রদান সম্ভব হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না অংশগ্রহণকারীরা অর্জন ও সমস্যা, ধারণা সম্পর্কে সঠিক তথ্য সরবরাহ এবং গ্রাহকদের চাহিদার ভিত্তিতে প্রণীত তাদের পরিকল্পনার একক পদ্ধতি তৈরি না করছে। এটা করতে হলে এ খাতের অংশীজনদের সার্বক্ষণিক তথ্য বিনিময়ের কাজটা রপ্ত করতে হবে।

মেরিটাইম শিল্পের প্রকৃতি

মেরিটাইম শিল্পকে প্রায় সময়ই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ইকোসিস্টেমে আছে বহু অংশগ্রহণকারী, যাদের বেশির ভাগই একে অন্যের প্রতিযোগী। একই সাথে সুনির্দিষ্ট কিছু বাজার বা বাণিজ্যের জন্য তারা বিভিন্ন জোটেরও শরিক। এভিয়েশন শিল্পে বিভিন্ন পক্ষ সহযোগিতার যে পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে, মেরিটাইম শিল্পে সে ধরনের একক কোনো কর্তৃপক্ষের অভাব রয়েছে। এটাই এই শিল্পের বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে স্বপ্রণোদিত হয়ে তথ্য বিনিময়কে আবশ্যক করে তোলে, যাতে ডিজিটাল সেবা থেকে উৎসারিত মূল্যের পুরোটা অর্জন করা যায়।

এছাড়া আধুনিক, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য মেরিটাইম সরবরাহ ব্যবস্থা সন্তোষজনকভাবে পরিচালনার জন্য যেটা দরকার হয় তা হলো সক্রিয় অংশীজনদের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরতার স্বীকৃতি দেওয়া। নিজেদের পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে প্রত্যেকেই তাদের অগ্রগতি ও সমস্যার কথাগুলো যাতে একে অপরের সাথে বিনিময় করতে পারে। কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে যেটা হয়ে আসছে তা হলো তথ্যের অপর্যাপ্ততা ও পরিকল্পনা জটিলতার কারণে অনেক অপারেটরই ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ নীতিতে চলছে, আদতে যা অদক্ষ ও অনির্ভরযোগ্য। সেই সাথে ব্যয়সাশ্রয়ীও নয়।

মেরিটাইম খাতে স্থাপিত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থার দিকে তাকালেও একই চিত্র দেখা যায়। ব্যবস্থাটি যারা সরবরাহ করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে আর কোনো ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত নয় অনেকে। এর ফলে খণ্ডিত ও বাস্তবতাবিবর্জিত অবস্থাগত ধারণার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তাতে করে অপারেটররা সম্পদের খুব কমই কাজে লাগাতে পারছে। অনেক সময় সম্পদের অপচয়ও হচ্ছে।

সঠিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অবস্থাগত ধারণার গুরুত্ব

স্বয়ংসম্পূর্ণ ইকোসিস্টেমের অংশীজনরা প্রাপ্ত অবস্থাগত ধারণার ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। এর অর্থ হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের জোগান দেওয়া ডেটার বাইরেও অপারেটরদের কাছ থেকে আরো তথ্য ব্যবহার করা হয় এক্ষেত্রে। অবস্থাগত ধারণা এমন একটি বিষয়, তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত গ্রহণের চাহিদা পূরণের জন্য যা অত্যাবশক। মেরিটাইম শিল্পকে প্রতিনিয়ত যেহেতু নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে, তাই অন্যদের সেবা দিতে অবকাঠামো ও সম্পদ কখন আলাদা করে রাখতে হবে সে-সম্পর্কিত সিদ্ধান্তকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করাটা জরুরি। এটা হতে হবে যতটা সম্ভব সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে, নতুন ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ হয়।

তবে বাস্তবতা হলো অনেক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থাতেই জাহাজের আগমন-নির্গমন সময় অথবা ঠিক কোন সময়ে কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা করা হয়েছে সে সম্পর্কিত তথ্য হালনাগাদ করা হয় না। এটা নির্বিঘ্ন পোর্ট কল প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। মোটকথা, অপারেটর তাদের সিদ্ধান্তের ভিত্তি হিসেবে বিভিন্ন উৎস থেকে যেসব ডেটা ব্যবহার করছে, সময়মতো কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে সেগুলোর সঠিকতা যাচাই করা সবচেয়ে জরুরি।

মেরিটাইম খাতে কানেক্টেড ডিভাইস যেমন স্মার্ট কনটেইনার এখন দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে অতিরিক্ত ও সম্পূরক ডেটা উৎসে প্রবেশগম্যতাও আগামীতে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সমহারে বাড়ছে।

পরিস্থিতিটা কেবল বন্দরে জাহাজের সঠিক সময়ে আগমন বা নির্গমন অথবা কোনো আবদ্ধ কিংবা নিয়ন্ত্রিত জলপথ-সংক্রান্ত হতে পারে। তবে সামগ্রিক যে প্রয়োজন তার ভিত্তি বিভিন্ন গ্রাহকের চাহিদামাফিক সমন্বিত ও সন্তোষজনক সেবা প্রদান করা। উদাহরণ হিসেবে পোর্ট কলের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। বিশেষ করে যখন একই সময়ে একই স্থানে একই সেবার চাহিদা তৈরি হয়।

যখন এককভাবে কোনো ঘটনা সম্পর্কে আগাম ধারণা করা হয় তখন প্রাক্কলিত সরবরাহ ব্যবস্থার মধ্যে কিছু সম্ভাবনা থেকে যায়, যেগুলো ভাবনার মধ্যেই আসেনি। অনেক অপারেটরই তাই আগাম ধারণার সঠিকতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে এবং ঘটনাগুলো যখন সামনে আসছে, সে অনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। বিকল্প ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করা এবং সে অনুযায়ী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বদলে নেওয়ার ঠিক বিপরীত এটা। এর মধ্য দিয়ে সত্যিকারের মূল্য তৈরির জন্য যেটা পূর্বশর্ত তা হলো মানদ- এবং প্রবেশগম্যতার একক পদ্ধতি।

শেষ কথা

সহযোগিতামূলক একটি ব্যবস্থার মধ্যে থেকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্মার্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যেই ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, মেরিটাইম শিল্পে বিশেষ কোন ঘটনাটি ঠিক কখন ঘটবে, সে সম্পর্কে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করাটা সত্যিই কঠিন। প্রাথমিক পরিকল্পনা যেহেতু স্থির নয়, তাই পরিকল্পনা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা প্রয়োজন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেমন বিগ ডেটা অ্যানালিটিকস ও মেশিন লার্নিং পদ্ধতির প্রয়োগে ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ ধরনের বাধা উতরে যাওয়ার একটা প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এখানেও অমীমাংসিত একটি প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, আর তা হচ্ছে এর মাধ্যমে মেরিটাইম শিল্পের অংশীজনরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী অবকাঠামো ও সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারে সমর্থ হবে কিনা। মেরিটাইম পরিবহনের বিভিন্ন গ্রাহক যেমন কার্গো মালিক ও সহায়ক অন্যান্য পরিবহন মাধ্যমকে এ ধরনের উদ্যোগ কাক্সিক্ষত নির্ভরতার নিশ্চয়তা দিতে পারবে কিনা সে নিয়েও সংশয় আছে। এ কারণেই ডেটা বিনিময়ের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি, যাতে করে এ শিল্প-সংশ্লিষ্ট কেউ কোনো নতুন তথ্যের সাথে পরিচিত হলে একই পরিবেশের মধ্যে থেকে কমিউনিটির অন্যদের সাথে যেন তা বিনিময় করতে পারে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রাক্কলিত ডেটা সামনে আনা, তাতে প্রবেশ করা ও তাকে ব্যবহার করার সম্ভাবনা যে প্রক্রিয়াটিকে চালিত করছে, বিষয়টি তেমন নয়। ডিজিটাল সম্ভাবনার এই নতুন ময়দানে নামতে চাইলে যেটা প্রয়োজন তা হলো পদ্ধতিগুলো হালনাগাদ করে নেওয়ার পাশাপাশি মেরিটাইম শিল্পে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া।

ইনফোগ্রাফিক্স- জানুয়ারী, ২০২১

জানুয়ারী, ২০২১

৪৯ টন বিপজ্জনক কেমিক্যাল ধ্বংস

নিলামে বিক্রি করতে না পারায় ৪৮ হাজার ৮৭০ কেজি বিপজ্জনক কেমিক্যাল ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। সুনামগঞ্জের ছাতকে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানির একটি ডিও সাইকেল প্রকল্পে এসব কেমিক্যাল ৬ ডিসেম্বর ধ্বংস করা হয়। প্রায় ১৫ বছরের পুরনো ক্ষতিকর এসব রাসায়নিক চট্টগ্রাম বন্দরের পি শেড থেকে গত ২ ডিসেম্বর তিনটি কাভার্ড ভ্যানে পাঠানো হয়। এ ধরনের রাসায়নিক ধ্বংসের ব্যবস্থা এবং অভিজ্ঞ লোকবল কেবল হোলসিম সিমেন্টের রয়েছে। ফলে সেখানেই ধ্বংসের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

কাস্টমসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান জানান, ‘‘৪৮ হাজার ৮৭০ কেজি বিপজ্জনক কেমিক্যাল ধ্বংস করতে তিনটি কাভার্ড ভ্যানে সুনামগঞ্জ পাঠানো হয়। প্রতিটি গাড়িতে কাস্টমসের প্রতিনিধি ছিল। পণ্য ধ্বংস করার সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানির একটি ডিও সাইকেল প্রকল্পে ধ্বংসের কারণে দেশে একমাত্র তারাই এ ধরনের কেমিক্যাল ধ্বংসের প্রক্রিয়া রেখেছে।’’

যেকোনো ধরনের পণ্য ধ্বংসের আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে স্থান নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ চায় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। কেমিক্যাল ধ্বংসের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের অনুমতি চাইলে বিপজ্জনক পণ্য হওয়ায় সিদ্ধান্তের জন্য মহাপরিচালকের অনুমতি চাওয়া হয়। সেখান থেকে সুনামগঞ্জের ছাতকে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানির ডিও সাইকেল প্রকল্পে এসব কেমিক্যাল ধ্বংসের পরামর্শ দেওয়া হয়।

লাঙলের বদলে মিলল প্রসাধনী

হালচাষের লাঙল আমদানির ঘোষণা দিয়ে তিন কনটেইনার ভর্তি প্রসাধনসামগ্রী এনেছে এক আমদানিকারক। ঢাকার চকবাজারের ৫/এ গোলাম মোস্তফা লেন ঠিকানার সালেহ ট্রেডিংয়ের নামে সিঙ্গাপুর থেকে ৩০ টন পাওয়ার টিলারের ‘লাঙল’ ঘোষণায় তিন কনটেইনার পণ্য আমদানি করা হয়। গত ১১ জানুয়ারি এমভি এক্সপ্রেস কাবরু জাহাজে কনটেইনারগুলো বন্দরে এলেও খালাসের প্রক্রিয়া শুরু করেনি আমদানিকারক। ১১ মাস বন্দর ইয়ার্ডে ফেলে রাখার পর কাস্টমসের হাতে ১০ ডিসেম্বর জব্দ হয় কনটেইনার তিনটি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস গোয়েন্দা দল এআইআর শাখার প্রধান রেজাউল করিম বলেন, ‘‘জাহাজ থেকে নামার পর কনটেইনার তিনটি এত দিন পড়ে থাকায় আমাদের সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছিল। এরপর আমরা নজরদারি বাড়াই। সবার উপস্থিতিতে বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনার খুলে পণ্যের কায়িক পরীক্ষা করা হয়। সেখানে ঘোষণা অনুযায়ী কোনো আমদানি পণ্য (লাঙল) পাওয়া যায়নি।’’ এ সময় লাঙলের পরিবর্তে প্রায় ৫০ টন শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য প্রসাধনসামগ্রী পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে জনসন, সানসিল্ক, ডাভ শ্যাম্পু, পলমোলিভ সোপ, শাওয়ার জেল, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ক্রিম, জিলেট শেভিং ফোম ইত্যাদি। আটক চালানে ২০ ফুট দীর্ঘ দুটি কনটেইনার এবং ৪০ ফুট দীর্ঘ একটি কনটেইনার রয়েছে। সবমিলিয়ে আড়াই কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছিল এ চালানে।

ইলিশ যাবে ইউরোপ-আমেরিকা

মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে ২৬টি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। তবে এজন্য মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এদের মধ্যে তা আছে কেবল ১২টি প্রতিষ্ঠানের।

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, রপ্তানির অনুমোদন শেষ পর্যন্ত দেওয়া হবে কিনা, তা এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর। সাধারণত দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ইলিশ ভারত পর্যন্ত যায়। তাও পূজা-পার্বণ উপলক্ষেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ। তাও আবার পুরো ভারতে নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতেও (ইউএই) কিছু ইলিশ রপ্তানি হয়।

ইলিশ কি এবার ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতেও যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে বছর বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে বলে সমস্যা নেই। এতে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে এমন আশার কথাই বলছেন তাঁরা।

বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আবেদনগুলো অনুমোদন করা যায় কিনা, সেজন্য আমরা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরে চিঠিও পাঠিয়েছি।’’

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন ইলিশ ধরা পড়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন।

আর ১৯ মাস পরেই গাড়ি চলবে পদ্মা সেতুতে

২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ১০ ডিসেম্বর অর্থ বিভাগ আয়োজিত এক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম একথা জানান।

কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের শেষ সভা ছিল এটি। সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার। অর্থসচিব দেশের অর্থনীতির ইতিবাচক দিকগুলো শুধু তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জার্মান সরকারের অর্থায়নে পোশাক, চামড়া ও পাদুকা শিল্পের শ্রমিকদের জন্য চলমান একটি কর্মসূচি বাস্তবায়নের চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তি সই হয় ২ ডিসেম্বর।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘‘পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো তৈরির কাজ শেষ। আশা করছি, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এই সেতু সবার জন্য খুলে দেওয়া হবে।’’ পদ্মা সেতু ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার প্রকল্প। এটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। তাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে বলে সরকার আশা করছে।

একই ছাদের নিচে বিডার আরো ছয় সেবা

দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একই ছাদের নিচে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে নতুন আরো ছয়টি সেবা অনলাইনে চালু করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিডার সদর দপ্তরে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় নতুন ছয়টি সেবা যুক্ত করা হলো। এত দিন অনলাইনে বিনিয়োগকারীদের ৩৫টি সেবা দেওয়া হতো। সেটি বেড়ে এখন ৪১ এ উন্নীত হয়েছে। বিডা বলছে, নতুন বছরের প্রথম মাসে এটি বেড়ে ৫০ এ উন্নীত হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। সালমান এফ রহমান বলেন, ‘‘বিনিয়োগকারী যাতে সব সেবা একই ছাদের নিচে পান, সেটি নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনভিত্তিক ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) দেওয়া শুরু করেছে বিডা। ভবিষ্যতে আমরা ওএসএসের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থার মোট ১৫০টি সেবা দিতে পারব।’’

অনুষ্ঠানে বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস অ্যান্ড রেগুলেটরি রিফর্মের পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় জানান, চালু হওয়া নতুন ছয়টি সেবার মধ্যে তিনটি পরিবেশ অধিদপ্তরের। সেগুলো হলো পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রতিবেদন অনুমোদন, টিওআর অনুমোদন এবং জিরো ডিসচার্জ অনুমোদন। তিনি বলেন, ‘‘আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের শিল্প আইআরসির সনদ এখন থেকে দেওয়া হবে অনলাইনে। উদ্যোক্তারা এখন থেকে বিদ্যুতের সংযোগ পাবে অনলাইনে। এছাড়া ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) বিদ্যুৎ সংযোগও মিলবে অনলাইনে।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগ চালু

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে ১৭ ডিসেম্বর ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকের মাধ্যমে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগ পুনরায় চালু হয়। বৈঠকে দুই নেতার ভাষণের পরপরই দুপুর ১২টার দিকে ৫৫ বছর পর এই রেল সংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

১৯৬৫ সালের আগে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে রেল যোগাযোগ ছিল। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সীমান্ত এলাকার প্রায় নয় কিলোমিটার পথে রেললাইন তুলে নেওয়া হয়। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের বন্ধ রেল সংযোগগুলো চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথও ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ অংশের নয় কিলোমিটারে ব্রডগেজ রেললাইন ও অবকাঠামো নির্মাণে ৮০ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়। অন্যদিকে ভারত অংশে সাড়ে তিন কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয় ভারতের সরকার।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যেভাবে এগোচ্ছে, তা প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বরাবরই প্রাধান্য দেয় ভারত।’’

নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার অংশে রেললাইন বসানোর কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ের ওই প্রকল্পে রেললাইন স্থাপন ছাড়াও বসানো হয়েছে ৪ কিলোমিটার লুপ লাইন, ৮টি লেভেল ক্রসিং, ৯টি ব্রিজসহ অন্যান্য অবকাঠামো।

ভারতও হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করে তাদের অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালিয়েছে।

ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করছে মোংলা বন্দর

মোংলা বন্দর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও বন্দরে আসা জাহাজের লোকজনের পানযোগ্য পানির চাহিদা মেটাতে এ প্লান্ট নির্মাণে ব্যয় হবে ২৪ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। নির্মাণাধীন এ প্লান্ট সম্পন্ন হলে প্রতিদিন ৫০ লাখ লিটার সুপেয় পানি সরবরাহ করা যাবে বন্দর এলাকায়। মোংলা বন্দর ভবন থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের দিগরাজ মোড়ে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির পানির রিজার্ভের পাইলিংয়ের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাউন্ডারি ওয়ালের কাজও প্রায় শেষ। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের মাঝামাঝি এ প্লান্ট নির্মাণ সম্পন্ন হবে। এ প্লান্টের কাজ শেষ হলে সমুদ্রগামী জাহাজ, বন্দর অফিস, আবাসিক এলাকা, বন্দরসংলগ্ন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সুপেয় পানির বাড়তি চাহিদা পূরণ হবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘‘বন্দরে এখন আগের চেয়ে বেশি জাহাজ ভেড়ে। বন্দরের অনেক উন্নয়নও হয়েছে। কিন্তু ভৌগোলিক কারণে বন্দরে সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। আমরা এ সংকটের সমাধান ও সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে একটি আধুনিক সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করছি।’’