Home Blog Page 246

তেল উৎপাদন ব্যয় রেকর্ড সর্বনিম্নে

জ্বালানি তেলের গড় ব্রেকইভেন মূল্য (না লাভ-না লোকসান) চলতি বছর কমে ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলারের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে। দুই বছর আগের তুলনায় এ মূল্য প্রায় ১০ শতাংশ কম এবং ২০১৪ সালের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ। এর অর্থ হচ্ছে ছয় বছর আগের তুলনায় তেলের উৎপাদন ব্যয় এখন অনেক কম। রিস্টাড এনার্জির এক নতুন বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রিস্টাড এনার্জি বলছে, অফশোরে কূপ উন্নয়নের কারণেই উৎপাদন কমছে। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে সংস্থাটির সরবরাহ রেখা ব্যয় অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দিনপ্রতি ১০ কোটি ব্যারেল তেল উৎপাদনে যে দর থাকা প্রয়োজন সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তা ক্রমাগত কমছে। ওই মাত্রায় তেল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে ব্যারেলপ্রতি দাম ৫০ ডলার হলেই চলবে বলে সাম্প্রতিক প্রাক্কলনে উঠে এসেছে।

গ্যাস ক্যারিয়ারে প্রথম ডুয়েল-ফুয়েল এলপিজি কনভারশন সম্পন্ন

বিডব্লিউ জেমিনি নামের বৃহদাকৃতির একটি গ্যাস ক্যারিয়ারে (ভিএলজিসি) প্রথম প্রথাগত জ¦ালানির পাশাপাশি এলপিজি প্রপালশন সিস্টেমে রূপান্তর সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের বহর আরো দক্ষ ও পরিবেশবান্ধব করে তোলার অংশ হিসেবে ইঞ্জিন রূপান্তরের কাজটি শেষ করেছে।

২০১৫ সালে নির্মিত বিডব্লিউ জেমিনি সাড়ে ৫৪ হাজার টনের এলপিজি ট্যাংকার আর ধারণক্ষমতা ৮৪ হাজার কিউবিক মিটার। চীনের ইয়ু লিয়ান ডকইয়ার্ডে ভেসেলটির রেট্রোফিটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর ডেকে স্থাপন করা হয়েছে ৯০০ কিউবিক মিটার ধারণক্ষমতার দুটি এলপিজি ট্যাংক। প্রথাগত জ্বালানির পাশাপাশি ভেসেলটির ডুয়েল-ফুয়েল প্রপালশন ইঞ্জিন চালাতে এ ট্যাংক দুটি থেকে এলপিজি ব্যবহার করা হবে। জেমিনির প্রধান ইঞ্জিনটি কোনো ধরনের কারিগরি সমস্যা ছাড়াই যেকোনো জ্বালানির মাধ্যমে চালু থাকতে পারবে।

মজুদ বাড়াতে রিটেইলারদের রেকর্ড আমদানি

করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে রয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। মার্কিন বন্দরগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের অনেক বন্দরে পণ্যের মজুদ যেমন বাড়ছে, তেমনি সরকারগুলোও পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার সমর্থনে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

সর্ববৃহৎ মার্কিন রিটেইল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন (এনআরএফ) এবং হ্যাকেট অ্যাসোসিয়েটসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, খুচরা বিক্রিতে চাঙ্গাভাবের কারণে চলতি গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড আমদানি হয়েছে। ছুটির মৌসুমকে সামনে রেখে মার্কিন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো পুরনো মজুদ বিক্রি করে নতুন করে মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

অবশ্য আমদানি বাড়ায় বন্দর ও ক্যারিয়ারগুলোর সামনে নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। খালি কনটেইনারগুলো খুঁজে পেতে শিপিং লাইনগুলো যেমন বিপদে পড়ছে, তেমনি বন্দরগুলোয় সৃষ্টি হচ্ছে জট। আর এর প্রভাব পড়ছে শিপিং শিডিউলে, পণ্য প্রবাহে দেখা দিচ্ছে স্লথতা।

ভারতের প্যাসেঞ্জার ভেহিকল রপ্তানিতে ধস

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধ্বে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) ভারতের প্যাসেঞ্জার কার রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে প্রায় ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে প্যাসেঞ্জার ভেহিকল রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫৮ শতাংশ। বৈশ্বিক বাজারে করোনাভাইরাসজনিত বিধিনিষেধের কারণে রপ্তানিতে এ ধস নেমেছে বলে জানিয়েছে সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (এসআইএএম)।

সংস্থাটির সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, অর্থবছরের প্রথমার্ধ্বে প্যাসেঞ্জার ভেহিকল রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ১৫৬ ইউনিটে। অথচ গত বছরের একই সময়ে এটি ছিল ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৪৭ ইউনিট। একইভাবে প্যাসেঞ্জার কার রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ৫২৯টি, গত বছরের ওই সময়ে যা হয়েছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার ৬১৮টি। এছাড়া ইউটিলিটি ভেহিকল রপ্তানি গত বছরের ৭৭ হাজার ৩০৯টি থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৩৭৫টিতে। ভ্যান রপ্তানিও কমেছে প্রায় ৮১ শতাংশ।

মাছ-মাংস-দুধে নেপালের স্বনির্ভরতার উদ্যোগে হোঁচট

মাছ, মাংস ও দুধে হিমালয়বেষ্টিত নেপালের স্বনির্ভরতার উদ্যোগ করোনাভাইরাসের প্রকোপে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরিচালক বংশী শর্মা প্রবাসী নেপালি সংগঠন আয়োজিত এক সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।

সম্মেলনে উপস্থাপিত এক নিবন্ধে শর্মা জানান, নেপালের জিডিপিতে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১৩ শতাংশ। দেশটির ৬০ শতাংশ কৃষক গবাদিপশু লালন-পালনে যুক্ত। কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে এ খাত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখলেও মহামারির কারণে দুধের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি মাছ খাওয়ার অভ্যাসেও ভাটা পড়েছে। দারিদ্র্যের কারণে নেপালিদের মধ্যে মাছ, মাংস ও দুধ খাওয়ার অভ্যাস বাড়েনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গবাদিপশুর খুরা রোগসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে শর্মা জানান, ফেডারেল, রাজ্য ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো একযোগে কাজ করলে এ খাত জাতীয় অর্থনীতিতে আরো বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

নাবিক বদলে চীনের ১০ বন্দর উন্মুক্ত

করোনাভাইরাসসৃষ্ট মহামারিতে মেরিটাইম শিল্পে নাবিক বদলের ব্যবস্থাটি একেবারে ভেঙে পড়েছে, অবহেলিত থাকছে তাদের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো। এ পরিস্থিতিতে সর্বশেষ দেশ হিসেবে চীন বিদেশি নাবিকদের জন্য তাদের ১০টি বন্দর উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাহাজে বা নিজ দেশে অবস্থানে বাধ্য নাবিকদের জন্য দেশটির এ উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বিমকো প্রকাশিত তথ্যে চীনের দালিয়ান, তিয়ানজিন, কিংদাও, সাংহাই, নিংবো, ফুঝাউ, শিয়ামেন, গুয়াংঝু, শেনজেন এবং হাইকো বন্দর বিদেশি নাবিকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে খুবই কঠোর প্রটোকলের অধীনে নাবিক বদলের কাজটি সম্পন্ন হবে। বিমকো এজন্য শিপিং এজেন্সিগুলোকে চীনে তাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শের আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি আশা করছে, বিদেশি নাবিক বদলের ক্ষেত্রে চীনের অন্য বন্দরগুলোও একই পদক্ষেপ অনুসরণ করবে।

আইবিসি ও মারপল সংশোধনী কার্যকরে প্রয়োজন প্রস্তুতি

আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শিপিং শিল্পে বিদ্যমান দুটি ফিটনেস সার্টিফিকেটের স্থলে প্রয়োজন হবে হালনাগাদ সার্টিফিকেট। বিপজ্জনক কেমিক্যাল বহনকারী জাহাজের ফিটনেস অর্থাৎ নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংশ্লিষ্ট আইবিএস কোড এবং বাল্কে ক্ষতিকর তরল পরিবহন সংশ্লিষ্ট মারপল সংযোজনী-২-এর হালনাগাদ সার্টিফিকেট কার্যকরের আগে এ বিষয়ে সকল পক্ষকে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিমকো।

বিমকো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভেসেল চলাচল অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট জাহাজ মালিকদের অবশ্যই নতুন বিধিমালা কার্যকরের আগেই সার্টিফিকেট দুটি সংগ্রহ করতে হবে। জটিলতা এড়াতে সংস্থাটি এজন্য আগে থেকে সার্টিফিকেট ইস্যুর আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া জাহাজগুলোয় নির্দিষ্ট বাষ্প শনাক্ত ডিভাইস সরবরাহে প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি অনেকে বন্দরে ক্ষতিকর তরল আনলোডের পর প্রিওয়াশ সুবিধার ঘাটতি থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে।

২০৪০ নাগাদ সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ তিন গুণ বাড়তে পারে

আগামী দুই দশকে সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্যরে দূষণ বেড়ে তিন গুণ হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল সলিড ওয়েস্ট অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থা তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, প্লাস্টিকের উৎপাদন হ্রাসে কোম্পানি ও সরকারগুলো যদি কার্যকর উদ্যোগ না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

সলিড ওয়েস্ট জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ভোগ বেশ বেড়েছে। এশিয়ার নির্জন সৈকতগুলো ফেস মাস্ক ও ল্যাটেক্স গ্লাভসে সয়লাব হয়ে পড়ছে। ভাগাড়গুলো খাবারের টেকঅ্যাওয়ে পাত্র এবং অনলাইন ডেলিভারি প্যাকেজিংয়ে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে।

দ্য পিউ চ্যারিটেবল ট্রাস্টস এবং সিস্টেমআইকিউর জন্য প্রণীত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানী ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা সম্ভাব্য সমাধানের পথ বাতলেছেন, যেগুলো অনুসরণ করলে সমুদ্রে পরিবাহিত প্লাস্টিকের পরিমাণ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

প্রত্যাবাসনের আশা কমছে নাবিকদের

চলতি বছরের জুলাই থেকে আগস্ট সময়ে নাবিকদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিফেরার্স হ্যাপিনেস ইনডেক্স প্রকাশ করেছে ‘মিশন টু সিফেরার’। সূচকে দেখা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে হ্যাপিনেস বা প্রসন্নতা বাড়লেও নাবিকদের মধ্যে প্রত্যাবাসনের আশা বেশ কমে গেছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের হ্যাপিনেস সূচকে নাবিকদের মধ্যে সুখানুভবে পতন দেখা যায়। দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাতে আরো অবনমন ঘটে। আর তৃতীয় প্রান্তিক অর্থাৎ করোনাভাইরাসসৃষ্ট মহামারির চূড়ান্ত সময়ে নাবিকদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এ সূচক প্রণয়ন করা হয়। এ সময়ে দীর্ঘদিন সমুদ্রে অবস্থানরত বিপর্যস্ত নাবিকদের কল্যাণে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার (আইএমও) উদ্যোগে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তাতে নাবিকদের মধ্যে প্রসন্নতা কিছুটা বাড়লেও প্রত্যাবাসন অর্থাৎ কবে তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা তাদের মধ্যে গেড়ে বসেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে ট্রান্সশিপমেন্ট ও ট্রানজিটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বাংলাদেশ

বিশ্ব বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ট্রানজিট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট। বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় পুরোটাই নৌপরিবহন-নির্ভর হলেও সকল দেশে বন্দর সুবিধা যথাযথ নয়-কোনো দেশ হয়তো স্থলবেষ্টিত আবার কোনো দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর না থাকায় বড় জাহাজ ভিড়তে পারে না, অন্যদিকে কখনো আবার অবস্থানগত কারণে কিংবা সময় এবং খরচ সাশ্রয়ের জন্যও নিজ দেশের বন্দর ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হয়। এসব ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকা- অব্যাহত রাখতে অন্য দেশের বন্দর এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন সড়ক, রেল ও নৌপথ ব্যবহার করা অর্থাৎ ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিট আবশ্যিক হয়ে পড়ে। গভীর সমুদ্রবন্দর না থাকায় বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিও ট্রান্সশিপমেন্ট-নির্ভর। বাংলাদেশ ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে সিঙ্গাপুর, কলম্বো, পোর্ট কেলাং ও তানজং পেলেপাসকে ব্যবহার করে থাকে। আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যবাহী জাহাজ প্রথমে এসব বন্দরে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে ফিডার ভেসেলে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। একইভাবে ট্রান্সশিপমেন্টের প্রয়োজন পড়ে রপ্তানির ক্ষেত্রেও।

তবে অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশও প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে ট্রান্সশিপমেন্ট ও ট্রানজিটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’ শীর্ষক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তিতেই বাংলাদেশের মোংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতকে তার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা আছে। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে মোটরযান চলাচল চুক্তি হয়। সেই চুক্তির আলোকে অন্য দুই প্রতিবেশী দেশকেও ট্রানজিট দিতে পারে বাংলাদেশ। ট্রান্সশিপমেন্ট ও ট্রানজিটের আদ্যোপান্ত রয়েছে এবারের প্রধান রচনায়।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় এর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও নৌপরিবহন শিল্পের ওপর। এতে জাহাজ চলাচল যে পুরোপুরি থামিয়ে দিতে হয়েছে, তেমন নয়। তবে সমস্যায় পড়তে হয়েছে বন্দরগুলোর জাহাজ ভিড়তে দেওয়ায় অস্বীকৃতি ও কোয়ারেন্টিন-সংক্রান্ত বিধানের কারণে। ফলে চুক্তির মেয়াদ শেষেও জাহাজিরা জাহাজ ছাড়তে পারেননি। এর মধ্যেই জাহাজে করোনাভাইরাসের সংক্রমণও বেড়েছে। ক্রুজ জাহাজগুলোয় সংক্রমণ তো ছিল রীতিমতো উদ্বেগজনক! অস্ট্রেলিয়ায় রুবি প্রিন্সেস ও জাপানে ডায়মন্ড প্রিন্সেসের কয়েকশ যাত্রী ও ক্রু কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। এ থেকে বুঝতে বাকি থাকে না যে, মহামারি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কতটা ঘাটতি ছিল এই শিল্পের। বিভিন্ন দেশ ক্রুজ জাহাজকে তাদের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ায় সংক্রমণের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। মহামারির মধ্যেও জাহাজ চলাচল যাতে সচল থাকে, সেজন্য অনেক বেশি নমনীয় হতে হয়েছে জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সবচেয়ে লক্ষণীয় যে বিষয়, তা হলো তাদেরকে শক্তিশালী ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির নেতৃত্বের ভূমিকায় নামতে হয়েছে। করোনা মহামারি নৌপরিবহন শিল্পের জন্য শুধু চ্যালেঞ্জই ছিল না, এমন অভূতপূর্ব অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার নতুন শিক্ষাও দিয়েছে। বিস্তারিত রয়েছে বিশেষ রচনায়।

আইএমও ২০২০ অনুযায়ী স্বল্পমাত্রার সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের (ভিএলএসএফও) পথে অভিগমনের পথটা নিষ্কণ্টক নয় মোটেও। উপাদানগত দিক দিয়ে কম ঘনত্বের ভিএলএসএফওগুলোর মধ্যে লক্ষণীয় মাত্রায় ভিন্নতা রয়েছে। আইএসও ৮২১৭ মানদ-ের ব্যত্যয় পাওয়া গেছে এসব জ্বালানিতে। ভিএলএসএফও সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে, তা হলো উচ্চ মাত্রায় টোটাল সেডিমেন্ট পোটেনশিয়াল বা টিএসপি (জ্বালানি তেলের বিশুদ্ধতা ও স্থায়িত্বের পরিমাপ) ও সামান্য হলেও বেশি মাত্রায় সালফারের উপস্থিতি। একই ফলাফল পাওয়া গেছে বাল্টিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল (বিমকো), ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং (আইসিএস), ইন্টারকার্গো ও ইন্টারট্যাংকোর যৌথ সমীক্ষায়ও। অর্থাৎ বলাই যাচ্ছে, আইএমও ২০২০ অর্জনে ভিএলএসএফও ব্যবহার বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে যাচ্ছে।

প্রিয় পাঠক, আমরা চাই এদেশের মেরিটাইম চর্চাকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তিতে দাঁড় করাতে। বৈচিত্র্যময় আঙ্গিকে, সমৃদ্ধ কলেবরে বন্দরবার্তার পথচলা বাংলাদেশের মেরিটাইম খাতের বিকাশে আরো সহায়ক হবে-সেই প্রত্যাশা। সবাইকে শুভেচ্ছা।