বিশ্বের প্রথম মিথানলচালিত কনটেইনার ফিডার জাহাজ বুঝে পেয়েছে ডেনিশ শিপিং জায়ান্ট মায়েরস্ক। হুন্দাই মিপো ডকইয়ার্ড ও হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ সম্প্রতি ২ হাজার ১০০ টিইইউ কনটেইনার ধারণক্ষমতার জাহাজটি মায়েরস্কের কাছে হস্তান্তর করেছে।
লরা মায়েরস্ক নামের জাহাজটির মেইন ও অক্সিলিয়ারি উভয় ইঞ্জিনই ডুয়েল ফুয়েল শক্তিনির্ভর। ম্যান এনার্জি সলিউশনসের তৈরি ইঞ্জিনগুলো ক্লিয়ার বার্নিং মিথানল দিয়ে পরিচালনা করা সম্ভব।
বিশ্বের শীর্ষ কনটেইনার লাইনারগুলো এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ডুয়েল ফুয়েল জাহাজের কার্যাদেশ দিয়ে রেখেছে, যেগুলোর ইঞ্জিনে মিথানল দিয়ে শক্তি সঞ্চালন করা সম্ভব। আর এই পরিবর্তনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে মায়েরস্ক। বর্তমানে তাদের অর্ডারবুকে ২৪টি গ্রিন মিথানলচালিত কনটেইনার জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি ১৬ হাজার টিইইউ ও ছয়টি ১৭ হাজার টিইইউ ধারণক্ষমতার জাহাজ তৈরি করছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ। আর ছয়টি ৯ হাজার টিইইউ ধারণক্ষমতার কনটেইনার জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছে চীনের ইয়াংজিজিয়াং শিপবিল্ডিং।
পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে রূপান্তরে মায়েরস্কের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য। নতুন জাহাজের পাশাপাশি বিদ্যমান জাহাজগুলোতেও মিথানলচালিত ডুয়েল ফুয়েল ইঞ্জিন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে তারা।
নিজেদের শিপিং খাতে কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ২০২১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত তিনটি ক্লিন মেরিটাইম ডেমোনস্ট্রেশন কম্পিটিশনের (সিএমডিসি) আয়োজন করেছে। এবার প্রতিযোগিতাটির চতুর্থ রাউন্ড আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এর জন্য ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে ব্রিটিশ সরকার।
ইউকে শিপিং অফিস ফর রিডিউসিং এমিশনস (ইউকে শোর) সিএমডিসিতে তহবিল সরবরাহ করে। এটি পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি কর্মসূচি, যার মূল লক্ষ্য হলো মেরিটাইম ডিকার্বনাইজেশনকে ত্বরান্বিত করা ও এর পথের বাধাগুলো দূর করতে সহায়তা করা। সিএমডিসি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করা সরকারি সংস্থা ইনোভেট ইউকে।
চতুর্থ রাউন্ডের এই বিনিয়োগ মিলিয়ে সিএমডিসিতে ব্রিটিশ সরকারের মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াল ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২ আগস্ট থেকে সিএমডিসির চতুর্থ রাউন্ডের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর আগে প্রথম তিন রাউন্ডে যুক্তরাজ্যকে ১০৫টি প্রকল্পকে ১২ কোটি ডলারের বেশি অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র খাতে নতুন নতুন যেসব পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন আসছে, সেগুলোর বাণিজ্যিকীকরণের পরিকল্পনা ও উন্নয়নই এসব প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
শিপিং খাতে নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে সংশোধিত কর্মকৌশল ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের নিট-জিরো স্ট্যাটাস অর্জনের পথে এগিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নতুন লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)। সম্প্রতি (৩-৭ জুলাই) লন্ডনে অনুষ্ঠিত আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম অধিবেশনে এই ঐকমত্য তৈরি হয়। প্রায় ১ হাজার ৮০০ প্রতিনিধি অধিবেশনে যোগ দেন।
অনেকটা প্রত্যাশিতভাবেই অধিবেশনের ফলাফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকের মতে, অধিবেশনে যেসব প্রতিশ্রুতি উঠে এসেছে, সেগুলো খুবই দুর্বল। পরিবেশবাদীরা এমইপিসির এই অধিবেশনকে ব্যর্থ মনে করছেন। অন্যদিকে শিপিং খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈঠকে স্পষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা উঠে এসেছে। তারা এমইপিসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এছাড়া খাতসংশ্লিষ্ট কিছু সংস্থা এই অগ্রগতি অব্যাহত রেখে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
অধিবেশন শেষে আইএমও একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এতে দাবি করা হয়েছে, ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ বন্ধের আরও বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রা ও তা অর্জনে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা সমৃদ্ধ কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মকৌশলে একটি অভিন্ন উচ্চাকাংক্ষার কথা বলা হয়েছে। নিঃসরণমুক্ত ও কম নিঃসরণকারী জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে এতে। অবশ্য এই কর্মকৌশল কোনো চূড়ান্ত সমাধান নয় বলে স্বীকার করেছে আইএমও।
নতুন কর্মকৌশলের নাম ২০২৩ আইএমও স্ট্র্যাটেজি অন রিডাকশন অব গ্রিনহাউস গ্যাস এমিশন ফ্রম শিপস (২০২৩ আইএমও গ্রিনহাউস গ্যাস স্ট্র্যাটেজি)। এতে মোটা দাগে যেসব উচ্চাকাংক্ষা বা লক্ষ্যমাত্রার কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো:
নতুন যেসব জাহাজ নির্মাণ করা হবে, সেগুলোয় জ্বালানি কার্যদক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জাহাজের কার্বন নিঃসরণ কমানো।
২০৩০ সাল নাগাদ শিপিং খাতে পণ্য পরিবহন কার্যক্রমে কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ ২০০৮ সালের তুলনায় অন্তত ৪০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন খাতে কার্বন তীব্রতা কমানো।
২০৩০ সাল নাগাদ নিঃসরণমুক্ত অথবা স্বল্প নিঃসরণকারী জ্বালানি, প্রযুক্তি ও শক্তির ব্যবহার অন্তত ৫ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং সম্ভব হলে ১০ শতাংশে উন্নীত করা।
বিভিন্ন দেশের জাতীয় পরিস্থিতির ভিন্নতা যেমনই হোক না কেন, ২০৫০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের নিট জিরো পর্যায়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
আইএমওর কর্মকৌশলে দুটি নির্দেশক চেকপয়েন্টের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো-
২০৩০ সাল নাগাদ আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন খাতে মোট বার্ষিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ ২০০৮ সালের তুলনায় অন্তত ২০ শতাংশ কমানো এবং সম্ভব হলে এই হার ৩০ শতাংশে উন্নীত করা।
২০৪০ সাল নাগাদ বার্ষিক নিঃসরণের মোট পরিমাণ অন্তত ৭০ শতাংশ এবং সম্ভব হলে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো।
বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা এখনো অধিবেশনের চূড়ান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছেন। তবে তারা এরই মধ্যে এ বিষয়ে প্রাথমিক কিছু পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, যে ধারণা করা হয়েছিল, আইএমওর নতুন কর্মকৌশল তার চেয়ে খানিকটা শক্তিশালী। তবে তা সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।
আইএমওর মহাসচিব কিটাক লিম বলেছেন, ‘নতুন এই কর্মকৌশল গ্রহণ করা আইএমওর জন্য অনেক বড় একটি অগ্রগতি। সমুদ্র শিল্পে নিঃসরণ বন্ধের প্রচেষ্টায় এটি নতুন একটি অধ্যায় যোগ করবে। তবে একই সঙ্গে এটি চূড়ান্ত লক্ষ্যমাত্রা নয়। বরং এটি অনেকাংশে শুরু মাত্র। আগামী বছর ও দশকগুলোয় আমাদের আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যেতে হবে।’
বৈশ্বিক উষ্ণায়ণের প্রভাবে বিগত কয়েক দশক ধরে উত্তপ্ত হচ্ছে সমুদ্রের উপরিভাগ। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে অগুনতি জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে আবাসস্থল বদলেছে অনেক জলজ জীব। যার ফলে বিস্তীর্ণ সাগরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে মৎস্যসম্পদের ঘাটতি। আর্থিক সংকট কাটাতে সেসব স্থানের জেলেরা বিকল্প কর্মসংস্থানের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই জলদস্যুতার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া-সংক্রান্ত জার্নাল ওয়েদার, ক্লাইমেট অ্যান্ড সোসাইটিতে (ডব্লিউসিএএস) প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলদস্যুতার মধ্যকার যোগসূত্র তুলে ধরেন ম্যাকাউ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহকারি অধ্যাপক বোজিয়াং ও মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিসের অধ্যাপক গ্যারি লাফ্রি।
সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বা সি সারফেস টেম্পারেচারের (এসএসটি) হেরফের শীতল রক্তবিশিষ্ট জলজ প্রাণী, উদ্ভিদ ও প্রবালকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার সামান্যতম পরিবর্তনও মাছ সবার আগে টের পায়। পানির তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে সাথে মাছ উষ্ণ অথবা শীতল কোনো স্থানে স্থানান্তরিত হয়। যার ফলে সেই অঞ্চলের বাস্তুসংস্থানে আমূল পরিবর্তন দেখা দেয়। বাস্তুসংস্থানের এই পরিবর্তন মাছের মজুদের ওপর অতিদ্রুত তীব্রতর প্রভাব বিস্তার করে। মাছের মজুদ হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জলদস্যু হামলার তীব্রতা ওঠা-নামা করে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখতেই গবেষণাটি পরিচালনা করেন জিয়াং ও লাফ্রি।
পূর্ব আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চল ও দক্ষিণ চীন সাগর বিশ্বের অন্যতম জলদস্যুপ্রবণ এলাকা। অঞ্চল দুটির ওপর বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিপরিতমুখী প্রভাব বিস্তার করেছে। বিগত বিশ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পূর্ব আফ্রিকা মৎস্য শূন্য হলেও দক্ষিণ চীন সাগরে মাছের পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। প্রাকৃতিক এই পট পরিবর্তনে বদলে গেছে সেখানকার জেলেদের জীবিকার ধরণ।
গবেষণার জন্য অঞ্চল দুটির বিগত দুই দশকের ২ হাজারের বেশি জলদস্যু হামলার ঘটনা যাচাই-বাছাই করেন গবেষকরা। সে সঙ্গে সেসব অঞ্চলের স্থানীয় অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রভাব পর্যালোচনা করেন তারা। গবেষণা শেষে প্রতীয়মান হয় যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণায়নের সাথে জলদস্যু হামলার হ্রাস-বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব আফ্রিকার মাছের মজুদ দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে। যে কারণে এসব অঞ্চলে জলদস্যু হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে উষ্ণতার কারণে মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অঞ্চলে জলদস্যু হামলার ঘটনা কমে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্য সমুদ্রপথে পরিবহন হওয়ায় পণ্যবাহী জাহাজগুলো জলদস্যু হামলার ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে সংকীর্ণ প্রণালী, ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ জলপথে (যেমন সোমালিয়া ও কেনিয়ার মতো আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর উপকূল) এ ধরনের হামলার ঘটনা বেশি ঘটে। প্রতিবছর জলদস্যু হামলার কারণে শিপিং খাতকে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।
লাফ্রি বলেন, জলদস্যু বলতেই আমাদের মানসপটে যে চিত্র ভেসে ওঠে, বাস্তব পরিস্থিতি তার চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। এখনকার জলদস্যুরা অনেক বেশি আধুনিক ও অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর। বাহ্যিক বেশভুষা দেখে জলদস্যুদের চিহ্নিত করার দিন পেরিয়ে গেছে। বর্তমানে জলদস্যুরা জিপিএসের সহায়তায় সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তবে মুখ দেখে জলদস্যু চেনার কোনো উপায় না থাকলেও কোন পরিস্থিতিতে একজন সাধারণ জেলে জলদস্যুতার সাথে জড়িয়ে পড়ে, জিয়াং ও লাফ্রির গবেষণায় সেই চিত্র উঠে এসেছে।
প্রাচীনকাল থেকেই জেলেরা বিশ্বের দরিদ্র সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রযাত্রার দক্ষতা ও বৈরি আবহাওয়া মোকবিলার নৈপুণ্য থাকায় জলদস্যুতার সাথে জড়িত অপরাধীচক্র দরিদ্র জেলেদের নিজেদের দলে ভেড়ায়। সিঙ্গাপুরে বেড়ে ওঠা জিয়াং বলেন, সিঙ্গাপুরের উপকূলবর্তী এলাকার অনেক জেলে ‘স্ট্যান্ডবাই পাইরেটস’ বা খন্ডকালীন জলদস্যু হিসেবে পরিচিত। মোটা দাগে তাদের সবাইকে অপরাধীর কাতারে ফেলা যায় না। কারণ খন্ডকালীন জলদস্যুদের অনেকেই আশানুরূপ মাছ শিকার করতে ব্যর্থ হয়ে জলদস্যুতার পথ বেছে নেয়। যার ফলে কোনো স্থানে মাছ ধরার পরিমাণ কমতে থাকলে সেসব স্থানে জলদস্যু হামলার ঘটনা ক্রমশ বেড়ে যায়।
সামনের দিনগুলোয় গোটা বিশ্ব তথা সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জিয়াং ও লাফ্রি। তাদের মতে, অদূর ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন আরও তীব্র আকার ধারণ করলে এর প্রভাবে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডও জটিল ও গুরুতর হয়ে উঠবে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে। যার ফলে পূর্ব আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চলে জলদস্যু হামলার ঝুঁকি আরও বাড়বে। সোমালিয়া, কেনিয়া বা অন্য কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। গবেষকদের মতে, জলদস্যু হামলা কোনো দেশের একক সমস্যা নয়। তাই আন্তর্জাতিক এই সমস্যার সমাধানে সব দেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন তারা।
ওমান উপসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থানকালে যে তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর গোলাবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ইরানের নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে, সেটিকে আটক করতে আদালতের আদেশ ছিল বলে দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। ইরানের পাল্টা অভিযোগ, ট্যাংকারটি তাদের একটি জাহাজকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় ট্যাংকারটিকে থামতে নির্দেশ দেওয়া হলেও সেটি থামেনি।
মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, ওমান উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় থাকা অবস্থায় বাহামার পতাকাবাহী ট্যাংকার রিচমন্ড ভয়েজারের কাছ থেকে একটি জরুরি সাহায্যবার্তা পায় তারা। এর সঙ্গে সঙ্গেই গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস ম্যাকফাউলকে ঘটনাস্থলে পাঠায় মার্কিন নৌবাহিনী। ইরানি কর্তৃপক্ষ রিচমন্ড ভয়েজারকে থামতে নির্দেশ দেওয়ার পর ট্যাংকারটির ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করে। তবে ম্যাকফাউল পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই ইরানি নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে ইরিন নিউজ এজেন্সিকে ইরানের হরমোজগান প্রদেশের মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ সেন্টার জানিয়েছে, রিচমন্ড ভয়েজার একটি ইরানি জাহাজকে ধাক্কা দেয়। এতে করে জাহাজটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সেটিতে পানি উঠতে শুরু করে। এছাড়া জাহাজটিতে থাকা সাত ক্রুর মধ্যে পাঁচজন আহত হন। ধাক্কা দেওয়ার পর ট্যাংকারটি না থেমে চলে যেতে উদ্যত হয়। এ সময় ইরানি জাহাজটি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে যেন ট্যাংকারটিকে আটক করা হয়। এছাড়া ট্যাংকারটিকে আটক করার বিষয়ে আদালতের পক্ষ থেকেও আদেশ ছিল।
রিচমন্ড ভয়েজারের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি শেভরন জানিয়েছে, ট্যাংকারটির সব ক্রু নিরাপদে আছেন এবং সেটি স্বাভাবিকভাবেই কার্যক্রম চালাচ্ছে।
২০১৯ সাল থেকে উপসাগরীয় জলসীমায় ট্যাংকার চলাচলে বাধা দেওয়া নিয়ে বিরোধ চলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে। সাম্প্রতিক সময়ে এই দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। এর আগে একই এলাকায় মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী ট্যাংকার টিআরএফ মসের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনার কথা জানিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। এছাড়া মাসখানেক আগে এক সপ্তাহের মধ্যে দুটি ট্যাংকারকে আটক করেছিল ইরান।
চলতি বছরের জুনে বিকল্প জ্বালানি-নির্ভর জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশের দিক থেকে এলএনজিকে পেছনে ফেলেছে মিথানল। গত মাসে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিচালিত মোট ৫৫টি জাহাজের কার্যাদেশ পেয়েছে ইয়ার্ডগুলো। এর মধ্যে মিথানলচালিত জাহাজের সংখ্যা ২৯। আর এলএনজিচালিত জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ এসেছে ২৬টি।
ডিএনভির অল্টারনেটিভ ফুয়েলস ইনসাইট (এএফআই) প্লাটফর্মের পরিসংখ্যানে এই চিত্র উঠে এসেছে। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, চলতি বছর জুন পর্যন্ত মোট ১২৮টি বিকল্প জ্বালানি-নির্ভর জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ এসেছে।
ডিএনভি বলছে, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি-নির্ভর নতুন জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে কনটেইনার জাহাজের প্রাধান্য রয়েছে। জুনে পাওয়া এলএনজিচালিত জাহাজের নতুন কার্যাদেশের প্রায় অর্ধেকই কনটেইনার জাহাজ। আর মিথানলচালিত জাহাজের ক্ষেত্রে এ হার ৮০ শতাংশ। নতুন কার্যাদেশ পাওয়া জাহাজগুলো বহরে যুক্ত হলে এলএনজিচালিত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা ২৫০-এর বেশি ও মিথানলচালিত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা ১০০টির বেশিতে উন্নীত হবে।
২০৫০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের নিট পরিমাণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সম্মত হতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। লন্ডনে চলমান ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম সেশন উপলক্ষ্যে দেওয়া এক অডিও বার্তায় তিনি এই আহ্বান জানান। এ সময় তিনি কার্বন নিঃসরণ বন্ধের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয় সমুদ্র পরিবহনের মাধ্যমে। আর বিশ্বে মোট কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের প্রায় ৩ শতাংশের জন্য দায়ী এই খাত। পরিবেশবাদী ও শিপিং খাতের বিনিয়োগকারীরা নিঃসরণ বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে কার্বন শুল্ক আরোপও রয়েছে।
রেকর্ডকৃত বার্তায় গুতেরেস বলেন, ‘আমি আপনাদের প্রতি আর্জি জানাচ্ছি, যেন আপনারা ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্র খাতে নিট জিরো এমিশনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উদ্দেশ্যে একটি গঠনমূলক গ্রিনহাউস গ্যাস কৌশলের বিষয়ে সর্বসম্মত হয়ে লন্ডন ত্যাগ করেন। আপনাদের নিঃসরণ কমানো ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবহার-উভয় বিষয়েই একটি বিজ্ঞানসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।’ এই লক্ষ্যমাত্রা শিপিং খাতের অংশীজন ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সঞ্চার করবে বলে জাতিসংঘের মহাসচিব মনে করেন।
বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। মঙ্গলবার সৌদি আরবের মিনা প্যালেসে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ আগ্রহের কথা জানান তিনি। অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। সৌদি যুবরাজ এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
মঙ্গলবার সালমান এফ রহমানের জনসংযোগ কর্মকর্তার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে সৌদি যুবরাজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান সালমান এফ রহমান। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করে সৌদি যুবরাজ বলেন, অগ্রগতির পথে আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তিনি একটি সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, যা ভবিষ্যতে দু’দেশের উন্নয়ন ও অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
তৈরি পোশাক খাতকে নীতিগত সহায়তা দিতে সরাসরি রপ্তানিমুখী সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। মঙ্গলবার সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, সরকার পোশাক খাতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন নীতি সহায়তা প্রদান করছে। ব্যবসা সহজীকরণের উদ্দেশ্যে এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (আইআরসি) এবং এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ইআরসি) নবায়নের মেয়াদ এক বছর থেকে বৃদ্ধি করে পাঁচ বছর করা হয়েছে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে নিবন্ধন সার্টিফিকেটের মেয়াদ এক বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর করা হয়েছে এবং ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ এক বছর থেকে বৃদ্ধি করে পাঁচ বছর করা হয়েছে। ফলে রপ্তানিকারকদের সময় ও ব্যয় হ্রাস হয়েছে।
রপ্তানিমুখী শিল্পের সব প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুধু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) অবস্থিত সরাসরি রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর করা হয়েছে। ইপিজেডের প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্যদের মেয়াদ না বাড়ানোয় বৈষম্য তৈরি হবে। তাই তৈরি পোশাক রপ্তানি বাণিজ্যের সক্ষমতা ও প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা এবং ব্যবসা সহজীকরণ ও ব্যয় হ্রাসের জন্য সরাসরি রপ্তানিমুখী সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স নবায়নের মেয়াদ দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) গ্রিনহাউজ গ্যাস ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গত শুক্রবার শেষ হয়েছে। আজ (৩ জুলাই) লন্ডনে শুরু হওয়া আইএমওর মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম সেশনের আগে এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠক। অবশ্য বৈঠকটির পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে আইএমও যে সংশোধিত কৌশল গ্রহণ করেছে, তা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে না।
সমুদ্র শিল্পে সবুজ রূপান্তরকে গতিশীল করতে যে বিষয়টির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, সেটি হলো কার্বন শুল্ক আরোপ। নিঃসরণের ওপর বাজারভিত্তিক শুল্ক নির্ধারণ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ওপর ভর্তুকি প্রদান না করা হলে গ্রিন অ্যামোনিয়া অথবা গ্রিন মিথানলের মতো ব্যয়বহুল জ্বালানির সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করা দুরূহ হবে।
জ্বালানি বিশ্লেষক মারগাউক্স মুর বলেন, ‘যে জায়গাটাতে আমরা এখনো পিছিয়ে রয়েছি, সেটি হলো কার্বন শুল্কের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনো। স্বল্প নিঃসরণকারী জ্বালানির প্রচলনে সহায়তার জন্য আমাদের অবশ্যই কার্বন নিঃসরণের ওপর শুল্ক আরোপ করতে হবে। তা না হলে নিঃসরণ কখনোই বন্ধ করা যাবে না।’
আইএমওর তেল-নির্ভর দেশগুলোকে কার্বন শুল্কের পক্ষে রাজি করানো বেশ কঠিন কাজ হবে। তবে চলতি বছরই এ বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মতামত জানতে ভোটের আয়োজন করতে পারে আইএমও। গ্রিনহাউস ওয়ার্কিং গ্রুপের সদ্যসমাপ্ত বৈঠক পর্যবেক্ষণকারী কনসাল্টিং ফার্ম ইউএমএএসের তথ্য অনুযায়ী, আইএমওর বেশিরভাগ সদস্য রাষ্ট্র বেশ কয়েকটি মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এর মধ্যে কার্বন শুল্ক আরোপের বিষয়টিও রয়েছে।
বর্তমানে একটি কার্বন শুল্ক প্রস্তাবনা চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। অবশ্য কিছু সংখ্যক সদস্য রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে।
আইএমওর বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা হলো প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বর্ণিত নিঃসরণমুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক অর্জন করা। তবে পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ও সমুদ্র খাতসংশ্লিষ্ট কিছু গ্রুপের মতে, ২০৫০ সালের জন্য প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, আইএমওর নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া দরকার।
এমইপিসির ৮০তম সেশনে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সাল নাগাদ ৭০ শতাংশ কমানোর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার প্রস্তাব উত্থাপন করার কথা রয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অনুমোদিত হলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ নিয়ে আইএমওর কৌশল প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে অবদান রাখতে ব্যর্থ হবে বলে মনে করছে ইউএমএএস।