Home Blog Page 257

দ্য জিওগ্রাফি অব ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমস

পরিবহন ব্যবস্থা, বিশেষ করে যাত্রী ও পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে নৌপরিবহন শিল্প পৃথিবীর ভৌগোলিক দিকগুলোর সাথে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে জড়িত। সাদা চোখে যতটুকু দেখা যায়, ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে ভূরাজনৈতিক প্রভাব তার চেয়ে অনেক বেশি। এরই বিস্তারিত রূপ উঠে এসেছে নতুন করে পরিমার্জিত দ্য জিওগ্রাফি অব ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমস বইতে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক জঁ-পল রদ্রিগ সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে নৌপরিবহন ব্যবস্থার ধারণা, পদ্ধতি, আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার স্পেইশাল প্ল্যানিং এবং তার প্রয়োগ-সংক্রান্ত দিক উঠে এসেছে।

উত্তর আমেরিকা বা ইউরোপের সাথে পূর্র্ব এশিয়ার মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম যেমন মেলে না, মধ্যপ্রাচ্যের পরিবহন ব্যবস্থাও দক্ষিণ আমেরিকার তুলনায় অনেকটা ভিন্ন। এসব মাথায় রেখে দশ অধ্যায়ে বিভক্ত বইয়ের প্রতিটি অংশে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর কয়েকটি করে নিবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সাপ্লাই চেইনের অবিচ্ছেদ্য বিভিন্ন অংশ যেমন নেটওয়ার্ক, মোড, টার্মিনাল, ফ্রেইট ট্রান্সপোর্ট, আরবান ট্রান্সপোর্ট, সর্বজনমান্য কিছু মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট নীতিমালা, ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিং, পলিসি, পরিবেশের ওপর ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের প্রভাবের মতো উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো উঠে এসেছে একেক অধ্যায়ে। শুধু আলোচনাই নয়, এ সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তও সংযোজিত হয়েছে ১৪০টি ছবি, ফিগার, ম্যাপ, ছকে সাজানো চতুর্থ সংস্করণে। নীরস ছক আর গ্রাফ শুধু নয়, প্রচুর ইনফোগ্রাফিকও ব্যবহার করা হয়েছে বইটিতে।

রাউটলেজ থেকে ২০২০ সালে প্রকাশিত দ্য জিওগ্রাফি অব ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমসের পঞ্চম সংস্করণটির সাথে মিলিয়ে একটি সঙ্গী ওয়েবসাইটও প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করা হয়। পাঠ শেষে বইয়ের ওপর মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ, গবেষক, পাঠকদের মতামত বা বুক রিভিউ প্রকাশের সুযোগ রয়েছে সেখানে।

বিস্তারিত জানা যাবে এখানে- https://transportgeography.org/ 

৪৮০ পৃষ্ঠা এবং ১৪০টি সাদা-কালো ইলাস্ট্রেশনসহ পেপারব্যাক বইয়ের দাম রাখা হয়েছে ৩৯.১৯ পাউন্ড, হার্ডকভারের মূল্য ৯৬ পাউন্ড। বইটির ই-বুক সংস্করণ পাওয়া যাবে ৩৯.১৯ পাউন্ডে।

আইএসবিএন ১৩: ৯৭৮-০৩৬৭৩৬৪৬৩২

তাইচাং বন্দর

সেই তৃতীয় শতক থেকে নাবিকদের কাছে লিউজিয়াগ্যাং বন্দর নামে পরিচিত হলেও নব্বইয়ের দশকে এসে চীনের জিয়াংশু প্রদেশের ব্যস্ততম বন্দরটির নতুন নামকরণ হয় তাইচাং। নানটং বন্দর থেকে ৩৩ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পূব এবং সাংহাই বন্দর থেকে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত তাইচাং ইয়াংজি নদীব্যবস্থার অন্তর্গত বন্দর। উর্বর নদী মোহনার তীরে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে মূলত কৃষিপণ্যের আমদানি-রপ্তানি করেছে তাইচাং। দিগন্ত বিস্তৃত কৃষিজমির কারণে নাম রাখা হয়েছিল তাইচাং, মান্ডারিন চাইনিজ ভাষায় যার অর্থ ‘সবুজ প্রকৃতি’। চাল, তেলবীজ, তুলা, গবাদিপশু এবং মৎস্যসম্পদ ছিল এখানকার প্রধান রপ্তানি পণ্য। সময়ের পালাবদলে প্রথমে শিল্পায়ন এবং পরবর্তীতে বিশ্বায়নের প্রভাবে ‘স্টেট ফার্স্ট ক্লাস পোর্ট অ্যান্ড কনটেইনার ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট’ মর্যাদা পাওয়া বন্দরটি বর্তমানে চীনের অন্যতম প্রধান বন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র।

সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল শিপিং সেন্টারের উত্তর বাহু হিসেবে ট্রাংক লাইন কনটেইনার পোর্ট হয়ে কাজ করছে তাইচাং বন্দর। ইয়াংজি নদীর তীর বরাবর ৩৮.৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক গভীর ড্রাফটের বার্থসংবলিত বন্দরটির স্থিতিশীল শোরলাইন থাকায় কনটেইনার ট্রান্সশিপমেন্ট হাব পোর্ট হিসেবে বিশে^ অন্যতম আদর্শ অবস্থানে আছে। সর্বশেষ প্রকাশিত ২০২০ সালের ব্যস্ততম শত বন্দরের লয়েড’স তালিকায় এ বন্দরের অবস্থান ৩০তম। ১৯৯১ সালে গঠিত তাইচাং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট জোন গঠনের পর অটোমোবাইল, মেশিনারি এবং ইলেকট্রনিকের মতো ভারী শিল্পে প্রচুর জার্মান বিনিয়োগ আসতে থাকে। উপযুক্ত সরকারি সহায়তা এবং নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইনের কল্যাণে অন্যান্য দেশের বৃহৎ শিপিং কোম্পানিগুলোও এখানে বিনিয়োগ করতে শুরু করে। মূলত এ সময় থেকেই তাইচাং বন্দরের আধুনিকায়নের যাত্রা শুরু।

মূলত কনটেইনার বন্দর হলেও ড্রাই বাল্ক কার্গো এবং পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যও হ্যান্ডল করে তাইচাং। মোট ৪৮টি বার্থ আছে এখানে, যার মধ্যে ২৪টিতে ১০ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণক্ষমতার জাহাজ ভিড়তে পারে। বছরে ৭৬ মিলিয়ন টন কার্গো এবং ২.৩৫ মিলিয়ন টিইইউ কনটেইনারবাহী কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের সুবিধা আছে এখানে। মোট ২ হাজার ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে ১০টি কনটেইনার বার্থে ১২৫ হেক্টর কনটেইনার ইয়ার্ড, ৭.৫ হেক্টর বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং ২.৫ হেক্টর রপ্তানিমুখী পণ্যের ওয়্যারহাউসে ১৬টি কনটেইনার ক্রেন এবং ৪৭টি গ্যান্ট্রি ক্রেনের সাহায্যে বছরে মোট ৪.৩৫ মিলিয়ন টিইইউ কনটেইনার ওঠা-নামা করানো হয়। বন্দরে অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে নেভিগেশনযোগ্য গভীরতা যেকোনো সময় অন্তত ১২.৫ মিটার হওয়ায় ৭০ হাজার ডিডব্লিউটি পর্যন্ত বাল্ক ভেসেল এবং চতুর্থ প্রজন্মের কনটেইনার জাহাজ প্রবেশ করতে সক্ষম। জোয়ারের সময় এ সক্ষমতা বেড়ে ২ লাখ ডিডব্লিউটি বাল্ক ক্যারিয়ার এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ প্রজন্মের কনটেইনার জাহাজে পৌঁছায়। মাসে গড়ে ৯০০টির কিছু বেশি কনটেইনার জাহাজ আসে তাইচাং বন্দরে।

২১টি বার্থ থেকে বাল্ক জাহাজকে সেবা দেওয়া হয় তাইচাংয়ে। যার মধ্যে আছে উগ্যাং আকরিক টার্মিনাল, জিউলং পেপার ব্রেক বাল্ক টার্মিনাল, ওয়ানফ্যাং ব্রেক বাল্ক টার্মিনাল, হুয়ানেং পাওয়ার প্লান্ট কোল টার্মিনাল এবং পরিবেশবান্ধব পাওয়ার প্লান্ট কোল টার্মিনাল। মোট ৪ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যরে বার্থগুলোতে বার্ষিক প্রায় ৭১ মিলিয়ন টন বাল্ক পণ্য হ্যান্ডল করা হচ্ছে।

পোর্ট অব তাইচাংয়ের পেট্রোকেমিক্যাল ডকগুলোর অপারেটর সংস্থা হলো মোবিল (চীনা), চ্যাংজিয়াং এবং ইয়ানহং পেট্রোকেমিক্যালস। মোট ১ হাজার ৩৫৪ মিটার বার্থে ৭.০৫ মিলিয়ন টন পেট্রোকেমিক্যাল দ্রব্য লোড-আনলোড করা যায়। সংরক্ষণ ট্যাংকের মোট ধারণক্ষমতা ৮ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার।

অন্তত পাঁচটি সমুদ্রগামী কনটেইনার শিপিং লাইন, ১৯টি অভ্যন্তরীণ কনটেইনার লাইন এবং ইয়াংজি নদী দিয়ে চলাচলকারী ৪৫টি ফিডার সার্ভিস কোম্পানির হোম পোর্ট তাইচাং। তাইওয়ান, কোরিয়া এবং জাপানের সাথে চারটি শর্ট-রেঞ্জ সার্ভিসও পরিচালিত হয় এখান থেকে।

সংবাদ সংক্ষেপ – জানুয়ারী

দক্ষিণ আটলান্টিকে ভাঙছে বৃহত্তম হিমবাহ 

সাউথ আটলান্টিক আইল্যান্ডে রুটিন টহল চলাকালীন সময় বিশ্বের বৃহত্তম আইসবার্গে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স। প্রথমে আরএএফ এয়ারবাস ৪০০এম ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্র্যাফট ব্যবহার করে এবং পরে সম্প্রতি তোলা স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এ৬৮এ নামক আইসবার্গটির উত্তর অংশে অন্তত ৫৫ বর্গমাইল আয়তনের বরফখ- ভেঙে বেশ কয়েকটি ছোট অংশে পরিণত হয়েছে। মূল হিমবাহটি সাউথ জর্জিয়ার ৩০ নটিক্যাল মাইল দূর দিয়ে স্রোতের টানে ভেসে চলেছে।    

ধীরে-সুস্থে বিডব্লিউএমএস ইনস্টলেশন বাঁচাবে ব্যয় জায়গা

২০২৪ সালের মধ্যে সমুদ্রগামী সকল জাহাজের জন্য ব্যালাস্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (বিডব্লিউএমএস) ইনস্টলেশন  বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জাহাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিডব্লিউএমএস  কেনার আগে খরচ কমানো এবং টেকসই ইনস্টলেশনের উদ্দেশ্যে কিছু গাইডলাইন দিয়ে নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিডব্লিউএমএস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টেকক্রস। তাদের মতে, সঠিক বিডব্লিউএমএস বেছে নেওয়ার প্রথম শর্ত হলো, একে অবশ্যই পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কিত সকল বিধিমালা মেনে চলার উপযোগী হতে হবে। এতে ক্রয়, মেরামত এবং সংরক্ষণ ব্যয়ও কমবে।      

নিজস্ব শিপিং জোট গঠনের পরিকল্পনা দক্ষিণ কোরিয়ার

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চলাচলকারী নিজেদের পাঁচ শিপিং কোম্পানিকে নিয়ে বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রীয় শিপিং অ্যালায়েন্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এসএম মার্চেন্ট মেরিন, এইচএমএম, জ্যাংগিউম মার্চেন্ট মেরিন, প্যান ওশান এবং হিউংয়ে লাইন মিলে কোরিয়ায় আমদানি-রপ্তানি হওয়া পণ্যের অর্ধেক আনা-নেওয়া করে। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় ঘোষিত এ জোট গঠিত হলে অপারেশনাল ব্যয় হ্রাস করার মাধ্যমে অন্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে এক ধাপ এগিয়ে যাবে কোরিয়া।। 

ইইউ শিপ রিসাইক্লিং পদ্ধতির গলদ নির্ণয়ের চেষ্টায় বিমকো

যদিও ইইউ অনুমোদনপ্রাপ্ত পরিবেশবান্ধব উপায়ে রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু বৃহৎ আকারের বাণিজ্যিক জাহাজের ক্ষেত্রে এসব ইয়ার্ডের কার্যক্ষমতা এখনো সন্তোষজনক নয়। জাহাজ মালিক, এজেন্ট, ব্রোকারদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিমকোর মতে, ইইউ নির্ধারিত নীতিমালা মেনে গোটা ইউরোপে পানাম্যাক্স আকারের জাহাজ রিসাইক্লিং করার ক্ষমতা রাখে কেবল তুরস্ক। ফলে ইউরোপীয় জাহাজ মালিকদের সামনে জাহাজের অন্তিম সময়ে পতাকা পরিবর্তন করে ইউরোপের বাইরে পাঠানো ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। আবার দক্ষিণ এশিয়ায় রিসাইক্লিংয়ে বেশি অর্থ পাওয়া যায় বলে ইউরোপীয় মালিকেরা এখানে শিপব্রেকিংয়ে অধিকতর আগ্রহী।

দেশের পশ্চিমে স্থলবন্দর নির্মাণ করবে নেপাল

পরিকল্পনা অনুযায়ী এ ইনল্যান্ড টার্মিনাল নির্মাণ করা গেলে ভারতের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর মুম্বাইয়ের জেএনপিটির সাথে যোগাযোগ সহজ হবে। দেশের পশ্চিম সীমান্ত-সংলগ্ন নেপালের কাঞ্চনপুর জেলার দোধারা চান্দানিতে নির্মিতব্য এ স্থলবন্দর থেকে মুম্বাইয়ের আরব সাগর উপকূল সবচেয়ে কাছে। ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে জেএনপিটিকে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে ভারত। মুম্বাই থেকে রেল সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দুই বন্দরকে যুক্ত করা হবে এবং তাতে নেপালের মূল সমুদ্রবন্দর হিসেবে কলকাতার ওপর চাপ কমবে। পাশাপাশি দোধারা-চান্দানি-বানবাসা এলাকায় আন্তঃদেশীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা যাচাই করবে নেপাল। 

ধর্মঘটে পিছিয়ে গেল শস্যবাহী ১৪০ জাহাজের লোডিং 

নতুন বেতনস্কেলে চুক্তির দাবিতে পোর্ট-সাইড তেলবীজ শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে ১৪০টির বেশি জাহাজে শস্যবোঝাইয়ের কাজ পিছিয়ে গেছে আর্জেন্টিনায়। দেশটিতে সম্প্রতি চলমান অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে ক্ষতিপূরণের দাবিতে তেলবীজ শ্রমিকদের দুই প্রধান ইউনিয়নকে সাথে নিয়ে আর্জেন্টাইন সরকারের সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন সয়া বাইপ্রডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারাররা। আসছে আগস্টের মধ্যে এক লাফে ২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা। কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব থাকায় সরকারের এ বেতন বৃদ্ধি অন্তত তিন দফায় করার প্রস্তাব দিয়েছে।

কনটেইনার টার্মিনাল বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিচ্ছে জেএনপিটি

কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন দেশের বৃহত্তম বন্দরের কনটেইনার টার্মিনালকে প্রাইভেটাইজেশনের উদ্দেশ্যে প্রস্তাবনা পাস করেছে জওহরলাল নেহরু পোর্ট ট্রাস্টের পরিচালনা পর্ষদ। বোর্ডসভায় ছয়জন সদস্যের প্রত্যেকেই পক্ষে ভোট দিলেও দুই শ্রমিক নেতা এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। প্রায় ৮০০ কোটি রুপির পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে বেসরকারি খাতে কনটেইনার পরিচালনার প্রস্তাবনাটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হচ্ছে দেশের পোর্টস, শিপিং অ্যান্ড ওয়াটারওয়েজ মিনিস্ট্রিতে। দিন দিন কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ কমতে থাকার প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিল জেএনপিটি পোর্ট ট্রাস্ট।

বসন্ত পর্যন্ত থমকে থাকবে নৌপর্যটন

নিয়মিত কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা বর্ধিত করায় ক্রুজ ইন্ডাস্ট্রিতে অনিশ্চয়তার মেঘ সহসা কাটছে না। কোভিড-১৯ টিকা দান শুরু হওয়ায় অচলাবস্থা কাটিয়ে সদ্যবিদায়ী বছরের শেষে হয়তো স্বাভাবিক হবে নৌপর্যটন খাত; সংশ্লিষ্টদের আশাভঙ্গ করে বেশির ভাগ দেশ আগামী বসন্তকাল তথা মধ্য-মার্চ পর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নরওয়ের পর সর্বশেষ দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও নৌপর্যটনে কড়াকড়ি আগামী তিন মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

স্বয়ংক্রিয় জাহাজ বহর নির্মাণ করবে রাশিয়া

অভ্যন্তরীণ কার্গো ও প্যাসেঞ্জার জাহাজে অটোনোমাস নেভিগেশন সিস্টেম ইনস্টলে মোরসপেটসার্ভিস এবং সিএনার্জি শিপিং কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ রাশিয়ান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ক্রনশট্যাড টেকনোলজিস যৌথভাবে স্বয়ংক্রিয় জাহাজের বাণিজ্যিক বহর গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে রাশিয়ার পতাকাবাহী অন্তত ১০০ অটোনোমাস ভেসেল নির্মাণের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে দশ শাখালিন কার্গো-প্যাসেঞ্জার ভেসেল এবং শাখালিনেট মাল্টিপারপাস হাই-স্পিড ক্যাটামারান নিয়ে কাজ করবে মোরসপেটসার্ভিস, যার প্রথম দুই অটোনোমাস শিপ এমএসএস পাইওনিয়ার এবং এমএসএস অ্যাভানগার্ডে ২০২১ সাল স্বয়ংক্রিয় নেভিগেশন সিস্টেম ইনস্টল করা হবে।   

নিজেদের নির্মিত আফরাম্যাক্স ট্যাংকার আনল ইরান

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে নিজ দেশে জাহাজ নির্মাণ প্রযুক্তি বিকাশের ঘোষণা দেওয়ার দুই বছর পর দেশে নির্মিত মাঝারি আকৃতির ট্যাংকার নির্মাণকাজ প্রায় শেষ করে এনেছে ইরান। অজ্ঞাতনামা বিদেশি ক্রেতার জন্য নির্মীয়মাণ ৮২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এবং ১ লাখ ১২ হাজার ডেড ওয়েট টনের ট্যাংকারটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবি প্রকাশ করেছে দেশটির বার্তা সংস্থাগুলো। পারস্য উপসাগরের বুশেহর উপকূলে ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ডস কর্পস পরিচালিত সাদরা কোম্পানি নির্মাণ করছে এটি। ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিক নাগাদ আফরাম্যাক্স ট্যাংকারটি ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।  

ডিজিটাইজেশনে দরকার ব্যয় হ্রাস এবং পরিচালনে দক্ষতা

২০২০ সালের মে মাসে ইনমারস্যাট এবং লয়েড’স লিস্ট কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত এক জরিপ বলছে, শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে ডিজিটাইজেশনের মূল চাবিকাঠি হলো ব্যয় সাশ্রয় এবং অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি (৭১ শতাংশ ভোটদাতার মতে)। ৬০ শতাংশ বলেছে শক্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থার কথা। এবিবি, ব্যুরো ভেরিটাস, জিটুওশেন এবং হেমপেলে কর্মরত নৌবাণিজ্যে জড়িত ব্যক্তিদের কাছে টেকনোলজি ট্রান্সফার-বিষয়ক মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। নুন রিপোর্টের মতো ম্যানুয়েল পদ্ধতি ব্যবহার করে ভেসেলের রিয়েল-টাইম ডেটা প্রাপ্তির প্রয়োজনীয়তাও উঠে এসেছে রিপোর্টে।

শিপ রিসাইক্লিংয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে চীন

২০১৮ সালের শেষ নাগাদ নিজেদের উপকূলে বিদেশি জাহাজ রিসাইক্লিং নিষিদ্ধ করার পর থেকেই এ নিয়ম তুলে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপে আছে বেইজিং। নিষেধাজ্ঞার ফলে চীনা ইয়ার্ডগুলো ব্যবসা হারালেও ভারত ও বাংলাদেশের শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোর ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। আগের চেয়ে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে জাহাজ ভাঙার শর্তে রিসাইক্লিং ব্যান তুলে নেওয়া হলে দূষণের দায়ে অভিযুক্ত দক্ষিণ এশিয়ার বাদবাকি ইয়ার্ডগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দূষণ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত দক্ষ চীনের দেখানো পথে হাঁটবে, আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদ সংকেত – জানুয়ারী

২০২৩-২৪ এর মধ্যে প্রতিটি ২৪ হাজার টিইইউর বেশি ধারণক্ষমতার মোট ছয়টি জাহাজ নির্মাণের জন্য শিপ লিজিং প্রতিষ্ঠান ইমাবারি শিপবিল্ডিংয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ওশান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস (ওয়ান)। নির্মাণ শেষে এগুলো হবে বিশ্বের  বৃহত্তম কনটেইনার জাহাজ।

দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বৈরুত বিস্ফোরণের ঘটনায় লেবাননের তৎকালীন এবং বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এবং তাঁর মন্ত্রিসভার আরো চার সদস্যের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে শিপিং ইন্ডাস্ট্রি থেকে সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক নির্মূলের উদ্দেশ্যে নীতিমালা ও রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে ইউকে চেম্বার অব শিপিং। 

২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এশিয়া-ইউরোপ নৌপথে ভাড়া বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে এমএসসি। ইতিমধ্যেই শ্রীলংকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, পাকিস্তান থেকে অ্যান্টুয়ার্প ও ভ্যালেন্সিয়া বন্দরগামী পণ্যের সংশোধিত ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

আফ্রিকার বৃহত্তম প্রকল্প হিসেবে সেনেগালে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নতুন গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তুলবে ডিপি ওয়ার্ল্ড। ১ হাজার ৫০০ একর স্থাপনায় ৭০০ একরজুড়ে কনটেইনার টার্মিনালের পাশাপাশি থাকবে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।

লা হাভরে থেকে রাশিয়া ও ফিনল্যান্ডে সরাসরি সাপ্তাহিক শর্টসি সার্ভিস চালু করল কসকো। ফলে ফ্রান্স থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ ও কোটকাতে ৪-৫ দিনেই পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে।

৫ মিলিয়ন টন ভেরি লো সালফার ফুয়েল অয়েল রপ্তানির জন্য একটি বেসরকারি পরিশোধনাগারের পাশাপাশি দেশীয় পাঁচ কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে চীন।

অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞার পরও মে মাস থেকে অপেক্ষমাণ কয়লাবাহী কার্গো জাহাজকে বন্দরে ভেড়ার অনুমতি দিল চীন। ২০১৮ সালে হুয়াওয়েকে অস্ট্রেলিয়ার ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার সুযোগ বঞ্চিতের পর থেকে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই বৃহত্তম জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং দায়ু  শিপবিল্ডিং অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং একীভূত হয়ে যাওয়ার প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে চীনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে কলম্বো বন্দরে ট্রান্সশিপমেন্ট ভলিউম নভেম্বরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে; যা গত বছরের এ সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৩ শতাংশ কম। 

দায়ু শিপবিল্ডিংকে প্রতিটি ২৩ হাজার ৫০০ টিইইউ ধারণক্ষমতার ছয়টি আলট্রা লার্জ জাহাজ নির্মাণের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কার্যাদেশ দিয়েছে হ্যাপাগ-লয়েড।

ব্রিটিশ উইন্ড ফার্মে ডেনমার্ক ট্যাক্স অথরিটির বসানো ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কর প্রদানের বিরুদ্ধে ড্যানিশ ট্যাক্স আপিল এজেন্সিতে অভিযোগ করবে বিশে^র বৃহত্তম অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওরস্টেড।

এসএমএসে অন্তর্ভুক্ত হলো সাইবার নিরাপত্তা

মেরিটাইম শিল্পের জন্য সাইবার নিরাপত্তা এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা (আইএমও) জাহাজের সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (এসএমএস) সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ২০২১ সাল জাহাজ পরিচালনাকারীদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।

শিপিং শিল্পে সাইবার ঝুঁকির হুমকি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি আইএমও খাতসংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে মেরিটাইম সেফটি কমিটির (এমএসসি) রেজল্যুশন এমএসসি.৪২৮(৯৮) গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সম্ভাব্য সাইবার ঝুঁকি শনাক্তের অনুরোধ জানিয়েছে। ওই রেজল্যুশন অনুযায়ী, শিপ অপারেটরদের নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের বিদ্যমান এসএমএস যথাযথভাবে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলা করতে সক্ষম। ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যালওয়্যার আক্রমণ, এনক্রিপ্টেড হুমকি, ক্রিপ্টো জ্যাকিং, সার্ভার বা সিস্টেমে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, র‌্যানসমওয়্যার আক্রমণ এবং আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) ম্যালওয়্যার।

সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলায় আইএমও একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রদান করেছে, যেখানে মেরিটাইম খাতে ঝুঁকিগুলো শনাক্তের পাশাপাশি সেগুলো মোকাবিলা বা ব্যবস্থাপনায় বিস্তারিত সুপারিশমালা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব সুপারিশ বিদ্যমান এসএমএস ম্যানুয়ালে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার লক্ষ্য শিপিং খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়তা করা।

জাহাজের যেসব সিস্টেমে সাইবার হামলার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রিজ সিস্টেমস, কার্গো হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস, প্রপাালশন অ্যান্ড মেশিনারি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পাওয়ার কন্ট্রোল সিস্টেমস, অ্যাকসেস কন্ট্রোল সিস্টেমস, প্যাসেঞ্জার সার্ভিসিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস, প্যাসেঞ্জার ফেসিং পাবলিক নেটওয়ার্কস, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যান্ড ক্রু ওয়েলফেয়ার সিস্টেমস এবং কমিউনিকেশন সিস্টেমস।

সাইবার ঝুঁকি সম্পর্কে আইএমওর এ গাইডলাইন সংশ্লিষ্ট অন্য নীতিমালাগুলোর আলোকে একটি উপযুক্ত সাইবার ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্র প্রণয়নে সহায়তা করবে বলে শিল্পসংশ্লিষ্টরা অভিমত প্রকাশ করেছেন।

কনটেইনার স্বল্পতায় ভূমিকা রাখছে ব্ল্যাংকড সেইলিং

শিপিং কনটেইনারের বৈশ্বিক স্বল্পতা এখন শিপিং শিল্পের অন্যতম আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সংকটের কারণে একদিকে রপ্তানিকারকরা যেমন তাদের পণ্য গন্তব্যে পাঠাতে পারছে না; অন্যদিকে ক্যারিয়ারগুলো যেখানে প্রয়োজন সেখানে প্রয়োজনীয় খালি কনটেইনার পাচ্ছে না। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ড্রিডরি কনটেইনার স্বল্পতার এ সংকটকে সরবরাহ সংকট হিসেবে না দেখে লজিস্টিকস সংকট হিসেবেই দেখছে।

ড্রিউরি তাদের নতুন প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিনিয়োগ স্বল্পতার কারণে এ সংকটের সৃষ্টি হয়নি; বরং সমস্যাটি রিপজিশনিং ইস্যু। ২০২০ সালের প্রথমার্ধ্বে ক্যারিয়ার কোম্পানিগুলো অত্যধিক পরিমাণে খালি কনটেইনার পরিবহন করেছে। আর সেটাই কনটেইনার স্বল্পতা তীব্রতর হওয়ার পেছনে আংশিক ভূমিকা রেখেছে। ড্রিউরির তথ্যে দেখা গেছে, খালি কনটেইনার পরিবহন অত্যধিক মাত্রায় বেড়েছে। ২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধ্বে কিছু কিছু বাণিজ্যপথে তা ছিল মোট সেইলিংয়ের ৩০ শতাংশ। ফলে চীনের মতো কার্গো চাহিদাকেন্দ্রে খালি কনটেইনারের স্বল্পতা তীব্রতর হয়েছে।

এদিকে ভারতে কনটেইনার স্বল্পতার কারণ হিসেবে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা ভূমিকা রেখেছে। ২০২০ সালের এপ্রিল-নভেম্বরে দেশটির আমদানি কমেছে ২২-২৪ শতাংশ। অন্যদিকে রপ্তানি একই সময়ে বেড়েছে ২৯ শতাংশ। ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে কনটেইনারের সংকট দেখা দিয়েছে। আর এ সংকটে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের ভাড়া। খাতভিত্তিতে ভাড়া বেড়েছে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। তাতে লোকসানে পড়েছে রপ্তানিকারকরা।

কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার মহাসচিব উমেশ গ্রোভার এ প্রসঙ্গে বলেন, ভারতের শক্তিশালী আমদানি অংশীদার হচ্ছে চীন। কিন্তু দেশটি থেকে আমদানিতে নজরদারি বাড়ায় এবং কিছু কিছু চীনা পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করায় ভারতে পণ্য আমদানি কিছুটা কমেছে। আর তাতেই রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় খালি কনটেইনারের সংকট দেখা দিয়েছে।

নতুন কোভিড বিধিনিষেধ থেকে নাবিকদের অব্যাহতির সুপারিশ ইইউর

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন একটি ধরন (স্ট্রেন) ছড়িয়ে পড়লে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো পুনরায় কিছু ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে এ বিধিনিষেধ থেকে নাবিকদের অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। এদিকে চার্টারাররা তাদের চুক্তির ধারায় নাবিক বদলের সুযোগ না রাখায় আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা (আইএমও)-এর তীব্র সমালোচনা করেছে।

করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে আগত ব্যক্তিদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিধিনিষেধ জারির পর ইউরোপীয় কমিশন ভ্রমণ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে নতুন করে কিছু সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। নতুন সুপারিশগুলো গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত সুপারিশমালার হালনাগাদ সংস্করণ। এতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে নাবিকদের অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জোটটির কমিশনার ফর জাস্টিস ডিডিয়ের রেন্ডার্স বলেন, ‘ভাইরাসের নতুন ধরনের বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ খুবই জরুরি। নতুন সুপারিশমালার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, বিধিনিষেধগুলো সমন্বিত হোক, যেন নাগরিক ও জরুরি প্রয়োজনে ভ্রমণকারীরা দেশে ফিরে আসার ক্ষেত্রে অব্যাহতি পায়।’

এদিকে আইএমওর মহাসচিব কিতাম লিম চার্টার পক্ষগুলোর চুক্তির ধারায় নাবিক বদলের কোনো সুযোগ না থাকায় এর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এ জাতীয় ধারা এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া নাবিকদের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলবে। পাশাপাশি নাবিক বদলের চলমান সংকট সমাধানে যেসব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, সেগুলোও বাধাগ্রস্ত হবে। আইএমওর পাশাপাশি চার্টারারদের ওই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।

দীর্ঘ ও কষ্টকর হবে ক্রুড অয়েল ট্যাংকার বাজার পুনরুদ্ধার

বৈশ্বিক অপরিশোধিত তেলের ট্যাংকার বাজারের আউটলুক (ভবিষ্যৎ আভাস) স্বল্পমেয়াদে তেমন উজ্জ্বল নয়। মেরিটাইম গবেষণা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ড্রিউরি তাদের নতুন এক বিশ্লেষণে এ তথ্য জানিয়েছে। ওই বিশ্লেষণে প্রতিষ্ঠানটি অতিসক্ষমতা এবং তেলের চাহিদায় অনিশ্চয়তার বিষয়টি তুলে ধরেছে। পাশাপাশি ভেসেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মোকাবিলায় এ শিল্প যে ব্যর্থ হয়েছে তাও জানিয়েছে।

ড্রিউরি তাদের বিশ্লেষণে জানায়, অপরিশোধিত তেলের ট্যাংকারের অতিসক্ষমতা কমাতে জাহাজ মালিকদের উদ্যোগে বেশ ঘাটতি ছিল। ২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধ্বে ভেসেলগুলোর আয়ে যথেষ্ট পতন ঘটলেও ২০১৯ সালের পর মাত্র একটি ভিএলসিসি (বৃহদাকৃতির জাহাজ) ভাঙা হয়েছে। অথচ একই সময়ে বাজারে ঢুকেছে ১০৪টি নতুন ভিএলসিসি।

ভাসমান মজুদাগার হিসেবে ট্যাংকার ব্যবহারের প্রবণতা কমে আসায় আরো বেশি ভেসেল বাজারে সহজলভ্য হয়েছে। ড্রিউরির তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৭৪টি ভিএলসিসি এখন ভাসমান মজুদাগার হিসেবে সক্রিয় রয়েছে। ফলে এর হার ১১ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলার পেরিয়ে গেলেও ড্রিউরি জানাচ্ছে, বৈশি^ক তেলের চাহিদা ২০২২ সালের আগে ২০১৯ সালের স্তরে পৌঁছবে না। প্রতিষ্ঠানটির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাজারে বেশ কয়েকটি টিকা চলে আসায় তেলের বাজার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে। তবে এগুলোর কার্যকারিতা ও বৈশ্বিক সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে যাওয়ায় বাজার পুরোপুরি পুনরুদ্ধার হতে আরো সময় লাগবে।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে ড্রিউরি জানিয়েছে, পুরনো কিছু ভেসেল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলে বাজার কিছুটা পুনরুদ্ধার হতে পারে। কারণ ২০২১ ও ২০২২ সালে আরো ১০২টি নতুন ভেসেল বাজারে প্রবেশ করবে। ফলে অপরিশোধিত তেলের ট্যাংকার বাজারের পুনরুদ্ধার হবে দীর্ঘ ও কষ্টকর।

অফশোরে ঝুঁকছে যুক্তরাজ্যের গ্রিড অপারেটর

উত্তর সাগরের উত্তাল জলে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে আরো সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে ব্রিটেনের বিদ্যুৎ গ্রিড অপারেটর। অফশোর বায়ু শিল্প গড়ে তুলতে সংস্থাটি সরকারের ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের কর্মসূচি থেকে সহায়তা চেয়েছে।

ন্যাশনাল গ্রিডের নির্বাহীরা ডিসেম্বরে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছে। অফশোরে বেড়ে চলা প্রকল্পগুলো কীভাবে ভূমিতে স্থাপিত নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়, সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রতিটি আলাদা আলাদা কেবলের মাধ্যমে সংযুক্ত। এ সংযোগগুলো সমন্বয় করা গেলে নতুন অবকাঠামোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে।

অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ শিল্প গড়ে তোলা অগ্রগণ্য দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেন একটি। ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির উদ্যোগগুলো অন্য দেশগুলোকেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।

বন্দর আধুনিকায়নের উদ্যোগ দক্ষিণ কোরিয়ার

দক্ষিণ কোরিয়া দেশটির বন্দরগুলোর পুনরায় উন্নয়নে ১০ বছর মেয়াদি এক উচ্চাভিলাসী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ৬০০ কোটি ডলারের এ উদ্যোগের লক্ষ্য-বন্দরগুলোকে সংশ্লিষ্ট শহরগুলোর সঙ্গে আরো ভালোভাবে সমন্বিত করা এবং পর্যটন, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যকে আরো চাঙ্গা করে তোলা।

থার্ড বেসিক পোর্ট রিডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের আওতায় আগামী দশকের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। দেশটির ওশানস অ্যান্ড ফিশারিজ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী পাক জুন-ইয়ং এ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, ‘জাতীয় ও আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বন্দরগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। তবে এও সত্য যে, কিছু কিছু বন্দর স্থাপনা শহর উন্নয়নে প্রতিবন্ধক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। নতুন পরিকল্পনার অধীনে আমরা বন্দর ও শহরকে আরো সমন্বিতভাবে উন্নয়ন করতে সক্ষম হবো।’