Home Blog Page 258

বাণিজ্যিক ভেসেলগুলোর জন্য লোহিত সাগর ঝুঁকিপূর্ণ

লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর, আরব সাগর এবং ভারত মহাসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক ভেসেলগুলোকে সতর্ক করে ইউএস মারাড এক বার্তায় জানিয়েছে, বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর জন্য ইয়েমেন এখনো ঝুঁকি হিসেবে রয়ে গেছে।

সংস্থাটি তাদের সতর্কবার্তায় বলেছে, ওই অঞ্চলে চলাচলকারী জাহাজগুলোর জন্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মিসাইল, রকেট, প্রোজেক্টাইল, মাইন, মনুষ্যবিহীন আকাশযান বা জলের নিচের ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস। ইয়েমেন সংকট এখনো চলমান থাকায় বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর জন্য এ ঝুঁকি রয়ে গেছে। মারাড বিদ্যমান ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে ওই সাগর ও মহাসাগরগুলোয় চলাচলকারী জাহাজগুলোকে নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপগুলো যাচাই করে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যেমন সবসময় যেন এআইএস চালু থাকা তা নিশ্চিত রাখা ও ভিএইচএফ চ্যানেল ১৬ পর্যবেক্ষণ করা। নিরাপত্তা হুমকির পাশাপাশি জলদস্যুতা নিয়েও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

হাইড্রোজেনকে বাণিজ্যিকভাবে গ্রহণযোগ্য করতে উদ্যোগ

আগামী ছয় বছরের মধ্যে গ্রিন হাইড্রোজেনের আকার ও উৎপাদন ৫০ গুণে উন্নীত করার এক বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের ঘোষণা এসেছে। এ উদ্যোগ শিপিং খাতসহ বিশ্বের সবচেয়ে কার্বন-ঘন শিল্পগুলোর সবুজ রূপান্তরে সহায়তা করবে।

নতুন ‘গ্রিন হাইড্রোজেন ক্যাটাপুল্ট’ নামের এ উদ্যোগে গ্রিন হাইড্রোজেন কোম্পানিগুলোকে ২০২৬ সালের মধ্যে ২৫ গিগাওয়াট সক্ষমতার নবায়নযোগ্য হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়া হতে পারে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, হাইড্রোজেনের বর্তমান মূল্য কিলোগ্রামপ্রতি ২ ডলারের নিচে নামিয়ে আনা। এ উদ্যোগের অংশীদার কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে এসিডব্লিউএ পাওয়ার, সিডব্লিউপি রিনিউয়েবলস, এনভিশন, আইবারড্রোলা, ওরস্টেড এবং ইয়ারা।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি কিলো হাইড্রোজেনের দাম ২ ডলারের নিচে নেমে এলে গ্রিন হাইড্রোজেন বেশ কয়েকটি খাতে জ্বালানির চাহিদার অন্যতম গ্রহণযোগ্য উৎসে পরিণত হবে।

অফশোর বায়ুবিদ্যুতে উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য জাপানের

অফশোর বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাবনা অনুসন্ধানে জাপান নতুন এক উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশটি ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৫ গিগাওয়াট সক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎ (বৈশ্বিক বিদ্যমান সক্ষমতা) প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে।

পরিকল্পনায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ গিগাওয়াট সক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। জাপানের নতুন এ পরিকল্পনা দেশটিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো দেশগুলোর কাতারে উন্নীত করবে। ওই দেশগুলো ২০৪০ সালের মধ্যে সম্মিলিতভাবে হাজার হাজার গিগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাপান ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য-নির্গমন লক্ষ্য পূরণের পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশটির এ পরিকল্পনা জাপান উইন্ড পাওয়ার অ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্যের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ।

আর্কটিকে দীর্ঘায়িত শিপিং মৌসুম

আর্কটিক মহাসাগরে বরফের আস্তরণ দিন দিন পাতলা হওয়ার কারণে চলতি বছর প্রাকৃতিক গ্যাস ট্যাংকারগুলো আরো লম্বা সময় ধরে এ পথে চলাচলের সুযোগ পেয়েছে। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে, জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের অংশে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

নর্দান সমুদ্রপথটি রাশিয়ার পশ্চিমের ব্যারেন্টস সি থেকে পূর্বের বেরিং প্রণালি পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার নটিক্যাল মাইল বিস্তৃত। সাধারণত জুন থেকে অক্টোবর সময়ে এ পথটি জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত থাকে, যখন উচ্চ তাপমাত্রার কারণে বরফের আস্তরণ ভেঙে যায়। চলতি বছর এক মাস আগেই এ পথে জাহাজ চলাচল শুরু হয় এবং চলতে থাকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। শিপিং মৌসুমের এ লম্বা সময় ইঙ্গিত দিচ্ছে, অঞ্চলটি বাদবাকি বিশ্বের তুলনায় দ্বিগুণ গতিতে উষ্ণায়িত হচ্ছে।

আইবিসি কোড ও মারপল অ্যানেক্সে সংশোধনী

২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে আইবিসি কোড ও মারপল অ্যানেক্স টু সংশোধনী। সংশোধনীগুলোর কারণে ভেসেলগুলোর জন্য নতুন সার্টিফিকেট অব ফিটনেস (সিওএফ) বছরের প্রথম দিনের মধ্যেই ইস্যু করার পাশাপাশি জাহাজে তা সংরক্ষণও করতে হবে।

এমইপিসি (মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটি) ২০১৯ সালে এমইপিসি.৩১৮ রেজল্যুশন পাস করে। ওই রেজল্যুশনের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিশাল আকারে (বাল্ক) বিপজ্জনক কেমিক্যাল বহনকারী জাহাজগুলোর নির্মাণ-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ বা আইবিসি কোড সংশোধন করা। মূলত এ সনদের আটটি ধারায় এ সংশোধনী কার্যকর হবে। সংশোধনীতে আইবিসি সনদের ১৭ ও ১৮ নং অধ্যায়ে তালিকাভুক্ত দ্রব্যগুলোর শ্রেণিকরণ আরো সমন্বয়পূর্ণ (হারমোনাইজড) করা হয়েছে, যেন ২০০৪ সালের আগে ও পরে মূল্যায়িত দ্রব্যগুলো একই মানদ- অনুসরণ করে। 

জাহাজে স্ক্রাবার স্থাপন উচ্চ সালফার জ্বালানির চাহিদা বাড়াচ্ছে

সমুদ্রে চলাচলকারী জাহাজগুলোয় স্ক্রাবার বা দূষণ হ্রাসে সহায়ক সরঞ্জাম স্থাপনের হিড়িক পড়েছে। আর তাতে বাড়ছে সবচেয়ে নোংরা মেরিন জ্বালানি বলে পরিচিত এইচএসএফও বা উচ্চ সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের চাহিদা।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত স্ক্রাবারযুক্ত জাহাজের সংখ্যা ৮০ শতাংশ বেড়েছে। ডিএনভি জিএল-এর তথ্যে দেখা গেছে, মূলত কনটেইনার ও ড্রাই বাল্ক ভেসেলগুলোয় অধিকাংশ স্ক্রাবার যুক্ত করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম সংস্থা (আইএমএ) ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে স্বল্প সালফারযুক্ত জ্বালানির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। তবে জাহাজে স্ক্রাবার স্থাপন করলে এ বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি মেলে। আর এ কারণে অনেক জাহাজ পরিচ্ছন্ন জ্বালানি না ব্যবহার করে স্ক্রাবার যুক্ত করে উচ্চ সালফারযুক্ত জ্বালানি তেলের ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।

পরিত্যক্ত পণ্যের বিষয়ে এফআইএটিএ’র গাইডলাইন

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এফআইএটিএ) পরিত্যক্ত পণ্য বিষয়ে তাদের নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। একশরও বেশি জাতীয় সংস্থা এবং সাড়ে পাঁচ হাজার ফরোয়ার্ডিং অ্যান্ড লজিস্টিকস কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনটির এ নির্দেশিকা ফ্রেইট ফয়োয়ার্ডারদের লিয়েন অধিকার চর্চা ও শিপিং কোম্পানিগুলোর মালামাল জব্দ এবং দাবি নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে। এফআইএটিএর আইন-বিষয়ক উপকমিটি এবিএলএম এ নির্দেশিকাগুলো প্রণয়ন করেছে।

পরিত্যক্ত বা অসংগৃহীত পণ্য ফ্রেইট ফয়োয়ার্ডারদের নিত্য মাথাব্যথার কারণ। শিপার বা কার্গোর কনসাইনি যখন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালামাল গ্রহণ না করে তখন ফ্রেইট ফয়োয়ার্ডাররা শিপিং লাইনগুলোর দাবির মুখে পড়ে। কার্গোর মালামালের ক্ষেত্রে চুক্তিসংশ্লিষ্ট লিয়েন কার্যকর করার জন্য অনেক সময় শিপিং লাইনগুলো বিল অব ল্যান্ডিংয়ে তাদের চুক্তিগত অধিকার চর্চা করে। এফআইএটিএর নতুন নির্দেশনাগুলো পরিত্যক্ত পণ্য বিষয়ে মীমাংসায় আসতে সব পক্ষকে সহায়তা করবে।

বছর শেষে চীনের রপ্তানিতে ঊর্ধ্বগতি

গত নভেম্বরে চীনের রপ্তানি ২০১৮ সালের প্রথমার্ধের পর সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন দেখেছে। আর তাতেই বাণিজ্য উদ্বৃত্তে মাসিক রেকর্ড দেখেছে দেশটি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে কীভাবে মহামারিসংশ্লিষ্ট পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা ভূমিকা রাখতে পারে তা এই রপ্তানি তেজিভাবে উঠে এসেছে। গত নভেম্বরে চীনের কোম্পানিগুলো ২৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা যেকোনো মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। এদিকে নভেম্বরে আমদানি প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৪ শতাংশ। ফলে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার, যা রীতিমতো এক রেকর্ড। দেশটির অর্থনীতির ইঞ্জিনে শক্তি জোগাতে মহামারির সময় প্রয়োজনীয় পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।

জৈবজ্বালানি কোনো সমাধান নয়: ইউরোপীয় থিংক ট্যাংক

উড়োজাহাজ ও জাহাজের জন্য ইলেকট্রোফুয়েলের পরিবর্তে বায়োফুয়েলের ওপর অতিনির্ভরতা ইউরোপে পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। ইউরোপের ক্লিন ট্রান্সপোর্ট ক্যাম্পেইন গ্রুপ ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট (টিঅ্যান্ডই) ইইউকে সতর্ক করে জানিয়েছে, বায়োফুয়েলের ক্ষেত্রে নির্ভরতা ইউরোপকে আবারো অতীতের দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি করতে পারে।

সংস্থাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাসটেইনেবিলি অ্যান্ড স্মার্ট মোবিলিটি স্ট্র্যাটেজিকে স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি বায়োফুয়েলের ব্যর্থতায় ফিরে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েও সতর্ক করেছে। টিঅ্যান্ডই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বায়োফুয়েলের ওপর নির্ভরতা কমিশনের হাইড্রোজেন স্ট্র্যাটেজির পরিপন্থি। এছাড়া বৃক্ষনিধন নির্মূলে ব্লকটির লক্ষ্যের সঙ্গে তা অসঙ্গতিপূর্ণ। ২০৩০ সাল থেকে উড়োজাহাজ ও জাহাজে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইইউ। তবে তারা জানিয়েছে, বিকল্প জ্বালানির অধিকাংশই আসবে জৈবজ্বালানি থেকে। আর এতেই ইউরোপকে অতীত ব্যর্থতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে টিঅ্যান্ডই।

অস্ট্রেলীয় অফশোরে কার্বন ধারণের প্রকল্প

অস্ট্রেলিয়ার অফশোরে কার্বন ডাই-অক্সাইড ধারণ ও মজুদে দেশটির তেল ও গ্যাস খাতের কোম্পানিগুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছে। ‘ডিপসি স্টোর প্রজেক্ট’ নামের এ প্রকল্পে অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শিল্প উৎস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড তরল আকারে ধারণ করে সেখান থেকে দেশটির অফশোরে একটি ভাসমান স্টোরেজ অ্যান্ড ইনজেকশন (এফএসআই) হাবে স্থানান্তর করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় এফএসআই হাবেব কাছাকাছি মাটির নিচে একটি কার্বন ডাই-অক্সাইড ইনজেকশন কূপও নির্মাণ হবে।

ডিপসি স্টোর প্রজেক্টের উদ্দেশ্য-অস্ট্রেলীয় সরকারের লো এমিশনস টেকনোলজি স্টেটমেন্টের সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রাখা। সরকারের ওই স্টেটমেন্টে কার্বন ধারণ ও মজুদ ব্যবস্থা পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক প্রযুক্তির একটি।