Home Blog Page 26

গভীর সমুদ্রে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার পশ্চিম দিকে সাগরে ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু হয়।

পাইপলাইনটির সিংহভাগই সাগরের তলদেশে স্থাপন করা, যার দৈর্ঘ্য ১১০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম বন্দরের সহায়তায় পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রক্রিয়া গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকেই শুরু করা হয়েছিল। প্রায় এক ঘণ্টার মাথায় গতকাল বিকেল চারটার দিকে আমদানি তেলবাহী ট্যাংকারটি প্রথমে গভীর সাগরে মুরিং পয়েন্টে (বিশেষায়িত বয়া) রশি দিয়ে বাঁধা হয়। পরে সেখানকার পাইপলাইনের সঙ্গে ট্যাংকারটির পাইপের সংযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু হোসপাইপের সমস্যার কারণে গতকাল তেল খালাস শুরু করা যায়নি। কারিগরি ত্রুটি সমাধানের পর আজ সকাল থেকে প্রথম তেল খালাস শুরু করা হয়। খবর প্রথম আলোর।

সরকারি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে ট্যাংকার থেকে তেল খালাস শুরু হয়েছে। এই তেল সাগরের তলদেশের পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ায় পাম্প স্টেশন ও ট্যাংক ফার্মে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে দুই লাখ টন তেল ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাংক রয়েছে।

মহেশখালীর ট্যাংক ফার্মে তেল জমা হওয়ার পর সেখান থেকে পাম্প করে তা চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূল হয়ে বন্দরনগরীর পতেঙ্গায় অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে বলে জানান মো. লোকমান।

বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) অধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড।

প্রকল্পের আওতায় সাগরে মুরিং বা বিশেষায়িত বয়ার মতো স্থাপনা বসানো হয়েছে। প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সৌদি আরব থেকে আমদানি করা ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল ‘এমটি হোরে’ নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে খালাসের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের সীমাবদ্ধতার জন্য কর্ণফুলী নদীতে তেল খালাসের বিশেষায়িত জেটিতে বড় ট্যাংকার ভিড়তে পারে না। এ কারণে জ্বালানি তেল নিয়ে আসা বড় ট্যাংকারগুলো প্রথমে সাগরে নোঙর করে রাখা হচ্ছিল।

পরে ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে পাইপের মাধ্যমে তা খালাস করা হচ্ছিল। এতে এক লাখ টন তেলবাহী একটি ট্যাংকার থেকে তেল খালাসে ১০ থেকে ১১ দিন সময় লাগত।

সনাতন পদ্ধতিতে তেল খালাসে খরচ ও সময় বেশি লাগার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ বা ভাসমান জেটি নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তিন দফা প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।

বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি) চুক্তির ভিত্তিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় নির্মিত পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র দুই দিনে প্রায় এক লাখ টন জ্বালানি তেল খালাস সম্ভব হবে।

রপ্তানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ

পণ্য রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। ফাইল ছবি

পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইতিবাচকভাবে বছর শেষ করেছে বাংলাদেশ। সদ্য বিদায়ী ২০২২–২৩ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য। এই রপ্তানি তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

এক অর্থবছরে ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। যদিও বিদায়ী অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। সেই লক্ষ্যের চেয়ে রপ্তানি কম হয়েছে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ বা ২৪৪ কোটি ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সোমবার রপ্তানি আয়ের এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, শুধু গত জুনে ৫০৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের জুনের তুলনায় এই রপ্তানি ২ দশমিক ৫১ শতাংশ বেশি।

ডলার–সংকট নিয়ে বছরখানেক ধরেই দেশের অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে। আর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মূল দুই উৎস হচ্ছে প্রবাসী আয় ও পণ্য রপ্তানি। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দুটি উৎস থেকেই গত বছরের শেষ দিকে বৈদেশিক মুদ্রা আসা কিছুটা কমে যায়। তবে পরে আবার তা ঘুরেও দাঁড়ায়।

বিদায়ী অর্থবছর শেষে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ। গত ২০২১–২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য ও চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি বেড়েছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হোমটেক্সটাইল ও প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি কমেছে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত ২০২১–২২ অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি হয়েছে ১২২ কোটি ডলারের। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি কমেছে পৌনে ২ শতাংশ।

দুই-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করবে ইতালি

চলতি দশকের শেষ নাগাদ নিজেদের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নবায়নযোগ্য উৎসের মাধ্যমে উৎপাদনের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ইতালি। দেশটি ২০৩০ সালের শেষ নাগাদ ৬৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করবে। আগে এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৫ শতাংশ।

ইতালি বিদ্যুৎ উৎপাদন, আবাসন, পরিবহনসহ সামগ্রিক জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎসের মাধ্যমে পূরণের লক্ষ্য ঠিক করেছে। পুরনো পরিকল্পনায় এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ শতাংশ।

ইউরোপীয় কমিশন তাদের ফিট-ফর-৫৫ প্যাকেজ ও নবায়নযোগ্য পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এর প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রকে জলবায়ু মোকাবিলায় সংশোধিত জ্বালানি পরিকল্পনা ঘোষণার আহŸান জানিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইতালি এরই মধ্যে তাদের সংশোধিত পরিকল্পনাটি ইউরোপিয়ান কমিশনের কাছে পাঠিয়েছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এটি পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য সময় রয়েছে।

তিনটি সূচকের দুইটিতেই উন্নতি হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের

পণ্য রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। ফাইল ছবি

সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি হ্যান্ডলিং সূচকের দুইটিতেই উন্নতি হয়েছে। কার্গো হ্যান্ডলিং ও জাহাজ হ্যান্ডলিয়ে উন্নতি হয়েছে, কমেছে কনটেইনার হ্যান্ডলিং। অর্থবছরের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য মিলেছে।

২০২২-২০২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ একক। যা গত অর্থবছর থেকে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৪ একক কম। হ্যান্ডলিং কম হলেও চট্টগ্রাম বন্দর থ্রি-মিলিয়ন হ্যান্ডলিংয়ের অবস্থান ধরে রেখেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ একক কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছিল।

তবে সর্বশেষ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে ১ লাখ সাড়ে ২২ হাজার মেট্রিক টন। কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ মেট্রিক টন। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১১ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে।

২০২২-২০২৩ অর্ধবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ভিড়েছে ৪ হাজার ২৫৩টি। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে জাহাজের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৩১। অর্থাৎ এবার জাহাজ বেড়েছে ২২টি।

নিজস্ব ক্রস-বর্ডার রেল পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে নর্থ সি পোর্ট

সমগ্র ইউরোপে নিঃসরণমুক্ত আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তোলার উদ্যোগ ইউরোপিয়ান গ্রিন ডিল বাস্তবায়নে সহযোগিতার লক্ষ্যে নিজস্ব একটি ক্রস-বর্ডার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে নর্থ সি পোর্ট কর্তৃপক্ষ। আর এই প্রকল্পে ৩৭ লাখ ডলার আর্থিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

বেলজিয়ামের ঘেন্ট থেকে নেদারল্যান্ডসের তেরন্যুজেনের মধ্যে এই রেল নেটওয়ার্কটি গড়ে তোলা হবে। এতে নর্থ সি পোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে রেল অপারেটর প্রোরেল ও ইনফ্রাবেল। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুম শেষেই (জুন-আগস্ট) প্রকল্পটির কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত নর্থ সি পোর্ট হলো একটি ৬০ কিলোমিটার (৩৭ মাইল) দীর্ঘ ক্রস-বর্ডার পোর্ট এলাকা, যেটি বেলজিয়ামের ঘেন্ট থেকে নেদারল্যান্ডসের ভ্লিসিংয়েন পর্যন্ত বিস্তৃত। জিল্যান্ড সি পোর্টস (ভ্লিসিংয়েন ও তেরন্যুজেন) এবং পোর্ট অব ঘেন্টের কার্যক্রম একীভূতকরণের মাধ্যমে নর্থ সি পোর্টের যাত্রা হয়।

ইইউর কানেক্টিং ইউরোপ ফ্যাসিলিটি (সিইএফ) কর্মসূচির অধীনে প্রকল্পটিতে অর্থ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা ও স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্তকরণের কাজে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

নর্থ সি পোর্ট কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড্যান শ্যালক বলেছেন, ‘বর্তমানে বন্দর থেকে হিন্টারল্যান্ডে মোট পণ্য পরিবহনের প্রায় ১০ শতাংশ সম্পন্ন হয় রেলের মাধ্যমে। ডাচ ও বেলজিয়ান সরকার এরই মধ্যে তেরন্যুজেন ও ঘেন্টের মধ্যে রেলসংযোগ স্থাপনে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এর সঙ্গে ইইউর অর্থসহায়তা যোগ হলে টেকসই রেল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যে গবেষণার প্রয়োজন, সেটির সংস্থান হবে।’

জাপান সাড়ে ২২ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে

জাপান বাংলাদেশকে সাড়ে ২২ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমান বাজারদরে (১০৮ টাকা প্রতি ডলারের দাম ধরে) এর পরিমাণ ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই টাকা খরচ করা হবে।

মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও জাপান সরকারের মধ্যে এ–সংক্রান্ত বিনিময় নোট ও ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিনিময় নোট ও চুক্তিতে সই করেন ইআরডি সচিব শরিফা খান। জাপানের পক্ষে বিনিময় নোটে রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি এবং চুক্তিতে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড সই করেন। শেরেবাংলা নগরের ইআরডি সম্মেলনকক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

ইআরডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই ঋণের সুদের হার ১ দশমিক ৬ শতাংশ, এককালীন ফ্রন্টএন্ড ফি দশমিক ১ শতাংশ। ঋণটি ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য। এর আগে ২০২০ ও ২০২১ সালে জাপান সরকার বাংলাদেশকে মোট সাড়ে ৬৮ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার ঋণ দিয়েছিল।

দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী দেশ।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাপান সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পল্লি উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা প্রদান করছে।

স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে।

জাহাজ পরিচালনায় নতুন স্মার্ট প্লাটফর্ম চালু করেছে কসকো শিপিং

নতুন একটি স্মার্ট সেইলিং প্লাটফর্ম চালু করেছে কসকো শিপিং লাইনস। এই প্লাটফর্মের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এতে কার্বন ইনটেনসিটি ইন্ডিকেটর (সিআইআই) ডিজিটাল টুলবক্স, সংঘর্ষ-প্রতিরোধী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ক্রুদের আচরণ পর্যবেক্ষণকারী ব্যবস্থা রয়েছে।

জাহাজ পরিবহন সেবার মান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কসকোর এই স্মার্ট সেইলিং প্লাটফর্ম চালুর মূল লক্ষ্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা, ইন্টারনেট অব থিংসসহ (আইওটি) নতুন প্রজন্মের আরও কিছু তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এই প্লাটফর্মে প্রাথমিকভাবে জাহাজ পরিচালনায় কার্বন নিঃসরণ কমানো, নেভিগেশনে নিরাপত্তা ও অত্যাধুনিক সাপ্লাই চেইন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে জাহাজের সামগ্রিক জীবনকালে আরও আধুনিক ও স্মার্ট টুলস যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে কসকোর।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়ান-স্টেশন নামে আরেকটি বৈচিত্র্যপূর্ণ লজিস্টিকস সার্ভিস প্লাটফর্ম চালু করেছে কসকো শিপিং। এই প্লাটফর্মে কাস্টমস-সংক্রান্ত বিষয়াবলীর জন্য ওয়ান-স্টপ অনলাইন সলিউশন, ওয়ান-স্টপ ওয়্যারহাউস সার্ভিস সলিউশন, ওয়ান-স্টপ ভেহিকল রোড ট্রান্সপোর্টেশন সলিউশন ও একটি ওয়ান-স্টপ ফুল-প্রসেস সলিউশন রয়েছে। এর ওয়্যারহাউস সার্ভিস সলিউশনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইনে ওয়্যারহাউসের তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সুবিধা রয়েছে।

রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম বাড়ল ৫০ পয়সা

রপ্তানিকারকদের জন্য প্রতি ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। সোমবার (২৬ জুন) এক সভায় এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। তবে রেমিট্যান্সের ডলারের দর ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

বর্তমান নিয়মানুসারে, ব্যাংকগুলো যে দরে ডলার কিনছে, বিক্রির সময় তার চেয়ে সর্বোচ্চ এক টাকা বেশি নিতে বলা হয়েছে তাদের।

বাফেদার সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নতুন নিয়মে আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের দর ১০৯ টাকা অতিক্রম করতে পারবে না। যেমন কোনো ব্যাংকের ডলার কেনার গড় খরচ ১০৭.৫০ টাকা হলে, তারা সর্বোচ্চ ১০৮.৫০ টাকায় তা বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু গড় খরচ ১০৮.৭০ টাকা হলে, বিক্রির সময় সর্বোচ্চ নিতে পারবে ১০৯ টাকা।

এর আগে গত ৩১ মে সিদ্ধান্ত হয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের ডলারে আরো ৫০ পয়সা দেওয়া হবে।

আর রপ্তানি আয়ে বাড়বে এক টাকা। ফলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের নতুন দর দাঁড়ায় যথাক্রমে ১০৮.৫০ ও ১০৭ টাকায়।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাফেদা জানিয়েছে, সরকারের ২০.৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ প্রবাসীরা তাদের পাঠানো প্রতি ডলারের দাম পাবেন ১১১.২৫ টাকা।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্পে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা দেবে এডিবি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার বা প্রায় চার হাজার ২৮০ কোটি টাকা (১০৭ টাকা প্রতি ডলার মূল্যে) দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। রবিবার এ বিষয়ক একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান এবং এডিবির বাংলাদেশ মিশনের অফিসার ইনচার্জ নিয়াগবো নিঙ্গ।

এডিবির এই ঋণ পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ২৫ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

ঋণের সুদের হার হবে ইউরোবর (লন্ডন ইন্টার ব্যাংক ওফারর্ড রেট) এর সাথে ০.৫ শতাংশ ও ম্যাচুরিটি প্রিমিয়াম ০.১ শতাংশ।

বৈশ্বিক কনটেইনার পরিবহনের গতি বাড়েনি

করোনা মহামারির পর চীনের শিল্পোৎপাদন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি প্রত্যাশার চেয়ে ধীর রয়েছে। এছাড়া খুচরা পণ্যের অন্যতম বড় ক্রেতা উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের অর্থনৈতিক অবস্থাও দীর্ঘদিন ধরে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এসবের প্রভাবে বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক বাণিজ্যের গতি অনেকটাই থমকে গেছে।

করোনার প্রথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর ইউরোপ-আমেরিকার ভোক্তাবাজার অনেকটা চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রি আকাশচুম্বী হয়েছিল। আর এর সুবাদে প্রধান সরবরাহকারী দেশ চীনের শিল্পোৎপাদনে জোয়ার তৈরি হয়েছিল। তবে অর্থনৈতিক মন্দাভাবে ক্রেতা দেশগুলোয় ভোক্তাচাহিদা এখন পড়তির দিকে। বৈশ্বিক পণ্য পরিবহন খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

নেদারল্যান্ডস ব্যুরো অব ইকোনমিক পলিসি অ্যানালাইসিসের তথ্য অনুযায়ী, মৌসুমভিত্তিক তুলনামূলক হিসাবে ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল মেয়াদে বৈশ্বিক বাণিজ্যের আকার ১৭ মাস আগের (২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-নভেম্বর মেয়াদ) চেয়ে বাড়তে পারেনি। বরং এক বছর আগের তুলনায় বাণিজ্যের পরিমাণ কমেছে।

চলতি বছরের প্রথম চার মাসে চীনের উপকূলীয় বন্দরগুলোয় কনটেইনার হ্যান্ডেলিং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। আর বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সিঙ্গাপুর পোর্ট দিয়ে কনটেইনার পরিবহন বেড়েছে ৩ শতাংশ। এর বাইরে বাকি অঞ্চলগুলোয় কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কম রয়েছে।

বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নয় বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং ১৬ শতাংশ কমেছে। আর প্রথম চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রেলপথে কনটেইনার পরিবহন কমেছে ১০ শতাংশ।

২০২২ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বৈশ্বিক পণ্য পরিবহন খাতে বড়সড় ধস নেমেছিল। তবে আশার কথা হলো, এই খাত এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। অবশ্য চীনের বাইরে কনটেইনার পরিবহনে উন্নতির কোনো চিহ্ন এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।