Home Blog Page 35

মালয়েশিয়ায় ট্যাংকারে আগুন, ২৩ ক্রু উদ্ধার

মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সমুদ্রসীমায় সোমবার (১ মে) একটি তেলবাহী ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অন্য একটি ট্যাংকার ও মালয়েশিয়ান মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি (এমএমইএ) ট্যাংকারটির বেশিরভাগ ক্রুকে উদ্ধার করতে সমর্থ হলেও তিনজন ক্রু নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। তাদের উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে এমএমইএ জানিয়েছে।

দুর্ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে খুব বেশি তথ্য পাওয়া না গেলেও সিঙ্গাপুর মেরিটাইম অ্যান্ড পোর্ট অথরিটি (এমপিএ) জানিয়েছে, ট্যাংকারটির নাম পাবলো। গ্যাবনে নিবন্ধিত ট্যাংকারটি ইরানি তেল পরিবহন করছিল বলে গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। এমপিএ দুর্ঘটনাস্থালে উদ্ধার অভিযান পর্যবেক্ষণ করছে। এছাড়া তারা জ্বলন্ত ট্যাংকারের বিষয়ে সতর্ক করে এবং নিখোঁজ ক্রুদের সন্ধানে সহায়তার আহ্বান জানিয়ে আশেপাশের অন্যান্য জাহাজের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে।

এদিকে এমএমইএ জানিয়েছে, বেলা ৪টার দিকে তারা ট্যাংকারটির কাছ থেকে সাহায্যবার্তা পায় এবং দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রেসকিউ বোট পাঠায়। এছাড়া ইনোলা নামের নিকটবর্তী আরেকটি ট্যাংকার দুর্ঘটনাকবলিত ট্যাংকারটির ক্রুদের সহায়তায় এগিয়ে যায় এবং ১৮ জন ক্রুকে উদ্ধার করে।

সব মিলিয়ে মোট ২৩ জন ক্রুকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ২৬ বছরের পুরনো ট্যাংকারটিতে কীভাবে আগুন লাগল, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।

বিশ্বে সমুদ্রের নির্জনতম স্থানেও বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি শনাক্ত

বিশ্বের অন্যতম নির্জন ও গভীর একটি স্থান হলো অ্যাটাকামা ট্রেঞ্চ। প্রশান্ত মহাসাগরের এই স্থানে সম্প্রতি পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইলের (পিসিবি) উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। নির্জন এলাকায় বিষাক্ত এই পদার্থ পাওয়ার অর্থ হলো, পৃথিবীতে কোনো জায়গাই হয়তো দূষণ থেকে মুক্ত নয়।

পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল ১৯৩০ থেকে ১৯৭০-এর দশকের মধ্যে অতিমাত্রায় উৎপাদিত হতো। বিশেষ করে উত্তর গোলার্ধে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, রং, কুল্যান্টসহ আরও অনেক পণ্যে পিসিবি ব্যবহৃত হতো। তবে ১৯৬০-এর দশকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয় যে, পিসিবি সামুদ্রিক প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর। এ কারণে ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় সমগ্র বিশ্বেই পিসিবির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।

পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল বা পিসিবি ভেঙ্গে যেতে কয়েক দশক পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। এছাড়া সমুদ্রের স্রোত, বাতাস বা নদীর মাধ্যমে এগুলো এক স্থান থেকে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে।

বিজ্ঞানীরা যে অ্যাটাকামা ট্রেঞ্চে গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন, সেটি দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলজুড়ে প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত। এর সবচেয়ে গভীর অংশের গভীরতা প্রায় হিমালয়ের উচ্চতার সমান। গবেষণার অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীরা নমুনা হিসেবে আড়াই হাজার থেকে ৮ হাজার মিটার পর্যন্ত বিভিন্ন গভীরতার পাঁচটি জায়গা থেকে পলি সংগ্রহ করেছেন। তারা প্রতিটি জায়গাকে আবার পাঁচটি স্তরে ভাগ করেছেন। উপরের স্তরের পলি থেকে শুরু করে গভীর কাদার স্তর পর্যন্ত এই পাঁচটি স্তরেই পিসিবির উপস্থিতি পেয়েছেন তারা।

অ্যাটাকামা ট্রেঞ্চের মতো জায়গায় মানুষের কার্যক্রম খুব বেশি নেই। তারপরও সেখানে দূষকের উপস্থিতি পাওয়া গেল। আসলে সমুদ্রের এই ধরনের গভীর স্থানে আশেপাশের অঞ্চল থেকে শীতল পানির স্রোতের সঙ্গে বিভিন্ন প্ল্যাঙ্কটনও ভেসে আসে। এই প্ল্যাঙ্কটনগুলো অনেক সময় পিসিবির মতো দূষক বহন করে। সেগুলো যখন মারা যায়, তখন তাদের কোষগুলো পচে গেলেও শরীরে থাকা পিসিবি সমুদ্রের তলায় গিয়ে জমা হয়।

এই গবেষণা থেকেই প্রমাণ হয়, কোনো একটি জায়গায় সামুদ্রিক দূষণের জন্য সেখানে মানুষের সরাসরি উপস্থিতির প্রয়োজন নেই। বরং সামুদ্রিক স্রোত বা প্রাণবৈচিত্র্যের মাধ্যমেও এক জায়গার দূষক অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হতে পারে। সুতরাং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে বিষাক্ত পদার্থের ব্যবহার বন্ধ করার কোনো বিকল্প নেই।

সিঙ্গাপুরে হয়ে গেল সমুদ্র শিল্পের বড় মিলনমেলা

সিঙ্গাপুর মেরিটাইম উইকে কিনোট স্পিচ দিচ্ছেন ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মহাসচিব কিটাক লিম। ছবির কৃতজ্ঞতা: মেরিটাইম অ্যান্ড পোর্ট অথরিটি, সিঙ্গাপুর

‘অ্যাম্বিশন মিটস অ্যাকশন’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২৪-২৮ এপ্রিল হয়ে গেল সিঙ্গাপুর মেরিটাইম উইক। এটি ছিল আয়োজনটির ১৭তম আসর। সমুদ্র শিল্পে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও কর্মকৌশল উদ্ভাবন, কার্বন নিঃসরণ কমানো ইত্যাদি বিষয়ে যেসব উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেগুলো পূরণে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সম্প্রদায় একত্র হয়েছিলেন এই কনফারেন্সে।

এটি ছিল এখন পর্যন্ত আয়োজিত সবচেয়ে বড় কনফারেন্স, যেখানে প্রায় ৫০টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজার অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সর্বাধুনিক ট্রেন্ড ও ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আলোচনা এবং নতুন সম্ভাবনা অন্বেষণের জন্য অনন্য একটি প্লাটফরম হিসেবে কাজ করেছে কনফারেন্সটি।

সিঙ্গাপুর মেরিটাইম উইকের সঙ্গে সাইডলাইনে আরও দুটি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর একটি হলো সি এশিয়া ২০২৩, যেটি ২৫-২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়। ৭০টি দেশের তিন শতাধিক প্রদর্শক এতে তাদের পণ্য ও সেবা তুলে ধরেন। আরেকটি হলো মেরিনটেক কনফারেন্স। স্মার্ট বন্দর, স্মার্ট শিপিং, কার্বন নিঃসরণ কমানো, সাইবার নিরাপত্তা, ক্রুদের সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে ২৫-২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সে।

সিঙ্গাপুর ধীরে ধীরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মেরিটাইম হাব হয়ে উঠেছে। মেরিটাইম উইকে এই উত্তরণে দেশটির দৃঢ় সংকল্প স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এছাড়া সমুদ্র শিল্পে তাদের বিনিয়োগ ও বিভিন্ন সহায়ক কর্মসূচিও শীর্ষস্থানে উত্তরণে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী ট্যাংকার জব্দ ইরানের

ওমান উপসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থানকালে যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী একটি তেলের ট্যাংকার জব্দের দাবি করেছে ইরানের সামরিক বাহিনী। ইরানের একটি নৌকাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ট্যাংকারটিকে আটক করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএর একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) এই বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনী। এতে তারা মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী একটি ট্যাংকারকে আটক করার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ২৬ এপ্রিল রাতে ইরানের যে নৌকাকে ধাক্কা দিয়েছে ট্যাংকারটি, তার কয়েকজন ক্রু নিখোঁজ রয়েছেন এবং কয়েকজন ক্রুকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাটিকে ধাক্কা দেওয়ার পর ওমান সাগর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ট্যাংকারটিকে আটকে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে ইরানি জলসীমানার দিকে ঘুরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

মার্কিন নৌবাহিনী ট্যাংকারটির নাম অ্যাডভান্টেজ সুইট বলে জানিয়েছে। রেফিনিটিভ শিপ ট্র্যাকিং ডেটা অনুসারে, সুয়েজম্যাক্স ক্লাসের ক্রুড ট্যাংকারটি মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি শেভরন কর্তৃক ভাড়াকৃত। এটি সর্বশেষ কুয়েতে নোঙর করেছিল। আর এর গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মেক্সিকো উপসাগরীয় বন্দর হিউস্টন।

এদিকে মার্কিন নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইরানি বাহিনী কর্তৃক ট্যাংকার আটকের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে দেশটির পঞ্চম নৌবহর। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে ট্যাংকারটিকে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে পঞ্চম নৌবহর। এছাড়া এই অঞ্চলে জাহাজে ক্রমাগত হয়রানি এবং আঞ্চলিক জলসীমায় নৌ-চলাচলের অধিকারে হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলার অনুমতি পেল গ্রিনপিস

উত্তর সাগরে যুক্তরাজ্যের জলসীমায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন (ইঅ্যান্ডপি) লাইসেন্স প্রদানের সরকারি উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আইনি অনুমতি পেয়েছে গ্রিনপিস। সম্প্রতি লন্ডন হাই কোর্ট নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বৈশ্বিক ক্যাম্পেইনিং নেটওয়ার্কটিকে সরকারের নিলাম কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

উত্তর সাগরে প্রায় ১৩০টি নতুন ইঅ্যান্ডপি লাইসেন্স প্রদানের পরিকল্পনা করছে ব্রিটিশ সরকার। গ্রিনপিস প্রথম থেকেই এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছে। গত বছরের ডিসেম্বরে তারা লন্ডন হাই কোর্টে একটি আর্জি দাখিল করে, যেন সরকারের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেওয়া হয় তাদের। যুক্তরাজ্যের আইন অনুসারে, সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করতে হলে উচ্চ আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়।

গভীর সমুদ্র তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের লাইসেন্স দেওয়ার আগে সরকারকে প্রকলাপগুলোর পরিবেশগত প্রভাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে-এমন শর্ত সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে ব্রিটিশ আইনে। তবে গ্রিনপিসের দাবি, সরকার নতুন এই ১৩০টি ইঅ্যান্ডপি লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করেনি। এসব লিজ ব্লকে উত্তোলিত তেল ও গ্যাস পোড়ানোর ফলে যে কার্বন নিঃসরণ হবে, সেই বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে সরকারের পর্যালোচনায়। বরং এতে কেবল উৎপাদন পর্যায়ে নিঃসরণকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। অথচ একটি অফশোর প্রকল্পে তেল ও গ্যাস উত্তোলন ও তা ব্যবহারের চক্রে মোট যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, তার মাত্র ২০ শতাংশ নিঃসৃত হয় উৎপাদন পর্যায়ে।

যুক্তরাজ্যে গ্রিনপিসের ক্লাইমেট ক্যাম্পেইনের প্রধান ফিলিপ ইভানসের মতে, ‘সরকার গভীর সমুদ্র তেল ও গ্যাস প্রকল্প ইজারার জন্য যেভাবে অবিবেচকের মতো উঠেপড়ে লেগেছে, তা ঠেকানোর জন্য বড় একটি পদক্ষেপ হলো উচ্চ আদালতের এই রায়। পরিবেশগত প্রভাব বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবসহ শীর্ষ বিজ্ঞানীদের পরামর্শ উপেক্ষা করে সরকার কেন উত্তর সাগরে অফশোর প্রকল্প নিয়ে এতটা আগ্রাসীভাবে এগুচ্ছে, মন্ত্রীদের এখন আদালতের সামনে সেই যুক্তি তুলে ধরতে হবে।’

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সরকারের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে একই ধরনের মামলা করে রেখেছে ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ ও আপলিফট।

চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির আহ্বান ইউক্রেনের

ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তির মেয়াদ ও পরিসর বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ বিষয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির এই উদ্যোগ তখনই সফল হবে, যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সম্মিলিতভাবে এ বিষয়ে রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মিখালিও পোডোলিয়াক সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কেন রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরি করতে হবে, সে বিষয়টি জাতিসংঘের মহাসচিব খুব যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যে চুক্তি হয়েছে, ইউক্রেন সেটি মেনে চলবে এবং বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ সংকট দূরীকরণে খাদ্যশস্য রপ্তানি অব্যাহত রাখবে।

এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য সরবরাহে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তার জন্য কেবল রুশ-ইউক্রেন সামরিক সংঘাতের ওপর দায় চাপালে চলবে না। শুধু যে বৈশ্বিক বাজারে রাশিয়া ও ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি কমে যাওয়ার কারণেই এই সংকট তৈরি হয়েছে, তা নয়। ক্রেমলিনের দাবি, চুক্তিতে রাশিয়ার শস্য রপ্তানিতে যে সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নিজেদের রপ্তানিকে সুবিধা দিতে যেসব শর্ত বেঁধে দিয়েছিল রাশিয়া, সেগুলো পূরণ না হলে ১৮ মের পর চুক্তির মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি অভিযোগ করে যে, কৃষ্ণ সাগরে তাদের জাহাজগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে কিয়েভ। তাদের এই অপতৎপরতার কারণে মানবিক করিডোর দিয়ে শস্য রপ্তানি নির্বিঘ্ন রাখার লক্ষ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তার মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। অবশ্য পোডোলিয়াক রাশিয়ার এই অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণ সাগরীয় বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ সেনারা। এতে সমুদ্রপথে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে গত বছরের ২২ জুলাই তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় খাদ্যশস্য পরিবহনের সুযোগ দিতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এই চুক্তির অধীনে ১ আগস্ট প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে ২৬ হাজার টন ভুট্টা বোঝাই করে লেবাননের পথে যাত্রা করে রাজোনি নামের সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী একটি জাহাজ।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক গম সরবরাহে রাশিয়া ও ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল এই দুই দেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

সেফারের সম্ভাব্য বিপর্যয় ঠেকাতে সদস্য দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান আইএমওর

লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপক্যুল থেকে ৪ দশমিক ৮ নটিক্যাল মাইল গভীরে নোঙর করে রাখা আছে একটি ফ্লোটিং স্টোরেজ অফশোর (এফএসও) ইউনিট। নাম তার সেফার। তবে নামের সঙ্গে এর বর্তমান অবস্থার মিল নেই একেবারেই। জরাজীর্ণ এফএসওটি বর্তমানে নিরাপদ নয় একেবারেই। বরং এটি ভেঙে পড়া বা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সাগরের পানিতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে অনেক বেশি। এমন সম্ভাব্য দুর্ঘটনার সময় তেল ছড়িয়ে পড়া ও জলজ পরিবেশগত বিপর্যয় প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি দিয়ে পাশে থাকার জন্য সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)।

সেফার আসলে একটি রূপান্তরিত সুপার ট্যাংকার। ১৯৮৮ সাল থেকে এটি লোহিত সাগরের রাস ইসা অঞ্চলে নোঙর করে রাখা আছে। ইয়েমেনের মারিব তেলক্ষেত্র থেকে আসা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল গ্রহণ, সংরক্ষণ ও রপ্তানির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল ইউনিটটি। তবে ২০১৫ সালে ইয়েমেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমনকি এই দীর্ঘ সময়ে ইউনিটটিতে কোনো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিদর্শন কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়নি।

বর্তমানে এফএসও সেফারে প্রায় দেড় লাখ টন (আনুমানিক ১১ লাখ ব্যারেল) অপরিশোধিত তেল মজুদ রয়েছে। ১৯৮৯ সালে এক্সন ভালদেজ দুর্ঘটনার সময় যে পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়েছিল, তার তুলনায় সেফারে থাকা তেলের পরিমাণ প্রায় চারগুণ। এতেই বোঝা যাচ্ছে সেফারে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব কতটা ভয়াবহ হবে।

এফএসও ইউনিটটির কাঠামোগত অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। এটি আর ঠিক করাও যাবে না বলে মনে করছে আইএমও। ইউনিটটি ভেঙে পড়লে বা সেখানে কোনো বিষ্ফোরণ ঘটলে যে পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়বে, তা আটকানোর সক্ষমতা ইয়েমেনের নেই। এ কারণে সম্ভাব্য সেই বিপর্যয় ঠেকানোর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে সহায়তা চেয়েছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, জরুরি ভিত্তিতে সেফার থেকে শিপ-টু-শিপ ট্রান্সফার পদ্ধতিতে তেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ভেরি লার্জ ক্রুড ক্যারিয়ার (ভিএলসিসি) কিনছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে এসএমআইটি স্যালভেজের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। নটিকা নামের ক্রুড ক্যারিয়ারটি ৬ এপ্রিল চীনের ঝৌশা থেকে সেফারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। মে মাসের শুরুর দিকেই ক্যারিয়ারটি সেখানে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শিপিং খাতে প্রতিযোগিতাবিরোধী চর্চা বন্ধে নতুন বিল প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে

নিজেদের সমুদ্র পরিবহন খাতে প্রতিযোগিতাবিরোধী চর্চা প্রতিরোধে আরও খড়গহস্ত হতে যাচ্ছেন মার্কিন নীতিনির্ধারকরা। এই খাতের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল মেরিটাইম কমিশনের (এফএমসি) ক্ষমতা আরও সুসংহত করা এবং অন্যায্য চর্চা বন্ধ করার লক্ষ্যে বিদ্যমান ওশান শিপিং অ্যাক্টে সংশোধনী আনার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ওশান শিপিং কম্পিটিশন এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট নামে আরও একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে।

এ নিয়ে গত এক মাসের কম সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র পরিবহন খাতে আইনগত সংস্কার বিষয়ে তিনটি বিল প্রতিনিধি পরিষদে উত্থাপন করা হলো। এর আগে দুটি সংশোধনী বিল উত্থাপন করা হয় পরিষদে। সেগুলোর একটি হলো ওশান শিপিং অ্যান্টি-ট্রাস্ট এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট, যার মাধ্যমে বিদেশী ওশান ক্যারিয়ারগুলো যে মার্কিন ফেডারেল অ্যান্টি-ট্রাস্ট আইন থেকে অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছে, সেটি বাতিল হয়ে যাবে। আর দ্বিতীয়টি হলো ওশান শিপিং রিফর্ম ইমপ্লিমেন্টেশন অ্যাক্ট, যেটি আইনে পরিণত হলে মার্কিন বন্দরগুলো আর ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন লজিস্টিকস পাবলিক ইনফরমেশন প্লাটফর্ম লজিংক ব্যবহার করতে পারবে না। এই বিলটির পৃষ্ঠপোষকদের দাবি, লজিংক সফটওয়্যারটি চীনা রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট একটি প্লাটফর্ম।

নতুন বিলটির পৃষ্ঠপোষক ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি জন গ্যারামেন্ডি। তার মতে, প্রস্তাবিত বিলটি আইনে পরিণত হলে এফএমসি ফেডারেল কোর্টের কাছ থেকে আদেশ সংগ্রহ করা ছাড়াই ওশান ক্যারিয়ার ও টার্মিনাল অপারেটরদের মধ্যকার যেকোনো চুক্তি আটকে দেওয়ার ক্ষমতা পাবে। বিদ্যমান ফেডারেল আইন অনুযায়ী, এফএমসির এই ধরনের চুক্তি পর্যালোচনার ক্ষমতা থাকলেও সেটি আটকে দেওয়ার ক্ষেত্রে ফেডারেল কোর্টের কাছ থেকে একটি আদেশ সংগ্রহ করা লাগে।

গ্যারামেন্ডি বলেন, ‘১৯৮৪ সালে সমুদ্র পরিবহন খাতের ডিরেগুলেশনে অনুমোদন দেয় মার্কিন কংগ্রেস। এর ফলশ্রুতিতে বর্তমানে বিদেশী পতাকাবাহী কেবল নয়টি ওশান লাইনার এই খাতে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। তাদের মধ্যে তিনটি ক্যারিয়ার প্রকাশ্যে জোট বেঁধে মোট কার্গোর প্রায় ৮০ শতাংশ হ্যান্ডলিং করছে। গত প্রায় ২৫ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র পরিবহন আইনে কোনো সংস্কার আনা হয়নি। এই অবস্থায় কংগ্রেসকে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে, যেন এফএমসি তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারে এবং আইনের পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারে।’

গ্রিন করিডোরে যুক্ত হচ্ছে সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দর

বৈশ্বিক নিঃসরণ কমানোর প্রচেষ্টায় নিজেদের অবস্থান থেকে অবদান রাখার প্রচেষ্টা রয়েছে সমুদ্র পরিবহন খাতের। জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনেরও (আইএমও) এ বিষয়ে কিছু উদ্যোগ রয়েছে। তবে এসবের বাইরে বন্দর কর্তৃপক্ষগুলো পরিবেশবান্ধব শিপিং রুট প্রতিষ্ঠায় স্বেচ্ছায় উদ্যোগ নিচ্ছে, যার অন্যতম হলো গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠা। এরই মধ্যে কয়েকটি বন্দরের মধ্যে গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠায় চুক্তি হয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দর।

গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। সম্প্রতি সমুদ্র শিল্পবিষয়ক বার্ষিক আয়োজন সিঙ্গাপুর মেরিটাইম উইক চলাকালে এ ঘোষণা আসে সিঙ্গাপুর মেরিটাইম অথরিটির (এমপিএ) পক্ষ থেকে। সমঝোতা স্মারকে বন্দর তিনটি ছাড়াও যুক্ত হয়েছে সিফোরটি সিটিজ ক্লাইমেট লিডারশিপ গ্রুপ। এটি হলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ৯৬টি শহরকে নিয়ে গড়ে ওঠা একটি গ্রুপ, যেসব শহরের বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৮ শতাংশের বেশি এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হিস্যা রয়েছে।

গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার ধারণা প্রথম উত্থাপিত হয় ২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন কপ২৬-তে। সম্মেলনে ক্লাইডব্যাংক ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানসহ ২২টি দেশ। এই ঘোষণার মূল লক্ষ্য হলো সমুদ্র পরিবহন খাতে কয়েকটি গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠা। ২০২৫ সাল নাগাদ অন্তত ছয়টি গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে ক্লাইডব্যাংক ডিক্লারেশনে। ২০৩০ সাল নাগাদ আরও কয়েকটি নিঃসরণমুক্ত রুট কার্যকর হবে বলে কপ২৬ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করা হয়।

গ্রিন করিডোর কোনো আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা নয়। এটি পুরোপুরি ঐচ্ছিক সিদ্ধান্ত। তবে একটি-দুটি করে যখন বিশ্বের সব ট্রেডিং রুটই যখন গ্রিন করিডোর হয়ে যাবে, তখন সেটি নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক উদ্যোগের অংশ হয়ে যাবে। এগুলো হলো এমন শিপিং রুট, যেখানে কোনো নিঃসরণ থাকবে না। এসব রুটে চলাচলকারী জাহাজগুলো ব্যবহার করবে সবুজ জ্বালানি। দুই বা ততোধিক বন্দরের মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে এসব করিডোর গড়ে উঠবে।

এর আগে গত বছর গ্রিন করিডোর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের রটারডাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সিঙ্গাপুর বন্দর, যেখানে বিকল্প জ্বালানিনির্ভর শিপিং রুট প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সামুদ্রিক নিরাপত্তা, কার্যক্ষমতা ও পণ্য পরিবহনে স্বচ্ছতা বাড়ানোর কাজে পারস্পারিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড ছেড়েছে গবাদি পশুবাহী শেষ জাহাজ

দুই বছরের জন্য গবাদি পশু রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। যদিও এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে, তবে এই রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে গেল ২০ এপ্রিল থেকেই; গবাদি পশুবাহী সর্বশেষ জাহাজ দারিনের তিমারু বন্দর ছাড়ার মধ্য দিয়ে।

আন্দোলনকর্মীদের তীব্র সমালোচনা ও বিক্ষোভের মুখে দুই বছরের জন্য গবাদি পশু রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে নিউজিল্যান্ড সরকার। পশু সুরক্ষাকর্মীদের দাবি, রপ্তানির জন্য জাহাজীকরণের সময় গবাদি পশুগুলোর সুরক্ষার বিষয়টি অনেক সময় উপেক্ষিত থেকে যায়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের খবরে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, কখনো কখনো অনুপযুক্ত জাহাজে করে গবাদি পশু পরিবহন করা হয়। মাঝেমধ্যে এসব জাহাজের ক্রু ও পশুর মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়।

নিউজিল্যান্ডের ৩ হাজার ২৫০ কোটি ডলারের শিল্পোৎপাদন-বহির্ভূত রপ্তানি খাতে গবাদি পশু রপ্তানির অবদান খুব বেশি নয়। ২০১৫ সালের পর থেকে এই হিস্যা মাত্র শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ। ২০২২ সালে দেশটি মোট ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পশু রপ্তানি করেছে।

নিউজিল্যান্ডের কৃষিমন্ত্রী ড্যামিয়েন ও’কনর জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে পশুবাহী জাহাজ দারিন দেশটির সাউথ আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলীয় বন্দর তিমারু ত্যাগ করে। এর আগে ১৮ এপ্রিল জাহাজটি বন্দরে পৌঁছায়। দুবাইয়ের মিরা শিপিং পরিচালিত জাহাজটি পানামায় নিবন্ধিত। ৭ হাজার ২৫৮ ডিডব্লিউটি ধারণক্ষমতার ২৯ বছরের পুরনো জাহাজটিতে সর্বোচ্চ সাত হাজার গবাদি পশু পরিবহন করা যায়। তিমারু ছাড়ার সময় এতে ৬ হাজার ৯০টি পশু ছিল। যদিও এর রপ্তানি অনুমোদন ছিল ৬ হাজার ২৫৩টির। আগামী ৯ মে চীনের হুয়াংহুয়ায় পৌঁছনোর কথা রয়েছে দারিনের।

দারিনের পর আর কোনো জাহাজকে রপ্তানিমুখী গবাদি পশু পরিবহনের লাইসেন্স দেওয়া হয়নি বলে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ফলে দারিনই অন্তত আগামী দুই বছরের জন্য নিউজিল্যান্ডের বন্দর ছেড়ে আসা শেষ পশুবাহী জাহাজে পরিণত হয়েছে।