Home Blog Page 38

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণ সীমা কমল

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণ সীমা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার (৯ এ‌প্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সম্পর্কিত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যরা দুই কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। আগে এ ঋণের সীমা ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ইয়ার্ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিওয়াইইএ) সদস্যরা ঋণ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ এক কোটি ডলার। আগে তাদের ঋণের সীমা ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

এদিকে ইডিএফের বিকল্প হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার নিজস্ব মুদ্রায় রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত রিজার্ভের ডলার দিয়ে গঠিত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ওপর চাপ কমাতে গঠন করা হয় কম সুদের এ রপ্তানি সহায়ক তহবিল। এর ফলে রিজার্ভ থেকে গঠিত তহবিল আবার রিজার্ভে ফিরে যাবে, বাড়বে ব্যবহার যোগ্য রিজার্ভ।

১৯৮৯ সালে ছোট আকারে গঠিত ইডিএফের আকার ধীরে ধীরে বাড়িয়ে সাত বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। তবে বর্তমানে ঋণের সীমা সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ধরে রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়াও এ তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইডিএফ নিয়ে সময় মতো পরিশোধ না করলে জরিমানা করছে। সর্বশেষ ৫০ লাখ ডলার কমিয়ে ছোট্ট করে আনা হলো এ তহবিল।

প্রথম প্রান্তিকে কোরীয় জাহাজনির্মাতাদের ব্যবসা চাঙ্গা

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকটা বেশ ভালো কাটল দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজনির্মাতাদের জন্য। এ সময়ে নতুন জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ বৈশ্বিকভাবে খানিকটা গতি হারালেও কোরিয়ার অবস্থা ছিল ভিন্ন। আলোচ্য সময়ে দেশটির শীর্ষ তিন জাহাজ নির্মাণকারী কোম্পানি তাদের পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার এক-তৃতীয়াংশ কার্যাদেশ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।

মার্চ মাসে জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কোরিয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। তবে সার্বিকভাবে প্রথম প্রান্তিকের হিসাবে তারা কোরিয়ার চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি মার্জিনের জাহাজ নির্মাণের ওপর জোর দেওয়া সহায়ক হয়েছে কোরিয়ার জন্য।

দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ তিনটি জাহাজনির্মাতা কোম্পানি হলো হুন্দাইয়ের জাহাজনির্মাণ কার্যক্রমের মূল প্রতিষ্ঠান কোরিয়া শিপবিল্ডিং অ্যান্ড অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং (কেএসওই), স্যামসাং হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ ও দাইয়ু শিপবিল্ডিং অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং (ডিএসএমই)। বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানি তিনটি সম্মিলিতভাবে মোট ১ হাজার ৫০ কোটি ডলারের কার্যাদেশ পেয়েছে, যেখানে পুরো বছরের জন্য তাদের লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার।

প্রথম প্রান্তিকে নতুন জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ পাওয়ার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কেএসওই। তাদের কার্যাদেশের পরিমাণ ৭৩০ কোটি ডলার, যা তাদের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৪৬ শতাংশের বেশি। স্যামসাংয়ের ঝুলিতে গেছে ২৫০ কোটি ডলারের কার্যাদেশ, যা তাদের বার্ষিক লক্ষমাত্রার ২৫ শতাংশের বেশি। সেই তুলনায় দাইয়ু কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। তাদের কার্যাদেশের পরিমাণ ৮০ কোটি ডলার। কোম্পানিটির পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।

সিএমএ সিজিএমের কাছ থেকে সবচেয়ে বড় কার্যাদেশ পেল চীন

ফরাসি শিপিং জায়ান্ট সিএমএ সিজিএম নতুন ১৬টি কনটেইনার জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ দিয়েছে চীনকে। দেশটির জাহাজনির্মাতা চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং করপোরেশন (সিএসএসসি) গ্রুপের বিভিন্ন ইয়ার্ডে জাহাজগুলো নির্মাণ করা হবে। এটি একক চুক্তির অধীনে চীনের পাওয়া এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ জাহাজনির্মাণ কার্যাদেশ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও ইউরোপিয়ান কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন সম্প্রতি চীন সফর করেছেন। এ সময় ফ্রান্স ও চীনের মধ্যে বি-টু-বি বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পন্ন হয়। সিএমএ সিজিএমের নতুন কার্যাদেশ সেই চুক্তিরই অংশ।

ফরাসি শিপিং কোম্পানিটির নতুন এই ১৬টি জাহাজের মধ্যে ১২টির ধারণক্ষমতা হবে ১৫ হাজার টিইইউ। এগুলো মিথানল জ্বালানিতে চালানো যাবে। আর বাকি চারটি জাহাজের ধারণক্ষমতা হবে ২৩ হাজার টিইইউ, যেগুলোর ইঞ্জিন হবে এলএনজি ডুয়েল-ফুয়েল বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। ১৬টি জাহাজ কিনতে সিএমএ সিজিএমের মোট ব্যয় হবে প্রায় ৩১০ কোটি ডলার (২ হাজার ১০০ কোটি ইউয়ান)।

ইউরোপের এলএনজি আমদানির প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র

২০২২ সালে ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানি ১৪০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬০০ কোটি ঘনফুট। ইইউ-ইউএস এনার্জি কাউন্সিল বৈঠককে সামনে রেখে এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তা সহায়তা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং তা আরও জোরদারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়ন বিষয়ে ব্লিংকেন বলেন, জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় আমরা ইইউর সঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতি বিনিময় করেছি। এর মধ্য দিয়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে রূপান্তর এবং নিরাপদ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির সরবরাহ চেইনের গতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

ব্লিংকেনের তথ্যমতে, গত বছর ইউরোপের মোট এলএনজি আমদানির ৪০ শতাংশ গিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে ইউরোপ রাশিয়ার গ্যাসের ওপর ৪০ শতাংশ নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে তা কমে ১৫ শতাংশে নেমেছে। ব্লকটি যেন এই নির্ভরতা আরও কমিয়ে আনতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এশিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানি বেড়েছে

এশিয়ার দেশগুলোয় মার্চে জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। চীন ও ভারতের আমদানি বৃদ্ধি এক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলেছে। অবশ্য ফেব্রুয়ারির তুলনায় মোট আমদানি বাড়লেও দৈনিক গড় আলোচ্য সময়ে কিছুটা কমেছে।

রেফিনিটিভ অয়েল রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, গত মাসে এশিয়ায় জ্বালানি তেলের মোট আমদানি ছিল ১১ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার টন। দৈনিক গড় ২ কোটি ৭৬ লাখ ব্যারেলের সমান। আমদানির এ পরিমাণ ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। সে মাসে এশিয়ায় জ্বালানি তেলের মোট আমদানি ছিল ১১ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টন। দৈনিক গড় ভিত্তিতে মার্চে আমদানি ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে ফেব্রুয়ারির চেয়ে। সেই মাসে দৈনিক গড় আমদানি ছিল ২ কোটি ৯৪ লাখ ব্যারেল।

সার্বিকভাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আমদানি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আলোচ্য সময়ে আমদানি দৈনিক গড় ভিত্তিতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছেছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে এশিয়ার দৈনিক গড় আমদানি ছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।

মার্চে চীনের আমদানি ছিল চার মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ। আলোচ্য সময়ে দেশটি মোট জ্বালানি আমদানি করেছে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার টন, ফেব্রুয়ারিতে যার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।

মার্চে ভারতের জ্বালানি তেল আমদানি ছিল মোট ১ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার টন, যার ৩৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। আলোচ্য সময়ে দেশটি রাশিয়া থেকে ৪ লাখ টন ইউরাল গ্রেড জ্বালানি তেল কিনেছে। এ সময়ে চীনের আমদানি করা ইউরাল গ্রেড জ্বালানির পরিমাণ ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের থাকার জন্য বার্জ ভাড়া করেছে যুক্তরাজ্য

ছোট ছোট নৌকায় চেপে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশের সময় আটক হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অস্থায়ীভিত্তিতে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য একটি অ্যাকোমোডেশন ভেসেল ভাড়া করেছে দেশটির সরকার। মূলত হোটেল ভাড়াবাবদ খরচ কমানো এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্য থেকেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এই প্রবাহকে বড় সংকট হিসেবে দেখছেন। এছাড়া আটক ব্যক্তিদের আপাত আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে হোটেল ভাড়া করতে গিয়েও মোটা অংকের অর্থ গুণতে হচ্ছিল সরকারকে। শুধু তাই নয়, এসব হোটেলে থাকার সুব্যবস্থার কারণে অভিবাসনপ্রত্যাশীরাও যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাতে আরও বেশি আগ্রহী হতো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে অ্যাকোমোডেশন বার্জ ভাড়া করেছে, তার নাম বাইবি স্টকহোম। ১৯৭৬ সালে নির্মিত অ্যাকোমোডেশন ভেসেলটি এর আগে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে অভিভাসনপ্রত্যাশী এবং অফশোর গ্যাস ও বায়ুবিদ্যুৎ খাতের নির্মাণশ্রমিকদের আবাসনের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাইবি স্টকহোম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বাইবি মেরিন। সম্প্রতি তারা বার্জটিতে কিছু সংস্কার সম্পন্ন করেছে। ভেসেলটি অন্তত ১৮ মাসের জন্য ভাড়া করা হয়েছে। এটি ইংল্যান্ডের ডরসেটের পোর্টল্যান্ড বন্দরে নোঙর করা থাকবে।

পেপারলেস আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাগিদ

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত পেপারলেস ব্যবসা-বাণিজ্য পরিকল্পনা কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বুধবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এডিবি এবং এসকাপ-এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যাশনাল ভেলিডেশন ওয়ার্কশপ অন দ্য আপডেট অব দ্য রেডিনেস অ্যাসেসমেন্ট ফর ক্রস বর্ডার পেপারলেস ট্রেড:বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়ানবো নিং এবং এসকেপের অর্থনীতিবিষয়ক কর্মকর্তা মিজ সু হিয়ুন কিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ বরাবরই ডিজিটাল বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফলভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। কিন্তু ডিজিটাল বাণিজ্য বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে।

তারা আরও জানান, ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যকে একক প্ল্যাটফর্মে আনার এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল ট্রেড সেল প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ডিজিটাল ট্রেড গাইডলাইনও তৈরি করেছে। ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের সার্বিক অবস্থান মূল্যায়ন করার মাধ্যমে এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোডম্যাপ প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এছাড়া এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে একদিকে যেমন সহজতর করবে, অপরদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনি ইশতেহার ২০০৯ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই ধারণাটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন নিয়ম, প্রবিধান ও আইন সংস্কার ও প্রবর্তন করছে। কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ একধাপ এগিয়ে নেবে।

দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৩৬টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, আন্তঃসীমান্ত পণ্য স্থানান্তরে বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্য সুশৃঙ্খলে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ইকোনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক (এসকাপ) ক্রস বর্ডার ট্রেডের জন্য একটি গবেষণা করে। পরবর্তী সময়ে ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্যের সুবিধার্থে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘ সফল আলোচনার পর ২০১৬ সালের ১৯ মে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি গৃহীত হয়। বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থার পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ এই চুক্তি অনুসমর্থন করে এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পণ্যের বাণিজ্য মেলা সেপ্টেম্বরে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আগামী ২২ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দুই দিনব্যাপী ‘ষষ্ঠ বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস ও বাণিজ্য মেলা’ আয়োজনের অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোও (ইপিবি) মেলাটিকে তালিকাভুক্ত করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিজনেস লিংক গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এবং মুক্তধারা নিউইয়র্ক এ মেলার আয়োজন করবে। এতে সহায়তা করছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। আয়োজনটি হবে নিউইয়র্কের ম্যারিয়ট মারকুইস হোটেলে। অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য, ‘সুযোগের উন্মোচনে স্মার্ট অর্থনীতি’।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে এ মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে ইপিবি। ইপিবি ইতিমধ্যেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার, তৈরি পোশাক, ওষুধ, কৃষিজাতপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তিপণ্য, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটের বৈচিত্র্যময় পণ্য, আবাসনসহ বিভিন্ন খাতকে এ মেলায় অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এ মেলায় অংশ নিতে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে ইপিবির মেলা বিভাগে আবেদন করতে হবে। ভিসা না পেলে আবেদন মাশুল ফেরত দেবে ইপিবি। তবে ভিসা পেয়ে কেউ যোগ না দিলে আবেদন মাশুল ফেরত দেবে না সংস্থাটি।

জানা গেছে, বাংলাদেশি পণ্যের স্টল ছাড়াও এতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার হবে এবং তুলে ধরা হবে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার ব্যবসায়ীদের কাছে উদীয়মান বাংলাদেশকে। দেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক শোকেসের একটি নিখুঁত সংমিশ্রণ হিসেবে মেলাটি সাজানো হবে। লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহজতর করা।

অপারেটরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার উদ্যোগ ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের

প্রায় ৮ হাজার লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের ওরিয়েন্টাল মিন্দোরো প্রদেশের নাউজান শহরের নিকটবর্তী উপকূলে ডুবে যায় প্রিন্সেস এম্প্রেস নামের একটি ট্যাংকার। এই ঘটনায় দেশটির চারটি প্রদেশের জলসীমায় তেল ছড়িয়ে পড়ে। ট্যাংকারডুবির ঘটনাটিকে একটি ‘অপরাধ’ হিসেবে দাবি করে এর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ। তারা ট্যাংকারটির অপারেটরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।

ফিলিপাইন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, জাহাজটির মোট পাঁচটি কার্গো ট্যাংকের মধ্যে তিনটি ট্যাংক থেকে তেল লিক করে সাগরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে উল্লিখিত চারটি প্রদেশের উপকূলীয় গ্রামগুলো অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব গ্রামের মানুষজন তাদের জীবিকার জন্য প্রায় পুরোপুরি মৎস্য আহরণ ও পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। প্রিন্সেস এম্প্রেস দুর্ঘটনার পর এসব অঞ্চলে মাছ ধরার ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবৎ রয়েছে।

ফিলিপাইনের মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রি অথরিটি (মেরিনা) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনো বৈধ পারমিট ছিল না প্রিন্সেস এম্প্রেসের। সর্বশেষ যাত্রার আগে ট্যাংকারটির ক্রুরা কোস্টগার্ডের কাছে যেসব কাগজপত্র দাখিল করেছে, সেগুলোর যথার্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মেরিনা। এছাড়া ফিলিপাইনের বিচার বিভাগের অভিযোগ, অপারেটর আরডিসি রিইল্ড মেরিন সার্ভিসেস প্রডাক্ট ট্যাংকারটি নবনির্মিত বলে দাবি করলেও এটি আসলে তেমনটি ছিল না। বরং একটি পরিত্যক্ত জাহাজকে সংস্কারের মাধ্যমে এটি পুনঃনির্মাণ করা হয়েছিল। আরডিসি পরে সেটিকে কিনে নেয় এবং প্রডাক্ট ট্যাংকারে রূপান্তর করে।

মেরিনা এরই মধ্যে আরডিসির অপারেটিং পারমিট বাতিল করেছে এবং তাদের বহরে থাকা অন্য তিনটি জাহাজ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

আগামী বছর রাশিয়ায় দেড়-দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী

আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় রাশিয়ায় আগামী বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আলু রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

বাংলাদেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ। রাশিয়ার পক্ষে ন্যাশনাল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া সই করেন।

এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের আবহাওয়া ও মাটি আলু উৎপাদনের জন্য খুবই অনুকূল। বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন বছরে ৮০ লাখ টন, বাকি ২০ লাখ টন রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি বলেন, রাশিয়ায় দীর্ঘদিন আলু রপ্তানি বন্ধ ছিল। এখন আমাদের আলু রোগ-জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ করেছি। এই নিশ্চয়তা পেয়েই রাশিয়া রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এ বছর খুব বেশি না হলেও আগামী বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে।

জানা গেছে, আলুতে ক্ষতিকর ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আলুকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়ায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

এ সিদ্ধান্তের ফলে রাশিয়ায় বাংলাদেশের আলু রপ্তানির একটি বিশাল দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ রাশিয়ায় ২০ হাজার টন আলু রপ্তানি হয়েছিল।

দেশে ২০২০-২১ সালে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯৯ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭৩ টন। ২০২১-২২ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে ৭৮ হাজার ৯১০ টন। ২০২২-২৩ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে (জানুয়ারি পর্যন্ত) ১৩ হাজার টন।