Home Blog Page 39

সুয়েজ খালে দুটি ট্যাংকারের মধ্যে সংঘর্ষ, জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক

সুয়েজ খালের গ্রেট লেকস অ্যাংকর এরিয়ায় অপেক্ষমান দুটি ট্যাংকারের মধ্যে হালকা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই দুর্ঘটনার কারণে কোনো জাহাজেরই উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি অথবা তেল ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া এর কারণে খাল দিয়ে জাহাজ চলাচলেও কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি।

এক বিবৃতিতে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ওসামা রাবি বলেছেন, ট্যাংকার অ্যালিগোট যখন অ্যাংকর এরিয়া ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন অপেক্ষমান অপর ট্যাংকার লিরিক ম্যাগনোলিয়ার সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এতে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। একদিনের মধ্যেই ট্যাংকার দুটি তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারবে বলে জানান রাবি।

উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে জ্বালানি কার্যদক্ষতা ৪০% বাড়াতে হবে: ইউএমএএস

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে রূপরেখা দিয়েছে জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি), সেটি বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন খাতকে জ্বালানি কার্যদক্ষতায় আরও উন্নয়ন সাধন করতে হবে। সমুদ্র শিল্পবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি মেরিটাইম অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস (ইউএমএএস) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম অধিবেশন। এতে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে আইএমওর সংশোধিত কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে ইউএমএএস জানিয়েছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে আইএমওর কিছু সদস্য রাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আইএমওর কর্মকৌশলেও এসব লক্ষ্যমাত্রাকে বিবেচনায় নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে। এছাড়া ২০০৮ সালকে ভিত্তি ধরে নিঃসরণ ২০৩০ সাল নাগাদ ৩৭ শতাংশ ও ২০৪০ সাল নাগাদ ৯৬ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে আইএমওর কিছু সদস্য রাষ্ট্র।

সমুদ্র শিল্পে নিঃসরণ কমানোর উদ্দেশ্যে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ইউএমএএস বলছে, কেবল নতুন নতুন পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার শুরু করলেই চলবে না, বরং ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এর পাশাপাশি জ্বালানি কার্যদক্ষতা ২০১৮ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ অথবা ২০০৮ সালের গড় মানের চেয়ে ৫৫-৬০ শতাংশ বাড়াতে হবে। কার্যদক্ষতা বাড়ানোর এই হার ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যকার প্রবৃদ্ধির হারের প্রায় কাছাকাছি। সে সময়ে জ্বালানি কার্যদক্ষতা প্রায় ৩২ শতাংশ বেড়েছিল।

ইউএমএএস বলছে, বৈশ্বিক জাহাজ বহরের জ্বালানি কার্যদক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে ভূমিকা রাখতে হবে আইএমওকে। প্রথমত, তাদের আগামী জুলাইয়ে এমইপিসির অধিবেশনে ২০৩০ সালের জন্য বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করতে হবে। এরপর কার্বন ইনটেনসিটি ইন্ডিকেটর (সিআইআই), এনার্জি এফিশিয়েন্সি এক্সিস্টিং শিপ ইনডেক্সের (ইইএক্সআই) মতো স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো ২০২৬ সালে পুনরায় পর্যালোচনার দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছে আইএমও।

ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়াতে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন রাখার জন্য জিএসপির (ইবিএ) ট্রানজিশন পিরিয়ড তিন বছরের পরিবর্তে ছয় বছর বাড়ানোর জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে গতকাল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিচালক এবং ব্যবসা ও উন্নয়ন রাষ্ট্রদূত স্টিভেন কোলেট এবং ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পলিসি অ্যান্ড ইকোনমিক গভর্ন্যান্সের বিভাগীয় প্রধান ডির্ক ক্লাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উচ্চতর প্রবৃদ্ধির রূপকল্প, চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং এর ফলে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে সম্ভাব্য যেসব প্রভাব পড়বে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

প্রতিনিধি দলটি এলডিসি-পরবর্তী যুগে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রেখে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নেদারল্যান্ডস সরকারকে সহযোগিতা দেয়ার অনুরোধ জানায়।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের টেকসই কৌশলগত রূপকল্প-২০৩০-এর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে বলেন, এ রূপকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের একটি টেকসই এবং উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।

আইএমওর পরবর্তী মহাসচিব মনোনয়নে জয়ী ‘বৈচিত্র্য’

জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) বর্তমান মহাসচিব কিটাক লিমের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। তার উত্তরসূরী নির্বাচনের জন্য ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এরই মধ্যে আইএমওর সাতটি সদস্য রাষ্ট্র এই পদের জন্য তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। শেষ পর্যন্ত যিনিই নির্বাচিত হোন না কেন, এই প্রার্থী মনোনয়নের মাধ্যমে যে বিষয়টি জয়ী হয়েছে, সেটি হলো লৈঙ্গিক ও জাতিগত বৈচিত্র্য।

সাত মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে তিনজন নারী। তারা হলেন কেনিয়ার ন্যান্সি কারিগিথু, ক্যারিবীয় দ্বীপ ডমিনিকার ডা. ক্লিওপেট্রা ডৌম্বিয়া-হেনরি ও ফিনল্যান্ডের মিন্না কিভিমাকি। এদের মধ্যে ন্যান্সি কারিগিথু নির্বাচিত হলে প্রথম আফ্রিকান মহাসচিব পাবে আইএমও।

এই তিনজন ছাড়াও আইএমও প্রধান নির্বাচনের দৌড়ে রয়েছে বাংলাদেশের মঈন উদ্দিন আহমেদ, তুরস্কের সুয়াত হায়রি আকা, পানামার আর্সেনিও অ্যান্টোনিও ডমিনগেজ ভেলাস্কো ও চীনের ঝ্যাং শিয়াওজি।

১৮ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় আইএমও অধিবেশনের ৩৩তম সেশনে জমা দেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সমুদ্র শিল্পে লৈঙ্গিক সমতার ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। এই শিল্পে নারীদের খাতভিত্তিক সম্পৃক্ততা নিয়ে ২০২১ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করে আইএমও ও উইমেনস ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন (ডবিøউআইএসটিএ)। গত বছরের মে মাসে প্রথম আইএমও ইন্টারন্যাশনাল যে ফর উইমেন ইন মেরিটাইম উপলক্ষ্যে সেই গবেষণার প্রতিবেদন দ্য উইমেন ইন মেরিটাইম সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, সমুদ্রশিল্পে সার্বিকভাবে মোট জনবলের ২৯ শতাংশ নারী। আর আইএমওর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমুদ্রসংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোয় নারীদের সম্পৃক্ততা ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ-ইইউ বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত ও জোরদার করার আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফরের দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে নিয়ে ইউরোপিয়ান কমিশনের ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর ট্রেড এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মেন্ট, সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স ও ইনক্লুশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইইউর ওই সব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এ আগ্রহের কথা জানান।

এ সময় ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এমপ্লয়মেন্ট জুস্ট কোর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে।’ বৈঠককালে বাংলাদেশের শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অবস্থা উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় কারখানার নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, সবুজ কারখানায় টেকসই উৎপাদন কৌশল, কারখানা পরিদর্শন, প্রযুক্তির ব্যবহার, আধুনিক মেশিনারির ব্যবহার ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতির বিষয়গুলো সম্পর্কে জুস্ট কোর্তেকে অবহিত করে।

ডিরেক্টরেট জেনারেল ট্রেডের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে খসড়া জিএসপি লেজিসলেশনের ওপর ইইউর চলমান আলোচনা এবং ‘এভরিথিং বাট আর্মস’ বাণিজ্য সুবিধা থেকে জিএসপি প্লাস-এ বাংলাদেশের উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ফর ট্রেড মারিয়া মার্টিন প্র্যাটের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশকে বিভিন্ন সংস্কার অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

বৈঠকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চলমান বাহ্যিক অস্থিরতা, খাদ্য ও জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বাজারে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আরো ছয় বছরের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট মেজারস (আইএসএম) অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানানো হয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর একই সময়ের জন্য আইএসএম অব্যাহত রাখার জন্য এলডিসি গ্রুপের সাবমিশনের ক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর নেগোসিয়েশনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জোরালো সমর্থনের জন্যও অনুরোধ করেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আলোচনাধীন নতুন জিএসপিতে বাংলাদেশের বাণিজ্য স্বার্থ, বিশেষ করে পোশাক খাতের সুরক্ষা প্রদানেরও অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। তারা কোম্পানি এবং ব্র্যান্ডগুলোর পক্ষ থেকে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ এবং দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রাসঙ্গিক কোম্পানিগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিতকল্পে করপোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্সের আওতায় একটি মেকানিজম তৈরিরও অনুরোধ করেন।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেলজিয়াম ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ্, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সভাপতি নিহাদ কবির, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মহাসচিব ফারুক আহমেদ ও ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা স্মরণকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে

সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বর্তমানে স্মরণকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা সূচকে সম্প্রতি এ তথ্য উঠে আসে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জেরে বিগত কয়েক দশক ধরেই গোটা পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বায়ুমণ্ডলের অতিরিক্ত তাপমাত্রার সিংহভাগ শোষণ করছে সাগর-মহাসাগরগুলো। যার ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা। বছরের এই সময়ে সাধারণত যেই গড় তাপমাত্রা বিরাজ করে বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরিভাগের তাপমাত্রা তার চেয়ে অন্তত এক ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘ তিন বছর ধরে ‘লা নিনা’ বিরাজ করছে। লা নিনার মতো শীতল আবহাওয়া বিরাজ করা সত্ত্বেও তাপমাত্রার বৃদ্ধি উষ্ণায়ন পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। আশঙ্কা করা যাচ্ছে যে, চলতি বছরের শেষে প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনো আবহাওয়া বিরাজ করলে গড় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

চার দশকের উষ্ণতা বৃদ্ধির ধরন পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে ২০২২ সালে একটি গবেষণা প্রকাশ করে অ্যাডভান্সেস ইন অ্যাটমোস্ফরিক সায়েন্সেস। গবেষণায় দেখা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরের ২ হাজার মিটারে তাপমাত্রা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২২ সালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে এনওএএ এর সাম্প্রতিক তথ্য এটাই প্রমাণ করে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরিভাগে তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন দ্রুত এবং ব্যাপক আকারে কমাতে না পারলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে। তবে শিপিং খাত অনেক বেশি কার্বননির্ভর। সেসঙ্গে পরিবেশবান্ধব বিকল্প জ্বালানি ও প্রযুক্তি অপ্রতুল এবং ব্যয়বহুল হওয়ায় দ্রুত অধিক মাত্রায় কার্বন ব্যবহার কমানো প্রায় অসম্ভব।

ফেব্রুয়ারিতে শক্তিশালী অবস্থানে দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাণ শিল্প

ফেব্রুয়ারিতে ৫৮টি নতুন জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। আলোচ্য সময়ে মোট কার্যাদেশের তুলনায় তা প্রায় ৭৪ শতাংশ।

চলতি বছর বিশ্বজুড়ে নতুন জাহাজ কার্যাদেশের পরিমাণ কিছুটা কমলেও দক্ষিণ কোরিয়ায় এর প্রভাব তেমন একটা পড়েনি। বরং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান জাহাজ নির্মাতারা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই, স্যামসাং এবং দাইয়ু জানুয়ারি মাসে কিছুটা মন্দাভাব দেখলেও ফেব্রুয়ারিতে তাদের কার্যক্রম পুনরায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৮৭০ কোটি ডলারের কার্যাদেশ পেয়েছে। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে হুন্দাই ৬০০ কোটি ডলারের কার্যাদেশ পেয়েছে, যা তাদের বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪০ শতাংশ। একইভাবে স্যামসাং ২০০ কোটি ডলারের কার্যাদেশ পেয়েছে, যা এর বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রার ২০শতাংশ। তবে গত বছর ব্যাপক লোকসান করায় অন্যদের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছে দাইয়ু।

২০২৩ এর দ্বিতীয় প্রান্তিকে সাপ্লাই চেইনের স্বাভাবিকীকরণ অব্যাহত থাকবে:

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সাপ্লাই চেইনের স্বাভাবিকীকরণ অব্যাহত থাকবে।

এসঅ্যান্ডপি এর সাপ্লাই চেইন রিসার্চের প্রধান ক্রিস রজার্স জানান, বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনের জন্য চলতি বছরটা দুই ভাগে বিভক্ত। ২০২২ সালের শেষ দিকে সাপ্লাই চেইনের অবস্থা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। স্বাভাবিকীকরণের এই প্রক্রিয়া চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকেও অব্যাহত থাকবে। ২০২৩ এর শেষ দিকে মহামারি-পরবর্তী করপোরেট কৌশলগুলো সুস্পষ্ট হবে এবং বৈশ্বিক নীতিমালা ঘিরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার সমাধান হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

এসঅ্যান্ডপির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, সাপ্লায়ারের ‘ডেলিভারি টাইম’ ২০১৯ এর জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোত্তম পর্যায়ে আছে এবং মৌসুমি সমুদ্র পরিবহনের ধরনেও স্বাভাবিকীকরণের লক্ষণ দেখা গেছে।

জাপানের ড্রাই বাল্ক আমদানি ৪% কমেছে

২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে জাপানের বাল্ক আমদানির পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ৪% হ্রাস পেয়েছে।

জাপানের ইস্পাত শিল্প লৌহ আকরিক এবং কোক কয়লা আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা দেশটির মোট ড্রাই বাল্ক আমদানির ৪১%। জাপান তার উৎপাদিত ইস্পাতের এক-তৃতীয়াংশ রপ্তানি করে এবং এক-চতুর্থাংশ অভ্যন্তরীণ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করে। বিশ্বজুড়ে বিরাজমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে জাপানে ইস্পাতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং রপ্তানির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। ইস্পাতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর লৌহ আকরিকের আমদানি ৬% এবং কোক কয়লা আমদানি ৯% কমেছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হলে জাপানের বাল্ক আমদানি বাড়বে। তবে জাপানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। চীনের অর্থনীতি চাঙ্গা হলে জাপানসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের অর্থনীতি সচল হবে এবং আমদানি-রপ্তানির চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।

সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদারে নতুন নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ইইউ

ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা, প্রযুক্তি এবং পরিবেশগত হুমকি থেকে সমুদ্রসীমাকে সুরক্ষিত রাখতে নতুন নীতি এবং কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

২০১৪ সালে ‘ইইউ মেরিটাইম সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি’ প্রণয়নের পর থেকে সামুদ্রিক নিরাপত্তার হুমকি এবং প্রতিবন্ধকতা কয়েক গুণ বেড়েছে। জলদস্যুতা, সশস্ত্র ডাকাতি, মানব পাচার, অভিবাসী, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান এবং সন্ত্রাসবাদের মতো অবৈধ কার্যক্রম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের জেরে সাম্প্রতিক সময়ে প্রভাবিত হচ্ছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা। এসব কিছু মোকবিলায় ইইউ মেরিটাইম সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি হালনাগাদ করতেই নতুন নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

ইইউ কমিশনার ভিরগিনিয়ুস সিনক্যাভিচুস জানান, সামুদ্রিক নিরাপত্তার ওপর জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব মোকবিলা করতে নতুন নীতিমালা এবং কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করা হবে। এছাড়া সামুদ্রিক নজরদারি জোরদার করতে আধুনিক এবং শক্তিশালী যন্ত্রপাতির ব্যবহার, সাইবার ও হাইব্রিড হুমকি মোকবিলায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বৃদ্ধি এবং গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক অবকাঠামোর সুরক্ষা আরও শক্তিশালী করা হবে।

নতুন স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী, ইইউ পর্যায়ে নৌ মহড়ার আয়োজন, ইউরোপজুড়ে কোস্ট গার্ডের কার্যক্রম বৃদ্ধি, ইইউ বন্দরগুলোতে সিকিউরিটি ইন্সপেকশন জোরদার করা হবে। সেসঙ্গে উপকূল এবং সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় টহল জাহাজের নজরদারি জোরদার, পারস্পরিক তথ্য আদান-প্রদান বৃদ্ধি এবং ইইউ-ন্যাটো সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা হবে। এছাড়া সাইবার এবং অন্যান্য হামলা থেকে জাহাজ ও গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক স্থাপনাগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত নৌ মহড়া আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

নতুন স্ট্র্যাটেজিটি বর্তমানে ইইউ কাউন্সিলের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অন্যদিকে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে নতুন কর্মকৌশল অনুমোদন ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছে ইইউ কমিশন।