Home Blog Page 4

চট্টগ্রাম বন্দরে ‘এজেন্ট ডেস্ক সিস্টেম’ বিষয়ক কর্মশালা

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ‘এজেন্ট ডেস্ক সিস্টেম’ বিষয়ক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বন্দর অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বন্দরের আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমকে আরও দ্রুত, স্বচ্ছ ও সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করে আইটি প্রতিষ্ঠান ম্যাগনেটিজম টেক লিমিটেড।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ম্যাগনেটিজম টেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিব কাদের চৌধুরী। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এজেন্ট ডেস্ক সিস্টেমের লক্ষ্য, সুবিধা এবং বাস্তবায়ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বন্দরের ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রযাত্রায় এই উদ্যোগকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বন্দর–সম্পৃক্ত সব স্টেকহোল্ডারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। এরপর ম্যাগনেটিজম টেক লিমিটেড–এর প্রযুক্তি দল এজেন্ট ডেস্ক সিস্টেম –এর বিভিন্ন মডিউল, কার্যপ্রণালী ও ভবিষ্যৎ সমপ্রসারণ পরিকল্পনা উপস্থাপন করে।

কর্মশালায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিপিং এজেন্ট, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং এজেন্টসহ বন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

টার্মিনালের মালিকানা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার পরিকল্পনা নেই: বন্দর কর্তৃপক্ষ

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের সব টার্মিনাল, জেটি, ইয়ার্ড ও অন্যান্য স্থাপনার একক মালিকানা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের। চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো টার্মিনালের মালিকানা ইতোপূর্বে কখনোই কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা বন্দর কর্তৃপক্ষ বা সরকারের ছিল না বা এখনো নেই। বাংলাদেশের প্রচলিত বিধিবিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে শুধু লাইসেন্সি হিসেবে অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে যা সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব।

রোববার (২৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিবের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনালসমূহ পরিচালনার ব্যাপারে কতিপয় সংবাদ মাধ্যম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করছে। এসব অসত্য, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সাধারণ জনগণ ও বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

কতিপয় গণমাধ্যমে কোনো বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞাত না হয়ে মনগড়া বা ধারণা ভিত্তিক বা অনির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদ পরিবেশন করা হলে তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর সম্পর্কিত মনগড়া, অবাস্তব সংবাদ বন্দরের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যা বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির হৃদপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দর এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় অন্তরায়। বন্দরের সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ বজায় রাখা এবং ক্রমবর্ধমান উন্নতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখাসহ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারিভাবে গম আমদানি শুরু

বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জি টু জি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি শুরু করছে। উভয় দেশের সরকারে মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে এ আমদানি প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-এর মধ্যে চুক্তিটি সই হয়। এর আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে।

প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি নোরস স্ট্রিড জাহাজটি শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরে পৌঁছায়।

জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানা যায়, ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গমের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন চট্টগ্রামে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৮৯ মেট্রিক টন গম মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রকল্প সমন্বয়ে ‘পিপিপি সেল’ গঠন

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প সমন্বয়ের জন্য একটি ‘পিপিপি সেল’ গঠন করা হয়েছে। বন্দরের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই সেল গঠন করা হয়।

নবগঠিত সেলে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন চবকের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ। সেলে আহ্বায়কসহ মোট ১১ জন সদস্য রয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী (সিসিপি) রাফিউল আলমকে সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সেলের অন্য সদস্যরা হলেন পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, চিফ প্ল্যানিং মো. মাহবুব মোরশেদ চৌধুরী, চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার মো. ওবায়দুর রহমান, আইন কর্মকর্তা (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) শাহনেওয়াজ মনির, সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. মুস্তাহিদুল ইসলাম, উপপ্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মির্জা রাকিবুল ইসলাম, সহকারী ব্যবস্থাপক (এস্টেট) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইমাম।

সেলের আওতায় বাস্তবায়নযোগ্য পিপিপি প্রকল্প চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার নির্ধারণে সুপারিশ প্রণয়ন, পিপিপি ট্রানজেকশন পরামর্শক নিয়োগ ও ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পিপিপি কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, দরপত্র আহ্বান ও চুক্তি সম্পাদন, চলমান প্রকল্পের তদারকি ও প্রতিবেদন দেওয়া হবে। ২১ অক্টোবর বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে এই পিপিপি সেল গঠনের নির্দেশনা জারি করা হয়।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২.১১ বিলিয়ন ডলা

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম-৬) পদ্ধতি অনুসারে, বাংলাদেশের নিট রিজার্ভ বর্তমানে ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পিসিটিতে আরও ১০ গ্যান্ট্রি ক্রেন যুক্ত হলো

চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে (পিসিটি) নতুন ১০টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি) যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে টার্মিনালটিতে এ পর্যন্ত ১৪টি ক্রেন যুক্ত হলো। ক্রেনগুলো টার্মিনালের অভ্যন্তরে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজে ব্যবহৃত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে চুক্তি অনুযায়ী সৌদি আরবের বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি) ২৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যে অর্থাৎ আগামী বছরের জুনের মধ্যে টার্মিনালটিতে সব যন্ত্রপাতি স্থাপন করার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো বন্দরের টার্মিনাল পিপিপির আওতায় দীর্ঘমেয়াদে পরিচালনার জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। টার্মিনালটিতে তিনটি জেটি রয়েছে।

পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশে বর্ধিত ফি স্থগিত

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে যানবাহনের বর্ধিত গেটপাস ফি স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। দুই দিনের কর্মবিরতির কারণে ছয়টি জাহাজ রপ্তানি পণ্য ছাড়াই বন্দর ত্যাগ করেছে।

রোববার দুপুরে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের সাথে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রেইলার চলাচল শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে আমদানি পণ্যের ডেলিভারি বন্ধ ছিল। বিষয়টি দেশের আমদানি-রপ্তানির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তাই বন্দর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়েছে। সরকারি অনুমোদনক্রমে জারি করা গেজেট তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন বা স্থগিত করা সম্ভব নয়। তবে পরিবহন শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শুধু পরিবহনের ক্ষেত্রে বর্ধিত গেটপাস ফি পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।

বন্দর সচিব আরও বলেন, আমরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুপারিশসহ প্রস্তাব বোর্ডে পাঠাব এবং পরে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে। আপাতত ফি স্থগিত থাকবে।

শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেছেন, তারা কাজে ফিরে যাবেন। বর্তমানে বাইরে প্রায় ছয় হাজার ট্রাক-কাভার্ডভ্যান বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে, যা এখন ডেলিভারি ও রপ্তানি কাজে নিয়োজিত হবে।

বৈঠকের পর বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, বৈঠকে বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। আমরা আমাদের সংগঠনভুক্ত সবাইকে কাজে ফিরতে বলেছি।

তিনি আরও বলেন, বন্দর চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন, আপাতত ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের জন্য ২৩০ টাকা ফি দিতে হবে না। পূর্বের মতো ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ফিতে গেটপাস নেওয়া যাবে।

এদিকে কর্মবিরতির কারণে শনিবার ও রোববার এক হাজার একক কনটেইনার রপ্তানি পণ্য ছাড়াই ছয়টি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করেছে।

অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আদায়

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মোট আদায়ের পরিমাণ ৯০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা যা এ যাবত কালের যেকোনো অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসের তুলনায় বেশি। শুক্রবার এনবিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের একই সময় ছিল ৬৮ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে বিগত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ১৫ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। বিগত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের তুলনায় এ বছরের আদায়ের প্রবৃদ্ধি হার ২০ দশমিক ২১ শতাংশ।

স্থানীয় পর্যায়ের মুসক খাত থেকে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত তিন অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতে আদায়ের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২৬ হাহার ৮৩৮ কোটি, ২৮ হাজার ৪৪৫ এবং ২৪ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর স্থানীয় পর্যায়ের মুসক আদায়ের প্রবৃদ্ধি হার ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এনবিআরের তথ্যমতে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যা গত তিন অর্থবছরের একই সময় ছিল যথাক্রমে ২৪ হাজার ৮১ কোটি, ২৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা এবং ২১ হাজার ১৬ কোটি টাকার বেশি। আয়কর ও ভ্রমণ করের ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।

অন্যদিকে আমদানি ও রপ্তানি খাতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা, যা গত তিন অর্থবছরের একই সময়ে আদায়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের একই প্রান্তিকে এই খাতে আদায় ছিল ২৪ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই খাতে রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে ২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

রাজস্ব বোর্ডে জানিয়েছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আয়কর ও ভ্রমণ কর, স্থানীয় পর্যায়ের মুসক খাত এবং আমদানি ও রপ্তানি খাতের প্রত্যেকটিতে রাজস্ব আদায়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।

বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাতে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে : আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেছেন, বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাতের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। 

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশে আইএমএফের ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, কর্মসূচির পরবর্তী পর্যালোচনার জন্য আইএমএফের একটি দল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে। এবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কারের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। একটি হচ্ছে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব খাতে সংস্কার। অন্যটি আর্থিক খাতের সংস্কার।

চলমান কর্মসূচির সফলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সংস্কারের মূল ক্ষেত্রগুলোতে কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

এছাড়া, প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতির বিষয়েও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আইএমএফের মতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৪২ শতাংশে নামতে পারে এবং পরের অর্থবছরে তা আরও কমে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশে নেমে আসবে।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক এই সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সংস্কার বাস্তবায়নের গতি ও প্রত্যাশার তুলনায় ধীর মূল্যস্ফীতি হ্রাসের বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

এছাড়া, আইএমএফ জ্বালানি সরবরাহে সীমাবদ্ধতা এবং বৈশ্বিক নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে সম্ভাব্য বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকির কথাও তুলে ধরেছে।

কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি অনুমতির বাধ্যবাধকতা শিথিল চায় নেপাল

সরকারের অনুমতি নিয়ে কাঁচা পাট রপ্তানির বাধ্যবাধকতা শিথিলের অনুরোধ জানিয়েছে নেপাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অনুরোধ জানান ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার সময় নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বাণিজ্য উপদেষ্টাকে জানান, নেপালে ১১টি পাটকল রয়েছে। তারা মূলত বাংলাদেশি কাঁচা পাট আমদানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত ৮ সেপ্টেম্বর কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি অনুমতি আরোপ করায় তাদের পাটকলগুলো কিছুটা সমস্যায় পড়েছে।

জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন নেপালের রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশের পাটপণ্য ও কাঁচা পাটের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ উচ্চমানের ও পরিবেশবান্ধব আধা প্রক্রিয়াজাত পাটপণ্য উৎপাদন করছে এবং বাংলাদেশ চায় কাঁচা পাট রপ্তানির বদলে বরং আধা প্রক্রিয়াজাত পাটপণ্য বেশি রপ্তানি করতে। নেপাল বাংলাদেশ থেকে এই পণ্যগুলো আমদানি করলে উভয় দেশই লাভবান হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৫ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি, যা বাংলাদেশের অনুকূলে। বাংলাদেশ দেশটিতে রপ্তানি করে ৪ কোটি ডলারের মতো পণ্য, আর দেশটি থেকে আমদানি করে ১ কোটি ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশ নেপালে রপ্তানি করে প্রধানত তৈরি পোশাক, কাঁচা পাট, পাট ও পাটজাত পণ্য, ওষুধ, আলু, বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী, আসবাব, ব্যাটারি, হাঁস-মুরগির খাবার, প্রসাধনী, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, কাগজ, কাচ এবং বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানীয়। নেপাল থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে মসুর ডাল, আদা, সয়াবিন তেল, মরিচ, কৃষিপণ্য ইত্যাদি।