Home Blog Page 44

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর

৭ ই মার্চের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ  উপলক্ষে আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকালে শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান । এ সময় বন্দরের পর্ষদ সদস্যগণ, বিভাগীয় প্রধান, উপ-বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সিবিএ নেতৃবৃন্দ ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ কেবল মুখনিঃসৃত শব্দরাজি নয়, বঞ্চিত বাঙালি জাতির হাজার বছরের চাপা পড়া কষ্ট একসাথে ধ্বনিত হয়েছে। স্বতস্ফূর্ত আবেগ এবং কাঙ্খিত স্বপ্নকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ বাঙালিকে দিয়েছে পথের দিশা, যুদ্ধে যাওয়ার অমিত সাহসী প্রেরণা। তাই ৭ই মার্চের ভাষণের বহুমাত্রিক তাৎপর্য্ রয়েছে এবং অনুপম একটি বক্তব্য, যা জাতিকে স্বাধীনতার পথে ধাবিত করে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই জারগণের ধ্বনি ‘জয়বাংলা আজ বাংলদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি ঐতিহাসিক সাহসিকতাপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রাম বন্দরের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত কর্মকর্তাসহ ২০০ জনের অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ও ১০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী শহীদ হন।

তিনি আরও বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। বন্দরে  কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যার যার অবস্থান থেকে সংগঠিতভাবে এবং জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে তাঁর যে দিকনির্দেশনা ও ২০৪১ সালের মধ্যে  উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর একটি অনন্য প্লাটফর্ম যেখান থেকে দেশের মানুষের সেবা করতে পারা যায়।

তিনি ৭ ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে নিজ নিজ অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে আহবান জানান।

সবশেষে বন্দর চেয়ারম্যান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ ও ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ।

আলোচনা সভা শেষে বন্দর চেয়ারম্যান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাত উন্মুক্ত রেখেছি : প্রধানমন্ত্রী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বাংলাদেশে জ্বালানি, অবকাঠামো, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা আমাদের অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাত বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রেখেছি।

দোহার সেন্ট রেজিস হোটেলে সোমবার কাতারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিশ্বাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ এ খাতে কাতারের বিনিয়োগের সুযোগ আছে। আমরা সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান এবং জ্বালানি বিতরণে কাতারের দক্ষতা থেকেও লাভবান হতে পারি।

কাতার থেকে আরও জ্বালানি আমদানিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের সংকট বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে কঠিন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে। আমাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশে আরও রপ্তানির সুযোগ অন্বেষণ করতে আমরা কাতারকে অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অঞ্চলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ব্যবস্থা সবচেয়ে উদার। ট্যাক্স হলিডে, যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক, রয়্যালটি রেমিট্যান্স, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও ফি, শতভাগ বিদেশী ইকুইটি, অবাধ বহির্গমন নীতি, লভ্যাংশের সম্পূর্ণ প্রত্যাবাসন সুবিধা, মূলধন ফেরতসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছি আমরা

১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং তাতে ঝামেলাহীন বিদেশী বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এক ছাদের নিচে সব সেবা দিচ্ছে। আমাদের সরকার সমন্বিত সুবিধাসহ সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ জায়গা নিয়েছে, তাদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে।

যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি ও লজিস্টিক হাবের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামোয় আমরা প্রচুর বিনিয়োগ করছি। পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী নদীর টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত তৃতীয় টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকায় মেট্রোরেল ব্যবস্থার মতো মেগা প্রকল্পগুলো আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ। এরই মধ্যে সমগ্র জাতিকে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কাভারেজের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া দুটি আলাদা প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএসইসি ও বিডা।

কনটেইনার ভলিউম কমার পরও ১০ বিলিয়ন মুনাফা অর্জন করেছে ওওসিএল

২০২২ সালে ৭.১ মিলিয়ন টিইইউ আনা-নেওয়া করেছে ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কনটেইনার লাইন (ওওসিএল) যা ২০২১ সালের থেকে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টিইইউ কম। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর ওওসিএলের কনটেইনার ভলিউম ৬% হ্রাস পেয়েছে।

কনটেইনার ভলিউম কমলেও সামগ্রিকভাবে লাভের মুখ দেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সালে ওওসিএলের রাজস্ব ছিল ১৯.৮২ বিলিয়ন ডলার এবং অপারেটিং মুনাফা ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ওওসিএল বহরে নতুন জাহাজ যুক্ত হলে সরবরাহ আরও বাড়বে।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আগামী ছয় মাস ইতিবাচক ধারায় থাকবে

আগামী ছয় মাস দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলে মনে করছে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)। ‘বিজনেস কনফিডেন্স সার্ভে রিপোর্ট ২০২২-২৩’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় এমনটা জানায় সংস্থাটি। রবিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম।

সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২২ সালে সামগ্রিক বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স (বিসিআই) দাঁড়ায় ৭৪ দশমিক ৪ পয়েন্টে, যা আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্যবসা পরিস্থিতিতে ইতিবাচক ধারার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সময় উৎপাদন খাতের ক্রয়াদেশ, সেবা খাতে চাহিদা, বিক্রয় মূল্য ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়বে। যদিও উৎপাদন ব্যয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা ‘নিম্ন আস্থা’ (হতাশা) প্রকাশ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য সরঞ্জাম সংক্রান্ত ব্যয়ের বোঝা কমানোর দাবি জানিয়েছে বিল্ড।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ সমীক্ষা চালানো হয়। এতে ৫৬৭ জন উদ্যোক্তার মতামত নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল গত বছরের মার্চ-আগস্ট পর্যন্ত ব্যবসা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি প্রশমনের প্রস্তুতি নেয়ার ও পরিকল্পনা করার সক্ষমতা প্রদান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর পরও বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স (বিসিআই) আমাদের ব্যবসায় পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রদর্শন করায় আমরা আনন্দিত। সংকট মোকাবেলা ও উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।

বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, এ বছরের বিজনেস কনফিডেন্স সার্ভেতে সাতটি কম্পোনেন্টের মধ্যে ছয়টি কম্পোনেন্টেই উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ছয়টি কম্পোনেন্ট হলো কর্মসংস্থান, ক্রয়াদেশ, সেবার চাহিদা, ব্যবসায় কার্যক্রম, বিক্রয় মূল্য ও বিনিয়োগ। শুধু ব্যবসায় ব্যয় সম্পর্কিত মতামতের ক্ষেত্রে নেতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এ গবেষণায় ব্যবহৃত ডিফিউশন ইনডেক্সে স্টাডি রেঞ্জ ধরা হয়েছে শূন্য থেকে ১০০ এবং মধ্যবিন্দু ধরা হয়েছে ৫০। প্রাপ্ত ফলাফল ৫০-এর কম হলে সংকোচন বা নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং ৫০-এর বেশি হলে সম্প্রসারণ বা ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমরা তিনভাবে বিজনেস কনফিডেন্স দেখেছি। একটা হচ্ছে ওভারঅল বিজনেস কনফিডেন্স, আরেকটা হচ্ছে ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস কনফিডেন্স এবং সার্ভিস সেক্টরের বিজনেস কনফিডেন্স। আমাদের তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তারা খরচ বেড়ে যাওয়া নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন। যেখানে আমাদের উৎপাদন খাতের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক, সেখানে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাওয়া উদ্বেগজনক।

সাত মাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে যা প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদনে এ তথ্য রয়েছে।

এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ওই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

সাত মাসে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব এসেছে ৫২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৮ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে এ খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাত থেকে সাত মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৬ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় যা ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি । তবে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা কম আয় হয়েছে। এ ছাড়া আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত থেকে সাত মাসে রাজস্ব এসেছে ৫৩ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তবে আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা কম।

সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে সম্মত জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক এলাকা তলিয়ে যাওয়া রোধে অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বছরের পর বছর আলোচনার পর শনিবার প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তির একটি খসড়া স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে।

সম্মেলনের সভাপতি রেনা লি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে রবিবার প্রতিনিধিদের সামনে উচ্চস্বরে ঘোষণা করেন ‘আমাদের প্রচেষ্টা অবশেষে লক্ষ্যে পৌঁছেছে’।

খসড়াটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি তবে ১৫ বছরেরও বেশি আলোচনার পর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে পরিবেশবাদীরা এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৩০ শতাংশ ভূমি এবং মহাসাগর সংরক্ষণে চুক্তিটিকে অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়, যেমনটি গত ডিসেম্বরে মন্ট্রিলে স্বাক্ষরিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে বিশ্বের সরকারগুলো সম্মত হয়েছিল।

গ্রিনপিসের লরা মেলার বলেন, একটি ঐতিহাসিক দিন এবং একটি বিভক্ত বিশ্বের ভূ-রাজনীতি সত্ত্বেও প্রকৃতি এবং মানুষের সুরক্ষার প্রচেষ্টা বিজয়ী হতে পারে, এটি তার একটি নজির।

শুক্রবার থেকে শনিবার রাতভর ম্যারাথন সেশনসহ দুই সপ্তাহের ব্যাপক আলোচনার পর প্রতিনিধিরা একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

লি আলোচকদের বলেছেন, এ নিয়ে পুনরায় কোন আলোচনা হবে না। আইনজীবীদের দ্বারা যাচাই এবং জাতিসংঘের ছয়টি অফিসিয়াল ভাষায় অনুবাদ করার পরে চুক্তিটি পরবর্তী তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে।

জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেস প্রতিনিধিদের প্রশংসা করেছেন।

আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ থেকে জাহাজে ট্যাংকার স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে স্পেন

Oil/Chemical tanker at sea - Aerial view

রাশিয়ার বাল্টিক বন্দর থেকে তেল বহনকারী জাহাজগুলো স্পেনের সেউতা ছিটমহলের বাইরে ট্রানজিট করে দূরপাল্লার অন্যান্য জাহাজে ট্যাংকার স্থানান্তর করে। স্থানান্তরের কাজ আঞ্চলিক সমুদ্রসীমার বাইরে হয় বলে তেল ছড়িয়ে পড়লে পরিচ্ছন্নতা খরচ বহনের দায়বদ্ধতা কারো থাকে না।

তাই জাহাজ থেকে জাহাজে তেল স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে স্পেন। আইন অনুযায়ী, স্পেনের আঞ্চলিক সমুদ্রসীমার বাইরে ‘স্প্যানিশ মেরিটাইম স্পেসেস’ এ নোঙর ফেলে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে ট্যাংকার অপারেটরদের নিকটস্থ স্প্যানিশ বন্দরের অনুমতি নেওয়া লাগবে।

সমুদ্র সুরক্ষায় ঐতিহাসিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে জাতিসংঘ

দীর্ঘ দেড় দশকের আলোচনা শেষে সাগর-মহাসাগর সুরক্ষায় প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। ‘হাই সিজ ট্রিটি’র আওতায় ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর ৩০ শতাংশ মহাসাগর সংরক্ষিত ঘোষণা করা হবে।

২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সমুদ্র সুরক্ষা চুক্তি বিষয়ক চূড়ান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সফল আলোচনা শেষে সম্মেলনের সভাপতি রেনা লি বলেন, ‘অবশেষে আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হলো’। আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জীববৈচ্যিত্র সুরক্ষায় ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত একাধিকবার আলোচনায় বসেন জাতিসংঘের সদস্যদেশের প্রতিনিধিগণ।

গত বছর আগস্টে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই পঞ্চম ধাপের আলোচনা সমাপ্ত হয়। যে কারণে সদস্য দেশগুলোর ঐকম্যতে পৌঁছানোকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। গ্রিন পিসের পরামর্শক লরা মেলার বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। প্রতিনিধিদের সফল আলোচনা প্রমাণ করে যে, ভেদাভেদে ভরা এই পৃথিবীতে ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে প্রকৃতির রক্ষণাবেক্ষণে মানুষের প্রচেষ্টাই জয়ী হতে পারে।’

দুই সপ্তাহের প্রগাঢ় আলোচনা শেষে মার্চের ৩-৪ তারিখে টানা ৩৮ ঘণ্টা বৈঠক করেন অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে একটি চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান তারা। চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় প্রতিনিধিদের সাধুবাদ জানান জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আলোচনায় কী কী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা এখনো লিখিত আকারে প্রকাশ করা হয়নি। লরা জানান, আইনজীবীরা চুক্তিটি যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষায় অনুবাদের পর চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হওয়ার পর চুক্তিটি পুনরালোচনার তেমন কোনো সুযোগ থাকবে না বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, উপকূল থেকে ৩২০ কিলোমিটার বা ২০০ মাইল-পরবর্তী সমুদ্রকে হাই সিজ বলা হয়। বিশ্বের মহাসাগরের ৬০ শতাংশ এবং ভূপৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক হাই সির অন্তর্ভুক্ত। বিশাল এই এলাকা কোনো দেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের আওতাভুক্ত না হওয়ায় সমুদ্রের এই অংশে বিশ্বের সব দেশের মাছ শিকার, জাহাজ চলাচল এবং গবেষণার অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে যেহেতু আন্তর্জাতিক জলসীমার কোনো মালিকানা নেই, সেহেতু এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়ভারও কোনো একক দেশের ওপর বর্তায় না। যে কারণে বিস্তৃত হাই সিজ এলাকার মাত্র ১.২ শতাংশ সুরক্ষিত আছে। এমতাবস্থায়, নতুন চুক্তি কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জীব এবং জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার জন্য নির্দিষ্ট এলাকা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

ডলারে নয়, টাকা-রুপিতে লেনদেন করতে চায় বাংলাদেশ-ভারত

বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ডলারকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। গত ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ভারতের শহর বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত জি২০ অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের বৈঠকের ফাঁকে এই আলোচনা হয়েছে। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে চিকিৎসা, পর্যটন ও শিক্ষাখাতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। একই সাথে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আমদানি যে ৩ দেশ থেকে করে তার মধ্যে ভারত অন্যতম।

এই ২ দেশের মধ্যে লেনদেন হয় মার্কিন ডলারে এবং তারপরে তা রুপি বা টাকায় হিসাব করা হয়। এর ফলে উভয়পক্ষকেই বিনিময় হারে কিছু ছাড় দিতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এমন একটি ব্যবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারে রূপান্তর করতে হবে না।

ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে একটি দ্বৈত মুদ্রা কার্ড থাকবে, যেখানে তারা ভ্রমণের আগে ভারতীয় রুপি যোগ করে নিতে পারবেন। একইভাবে কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় একইভাবে তাদের কার্ডে টাকা যোগ করে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিনিময় হার হবে সরাসরি টাকা থেকে রুপি বা রুপি থেকে টাকায়।

ভারতের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ব্যবসায়ীরা তাদের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন।

গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

বৈঠকে আবদুর রউফ তালুকদার জানান, এই পদ্ধতি চালু করা গেছে ভারতকে যে পরিমাণ অর্থপ্রদান করতে হয়, তা আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে দিতে হবে না এবং এর ফলে রিজার্ভের ওপর চাপও কমবে।

তিনি বলেন, রিজার্ভের ওপর চাপ অনেক কমেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে আমদানি বিল কমেছে। এখন রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স যা আসছে তা দিয়েই আমদানি বিল মেটানো সম্ভব। তবে অন্যান্য খাত থেকেও ডলার আসা দরকার। সেক্ষেত্রে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে এই ব্যবস্থা সাহায্য করতে পারে।

পুনরায় ইউক্রেনে সরাসরি বুকিং চালু করেছে মায়েরস্ক

ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা স্তর পর্যবেক্ষণের পর পুনরায় সারা বিশ্ব থেকে দেশটিতে সরাসরি বুকিং চালু করেছে মায়েরস্ক।

রোমানিয়ার কনস্ট্যান্টা বন্দর থেকে ইউক্রেনের রেনি বন্দরে সাপ্তাহিক বার্জ সার্ভিস চালু করেছে মায়েরস্ক। নতুন পরিষেবাটি কনস্ট্যান্টা বা দানিয়ুব চ্যানেল এবং কৃষ্ণসাগরের মধ্যকার দুটি রুটে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করেছে, যার ট্রানজিট সময় প্রায় দেড় দিন। চলমান যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ক্লজের আইনি স্বীকৃতি, সঠিকভাবে নথিভুক্তকরণ এবং কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতাসাপেক্ষে বুকিং নেওয়া হবে।