Home Blog Page 45

বাংলাদেশ ফল-সবজি রপ্তানিতে নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চায়

ফল ও সবজি রপ্তানিতে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এর আগে নেদারল্যান্ডসের পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডাম অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (ভিভিডি) এমপি ফিম ভ্যান স্ট্রিয়েনের নেতৃত্বাধীন প্রতনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নেদারল্যান্ডস সহায়তা করে আসছে। বাংলাদেশ বন্যায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যা ও উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণে নেদারল্যান্ডস আমাদের অনেক সহায়তা করছে। বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের বিশেষজ্ঞরা আমাদের সহায়তা করেছেন। যে কারণে বাংলাদেশের বন্যা অনেক নিয়ন্ত্রিত। আগের মতো বন্যা হয় না।’

ডেল্টা প্ল্যান তৈরিতে ডাচ বিশেষজ্ঞদের সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমরা ডেলটা প্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা। এ ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার পরিকল্পনায়ও আমরা ডেলটা প্ল্যান অনুসরণ করব। তাতে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা লাগবে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্য রপ্তানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ নেদারল্যান্ডস। তারাই সবচেয়ে বেশি সবজি রপ্তানি করছে। আমরা বাংলাদেশের ফল ও সবজি রপ্তানির চেষ্টা করছি। আমরা নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চাই। গ্রিনহাউসে তারা খুবই সফল। অনেক ফসল তারা গ্রিনহাউসে উৎপাদন করে থাকে। এ ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস সরকার আমাদের সহায়তা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আনারস ও কলার মতো বিভিন্ন ফল ও সবজি বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে তারা তা বিদেশে রপ্তানি করে। বাংলাদেশ থেকেও যদি তারা আম-আনারস নিয়ে তা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করে, তাহলে আমাদের জন্য সেটি একটি ভালো বিষয় হবে। কারণ, ইউরোপের বাজারে তো আমরা ঢুকতে পারি না। দুটি কারণে আমরা ইউরোপের বাজারে ঢুকতে পারছি না। প্রথমটি হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা।

৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি ফেব্রুয়ারিতে

দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: বন্দর বার্তা

সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

পণ্য রপ্তানির এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশ করেছে। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩ হাজার ৭০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩২ কোটি টাকার সমান। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তার বিপরীতে পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি কমে গেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ৮৫৯ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়। প্রবৃদ্ধিও ছিল ২৫ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। অক্টোবরে তা আরও ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে যায়। নভেম্বরে আবার ইতিবাচক ধারায় ফেরে রপ্তানি। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫০৯, ৫৩৭ ও ৫১৪ কোটি ডলার। তার মধ্যে ডিসেম্বরে যে পণ্য রপ্তানি হয়, তা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৩ হাজার ১৩৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৮৩ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেশি।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ কনটেইনারবাহী জাহাজ বুঝে পেয়েছে এমএসসি

৬০০ মিলিয়ন ডলারে চীনা জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুডং-ঝংহুয়ার সাথে চারটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে মেডিটেরিয়ান শিপিং কোম্পানি (এমএসসি)। সম্প্রতি চুক্তির প্রথম জাহাজ এমএসসি টেসা হস্তান্তর করা হয়েছে।

২৪,১১৬ টিইইউ এর এমএসসি টেসা বিশ্বের সর্ববৃহৎ কনটেইনারবাহী জাহাজ। ১৩১২ ফুট লম্বা ডিএনভি শ্রেণিভুক্ত জাহাজটি ২৫ স্তর পর্যন্ত কনটেইনার বহন করতে সক্ষম। গতানুগতিক জ্বালানিতে পরিচালিত হলেও এয়ার লুব্রিকেশনের ব্যবহার এমএসসি টেসার জ্বালানি খরচ এবং কার্বন নির্গমন ৩-৪% হ্রাস করে।

ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ডলার

ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় মাসে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

যদিও জানুয়ারির তুলনায় গত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

২০২০-২১ অর্থবছরে সৃষ্ট বৈশ্বিক দুর্যোগের মধ্যে প্রবাসীরা রেকর্ড ২ হাজার ৪৭৭ কোটি বা ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। এর পর থেকে সেই প্রবাহে ভাটা পড়ে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে সেই অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুর দিকে রেমিট্যন্স প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী সময়ে সেটি ঝিমিয়ে পড়ে। তবে জানুয়ারিতে এসে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে।

২০২৩ সাল হবে সমুদ্র পরিবহন খাতের বৈপরীত্যে ভরা বছর: প্রতিবেদন

ভূরাজনৈতিক দোলাচল, মূল্যস্ফীতি এবং ডিকার্বনাইজেশনের চলমান প্রচেষ্টা গত বছর সমুদ্র পরিবহন খাতের বিভিন্ন পক্ষকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। চলতি বছরও এ ধারা অব্যাহত থাকায় পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার, ভোক্তাদের ক্রয়ের ধরন পরিবর্তন এবং ব্যবসায়ীদের শিপিং খরচ কমানোসহ বেশকিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে সমুদ্র পরিবহন খাত। বিআরএস এবং শিপস্টেশনের পৃথক দুটি রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি শিপিং এবং শিপবিল্ডিং মার্কেটের ওপর বার্ষিক পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে বিআরএস। পর্যালোচনা অনুযায়ী, সমুদ্র পরিবহন খাতের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বৈপরীত্য থাকলেও ভারী জ্বালানি তেল বা হেভি ফুয়েল অয়েলের (এইচএফও) ব্যবহার বন্ধে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছবে। ‘নোংরা’ জ্বালানি হিসেবে পরিচিত এইচএফও পোড়ালে সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ভারী ধাতু, ব্ল্যাক কার্বনের মতো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান নির্গত হয়। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কঠোর পরিবেশনীতি না থাকায় সমুদ্র পরিবহন খাতে সহজলভ্য ও সস্তা জ্বালানি হিসেবে এইচএফও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

২০৩০ (৪০%) এবং ২০৫০ (৭০%) সাল নাগাদ কার্বনের তীব্রতা কমানোর লক্ষ্যে খাতসংশ্লিষ্ট সবাই বর্তমানে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি এবং প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি বছর এইচএফও এর ব্যবহার আগের চেয়ে কমবে এবং বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলএনজি বা মিথানল ব্যবহার করা হবে। সেসঙ্গে নতুন জাহাজগুলোতে (২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী এক হাজারের বেশি জাহাজ) পরিবেশবান্ধব ডুয়েল ফুয়েল সিস্টেম সংযুক্ত থাকবে। বিআরএসের মতে, কঠোর পরিবেশ নীতি প্রণয়ন এবং কার্বন ট্যাক্স চালু করলে সমুদ্র পরিবহনে কার্বনের ব্যবহার দ্রুত হ্রাস পাবে।

সম্প্রতি ‘প্রোটেক্ট ইউর গ্রোথ স্ট্র্যাটেজি : দ্য ২০২৩ কনজিউমার অ্যান্ড মার্চেন্ট বেঞ্চমার্ক রিপোর্ট’ প্রকাশ করে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউড-বেসড ই-কমার্স শিপিং সলিউশন শিপস্টেশন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোক্তারা মূল্য সচেতন হওয়ায় চলতি বছরের ক্রয় সিদ্ধান্তে সেটা ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি বছর বিক্রয় বাবদ ২১৯ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করা গেলেও বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে না।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬৬% মার্কিন ভোক্তার মতে, মূল্যস্ফীতির কারণে তারা কেনাকাটার ধরনে পরিবর্তন আনবে। এছাড়া অনলাইননির্ভর কেনাকাটা, ফ্রি হোম ডেলিভারি, ফ্রি রিটার্ন পলিসির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন ভোক্তারা। অন্যদিকে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে ৭২% মার্কিন ব্যবসায়ী ব্যয় কমানোর এবং কাজের গতি বাড়াতে ৩০% ব্যবসায়ী গুদাম অটোমেশনের পরিকল্পনা করছেন।

রপ্তানি আয় নগদায়নে ডলারের দাম বাড়ল আরও ১ টাকা

রপ্তানি আয় নগদায়নে ডলারের দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে রপ্তানিকারকেরা রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম পাবেন ১০৪ টাকা। নতুন এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এতদিন রপ্তানিকারকেরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পেতেন ১০৩ টাকা। নতুন করে তাদের জন্য ডলারের দাম ১ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) সম্মিলিতভাবে রপ্তানিকারকদের জন্য ডলারের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এবিবি ও বাফেদার চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, এখন থেকে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকদের জন্য প্রতি ডলারের দাম হবে ১০৪ টাকা। ১০৩ টাকার পরিবর্তে রপ্তানিকারকেরা প্রতি ডলারের বিপরীতে ১০৪ টাকা পাবেন। অবশ্য কোনো রপ্তানিকারক যদি জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় ফেব্রুয়ারিতে দেশে নিয়ে এসে থাকেন, তখন তাঁকে প্রতি ডলারের জন্য ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা দেওয়া হতো। অর্থাৎ দ্রুত রপ্তানি আয় দেশে আনলে সে ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকেরা ৫০ পয়সা বাড়তি পেতেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়তি এ দাম কার্যকর ছিল।

এদিকে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম আগের মতোই ১০৭ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে আমদানি দায় মেটানোর জন্য ডলারের দাম কত হবে, সেটা বাফেদার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। গত জানুয়ারিতে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে ডলারের দাম ১০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তার আগের মাসে রপ্তানি আয়ে প্রতি ডলারের দাম ছিল ১০১ টাকা।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর।

উৎপাদন ব্যবস্থা ও পণ্য সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী উদ্ভূত বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদন ব্যবস্থা এবং পণ্য সরবরাহ অক্ষুন্ন রাখতে হবে।

উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী দেশের এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করেন।
বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এনইসি সভায় বর্তমান অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) অনুমোদিত হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় এনইসি সম্মেলন কক্ষ অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ড. আলম বলেন, সরকার চাহিদার দিকটা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, কিন্তু তারপরও উৎপাদনের দিকটা উন্নত করা দরকার।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেছেন, আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে, এখন বোরো উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। দেশের অগ্রযাত্রায় অনেক সমস্যা আসতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী একাগ্রতার সাথে তা মোকাবিলা করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং সংস্থাগুলোকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় অর্থ ব্যয়ে কঠোরতা অনুসরণ করার নির্দেশনা পুর্নব্যক্ত করেন এবং আরও বেশি পরিকল্পিত উপায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলো সমাপ্তির পথে এবং যে প্রকল্পগুলো অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে সেগুলো দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া, তিনি যেসব প্রকল্প এই মুহূর্তে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় বা যেসব প্রকল্প বিলম্বিত হলেও এর ব্যয়ের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না, সেগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন।

অর্থবছরের সাতমাসে ইউরোপে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৫ শতাংশ

দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: বন্দর বার্তা

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাতমাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১৫ দশমিক ০৪ শতাংশ বেড়েছে। পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের ১১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি বেড়ে এবার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ইউরোপের বৃহত্তম বাজার জার্মানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শূণ্য দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি পোষশক আমদানি করেছে, যার পরিমাণ ৪ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার। স্পেন এবং ফ্রান্সে রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্যান্য প্রধান ইইউভূক্ত দেশ, যেমন ইতালি, অষ্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেনে রপ্তানি যথাক্রমে ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ৩২ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, একই সময়ে পোল্যান্ডে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় রপ্তানিতে ১৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২২-২৩ সালের জুলাই-জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময় অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

অ্যান্টার্কটিকে ভাসমান বরফ রেকর্ড পরিমাণ কমেছে

অ্যান্টার্কটিকে সমুদ্রপৃষ্ঠে ভাসমান বরফের আচ্ছাদন রেকর্ড পরিমাণ কমেছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে অ্যান্টার্কটিক সাগরে ভাসমান বরফের পরিমাণ ছিল সাড়ে আট লাখ বর্গমাইল, যা চল্লিশ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন।

জার্মানির আলফ্রেড ওয়েগনার ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ক্রিস্টিয়ান হাস জানান, গ্রীষ্মকাল এখনো পুরোপুরি অতিবাহিত না হওয়ায় আগামী কিছুদিন বরফ গলা অব্যাহত থাকবে। এমতাবস্থায় এই রেকর্ড কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা এখনই বলা মুশকিল। বিগত ছয় বছরে অ্যান্টার্কটিকের বরফ উল্লেখযোগ্য হারে গলেছে। অন্যদিকে এর আগের পঁয়ত্রিশ বছরে এই অঞ্চলের ভাসমান বরফের পরিমাণ তেমন একটা কমেনি বললেই চলে।

সমুদ্রে ভেসে থাকা বরফ গলে গেলে পানির স্তরে তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। তবে মৌসুমি এসব বরফ অ্যান্টার্কটিকের বিশাল বিশাল হিমবাহগুলোর ওপর একটা সুরক্ষা আচ্ছাদন প্রদান করে। তাই সুরক্ষা স্তর গলে গেলে হিমবাহগুলো উত্তাল সাগরের স্রোত এবং তীব্র ঢেউয়ের মুখোমুখি হয়। যার ফলে অতি দ্রুত হিমবাহগুলো ভেঙে যায় বা ক্ষয় হয়ে যায়।

পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকের উপক‚লরেখা বরাবর বিস্তীর্ণ এলাকার বরফ সম্পূর্ণ গলে গেছে। অত্র এলাকার বেলিংশাউসেন সাগর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বরফমুক্ত অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে অ্যান্টার্কটিক নিয়ে গবেষণা করছেন প্রফেসর কারস্টেন গোহল। তিনি বলেন, ‘আয়তনে জার্মানির সমান বড় একটি কন্টিনেন্টাল শেলফ বর্তমানে একবারে বরফশূন্য অবস্থায় রয়েছে। এই অঞ্চলে এত তীব্র বরফশূন্যতা এর আগে কখনো পরিলক্ষিত হয়নি।’ গবেষকদের মতে, অ্যান্টার্কটিকের পশ্চিম এবং পূর্ব উপকূলে বায়ুর তাপমাত্রা গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় এবং দক্ষিণ মহাসাগরের গভীর জলে সৃষ্ট চক্রাকার ঘূর্ণির কারণে ভাসমান বরফের স্তরগুলো অতি দ্রুত গলে গেছে।

পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা চেয়েছে বিজিএমইএ

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের আরও টেকসই উন্নয়নে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা চেয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সোমবার সফররত নেদারল্যান্ডস পার্লামেন্টের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে বৈঠকে এ সহায়তা চান সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি নেদারল্যান্ডসের সফররত পার্লামেন্ট সদস্যদের মাধ্যমে দেশটির সরকারকে বাংলাদেশের এলডিসিতে উত্তরণ নির্বিঘ্ন রাখতে জিএসপির (ইবিএ) ট্রানজিশন পিরিয়ড তিন বছর থেকে ছয় বছরে সম্প্রসারণের বিষয়টি বিবেচনা করতেও অনুরোধ জানান।

বিজিএমইএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন, সার্কুলার ফ্যাশন, রিসাইক্লিং, জ্বালানি দক্ষতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে শিল্পকে সহায়তার জন্য সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় পোশাক শিল্পের উন্নতি ও শ্রমিকদের কল্যাণে একসাথে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে দুই পক্ষ।

নেদারল্যান্ডসের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন পিম ভ্যান স্ট্রিয়েন, আলেকজান্ডার হ্যামেলবার্গ, মোস্তফা আমহাউচ, রেমন্ড ডি রুন এবং স্ট্রিয়েনেকে ভ্যান ডার গ্রাফ। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, ডেপুটি হেড অব মিশন থিজস ওয়াউডস্ট্রা এবং দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি বাস ব্লাউ। বিজিএমইএর পক্ষে সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মিরান আলী।

এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি প্রতিনিধি দলটির সদস্যদের পোশাক শিল্পে নিরাপদ কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা এবং সামাজিক ও পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স প্রতিপালনে শিল্পের অগ্রগতি বিষয়ে সার্বিক বর্ণনা দেন।

তিনি নেদারল্যান্ডসের সংসদ সদস্যদের সামনে বিজিএমইএর টেকসই কৌশলগত রূপকল্প-২০৩০ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, এ রূপকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি টেকসই ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।

বিজিএমইএ নতুন প্রত্যয়ের রূপকল্প অনুসারে উদ্ভাবন, ডিজিটালাইজেশন, পণ্য ও বাজারের বৈচিত্র্যকরণ এবং আরও বেশি উৎপাদনশীল হওয়ার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হতে চেষ্টা করছে বলে জানান ফারুক হাসান। তিনি বলেন, এর পাশাপাশি সামাজিক ও পরিবেশগত বাধ্যবাধকতাগুলোও পূরণ করে চলেছে।

টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ওয়ান স্টপ রিসোর্স সেন্টার ও নলেজ হাব নির্মাণ এবং টেক্সটাইল টেকনোলজি বিজনেস সেন্টারকে (টিটিবিসি) সহায়তা করার জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারকে ধন্যবাদ জানান বিজিএমইএ সভাপতি।