Home Blog Page 5

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জিয়ান–মার্ক শেরে শারলেট গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন। চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। বন্দর চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূতকে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন ও অগ্রগতিসূচক বিশেষ করে জাহাজের ওয়েটিং টাইম, টার্ন এরাউন্ড টাইম, কন্টেনার ডুয়েল টাইম হ্রাস, ইয়ার্ড ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, ডিজিটাইলাইজেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করেন।

রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান পরিচালনাগত সক্ষমতা, দক্ষতা, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বন্দরের সামপ্রতিক সাফল্য নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাছাড়া তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বাংলাদেশের পণ্য সামগ্রী রপ্তানিসহ অন্যান্য স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়। সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সরেজমিনে পরির্দশন করেন। 

কানাডার হাই কমিশনারের চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাই কমিশনার অজিত সিং চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর পর্ষদ সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ’র সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

অজিত সিং চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান পরিচালনাগত ক্ষমতা ও দক্ষতা, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাছাড়া তিনি বন্দরের উন্নয়নে ডিজিটালাইজেশন, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে কানাডার পণ্য সামগ্রী রপ্তানীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় দূতাবাসের সিনিয়র ট্রেড কমিশনার ডেব্রা বইসি ও পলিটিক্যাল কাউন্সেলর মারকু ডেভিয়েস হাইকমিশনারের সাথে ছিলেন।

কানাডার হাই কমিশনারকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়। সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সরেজমিনে পরির্দশন করেন এবং বন্দরের সার্বিক অগ্রগতি ও কর্মদক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এই সফর আগামীতে বাংলাদেশ-কানাডার সম্পর্ককে বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে দু’দেশের প্রতিনিধিদল আশা ব্যক্ত করেন। সৌজন্য সাক্ষাতের সময় বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

১১ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২ হাজার ২৪ কোটি টাকা

চলতি অক্টোবরের ১১ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশের মুদ্রায় ১২ হাজার ২৪ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২১.৭৫ টাকা)।

রোববার (১২ অক্টোবর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অক্টোবরেও প্রবাসী আয়ের উচ্চ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

অক্টোবরের ১১ দিনে প্রতিদিন প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৭২৭ ডলার। আগের বছরের অক্টোবরে প্রতিদিন প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ডলার। আর আগের মাস সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ৮ কোটি ৯৫ লাখ ২৯ হাজার ৩৩৩ মার্কিন ডলার।

প্রবাসীদের পাঠানো ১১ দিনের প্রবাসী আয়ের তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যেমে এসেছে ২০ কোটি ১১ লাখ ২০ হাজার ডলার; রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ৭০ হাজার ডরার; বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৮ কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর বাংলাদেশে ব্যবসারত বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ৪০ হাজার ডলার।

ডিসেম্বরের মধ্যে তিন টার্মিনালে অপারেটর নিয়োগ: নৌসচিব

চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া ও নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনালে ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘এসব টার্মিনালে ২৫ থেকে ৩০ বছরের জন্য অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হবে। আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি হবে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এ ছাড়া আর উপায় নেই বলে জানান তিনি। নৌসচিব জানান, বিদেশিদের সঙ্গে টার্মিনালগুলো পরিচালনা যে চুক্তি হবে, তা প্রকাশ করা হবে ওয়েবসাইটে।

রোববার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘সমুদ্রগামী জাহাজশিল্পের বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন তিনি। ইআরএফের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি দৌলত আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে নৌপরিবহনসচিব মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও যেটা নেই, আমরা তা করছি, বন্দরের মধ্যে কনটেইনার খুলে পণ্য ছাড় করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩টি গেট আছে, এর মধ্যে স্ক্যানিং মেশিন আছে মাত্র ৬টি। তার মধ্যে আবার ৩-৪টি নষ্ট থাকে। এভাবে বন্দর চলতে পারে না। এ জন্য আমরা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের চেষ্টা করছি। এটা করতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের ৫ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন টিইইউ কনটেইনার ওঠানো–নামানোর চ্যালেঞ্জ সামাল দিতে হবে। তাই বিদেশি অপারেটর নিয়োগ ছাড়া উপায় নেই। ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশেই এমন বিদেশি অপারেটর আছে।

রিজার্ভ প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার

চলতি মাসের প্রথম ৮ দিনে দেশে ৮০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার ১০টি ব্যাংক থেকে মোট ১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলারে (৩১.৯৪ বিলিয়ন)। অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, এই রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে গণমাধ্যমগুলো এত তথ্য দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার (৫ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ওই দিন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। ফলে ৫ অক্টোবরের তুলনায় গত সপ্তাহ শেষে রিজার্ভ আরও বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪টি নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২ বিলিয়নের বেশি ডলার কিনেছে। নিলামে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা, যা মাল্টিপল প্রাইস নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

এদিকে এক বছর ধরে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসেও প্রবাসীরা ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের মাসের চেয়ে সাড়ে ১৬ কোটি ডলার বেশি। এ ছাড়া গত মার্চে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড হয়। ওই মাসে ৩২৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল, যা এখন পর্যন্ত কোনো একক মাসে দেশে আসা সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এরপর প্রবাসী আয় এক মাসে আর ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি। প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, অর্থ পাচার কমে আসায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা কমে গেছে। এ ছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে। এ জন্য বৈধ পথে আয় আসা বেড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত

বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন (ডনকাস্টার) চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন।

বুধবার (৮ অক্টোবর) তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে আসেন। এ সময় ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।

এ সময় দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ব্যারোনেস রোজি চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান পরিচালনাগত ক্ষমতা ও দক্ষতা, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সরাসরি জাহাজ চলাচল এবং সামুদ্রিক শিক্ষার বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।

যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিদলকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর একটি প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করা হয়।

সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সরেজমিনে ঘুরে দেখেন এবং বন্দরের সার্বিক অগ্রগতি ও কর্মদক্ষতার প্রশংসা করেন।

এই সফর আগামীতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের সম্পর্ককে বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।

বর্ধিত মাশুল আদায় শুরু হবে ১৫ অক্টোবর থেকে

নৌপরিবহন উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে এক মাস স্থগিত রাখার পর ১৫ অক্টোবর রাত থেকে বিভিন্ন সেবা খাতে বাড়ানো ট্যারিফ (মাশুল) আদায় করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থ ও হিসাবরক্ষণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা মো. আবদুস শাকুরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর রাত ১২টার পর অর্থ্যাৎ ১৫ অক্টোবরের শুরু থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরে আসা সব জাহাজ, কনটেইনার ও কার্গো বিল নতুন রেট অনুযায়ী নেওয়া হবে। একইভাবে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিসহ সব বন্দর ব্যবহারকারী বর্ধিত হারে মাশুল পরিশোধ করবেন।

তালিকাভুক্ত সব শিপিং এজেন্টকে তফশিলি ব্যাংকে তাদের হিসাব নম্বরে বর্ধিত হারে যথাযথ পরিমাণ অর্থের সংস্থান রেখে আসা জাহাজের ছাড়পত্র (এনওসি) নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি প্রজ্ঞাপন মতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২৩টি খাতে বর্ধিত হারে মাশুল আদায় কার্যকর ঘোষণা করে। ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এক কর্মশালায় নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এম সাখাওয়াত হোসেনের উপস্থিতিতে বন্দর ব্যবহারকারীরা এ বিষয়ে আপত্তি তুলে ধরলে উপদেষ্টা বর্ধিত ট্যারিফ (মাশুল) আদায় এক মাস পেছানোর সিদ্ধান্ত জানান।

চট্টগ্রাম বন্দরে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ১২% প্রবৃদ্ধি

বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণচালিকা চট্টগ্রাম বন্দর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বমোট ৯ লাখ ২৭ হাজার ৭১৩ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ১৮৫ টিইইউস বেশি। এর মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ। একই সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ হাজার ৩১টি, যা আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও ৯ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

বন্দরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য টার্মিনাল এনসিটি, যা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) পরিচালিত, সেখানে বিগত তিন মাসে মোট ৩ মোট ৪২ লাখ ৬৪৯ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ লাখ ৭৫৪ টিইইউস বেশি, অর্থাৎ ১ ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। এনসিটিতে এই সময়ে ১৭৮টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬টি বেশি এবং প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (৯ মাসে) চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫০ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ২১ হাজার ৬২৫ টিইইউস বেশি। প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। একই সময়ে মোট ১০ কোটি ২৭ লাখ ৪ হাজার ২৫৯ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩ হাজার ১৬১টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭০ এবং ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবহন ধর্মঘট ও কাস্টমসের কর্মবিরতি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বন্দরের অপারেশনাল সক্ষমতা আরও বেড়েছে।

রপ্তানি কমলেও ইতিবাচক ধারায় রয়েছে সামগ্রিক রপ্তানি

টানা দুই মাস ধরে দেশের পণ্য রপ্তানি কমছে। গত আগস্টে রপ্তানি কমেছিল প্রায় ৩ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১। তারপরও চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রোববার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ১ হাজার ২৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।

গত মাসে ৩৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ৩৮০ কোটি ডলারের পণ্য। সেই হিসাবে গত মাসে রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত মাসে তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি কমেছে। অন্যদিকে হিমায়িত খাদ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগের প্রস্তাব বার্থ অপারেটরদের

চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে পুরোনো টার্মিনাল ‘জেনারেল কার্গো বার্থ’ বা জিসিবিতে বিনিয়োগ করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিচালনা করতে চায় দেশি বার্থ অপারেটররা। এ জন্য বার্থ অপারেটরদের সংগঠন বার্থ অপারেটরস, শিপহ্যান্ডলিং অপারেটরস অ্যান্ড টার্মিনাল অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন গত সোমবার একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী এই প্রস্তাবনা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের হাতে তুলে দেন। এ সময় বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থ বা জিসিবির জেটি পরিচালনাকারী বার্থ অপারেটররা উপস্থিত ছিলেন।

বার্থ অপারেটরদের পক্ষে প্রস্তাবনার প্রাথমিক সমীক্ষা প্রণয়ন করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিডিআরএস লিমিটেড। এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বন্দরের সবচেয়ে পুরোনো টার্মিনাল হলো জিসিবি। পুরোনো এই টার্মিনালের ৬টি নির্মাণ হয় ১৯৫৪ সালে। বাকি ৬টি পুনর্নির্মাণ হয় ১৯৭৯ সালে। ধাপে ধাপে জেটিগুলো পুনর্নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি যুক্ত করে ২৫–৩০ বছর মেয়াদে পরিচালনা করতে চায় সংগঠনটি।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বে দীর্ঘ মেয়াদে টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করবে বার্থ অপারেটরদের সংগঠন বোটসোয়া। এই কনসোর্টিয়ামে দেশি–বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে টার্মিনালের উন্নয়নে অর্থায়ন করা হবে। প্রাথমিকভাবে টার্মিনালটির উন্নয়নে ৬২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৭ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হতে পারে।