Home Blog Page 51

বাংলাদেশ থেকে আম, আলু ও ফুলকপি নিতে চায় রাশিয়া

বাংলাদেশ থেকে রাশিয়া আলু, আম ও ফুলকপি নিতে চায় বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। রবিবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভি. মান্টিটস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী একথা বলেন।

রাশিয়ায় এ বছরই আলু রপ্তানি পুনরায় শুরু হবে জানালেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে দেশ থেকে অনেক আলু রপ্তানি হতো। সম্প্রতি রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় পুনরায় আলু রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছরই রপ্তানি শুরু হবে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের আম ও ফুলকপি অত্যন্ত সুস্বাদু ও উন্নত মানের। রাশিয়ায় এগুলো রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আম ও ফুলকপি দ্রুত রাশিয়ায় নিতে চাই।’

সাক্ষাৎকালে রাশিয়া থেকে ডিএপি ও পটাশিয়াম সার আনতে ‘সমঝোতা স্মারক’ স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা হয়। কৃষিমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া থেকে আমরা পটাশিয়াম আমদানি করে থাকি। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি এমওইউ বিদ্যমান রয়েছে, এটিকে নবায়ন করা হবে। একইসঙ্গে, রাশিয়া থেকে আমরা ডিএপি সার আনতে চাই। এ বিষয়েও একটি ‘সমঝোতা স্মারক’ (এমওইউ) স্বাক্ষর হবে শিগগিরই।

উল্লেখ্য, আলুতে ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

পাঁচদিন পর আখাউড়া বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি শুরু হচ্ছে

আখাউড়া স্থল বন্দর । ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ আমদানি বন্ধ ঘোষণার পাঁচদিন পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারতীয় ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)। আজ সোমবার থেকে আবারো এ বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরায় মাছ রপ্তানি শুরু হচ্ছে। এতে করে পুনরায় এ বন্দরে কর্মচঞ্চলতা ফিরে আসবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থলবন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে এফএসএসএআই আগরতলা বন্দর দিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মাছ, শুঁটকি ও হিমায়িত পণ্য আমদানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এর পরই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীসহ রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নড়েচড়ে বসে। তারা কেন্দ্রীয় সরকারে কাছে চিঠির মাধ্যমে এ বন্দরকে নিষেধাজ্ঞার আওতাধীনের বাইরে রাখার আহ্বান জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র সরকার ও এফএসএসএআই এ বন্দরের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যটি বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া মাছের ওপর নির্ভরশীল। মাছ রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় এ রাজ্যের মানুষ সমস্যায় পড়বে বলে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলে। এর পরই এ বন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এতে করে মাছ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী এবং শ্রমিকরা তাদের কর্মসংস্থান ফিরে পাবে।

রাজস্ব আদায়ে সিস্টেম লস কমাতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভূমিকা অনেক। সফলভাবে শুল্ক ও ভ্যাট সংগ্রহ করার কারণেই সরকার রাজস্ব আদায়ে সফলতা পেয়েছে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সিস্টেম লস কমাতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্মার্ট কর প্রশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুইদিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩ উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত ‘জাতীয় উন্নয়নে ভ্যাটের ভূমিকা: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে দক্ষতা ও সততার সঙ্গে কাজ করে রাজস্ব আদায় আরও বাড়াতে হবে এনবিআরকে। নিজের সক্ষমতার কারণেই বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করে নিজ অর্থায়নে পদ্ম সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এতে দেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালে সফলভাবে এসডিজি অর্জন এবং ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করবে। সর্বপরি ২১০০ সালে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায়ের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে হবে বেশি করে। দেশের বাণিজ্য উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করতে হবে, এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয় থাকতে হবে। ট্যাক্স আদায়ের পরিধি বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। পেশাদারিত্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এনবিআরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। এতে রাজস্ব আদায় বাড়বে কয়েকগুণ, একই সঙ্গে দেশের সক্ষমতা বাড়বে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে আলোচ্য বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কমিশনার (ভাট অনুবিভাগ) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান ও কাস্টম এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার শওকত আলী সাদী।

ইউক্রেনে আটকে পড়া নাবিকদের সরিয়ে নিতে জাতিসংঘের কাছে শিপিং কোম্পানিগুলোর আবেদন

ইউক্রেনে আটকে পড়া জাহাজ এবং নাবিকদের দ্রুত সেখান থেকে সরিযে নিতে জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছে ত্রিশটির অধিক মেরিটাইম কোম্পানি এবং অর্গানাইজেশন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বরাবর লেখা খোলা চিঠিতে এ আহ্বান জানান তারা।

রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বের জেরে এক বছর ধরে কৃষ্ণসাগর এবং আজোভ সাগরে মোট ৩৩১ জন নাবিক এবং ৬২টি জাহাজ আটকা পড়ে আছে। খোলা চিঠিতে শিপিং কোম্পানিগুলো জানায়, ’ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক বছর হতে চলেছে, সময়জুড়ে ৩৩১ জন নাবিক কৃষ্ণসাগর এবং আজোভ সাগরে আটকা পড়ে আছে। ক‚টনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জরুরিভিত্তিতে সমস্যাটির সমাধান করার জন্য আমরা জাতিসংঘের কাছে আবেদন করছি। সেখানে আটকে পড়া সমস্ত জাহাজ এবং নাবিকদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ১২ মাস ধরে তারা এমন একটা সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে যেটা নিয়ন্ত্রণ করা তাদের ক্ষমতার বাইরে। পেশাদারি দায়িত্ব পালন করতে তাদের ঝুঁকির মুখে পড়েছে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

শিপিং কোম্পানিগুলো আরও জানায়, নাবিক এবং জাহাজগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হবে। তবে যত প্রতিবন্ধকতাই থাকুক না কেন, সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত। এই সমস্যা সমাধানে বিলম্ব করা মানে নাবিকদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলা, যা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য, বাহামাস শিপওনারস অ্যাসোসিয়েশন, বিমকো, সাইপ্রাস শিপিং চেম্বার, ডেনিশ শিপিং, আইসিএস, আইসিএমএ, আইএমইসি, আইএফএসএমএ, আইএমএইচএ, সেইলরস সোসাইটিসহ মোট বত্রিশটি শিপিং কোম্পানি চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেছে।

ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে সাত মাসে ৫০০ কোটি টাকার চাল আমদানি

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৫০০ কোটি টাকার বেশি চাল আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। আমদানীকৃত চালের মধ্যে রয়েছে মিনিকেট, নাজিরশাইল, স্বর্ণা, রত্না ও জামাইবাবু।

ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন, দেশীয় বাজারে চালের চাহিদা বেশি থাকায় আমদানি বেড়েছে। এলসি ও ডলার সংকট না থাকলে আমদানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা ছিল।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৪০৫ টন, যার আমদানি মূল্য ৫০১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩১ কোটি ৯ লাখ টাকা।

অন্যদিকে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এ বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ৮৫ হাজার ৩১২ টন চাল, যার আমদানি মূল্য ছিল ২৯৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আমদানীকৃত এসব চাল থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। পরিমাণের দিক থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে চাল আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৩৯ হাজার ৯৩ টন।

গঙ্গা বিলাস দুই দেশের বন্ধুত্বকে নেবে অনন্য উচ্চতায় : নৌপ্রতিমন্ত্রী

মোংলা বন্দরে গতকাল ভারতীয় প্রমোদতরীর পর্যটকদের স্বাগত জানান নৌপ্রতিমন্ত্রী ও অতিথিরা

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে ভারতীয় মালিকানাধীন প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস। শনিবার বেলা ২টায় মোংলা বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে ভিড়েছে বিলাসবহুল পাঁচ তারকা মানের নৌযানটি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা জাহাজের পর্যটকদের ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। পরে আগত অতিথিদের সম্মানে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন খালিদ মাহামুদ চৌধুরী, প্রণয় ভার্মা ও রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী। পরে অতিথিদের সম্মানে গঙ্গা বিলাসের আদলে তৈরি করা বিশালাকৃতির এক কেক কাটেন প্রতিমন্ত্রী।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ফুলের শুভেচ্ছা, দেশীয় ফল ও পিঠায় আপ্যায়ন এবং কেক কাটার অনুষ্ঠান নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন বিদেশী পর্যটকরা। অভিভূত হয়েছেন সুইডেন, ভারত ও জার্মানির পর্যটকরা। জাহাজটি ভারতের পাঁচটি রাজ্য এবং গঙ্গা, যমুনা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ ২৭টি নদ-নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশে ১৪ দিন থাকার কথা রয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশের বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করবেন পর্যটকরা। পরে নৌপথে বরিশাল হয়ে ঢাকার মেঘনা ঘাটে অবস্থান করে সোনারগাঁ ও ঢাকায় ভ্রমণ করবেন তারা।

খালিদ মাহামুদ চৌধুরী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব অনেক পুরনো। এটি একটি বিশ্বস্ত বন্ধুত্বের নিদর্শন। গঙ্গা বিলাসের এ ভ্রমণ দুই দেশের বন্ধুত্বকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি ছড়িয়ে পড়বে পশ্চিমা দেশগুলোয়। কারণ এ প্রমোদতরীতে যারা রয়েছেন তারা সবাই বিদেশী। এছাড়া এ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্বের গল্প ছড়িয়ে পড়বে দেশের প্রতিটি এলাকায়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এ নৌ ভ্রমণ।

রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, সম্প্রতি মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।

প্রণয় ভার্মা বলেন, গঙ্গা বিলাস রিভার ক্রুজের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের জনগণকে জানার এক অনন্য প্রচেষ্টা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দেখা যাবে। এ স্থানগুলোকে বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে নিয়ে আসবে এবং পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয় অর্থনীতিকে উপকৃত করবে। তবে এটা শুধু দুই দেশের পর্যটনের সম্ভাবনা উন্মোচন করার উপায় নয়, মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের একটি নতুন উপায়ও। এছাড়া যে নদীগুলো ঐতিহ্যগতভাবে ভারত ও বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে গঙ্গা বিলাস সেই সংযোগকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবে।’

প্রমোদতরীটি ১৩ জানুয়ারি ভারতের বেনারস রাজ্য থেকে ছেড়ে আসে। ৫১ দিনে সফর শেষ করবে এটি।

রূপসা রেলসেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে: প্রণয় ভার্মা

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা

রূপসা রেলসেতু ও খুলনা-মোংলা রেললাইন বাংলাদেশ-ভারত উন্নয়ন অংশীদারত্বের উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। শুক্রবার বিকালে খুলনার রূপসা নদীতে নির্মিত রেলসেতু পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রণয় ভার্মা বলেন, রূপসা রেলসেতু ও খুলনা-মোংলা রেললাইন দুদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আশা করছি, এ রেললাইন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

খুলনা বিভাগে দুই দিনব্যাপী এ সফরের প্রথম দিন প্রণয় ভার্মা রূপসা নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতুর স্থলে পৌঁছান। সেখানে তিনি কিছু সময় খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে তিনি রেলসেতু পরিদর্শন করেন।

১৬৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত রূপসা ব্রিজ শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্য ও কানেকটিভিটিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। তিনি বলেন, মোংলা বন্দরে যেসব জাহাজ আসে খুলনা-মোংলা রেললাইনের মাধ্যমে সেসব জাহাজের মালপত্র দ্রুত দেশের সমস্ত জায়গায় সরবরাহ করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। একইভাবে মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী। ভারত এরই মধ্যে বাংলাদেশকে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের এলওসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

২০২২ সালের প্রতি প্রান্তিকে কনটেইনারের শিডিউল রিলায়েবিলিটি বৃদ্ধি পেয়েছে।

মেরিটাইম ডেটা অ্যানালিসিস কোম্পানি সি ইন্টেলিজেন্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ এর জানুয়ারিতে গ্লোবাল শিডিউল রিলায়েবিলিটি ছিল ৩১.৮ শতাংশ যা বছর শেষে ৫৬.৬ শতাংশে উন্নীত হয়।
২০২২ সালে বছরজুড়ে দেরিতে জাহাজ পৌঁছানোর প্রবণতা ধারাবাহিকভাবে কমেছে। গত বছর শুরুতে জাহাজ বন্দরে পৌঁছতে মাসে গড়ে আটদিন দেরি হতো, কমতে কমতে ডিসেম্বরে সেটা (মাসিক গড় বিলম্ব) ৫.৪৩ দিনে নেমে আসে।

অন্যদিকে ৬৩.৩ শতাংশ শিডিউল রিলায়েবিলিটি নিয়ে ২০২২ সালের নির্ভরযোগ্য ১৪টি ক্যারিয়ার কোম্পানির তালিকায় শীর্ষস্থানে আছে এমএসসি এবং দ্বিতীয় স্থানে মায়েরস্ক (৬০.১%)। তালিকায় ৫০ শতাংশের কম শিডিউল রিলায়েবিলিটি আছে কেবল ইয়াং মিং এবং জিমের। যথাক্রমে ৪৭.৭ শতাংশ এবং ৪৭.২ শতাংশ শিডিউল রিলায়েবিলিটি নিয়ে তালিকার একদম শেষে আছে ইয়াং মিং এবং জিম।

অর্থবছরের সাত মাসে পণ্য রপ্তানি ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বাংলাদেশ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাস (জুলাই থেকে জানুয়ারি) বিশ্ববাজারে ৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য। এ হিসাবে রপ্তানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত রপ্তানি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে করা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংস্থা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের হালনাগাদ প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শীর্ষ পাঁচ পণ্য হলো পোশাক, হোমটেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিপণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে দেশের মোট রপ্তানির ৯২ দশমিক ২৯ শতাংশ জুড়েই ছিল এ পাঁচ পণ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। তবে হোমটেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি ১৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ কমেছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিও কমেছে বা ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কৃষিপণ্য রপ্তানি ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমেছে।

ইপিবি প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি যাওয়া পণ্য পোশাক, যা মোট রপ্তানির ৮৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ সময়ে বিশ্ববাজারে ২ হাজার ৭৪১ কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৮ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলারের তৈরি পোশাক।

রমজানের নিত্যপণ্যের জন্য খোলা হয়েছে পর্যাপ্ত এলসি : বাংলাদেশ ব্যাংক

পবিত্র রমজান উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানির পর্যাপ্ত ঋণপত্র (এলসি) খুলেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, গত মাসে যে পরিমাণ এলসি খোলা হয়েছে, তা ২০২২ সালের জানুয়ারির চেয়েও বেশি। ব্যবসায়ীরা ডলার সংকটের কারণে এলসি না খুলতে পারার যে অভিযোগ করছেন, সেটিকেও ভিত্তিহীন বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশের আমদানি পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।

রমজানে চিনি, ভোজ্যতেল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুরসহ যেসব ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেশি থাকে সেগুলোর পর্যাপ্ত এলসি খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেজবাউল হক। তিনি বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে চিনি আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৫ লাখ ১১ হাজার ৪৯২ টন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪১ টন চিনি আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে ভোজ্যতেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৯ টন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮৫৩ টন ভোজ্যতেল আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল। একইভাবে বেশি খোলা হয়েছে ছোলা ও পেঁয়াজের এলসিও। গত জানুয়ারিতে খেজুর আমদানির এলসি খোলা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৮১ টন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ১৬ হাজার ৪৯৮ টন খেজুর আমদানির এলসি খোলা হয়েছিল।

মেজবাউল হক বলেন, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত এলসি খোলা হয়েছে। রমজান শুরুর আগে এসব এলসির পণ্য দেশে আসবে। সরবরাহ ও শৃঙ্খলা ঠিক থাকলে রমজানে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো আমদানি দায় পরিশোধের জন্য নিজেরাই বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে। কোনো ব্যাংকের হাতে আমদানির দায় পরিশোধের ডলার না থাকলে সেটি ভিন্ন কথা। তার মানে এটি নয়, দেশের ব্যাংক খাতে এলসি খোলা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংকগুলোকে এলসি দায় পরিশোধে সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে বিক্রি করা হয়েছে ৯২০ কোটি ডলার। দেশের ইতিহাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এর আগে কখনই এত পরিমাণ ডলার বিক্রি করতে হয়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুখপাত্র বলেন, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় প্রবৃদ্ধির ধারায় আছে। নতুন এলসি খোলা অনেক কমে এসেছে। আশা করছি, সহসা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’