Home Blog Page 53

এশিয়ায় জ্বালানি তেল আমদানি বেড়েছে

এশিয়ার দেশগুলোয় মার্চে জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে। চীন ও ভারতের আমদানি বৃদ্ধি এক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলেছে। অবশ্য ফেব্রুয়ারির তুলনায় মোট আমদানি বাড়লেও দৈনিক গড় আলোচ্য সময়ে কিছুটা কমেছে।

রেফিনিটিভ অয়েল রিসার্চের প্রতিবেদন অনুসারে, গত মাসে এশিয়ায় জ্বালানি তেলের মোট আমদানি ছিল ১১ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার টন। দৈনিক গড় ২ কোটি ৭৬ লাখ ব্যারেলের সমান। আমদানির এ পরিমাণ ফেব্রুয়ারির তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। সে মাসে এশিয়ায় জ্বালানি তেলের মোট আমদানি ছিল ১১ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টন। দৈনিক গড় ভিত্তিতে মার্চে আমদানি ৬ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে ফেব্রুয়ারির চেয়ে। সেই মাসে দৈনিক গড় আমদানি ছিল ২ কোটি ৯৪ লাখ ব্যারেল।

সার্বিকভাবে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আমদানি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আলোচ্য সময়ে আমদানি দৈনিক গড় ভিত্তিতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছেছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকের চেয়ে যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে এশিয়ার দৈনিক গড় আমদানি ছিল ২ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।

মার্চে চীনের আমদানি ছিল চার মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ। আলোচ্য সময়ে দেশটি মোট জ্বালানি আমদানি করেছে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার টন, ফেব্রুয়ারিতে যার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল।

মার্চে ভারতের জ্বালানি তেল আমদানি ছিল মোট ১ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার টন, যার ৩৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। আলোচ্য সময়ে দেশটি রাশিয়া থেকে ৪ লাখ টন ইউরাল গ্রেড জ্বালানি তেল কিনেছে। এ সময়ে চীনের আমদানি করা ইউরাল গ্রেড জ্বালানির পরিমাণ ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের থাকার জন্য বার্জ ভাড়া করেছে যুক্তরাজ্য

ছোট ছোট নৌকায় চেপে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশের সময় আটক হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অস্থায়ীভিত্তিতে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য একটি অ্যাকোমোডেশন ভেসেল ভাড়া করেছে দেশটির সরকার। মূলত হোটেল ভাড়াবাবদ খরচ কমানো এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্য থেকেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এই প্রবাহকে বড় সংকট হিসেবে দেখছেন। এছাড়া আটক ব্যক্তিদের আপাত আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে হোটেল ভাড়া করতে গিয়েও মোটা অংকের অর্থ গুণতে হচ্ছিল সরকারকে। শুধু তাই নয়, এসব হোটেলে থাকার সুব্যবস্থার কারণে অভিবাসনপ্রত্যাশীরাও যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাতে আরও বেশি আগ্রহী হতো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে অ্যাকোমোডেশন বার্জ ভাড়া করেছে, তার নাম বাইবি স্টকহোম। ১৯৭৬ সালে নির্মিত অ্যাকোমোডেশন ভেসেলটি এর আগে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে অভিভাসনপ্রত্যাশী এবং অফশোর গ্যাস ও বায়ুবিদ্যুৎ খাতের নির্মাণশ্রমিকদের আবাসনের কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাইবি স্টকহোম পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বাইবি মেরিন। সম্প্রতি তারা বার্জটিতে কিছু সংস্কার সম্পন্ন করেছে। ভেসেলটি অন্তত ১৮ মাসের জন্য ভাড়া করা হয়েছে। এটি ইংল্যান্ডের ডরসেটের পোর্টল্যান্ড বন্দরে নোঙর করা থাকবে।

পেপারলেস আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাগিদ

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত পেপারলেস ব্যবসা-বাণিজ্য পরিকল্পনা কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বুধবার (৫ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এডিবি এবং এসকাপ-এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যাশনাল ভেলিডেশন ওয়ার্কশপ অন দ্য আপডেট অব দ্য রেডিনেস অ্যাসেসমেন্ট ফর ক্রস বর্ডার পেপারলেস ট্রেড:বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়ানবো নিং এবং এসকেপের অর্থনীতিবিষয়ক কর্মকর্তা মিজ সু হিয়ুন কিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ বরাবরই ডিজিটাল বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফলভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। কিন্তু ডিজিটাল বাণিজ্য বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে।

তারা আরও জানান, ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যকে একক প্ল্যাটফর্মে আনার এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল ট্রেড সেল প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ডিজিটাল ট্রেড গাইডলাইনও তৈরি করেছে। ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের সার্বিক অবস্থান মূল্যায়ন করার মাধ্যমে এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোডম্যাপ প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এছাড়া এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে একদিকে যেমন সহজতর করবে, অপরদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনি ইশতেহার ২০০৯ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই ধারণাটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন নিয়ম, প্রবিধান ও আইন সংস্কার ও প্রবর্তন করছে। কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ একধাপ এগিয়ে নেবে।

দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৩৬টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, আন্তঃসীমান্ত পণ্য স্থানান্তরে বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্য সুশৃঙ্খলে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ইকোনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক (এসকাপ) ক্রস বর্ডার ট্রেডের জন্য একটি গবেষণা করে। পরবর্তী সময়ে ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্যের সুবিধার্থে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘ সফল আলোচনার পর ২০১৬ সালের ১৯ মে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি গৃহীত হয়। বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থার পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ এই চুক্তি অনুসমর্থন করে এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পণ্যের বাণিজ্য মেলা সেপ্টেম্বরে

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আগামী ২২ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর দুই দিনব্যাপী ‘ষষ্ঠ বাংলাদেশি অভিবাসী দিবস ও বাণিজ্য মেলা’ আয়োজনের অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোও (ইপিবি) মেলাটিকে তালিকাভুক্ত করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিজনেস লিংক গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এবং মুক্তধারা নিউইয়র্ক এ মেলার আয়োজন করবে। এতে সহায়তা করছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। আয়োজনটি হবে নিউইয়র্কের ম্যারিয়ট মারকুইস হোটেলে। অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য, ‘সুযোগের উন্মোচনে স্মার্ট অর্থনীতি’।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে এ মেলায় অংশ নিতে যাচ্ছে ইপিবি। ইপিবি ইতিমধ্যেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার, তৈরি পোশাক, ওষুধ, কৃষিজাতপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তিপণ্য, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটের বৈচিত্র্যময় পণ্য, আবাসনসহ বিভিন্ন খাতকে এ মেলায় অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।

ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এ মেলায় অংশ নিতে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে ইপিবির মেলা বিভাগে আবেদন করতে হবে। ভিসা না পেলে আবেদন মাশুল ফেরত দেবে ইপিবি। তবে ভিসা পেয়ে কেউ যোগ না দিলে আবেদন মাশুল ফেরত দেবে না সংস্থাটি।

জানা গেছে, বাংলাদেশি পণ্যের স্টল ছাড়াও এতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার হবে এবং তুলে ধরা হবে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার ব্যবসায়ীদের কাছে উদীয়মান বাংলাদেশকে। দেশের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক শোকেসের একটি নিখুঁত সংমিশ্রণ হিসেবে মেলাটি সাজানো হবে। লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহজতর করা।

অপারেটরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার উদ্যোগ ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের

প্রায় ৮ হাজার লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের ওরিয়েন্টাল মিন্দোরো প্রদেশের নাউজান শহরের নিকটবর্তী উপকূলে ডুবে যায় প্রিন্সেস এম্প্রেস নামের একটি ট্যাংকার। এই ঘটনায় দেশটির চারটি প্রদেশের জলসীমায় তেল ছড়িয়ে পড়ে। ট্যাংকারডুবির ঘটনাটিকে একটি ‘অপরাধ’ হিসেবে দাবি করে এর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ। তারা ট্যাংকারটির অপারেটরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।

ফিলিপাইন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, জাহাজটির মোট পাঁচটি কার্গো ট্যাংকের মধ্যে তিনটি ট্যাংক থেকে তেল লিক করে সাগরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে উল্লিখিত চারটি প্রদেশের উপকূলীয় গ্রামগুলো অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব গ্রামের মানুষজন তাদের জীবিকার জন্য প্রায় পুরোপুরি মৎস্য আহরণ ও পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। প্রিন্সেস এম্প্রেস দুর্ঘটনার পর এসব অঞ্চলে মাছ ধরার ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবৎ রয়েছে।

ফিলিপাইনের মেরিটাইম ইন্ডাস্ট্রি অথরিটি (মেরিনা) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোনো বৈধ পারমিট ছিল না প্রিন্সেস এম্প্রেসের। সর্বশেষ যাত্রার আগে ট্যাংকারটির ক্রুরা কোস্টগার্ডের কাছে যেসব কাগজপত্র দাখিল করেছে, সেগুলোর যথার্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে মেরিনা। এছাড়া ফিলিপাইনের বিচার বিভাগের অভিযোগ, অপারেটর আরডিসি রিইল্ড মেরিন সার্ভিসেস প্রডাক্ট ট্যাংকারটি নবনির্মিত বলে দাবি করলেও এটি আসলে তেমনটি ছিল না। বরং একটি পরিত্যক্ত জাহাজকে সংস্কারের মাধ্যমে এটি পুনঃনির্মাণ করা হয়েছিল। আরডিসি পরে সেটিকে কিনে নেয় এবং প্রডাক্ট ট্যাংকারে রূপান্তর করে।

মেরিনা এরই মধ্যে আরডিসির অপারেটিং পারমিট বাতিল করেছে এবং তাদের বহরে থাকা অন্য তিনটি জাহাজ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

আগামী বছর রাশিয়ায় দেড়-দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে: কৃষিমন্ত্রী

আলু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় রাশিয়ায় আগামী বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আলু রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

বাংলাদেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ। রাশিয়ার পক্ষে ন্যাশনাল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া সই করেন।

এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মান্টিটস্কি, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের আবহাওয়া ও মাটি আলু উৎপাদনের জন্য খুবই অনুকূল। বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন বছরে ৮০ লাখ টন, বাকি ২০ লাখ টন রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি বলেন, রাশিয়ায় দীর্ঘদিন আলু রপ্তানি বন্ধ ছিল। এখন আমাদের আলু রোগ-জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ করেছি। এই নিশ্চয়তা পেয়েই রাশিয়া রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এ বছর খুব বেশি না হলেও আগামী বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন আলু রপ্তানি হবে।

জানা গেছে, আলুতে ক্ষতিকর ব্রাউনরট রোগের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে আলু রপ্তানিতে রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আলুকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সরকার অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়ায় ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।

এ সিদ্ধান্তের ফলে রাশিয়ায় বাংলাদেশের আলু রপ্তানির একটি বিশাল দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ রাশিয়ায় ২০ হাজার টন আলু রপ্তানি হয়েছিল।

দেশে ২০২০-২১ সালে আলু উৎপাদন হয়েছে ৯৯ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭৩ টন। ২০২১-২২ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ২ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে ৭৮ হাজার ৯১০ টন। ২০২২-২৩ সালে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ টন, রপ্তানি হয়েছে (জানুয়ারি পর্যন্ত) ১৩ হাজার টন।

সুয়েজ খালে দুটি ট্যাংকারের মধ্যে সংঘর্ষ, জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক

সুয়েজ খালের গ্রেট লেকস অ্যাংকর এরিয়ায় অপেক্ষমান দুটি ট্যাংকারের মধ্যে হালকা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই দুর্ঘটনার কারণে কোনো জাহাজেরই উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি অথবা তেল ছড়িয়ে পড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া এর কারণে খাল দিয়ে জাহাজ চলাচলেও কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি।

এক বিবৃতিতে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ওসামা রাবি বলেছেন, ট্যাংকার অ্যালিগোট যখন অ্যাংকর এরিয়া ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন অপেক্ষমান অপর ট্যাংকার লিরিক ম্যাগনোলিয়ার সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এতে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। একদিনের মধ্যেই ট্যাংকার দুটি তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারবে বলে জানান রাবি।

উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে জ্বালানি কার্যদক্ষতা ৪০% বাড়াতে হবে: ইউএমএএস

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কার্বন নিঃসরণ কমানোর যে রূপরেখা দিয়েছে জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি), সেটি বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র পরিবহন খাতকে জ্বালানি কার্যদক্ষতায় আরও উন্নয়ন সাধন করতে হবে। সমুদ্র শিল্পবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি মেরিটাইম অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেস (ইউএমএএস) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মেরিন এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন কমিটির (এমইপিসি) ৮০তম অধিবেশন। এতে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে আইএমওর সংশোধিত কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে ইউএমএএস জানিয়েছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে আইএমওর কিছু সদস্য রাষ্ট্র এরই মধ্যে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আইএমওর কর্মকৌশলেও এসব লক্ষ্যমাত্রাকে বিবেচনায় নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে। এছাড়া ২০০৮ সালকে ভিত্তি ধরে নিঃসরণ ২০৩০ সাল নাগাদ ৩৭ শতাংশ ও ২০৪০ সাল নাগাদ ৯৬ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে আইএমওর কিছু সদস্য রাষ্ট্র।

সমুদ্র শিল্পে নিঃসরণ কমানোর উদ্দেশ্যে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ইউএমএএস বলছে, কেবল নতুন নতুন পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার শুরু করলেই চলবে না, বরং ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এর পাশাপাশি জ্বালানি কার্যদক্ষতা ২০১৮ সালের তুলনায় ৪০ শতাংশ অথবা ২০০৮ সালের গড় মানের চেয়ে ৫৫-৬০ শতাংশ বাড়াতে হবে। কার্যদক্ষতা বাড়ানোর এই হার ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যকার প্রবৃদ্ধির হারের প্রায় কাছাকাছি। সে সময়ে জ্বালানি কার্যদক্ষতা প্রায় ৩২ শতাংশ বেড়েছিল।

ইউএমএএস বলছে, বৈশ্বিক জাহাজ বহরের জ্বালানি কার্যদক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে ভূমিকা রাখতে হবে আইএমওকে। প্রথমত, তাদের আগামী জুলাইয়ে এমইপিসির অধিবেশনে ২০৩০ সালের জন্য বর্ধিত লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করতে হবে। এরপর কার্বন ইনটেনসিটি ইন্ডিকেটর (সিআইআই), এনার্জি এফিশিয়েন্সি এক্সিস্টিং শিপ ইনডেক্সের (ইইএক্সআই) মতো স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপগুলো পুনঃপর্যালোচনা করতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো ২০২৬ সালে পুনরায় পর্যালোচনার দিনক্ষণ ঠিক করে রেখেছে আইএমও।

ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়াতে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন রাখার জন্য জিএসপির (ইবিএ) ট্রানজিশন পিরিয়ড তিন বছরের পরিবর্তে ছয় বছর বাড়ানোর জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে গতকাল দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিচালক এবং ব্যবসা ও উন্নয়ন রাষ্ট্রদূত স্টিভেন কোলেট এবং ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পলিসি অ্যান্ড ইকোনমিক গভর্ন্যান্সের বিভাগীয় প্রধান ডির্ক ক্লাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অনুরোধ জানায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। এ দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, উচ্চতর প্রবৃদ্ধির রূপকল্প, চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন এবং এর ফলে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে সম্ভাব্য যেসব প্রভাব পড়বে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

প্রতিনিধি দলটি এলডিসি-পরবর্তী যুগে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা, বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি অব্যাহত রেখে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নেদারল্যান্ডস সরকারকে সহযোগিতা দেয়ার অনুরোধ জানায়।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের টেকসই কৌশলগত রূপকল্প-২০৩০-এর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে বলেন, এ রূপকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের একটি টেকসই এবং উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা।

আইএমওর পরবর্তী মহাসচিব মনোনয়নে জয়ী ‘বৈচিত্র্য’

জাতিসংঘের সমুদ্রবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) বর্তমান মহাসচিব কিটাক লিমের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। তার উত্তরসূরী নির্বাচনের জন্য ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এরই মধ্যে আইএমওর সাতটি সদস্য রাষ্ট্র এই পদের জন্য তাদের প্রার্থী মনোনীত করেছে। শেষ পর্যন্ত যিনিই নির্বাচিত হোন না কেন, এই প্রার্থী মনোনয়নের মাধ্যমে যে বিষয়টি জয়ী হয়েছে, সেটি হলো লৈঙ্গিক ও জাতিগত বৈচিত্র্য।

সাত মনোনীত প্রার্থীর মধ্যে তিনজন নারী। তারা হলেন কেনিয়ার ন্যান্সি কারিগিথু, ক্যারিবীয় দ্বীপ ডমিনিকার ডা. ক্লিওপেট্রা ডৌম্বিয়া-হেনরি ও ফিনল্যান্ডের মিন্না কিভিমাকি। এদের মধ্যে ন্যান্সি কারিগিথু নির্বাচিত হলে প্রথম আফ্রিকান মহাসচিব পাবে আইএমও।

এই তিনজন ছাড়াও আইএমও প্রধান নির্বাচনের দৌড়ে রয়েছে বাংলাদেশের মঈন উদ্দিন আহমেদ, তুরস্কের সুয়াত হায়রি আকা, পানামার আর্সেনিও অ্যান্টোনিও ডমিনগেজ ভেলাস্কো ও চীনের ঝ্যাং শিয়াওজি।

১৮ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় আইএমও অধিবেশনের ৩৩তম সেশনে জমা দেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সমুদ্র শিল্পে লৈঙ্গিক সমতার ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। এই শিল্পে নারীদের খাতভিত্তিক সম্পৃক্ততা নিয়ে ২০২১ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করে আইএমও ও উইমেনস ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশন (ডবিøউআইএসটিএ)। গত বছরের মে মাসে প্রথম আইএমও ইন্টারন্যাশনাল যে ফর উইমেন ইন মেরিটাইম উপলক্ষ্যে সেই গবেষণার প্রতিবেদন দ্য উইমেন ইন মেরিটাইম সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা গেছে, সমুদ্রশিল্পে সার্বিকভাবে মোট জনবলের ২৯ শতাংশ নারী। আর আইএমওর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমুদ্রসংক্রান্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোয় নারীদের সম্পৃক্ততা ২০ শতাংশ।