Home Blog Page 58

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ শতাংশ কমেছে কৃষিপণ্যের রপ্তানি

চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দেশ থেকে কৃষিপণ্যের রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশ। এ খাত থেকে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬২ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের (২০২১-২২) একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি কমেছে ২৬ শতাংশ।

ইপিবির তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষিপণ্যের রপ্তানির অর্থমূল্য ছিল ৮৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার। কৃষিপণ্যের মধ্যে শুকনো খাবার রপ্তানি হার গত দুই বছরই নিম্নমুখী রয়েছে। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ শতাংশ কমে রপ্তানি হয়েছে ১৬ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের। চলতি বছর একই সময়ে তা ২৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এর মধ্যে চা রপ্তানি কমেছে ৮ শতাংশ, সবজিতে ৪৩, ফুলে ৫০ এবং অন্যান্য খাতে ৪৬ শতাংশ রপ্তানি কমেছে।

বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস অ্যান্ড অ্যালাইড প্রডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের তো রপ্তানি আদেশ কমেনি। রপ্তানি আদেশ না কমার পরও আমাদের আয় কমেছে। কিছু মানুষের যোগসাজশ এবং প্রতারণার কারণে কৃষিপণ্য খাতের রপ্তানি আয় কমেছে।

তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ ভাড়া বৃদ্ধি করেছে, যে কারণে আমাদের খরচও বেশি। ফলে আমরা মুম্বাই, কলকাতার দামে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশে আমাদের পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। কলকাতার বিমান ভাড়া কম, অন্যদিকে মুম্বাই থেকে শিপিংয়ে সবজি যেতে সময় লাগে মাত্র তিনদিন। আমাদের এখান থেকে তো লাগবে ১৫ দিন। এসব কারণে আমরা মার্কেট হারিয়ে ফেলছি। সুযোগ তৈরি হলে এ রপ্তানি হার আবারো আগের মতো করা সম্ভব।

‘ওএসআরএ’ আইন প্রণয়ন নিয়ে মেরিটাইম নেতাদের উদ্বেগ প্রকাশ

কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে ভোক্তাচাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় টার্মিনালে স্থান ও সক্ষমতার সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে টার্মিনাল থেকে যথাযথভাবে কনটেইনার পুনরুদ্ধার এবং যানজট এড়াতে ড্যামারেজ এবং ডুয়েল ফিসহ আরও বেশকিছু ফি আরোপ করছে মেরিন টার্মিনাল অপারেটররা।

অন্যদিকে ফেডারেল মেরিটাইম কমিশনকে ক্রমবর্ধমান ফিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করছে ওশান শিপিং রিফর্ম অ্যাক্ট (ওএসআরএ)। ফি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় ওএসআরএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মেরিটাইম নেতারা।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) কাছে আমদানির দায় হিসেবে রিজার্ভ থেকে ১০৫ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এর ফলে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে। এ রিজার্ভ দিয়ে প্রায় চার মাসের (প্রতি মাসে ৮ বিলিয়ন হিসাবে) আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

গত ১ মার্চ রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।

প্রসঙ্গত, আকু আন্তদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান, ভারত, ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে লেনদেনের দায় পরিশোধ হয়ে থাকে। প্রতি দুই মাস অন্তর নিজেদের মধ্যকার দায় নিষ্পত্তি করা হয়।

এদিকে রিজার্ভের পতন ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রথম কিস্তির প্রায় ৪৭ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে।

ডলারের বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের জরুরি আমদানির জন্য এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

‘এমএএম’ উদ্যোগে যুক্ত হলো আরও সাত জাহাজ মালিক

এলএনজি-চালিত জাহাজ থেকে মিথেনের নির্গমন পরিমাপ ও মোকবিলার জন্য ‘মিথেন অ্যাবেটমেন্ট ইন মেরিটাইম ইনোভেশন ইনিশিয়েটিভ (এমএএম)’ চালু করা হয়েছে।

সম্প্রতি এলএনজি জাহাজ মালিক কুলকো, ইউনাইটেড ওভারসিজ ম্যানেজমেন্ট, ক্যাপিটাল গ্যাস, সেলসিয়াস ট্যাংকারস, গ্লোবাল মেরিডিয়ান হোল্ডিংস, এমওএল এবং টিএমএস কার্ডিফ গ্যাস এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে। মিথেন নির্গমন পরিমাপের জন্য বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত কোনো পদ্ধতি নেই। তাই আগামী কয়েক মাসের ভেতর বিশ্লেষণ ও গবেষণা শেষে জাহাজে মিথেন পরিমাপের নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করতে আগ্রহী এমএএম।

আর্কটিক সাগরে ইইউ জাহাজের স্নো ক্র্যাব শিকার নিষিদ্ধ করেছে নরওয়ে

সম্প্রতি ইইউ জাহাজগুলোকে আর্কটিকের স্যাভলবার্দ দ্বীপপুঞ্জে স্নো ক্র্যাব শিকার করতে নিষেধ করছে নরওয়ের সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯ সালের নরওয়েজিয়ান সুপ্রিম কোর্টের এক রায় অনুযায়ী, স্নো ক্র্যাবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিনিষেধ অত্র এলাকার তেল এবং খনিজসম্পদ আহরণের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, নরওয়ের স্থানীয় আদালতের রায় অন্যান্য দেশ চূড়ান্ত সমাধান হিসেবে গ্রহণ না-ও করতে পারে। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিরোধ হিসেবে পরবর্তীতে কোনো একটি আন্তর্জাতিক আদালত এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে।

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর

৭ ই মার্চের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ  উপলক্ষে আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকালে শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান । এ সময় বন্দরের পর্ষদ সদস্যগণ, বিভাগীয় প্রধান, উপ-বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, সিবিএ নেতৃবৃন্দ ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ কেবল মুখনিঃসৃত শব্দরাজি নয়, বঞ্চিত বাঙালি জাতির হাজার বছরের চাপা পড়া কষ্ট একসাথে ধ্বনিত হয়েছে। স্বতস্ফূর্ত আবেগ এবং কাঙ্খিত স্বপ্নকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ বাঙালিকে দিয়েছে পথের দিশা, যুদ্ধে যাওয়ার অমিত সাহসী প্রেরণা। তাই ৭ই মার্চের ভাষণের বহুমাত্রিক তাৎপর্য্ রয়েছে এবং অনুপম একটি বক্তব্য, যা জাতিকে স্বাধীনতার পথে ধাবিত করে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই জারগণের ধ্বনি ‘জয়বাংলা আজ বাংলদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

তিনি বলেন, একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি ঐতিহাসিক সাহসিকতাপূর্ণ অবস্থান রয়েছে। নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রাম বন্দরের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত কর্মকর্তাসহ ২০০ জনের অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ও ১০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী শহীদ হন।

তিনি আরও বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই। বন্দরে  কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যার যার অবস্থান থেকে সংগঠিতভাবে এবং জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে তাঁর যে দিকনির্দেশনা ও ২০৪১ সালের মধ্যে  উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর একটি অনন্য প্লাটফর্ম যেখান থেকে দেশের মানুষের সেবা করতে পারা যায়।

তিনি ৭ ই মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে নিজ নিজ অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে আহবান জানান।

সবশেষে বন্দর চেয়ারম্যান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদ ও ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ।

আলোচনা সভা শেষে বন্দর চেয়ারম্যান বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাত উন্মুক্ত রেখেছি : প্রধানমন্ত্রী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বাংলাদেশে জ্বালানি, অবকাঠামো, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা আমাদের অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাত বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রেখেছি।

দোহার সেন্ট রেজিস হোটেলে সোমবার কাতারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিশ্বাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ এ খাতে কাতারের বিনিয়োগের সুযোগ আছে। আমরা সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান এবং জ্বালানি বিতরণে কাতারের দক্ষতা থেকেও লাভবান হতে পারি।

কাতার থেকে আরও জ্বালানি আমদানিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের সংকট বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে কঠিন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে। আমাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশে আরও রপ্তানির সুযোগ অন্বেষণ করতে আমরা কাতারকে অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অঞ্চলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ব্যবস্থা সবচেয়ে উদার। ট্যাক্স হলিডে, যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক, রয়্যালটি রেমিট্যান্স, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও ফি, শতভাগ বিদেশী ইকুইটি, অবাধ বহির্গমন নীতি, লভ্যাংশের সম্পূর্ণ প্রত্যাবাসন সুবিধা, মূলধন ফেরতসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছি আমরা

১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং তাতে ঝামেলাহীন বিদেশী বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এক ছাদের নিচে সব সেবা দিচ্ছে। আমাদের সরকার সমন্বিত সুবিধাসহ সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ জায়গা নিয়েছে, তাদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে।

যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি ও লজিস্টিক হাবের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামোয় আমরা প্রচুর বিনিয়োগ করছি। পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী নদীর টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত তৃতীয় টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকায় মেট্রোরেল ব্যবস্থার মতো মেগা প্রকল্পগুলো আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ। এরই মধ্যে সমগ্র জাতিকে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কাভারেজের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া দুটি আলাদা প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএসইসি ও বিডা।

কনটেইনার ভলিউম কমার পরও ১০ বিলিয়ন মুনাফা অর্জন করেছে ওওসিএল

২০২২ সালে ৭.১ মিলিয়ন টিইইউ আনা-নেওয়া করেছে ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কনটেইনার লাইন (ওওসিএল) যা ২০২১ সালের থেকে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টিইইউ কম। অর্থাৎ ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর ওওসিএলের কনটেইনার ভলিউম ৬% হ্রাস পেয়েছে।

কনটেইনার ভলিউম কমলেও সামগ্রিকভাবে লাভের মুখ দেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২২ সালে ওওসিএলের রাজস্ব ছিল ১৯.৮২ বিলিয়ন ডলার এবং অপারেটিং মুনাফা ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ওওসিএল বহরে নতুন জাহাজ যুক্ত হলে সরবরাহ আরও বাড়বে।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আগামী ছয় মাস ইতিবাচক ধারায় থাকবে

আগামী ছয় মাস দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলে মনে করছে বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)। ‘বিজনেস কনফিডেন্স সার্ভে রিপোর্ট ২০২২-২৩’ শীর্ষক এক সমীক্ষায় এমনটা জানায় সংস্থাটি। রবিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম।

সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২২ সালে সামগ্রিক বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স (বিসিআই) দাঁড়ায় ৭৪ দশমিক ৪ পয়েন্টে, যা আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্যবসা পরিস্থিতিতে ইতিবাচক ধারার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সময় উৎপাদন খাতের ক্রয়াদেশ, সেবা খাতে চাহিদা, বিক্রয় মূল্য ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়বে। যদিও উৎপাদন ব্যয় নিয়ে ব্যবসায়ীরা ‘নিম্ন আস্থা’ (হতাশা) প্রকাশ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য সরঞ্জাম সংক্রান্ত ব্যয়ের বোঝা কমানোর দাবি জানিয়েছে বিল্ড।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ সমীক্ষা চালানো হয়। এতে ৫৬৭ জন উদ্যোক্তার মতামত নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার মূল উদ্দেশ্য ছিল গত বছরের মার্চ-আগস্ট পর্যন্ত ব্যবসা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি প্রশমনের প্রস্তুতি নেয়ার ও পরিকল্পনা করার সক্ষমতা প্রদান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর পরও বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স (বিসিআই) আমাদের ব্যবসায় পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রদর্শন করায় আমরা আনন্দিত। সংকট মোকাবেলা ও উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যথেষ্ট সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।

বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, এ বছরের বিজনেস কনফিডেন্স সার্ভেতে সাতটি কম্পোনেন্টের মধ্যে ছয়টি কম্পোনেন্টেই উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ছয়টি কম্পোনেন্ট হলো কর্মসংস্থান, ক্রয়াদেশ, সেবার চাহিদা, ব্যবসায় কার্যক্রম, বিক্রয় মূল্য ও বিনিয়োগ। শুধু ব্যবসায় ব্যয় সম্পর্কিত মতামতের ক্ষেত্রে নেতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। এ গবেষণায় ব্যবহৃত ডিফিউশন ইনডেক্সে স্টাডি রেঞ্জ ধরা হয়েছে শূন্য থেকে ১০০ এবং মধ্যবিন্দু ধরা হয়েছে ৫০। প্রাপ্ত ফলাফল ৫০-এর কম হলে সংকোচন বা নেতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং ৫০-এর বেশি হলে সম্প্রসারণ বা ইতিবাচক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমরা তিনভাবে বিজনেস কনফিডেন্স দেখেছি। একটা হচ্ছে ওভারঅল বিজনেস কনফিডেন্স, আরেকটা হচ্ছে ম্যানুফ্যাকচারিং বিজনেস কনফিডেন্স এবং সার্ভিস সেক্টরের বিজনেস কনফিডেন্স। আমাদের তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তারা খরচ বেড়ে যাওয়া নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন। যেখানে আমাদের উৎপাদন খাতের সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাক, সেখানে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বৃদ্ধি পাওয়া উদ্বেগজনক।

সাত মাসে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে যা প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়-সংক্রান্ত এনবিআরের সাময়িক প্রতিবেদনে এ তথ্য রয়েছে।

এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ওই সময়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মোট ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

সাত মাসে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে রাজস্ব এসেছে ৫২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৮ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তবে এ খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাত থেকে সাত মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৬ হাজার ৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় যা ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি । তবে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা কম আয় হয়েছে। এ ছাড়া আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত থেকে সাত মাসে রাজস্ব এসেছে ৫৩ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তবে আদায় হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা কম।