Home Blog Page 59

সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধে ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তিতে সম্মত জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক এলাকা তলিয়ে যাওয়া রোধে অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বছরের পর বছর আলোচনার পর শনিবার প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তির একটি খসড়া স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে।

সম্মেলনের সভাপতি রেনা লি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে রবিবার প্রতিনিধিদের সামনে উচ্চস্বরে ঘোষণা করেন ‘আমাদের প্রচেষ্টা অবশেষে লক্ষ্যে পৌঁছেছে’।

খসড়াটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি তবে ১৫ বছরেরও বেশি আলোচনার পর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে পরিবেশবাদীরা এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৩০ শতাংশ ভূমি এবং মহাসাগর সংরক্ষণে চুক্তিটিকে অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়, যেমনটি গত ডিসেম্বরে মন্ট্রিলে স্বাক্ষরিত একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে বিশ্বের সরকারগুলো সম্মত হয়েছিল।

গ্রিনপিসের লরা মেলার বলেন, একটি ঐতিহাসিক দিন এবং একটি বিভক্ত বিশ্বের ভূ-রাজনীতি সত্ত্বেও প্রকৃতি এবং মানুষের সুরক্ষার প্রচেষ্টা বিজয়ী হতে পারে, এটি তার একটি নজির।

শুক্রবার থেকে শনিবার রাতভর ম্যারাথন সেশনসহ দুই সপ্তাহের ব্যাপক আলোচনার পর প্রতিনিধিরা একটি খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

লি আলোচকদের বলেছেন, এ নিয়ে পুনরায় কোন আলোচনা হবে না। আইনজীবীদের দ্বারা যাচাই এবং জাতিসংঘের ছয়টি অফিসিয়াল ভাষায় অনুবাদ করার পরে চুক্তিটি পরবর্তী তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে।

জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেস প্রতিনিধিদের প্রশংসা করেছেন।

আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ থেকে জাহাজে ট্যাংকার স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে স্পেন

Oil/Chemical tanker at sea - Aerial view

রাশিয়ার বাল্টিক বন্দর থেকে তেল বহনকারী জাহাজগুলো স্পেনের সেউতা ছিটমহলের বাইরে ট্রানজিট করে দূরপাল্লার অন্যান্য জাহাজে ট্যাংকার স্থানান্তর করে। স্থানান্তরের কাজ আঞ্চলিক সমুদ্রসীমার বাইরে হয় বলে তেল ছড়িয়ে পড়লে পরিচ্ছন্নতা খরচ বহনের দায়বদ্ধতা কারো থাকে না।

তাই জাহাজ থেকে জাহাজে তেল স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে স্পেন। আইন অনুযায়ী, স্পেনের আঞ্চলিক সমুদ্রসীমার বাইরে ‘স্প্যানিশ মেরিটাইম স্পেসেস’ এ নোঙর ফেলে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে ট্যাংকার অপারেটরদের নিকটস্থ স্প্যানিশ বন্দরের অনুমতি নেওয়া লাগবে।

সমুদ্র সুরক্ষায় ঐতিহাসিক চুক্তির দ্বারপ্রান্তে জাতিসংঘ

দীর্ঘ দেড় দশকের আলোচনা শেষে সাগর-মহাসাগর সুরক্ষায় প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। ‘হাই সিজ ট্রিটি’র আওতায় ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর ৩০ শতাংশ মহাসাগর সংরক্ষিত ঘোষণা করা হবে।

২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সমুদ্র সুরক্ষা চুক্তি বিষয়ক চূড়ান্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সফল আলোচনা শেষে সম্মেলনের সভাপতি রেনা লি বলেন, ‘অবশেষে আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হলো’। আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জীববৈচ্যিত্র সুরক্ষায় ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত একাধিকবার আলোচনায় বসেন জাতিসংঘের সদস্যদেশের প্রতিনিধিগণ।

গত বছর আগস্টে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই পঞ্চম ধাপের আলোচনা সমাপ্ত হয়। যে কারণে সদস্য দেশগুলোর ঐকম্যতে পৌঁছানোকে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। গ্রিন পিসের পরামর্শক লরা মেলার বলেন, ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। প্রতিনিধিদের সফল আলোচনা প্রমাণ করে যে, ভেদাভেদে ভরা এই পৃথিবীতে ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে প্রকৃতির রক্ষণাবেক্ষণে মানুষের প্রচেষ্টাই জয়ী হতে পারে।’

দুই সপ্তাহের প্রগাঢ় আলোচনা শেষে মার্চের ৩-৪ তারিখে টানা ৩৮ ঘণ্টা বৈঠক করেন অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে একটি চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছান তারা। চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় প্রতিনিধিদের সাধুবাদ জানান জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। আলোচনায় কী কী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা এখনো লিখিত আকারে প্রকাশ করা হয়নি। লরা জানান, আইনজীবীরা চুক্তিটি যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। জাতিসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষায় অনুবাদের পর চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হওয়ার পর চুক্তিটি পুনরালোচনার তেমন কোনো সুযোগ থাকবে না বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, উপকূল থেকে ৩২০ কিলোমিটার বা ২০০ মাইল-পরবর্তী সমুদ্রকে হাই সিজ বলা হয়। বিশ্বের মহাসাগরের ৬০ শতাংশ এবং ভূপৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক হাই সির অন্তর্ভুক্ত। বিশাল এই এলাকা কোনো দেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের আওতাভুক্ত না হওয়ায় সমুদ্রের এই অংশে বিশ্বের সব দেশের মাছ শিকার, জাহাজ চলাচল এবং গবেষণার অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে যেহেতু আন্তর্জাতিক জলসীমার কোনো মালিকানা নেই, সেহেতু এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়ভারও কোনো একক দেশের ওপর বর্তায় না। যে কারণে বিস্তৃত হাই সিজ এলাকার মাত্র ১.২ শতাংশ সুরক্ষিত আছে। এমতাবস্থায়, নতুন চুক্তি কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক জীব এবং জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার জন্য নির্দিষ্ট এলাকা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

ডলারে নয়, টাকা-রুপিতে লেনদেন করতে চায় বাংলাদেশ-ভারত

বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ডলারকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। গত ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ভারতের শহর বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত জি২০ অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের বৈঠকের ফাঁকে এই আলোচনা হয়েছে। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকারের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে চিকিৎসা, পর্যটন ও শিক্ষাখাতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। একই সাথে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আমদানি যে ৩ দেশ থেকে করে তার মধ্যে ভারত অন্যতম।

এই ২ দেশের মধ্যে লেনদেন হয় মার্কিন ডলারে এবং তারপরে তা রুপি বা টাকায় হিসাব করা হয়। এর ফলে উভয়পক্ষকেই বিনিময় হারে কিছু ছাড় দিতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এমন একটি ব্যবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারে রূপান্তর করতে হবে না।

ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে একটি দ্বৈত মুদ্রা কার্ড থাকবে, যেখানে তারা ভ্রমণের আগে ভারতীয় রুপি যোগ করে নিতে পারবেন। একইভাবে কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় একইভাবে তাদের কার্ডে টাকা যোগ করে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিনিময় হার হবে সরাসরি টাকা থেকে রুপি বা রুপি থেকে টাকায়।

ভারতের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ব্যবসায়ীরা তাদের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন।

গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

বৈঠকে আবদুর রউফ তালুকদার জানান, এই পদ্ধতি চালু করা গেছে ভারতকে যে পরিমাণ অর্থপ্রদান করতে হয়, তা আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে দিতে হবে না এবং এর ফলে রিজার্ভের ওপর চাপও কমবে।

তিনি বলেন, রিজার্ভের ওপর চাপ অনেক কমেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে আমদানি বিল কমেছে। এখন রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স যা আসছে তা দিয়েই আমদানি বিল মেটানো সম্ভব। তবে অন্যান্য খাত থেকেও ডলার আসা দরকার। সেক্ষেত্রে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে এই ব্যবস্থা সাহায্য করতে পারে।

পুনরায় ইউক্রেনে সরাসরি বুকিং চালু করেছে মায়েরস্ক

ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা স্তর পর্যবেক্ষণের পর পুনরায় সারা বিশ্ব থেকে দেশটিতে সরাসরি বুকিং চালু করেছে মায়েরস্ক।

রোমানিয়ার কনস্ট্যান্টা বন্দর থেকে ইউক্রেনের রেনি বন্দরে সাপ্তাহিক বার্জ সার্ভিস চালু করেছে মায়েরস্ক। নতুন পরিষেবাটি কনস্ট্যান্টা বা দানিয়ুব চ্যানেল এবং কৃষ্ণসাগরের মধ্যকার দুটি রুটে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করেছে, যার ট্রানজিট সময় প্রায় দেড় দিন। চলমান যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ক্লজের আইনি স্বীকৃতি, সঠিকভাবে নথিভুক্তকরণ এবং কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতাসাপেক্ষে বুকিং নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ফল-সবজি রপ্তানিতে নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চায়

ফল ও সবজি রপ্তানিতে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এর আগে নেদারল্যান্ডসের পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডাম অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (ভিভিডি) এমপি ফিম ভ্যান স্ট্রিয়েনের নেতৃত্বাধীন প্রতনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নেদারল্যান্ডস সহায়তা করে আসছে। বাংলাদেশ বন্যায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যা ও উপকূলীয় অঞ্চলের লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণে নেদারল্যান্ডস আমাদের অনেক সহায়তা করছে। বিভিন্ন প্রকল্পে তাদের বিশেষজ্ঞরা আমাদের সহায়তা করেছেন। যে কারণে বাংলাদেশের বন্যা অনেক নিয়ন্ত্রিত। আগের মতো বন্যা হয় না।’

ডেল্টা প্ল্যান তৈরিতে ডাচ বিশেষজ্ঞদের সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমরা ডেলটা প্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা। এ ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার পরিকল্পনায়ও আমরা ডেলটা প্ল্যান অনুসরণ করব। তাতে নেদারল্যান্ডসের সহায়তা লাগবে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিপণ্য রপ্তানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ দেশ নেদারল্যান্ডস। তারাই সবচেয়ে বেশি সবজি রপ্তানি করছে। আমরা বাংলাদেশের ফল ও সবজি রপ্তানির চেষ্টা করছি। আমরা নেদারল্যান্ডসের প্রতিযোগী হতে চাই। গ্রিনহাউসে তারা খুবই সফল। অনেক ফসল তারা গ্রিনহাউসে উৎপাদন করে থাকে। এ ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস সরকার আমাদের সহায়তা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আনারস ও কলার মতো বিভিন্ন ফল ও সবজি বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে তারা তা বিদেশে রপ্তানি করে। বাংলাদেশ থেকেও যদি তারা আম-আনারস নিয়ে তা ইউরোপের বাজারে বিক্রি করে, তাহলে আমাদের জন্য সেটি একটি ভালো বিষয় হবে। কারণ, ইউরোপের বাজারে তো আমরা ঢুকতে পারি না। দুটি কারণে আমরা ইউরোপের বাজারে ঢুকতে পারছি না। প্রথমটি হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা।

৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি ফেব্রুয়ারিতে

দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: বন্দর বার্তা

সদ্য বিদায়ী ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

পণ্য রপ্তানির এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশ করেছে। ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩ হাজার ৭০৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩২ কোটি টাকার সমান। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তার বিপরীতে পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল এবং হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি কমে গেছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ৮৫৯ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়। প্রবৃদ্ধিও ছিল ২৫ শতাংশ। যদিও সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। অক্টোবরে তা আরও ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে যায়। নভেম্বরে আবার ইতিবাচক ধারায় ফেরে রপ্তানি। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫০৯, ৫৩৭ ও ৫১৪ কোটি ডলার। তার মধ্যে ডিসেম্বরে যে পণ্য রপ্তানি হয়, তা দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৩ হাজার ১৩৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ৮৩ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেশি।

বিশ্বের সর্ববৃহৎ কনটেইনারবাহী জাহাজ বুঝে পেয়েছে এমএসসি

৬০০ মিলিয়ন ডলারে চীনা জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুডং-ঝংহুয়ার সাথে চারটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি করে মেডিটেরিয়ান শিপিং কোম্পানি (এমএসসি)। সম্প্রতি চুক্তির প্রথম জাহাজ এমএসসি টেসা হস্তান্তর করা হয়েছে।

২৪,১১৬ টিইইউ এর এমএসসি টেসা বিশ্বের সর্ববৃহৎ কনটেইনারবাহী জাহাজ। ১৩১২ ফুট লম্বা ডিএনভি শ্রেণিভুক্ত জাহাজটি ২৫ স্তর পর্যন্ত কনটেইনার বহন করতে সক্ষম। গতানুগতিক জ্বালানিতে পরিচালিত হলেও এয়ার লুব্রিকেশনের ব্যবহার এমএসসি টেসার জ্বালানি খরচ এবং কার্বন নির্গমন ৩-৪% হ্রাস করে।

ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ডলার

ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সে হিসাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় মাসে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

যদিও জানুয়ারির তুলনায় গত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ ২০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

২০২০-২১ অর্থবছরে সৃষ্ট বৈশ্বিক দুর্যোগের মধ্যে প্রবাসীরা রেকর্ড ২ হাজার ৪৭৭ কোটি বা ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। এর পর থেকে সেই প্রবাহে ভাটা পড়ে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলার। এক্ষেত্রে সেই অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের শুরুর দিকে রেমিট্যন্স প্রবাহ কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী সময়ে সেটি ঝিমিয়ে পড়ে। তবে জানুয়ারিতে এসে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে।

২০২৩ সাল হবে সমুদ্র পরিবহন খাতের বৈপরীত্যে ভরা বছর: প্রতিবেদন

ভূরাজনৈতিক দোলাচল, মূল্যস্ফীতি এবং ডিকার্বনাইজেশনের চলমান প্রচেষ্টা গত বছর সমুদ্র পরিবহন খাতের বিভিন্ন পক্ষকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। চলতি বছরও এ ধারা অব্যাহত থাকায় পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার, ভোক্তাদের ক্রয়ের ধরন পরিবর্তন এবং ব্যবসায়ীদের শিপিং খরচ কমানোসহ বেশকিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে সমুদ্র পরিবহন খাত। বিআরএস এবং শিপস্টেশনের পৃথক দুটি রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি শিপিং এবং শিপবিল্ডিং মার্কেটের ওপর বার্ষিক পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে বিআরএস। পর্যালোচনা অনুযায়ী, সমুদ্র পরিবহন খাতের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বৈপরীত্য থাকলেও ভারী জ্বালানি তেল বা হেভি ফুয়েল অয়েলের (এইচএফও) ব্যবহার বন্ধে সবাই ঐকমত্যে পৌঁছবে। ‘নোংরা’ জ্বালানি হিসেবে পরিচিত এইচএফও পোড়ালে সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ভারী ধাতু, ব্ল্যাক কার্বনের মতো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান নির্গত হয়। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) কঠোর পরিবেশনীতি না থাকায় সমুদ্র পরিবহন খাতে সহজলভ্য ও সস্তা জ্বালানি হিসেবে এইচএফও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

২০৩০ (৪০%) এবং ২০৫০ (৭০%) সাল নাগাদ কার্বনের তীব্রতা কমানোর লক্ষ্যে খাতসংশ্লিষ্ট সবাই বর্তমানে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি এবং প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি বছর এইচএফও এর ব্যবহার আগের চেয়ে কমবে এবং বিকল্প জ্বালানি হিসেবে এলএনজি বা মিথানল ব্যবহার করা হবে। সেসঙ্গে নতুন জাহাজগুলোতে (২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী এক হাজারের বেশি জাহাজ) পরিবেশবান্ধব ডুয়েল ফুয়েল সিস্টেম সংযুক্ত থাকবে। বিআরএসের মতে, কঠোর পরিবেশ নীতি প্রণয়ন এবং কার্বন ট্যাক্স চালু করলে সমুদ্র পরিবহনে কার্বনের ব্যবহার দ্রুত হ্রাস পাবে।

সম্প্রতি ‘প্রোটেক্ট ইউর গ্রোথ স্ট্র্যাটেজি : দ্য ২০২৩ কনজিউমার অ্যান্ড মার্চেন্ট বেঞ্চমার্ক রিপোর্ট’ প্রকাশ করে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউড-বেসড ই-কমার্স শিপিং সলিউশন শিপস্টেশন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোক্তারা মূল্য সচেতন হওয়ায় চলতি বছরের ক্রয় সিদ্ধান্তে সেটা ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। মূল্যস্ফীতির কারণে চলতি বছর বিক্রয় বাবদ ২১৯ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আয় করা গেলেও বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে না।

জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬৬% মার্কিন ভোক্তার মতে, মূল্যস্ফীতির কারণে তারা কেনাকাটার ধরনে পরিবর্তন আনবে। এছাড়া অনলাইননির্ভর কেনাকাটা, ফ্রি হোম ডেলিভারি, ফ্রি রিটার্ন পলিসির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন ভোক্তারা। অন্যদিকে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে ৭২% মার্কিন ব্যবসায়ী ব্যয় কমানোর এবং কাজের গতি বাড়াতে ৩০% ব্যবসায়ী গুদাম অটোমেশনের পরিকল্পনা করছেন।