Home Blog Page 6

হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর ও নৌবাহিনীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্ণফুলী নেভিগেশনাল চ্যানেল এবং বর্হিনোঙর এলাকায় যৌথভাবে হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সোমবার সকালে বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড রুমে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে পর্ষদ সদস্য (হারবার ও মেরিন) এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পক্ষে নৌবাহিনীর চীফ হাইড্রোগ্রাফার সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের আওতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের কাজের পরিধি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিশাল সমুদ্র এলাকার ইকোসিস্টেম, কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট, ড্রেজিং, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট, নেভিগেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে যৌথ মনিটরিং ও হাইড্রোগ্রাফিক কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ আন্তর্জাতিক মানের চার্ট প্রকাশসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরের হাইড্রোগ্রাফি বিভাগের যে সক্ষমতা রয়েছে তার সাথে নৌবাহিনীর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা যৌথ জরিপ কাজ, যে কোনো ধরনের কারিগরি সহায়তা, তথ্য আদান প্রদান ও প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকান্ড পরিচালনায় এই সমঝোতা স্মারক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান, ওএসপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সমঝোতা স্মারক শুধুমাত্র কাগজে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ, দুই সংস্থার অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করবে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন হবে: বন্দর চেয়ারম্যান

রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান

চট্টগ্রাম বন্দর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান। এ সময় তিনি বন্দর পরিচালনায় প্রযুক্তিগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন অপরিহার্য।

গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) আয়োজিত চট্টগ্রামের নৌবাহিনী কনভেনশন সেন্টারে বিশ্ব সমুদ্র দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন

বিএমএমওএ’র সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

উদযাপনের অংশ হিসেবে সমুদ্র খাতে অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিকে সাহসিকতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব পুরষ্কার দেওয়া হয়।

দুর্গাপূজায় টানা ৯ দিন বাংলাবান্ধায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

দুর্গাপূজা উপলক্ষে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে সাপ্তাহিক ছুটিসহ টানা ৯ দিন আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, পূজা উপলক্ষে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামী ৫ অক্টোবর থেকে যথারীতি বন্দরে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।

তবে বন্দর দিয়ে ইমিগ্রেশন পথে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত প্রতিদিনই চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আন্ত:স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চার ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা

৫২তম গ্রীষ্মকালীন আন্ত:স্কুল ও মাদ্রাসা প্রতিযোগিতার থানা পর্যায়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল, হ্যান্ডবল, সাঁতার ও দাবা ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জেলা পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। বিদ্যালয়ের ফুটবল দল হালিশহর বেগমজান স্কুলকে এবং হ্যান্ডবল দল বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বি এ এফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে পরাজিত করে।

গত বুধবার হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বন্দর-পতেঙ্গা-বায়েজিদ থানার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম অনুষ্ঠানে পুরষ্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন রিফাইনারি উচ্চ বিদ্যালয় ও হালিশহর বেগমজান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং পতেঙ্গা-বন্দর-বায়েজিদ থানার একাডেমিক সুপারভাইজার।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান, ওএসপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) ও সরকারের উপসচিব মমিনুর রশিদ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকায়নে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকীকরণ ও পুনর্গঠনে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরই এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি। আসুন, আমরা একসঙ্গে এটির উন্নয়ন করি।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চলমান অধিবেশনের ফাঁকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গার সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক রূপান্তর থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অগ্রাধিকারমূলক নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ধারা, রাজস্ব ও ব্যাংকিং খাতের কাঠামোগত সংস্কার, চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকায়ন, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণ এবং এশিয়ার তরুণ প্রজন্মের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি হওয়া জাতীয় সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তাও বৈঠকে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়।

অজয় বঙ্গা সাক্ষাৎকালে প্রফেসর ইউনূসের গত ১৪ মাসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। তিনি বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দেন এবং বলেন, বলিষ্ঠ সংস্কার ছাড়া টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।

জবাবে প্রফেসর ইউনূস বিশ্বব্যাংকের অবিচল সহযোগিতার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাতির ইতিহাসের এক সংকটময় সময়ে এ সহায়তা বাংলাদেশকে সঠিক পথে রাখছে। একই সঙ্গে তিনি বিশ্বব্যাংককে চুরি হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর আধুনিকীকরণ ও পুনর্গঠনে সহায়তা করার আহ্বান জানান।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরই এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি। আসুন আমরা একসঙ্গে এটির উন্নয়ন করি। প্রফেসর ইউনূস উল্লেখ করেন, নেপাল ও ভুটানসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যও একটি আধুনিকায়িত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি উপকৃত হবে। এর মাধ্যমে লাখো মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

উচ্চপর্যায়ের এ বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

চারগুণ স্টোর রেন্ট ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত

বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের অনুরোধে গত ২৩ আগস্ট থেকে এক মাসের জন্য এফসিএল কনটেইনারে চারগুণ স্টোর রেন্টের আদেশ স্থগিত করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যা ২২ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। তবে ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে সেই স্থগিতাদেশ আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে চট্টগাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। যা সোমবার চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এফসিএল কনটেইনারের চারগুণ স্টোর রেন্ট স্থগিত থাকার বিষয়টি জানানো হয়। এই সুবিধা শুধুমাত্র এফসিএল (ফুল কনটেনার লোড) কনটেইনারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

গতকাল জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর এবং ঢাকার কমলাপুর আইসিডি চলতি বছরের ১০ মার্চ থেকে এফসিএল কনটেইনারের ক্ষেত্রে ফ্রি টাইম পরবর্তী চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপ করা হয়। তবে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদান ও বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম গতিশীল রাখার স্বার্থে ২৩ আগস্ট থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এফসিএল কনটেইনারের ওপর চলমান চারগুণ স্টোর রেন্ট স্থগিত করা হয়েছিল। যা আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

তবে খালি কনটেইনারের ক্ষেত্রে এ স্থগিতাদেশ কার্যকর হবে না। বন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকদের দ্রুত তাদের কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় থাকে।

সাগরে লঘুচাপ, চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আবহওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এদিকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

৭টি শর্ত মানলে জাহাজ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি

সমুদ্রগামী বড় জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দিতে হবে না। ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই অব্যাহতি–সুবিধা থাকবে। এই ভ্যাট অব্যাহতিতে আমদানিকারককে ৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে। ৫ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণক্ষমতার বেশি জাহাজ আমদানি করতে হবে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুসারে ৭টি শর্ত হলো;

১. বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে এবং ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের যেসব আন্তর্জাতিক কনভেনশন বাংলাদেশ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেসব আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে চলতে হবে।

২. আমদানি করা জাহাজ ২৫ বছরের বেশি পুরোনো হতে পারবে না।

৩. আমদানি করা জাহাজ কমপক্ষে ৩ বছর বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ হিসেবে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করতে হবে। এর আগে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না। তবে ব্যবসায়িক মন্দা বা এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ বছরের আগে বিক্রির করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে কিংবা দৈব-দুর্বিপাক, দুর্ঘটনা বা অন্য যেকোনো কারণে স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আমদানিকালে প্রযোজ্য ভ্যাট শোধ করবে—এমন অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।

৪. আমদানি করা জাহাজের যাবতীয় আয় এবং জাহাজ পরিচালনাসংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় বাংলাদেশের কোনো তফসিলি ব্যাংক রক্ষিত ফরেন কারেন্সি (এফসি) হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। প্রতি এক বছর অন্তর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সপক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রসিড রিয়েলাইজেশন সার্টিফিকেট (পিআরসি) বা প্রত্যয়নপত্র স্থানীয় মূল্য সংযোজন কর কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

৫. অয়েল ট্যাংকার আমদানির ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে সামুদ্রিক দূষণ রোধকল্পে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

৬. জাহাজে কর্মরত সব পর্যায়ের জনবলের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রাধান্য দিতে হবে।

৭. যাবতীয় শর্ত পালন করা হবে—এই মর্মে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করা জাহাজের ধারণক্ষমতা, তৈরির দেশ ও সাল উল্লেখ করে আমদানিকারককে এনবিআরে আবেদন করতে হবে এবং তা গৃহীত হতে হবে।

বিএসসির নিজস্ব অর্থায়নে জাহাজ ক্রয়ে চুক্তি স্বাক্ষর

বিএসসি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির মধ্যে জাহাজ সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর

বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) নিজস্ব অর্থায়নে দুটি আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহের লক্ষ্যে বিএসসি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসির মধ্যে জাহাজ সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেল আয়োজিত এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিএসসির নিজস্ব অর্থায়নে জাহাজ কেনা হচ্ছে। নিঃসন্দেহে দেশের শিপিং ইন্ডাস্ট্রিতে এটি একটি যুগান্তকারী মাইলফলক। নতুন দুই জাহাজ বিএসসিতে যুক্ত হলে বছরে ১৫০ কোটি টাকা আয় বাড়বে। বিএসসির নিজস্ব পরিবহন সক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ডিডব্লিউটি বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের সমুদ্র বাণিজ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন হবে। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ পরিবেশবান্ধব গ্রিন শিপিংয়ের সম্মান অর্জন করবে।

বিএসসির বহরে যুক্ত হতে যাওয়া জাহাজগুলোতে জ্বালানি খরচ হ্রাস ও পরিচালন দক্ষতা বেশি; প্রধান ইঞ্জিন থেকে নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, যা পরিবেশ দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়; নকশা ও প্রযুক্তিগত সমাধানগুলো জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশগত স্ট্যান্ডার্ড এবং আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার নির্ধারিত সর্বশেষ পরিবেশগত স্ট্যান্ডার্ড পূরণ করবে। জাহাজে উচ্চমানের ইউরোপীয় ও জাপানি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। জাহাজগুলো চীনে উৎপাদন করা হয়েছে। স্পেনের পাম্প ও নরওয়ের কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রথম জাহাজ অক্টোবর এবং দ্বিতীয় জাহাজ ডিসেম্বরে বিএসসিকে হস্তান্তর করা হবে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বিএসসির জন্য আরেও তিনটি জাহাজ কেনার বিষয় প্রক্রিয়াধীন। সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ে বিএসসির জন্য পাঁচটি জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নতুন এই জাহাজগুলো যুক্ত হলে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন কেবল আয়ের দিক থেকেই লাভবান হবে না, বরং আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাজারে ‘গ্রিন শিপিং নেশন’ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও মজবুত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল এক মাস পর কার্যকর হবে

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল এক মাস পর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার দুপুরে বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নৌউপদেষ্টা বলেন, ‘ট্যারিফ আরও এক মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যান (বন্দর) সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেবই আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, এটা আমরা আরও এক মাস পিছিয়ে দেব। এখন থেকে আরও এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হলো।

চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন মাশুলের প্রজ্ঞাপন জারি হয় ১৪ সেপ্টেম্বর। আর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই মাশুল কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বন্দরের সব ধরনের মাশুল আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বন্দরে বিনিয়োগ নিয়ে বলতে বলতে আমার মুখ শুকিয়ে গেছে। বিদেশি বিনিয়োগ বলতে আপনারা যা বোঝেন, এটা আসলে ভুল ধারণা (রং পারসেপশন)। বলা হচ্ছে, বন্দর দিয়ে দিলাম, আরে বন্দর কাকে দেব আমরা—অপারেটরকে? দুনিয়ায় অনেক বড় বড় অপারেটর আছে, যারা ১৩০, ১৪০, ১৮০টা বন্দর পরিচালনা করে। পিএসএ-সিঙ্গাপুর ১৮৫টা বন্দর পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বয়স ১৪০ বছর হয়ে গেছে। দুনিয়াতে অনেকে এই বন্দর চেনে না। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান না চালালে আমরা যে তিমিরে আছি, সে তিমিরেই পড়ে থাকব।

বে টার্মিনালের বিষয়ে নৌউপদেষ্টা বলেন, আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করতে পারব বলে আশা করি। কারণ, বে-টার্মিনালের জন্য বিশ্বব্যাংক টাকা দিয়েছে, তারা চায় আমরা যেন দ্রুত চুক্তিগুলো শেষ করি। আশা করি, এ বছরের মধ্যেই কাগজপত্রের কাজটা শেষ হয়ে যাবে, পরবর্তী সরকার যখন আসবে, তখন কাজটা শুরু হবে।

এর আগে বন্দর কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে ‘কাস্টমস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এ কর্মশালা আয়োজন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাট্রেজি’ প্রণয়নের কাজ করছে, যা এ বছরের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত কমিশনার নুসরাত সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।