Home Blog Page 7

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল এক মাস পর কার্যকর হবে

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুল এক মাস পর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার দুপুরে বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

নৌউপদেষ্টা বলেন, ‘ট্যারিফ আরও এক মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যান (বন্দর) সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেবই আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, এটা আমরা আরও এক মাস পিছিয়ে দেব। এখন থেকে আরও এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হলো।

চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন মাশুলের প্রজ্ঞাপন জারি হয় ১৪ সেপ্টেম্বর। আর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই মাশুল কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বন্দরের সব ধরনের মাশুল আগের তুলনায় গড়ে ৪১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বন্দরে বিনিয়োগ নিয়ে বলতে বলতে আমার মুখ শুকিয়ে গেছে। বিদেশি বিনিয়োগ বলতে আপনারা যা বোঝেন, এটা আসলে ভুল ধারণা (রং পারসেপশন)। বলা হচ্ছে, বন্দর দিয়ে দিলাম, আরে বন্দর কাকে দেব আমরা—অপারেটরকে? দুনিয়ায় অনেক বড় বড় অপারেটর আছে, যারা ১৩০, ১৪০, ১৮০টা বন্দর পরিচালনা করে। পিএসএ-সিঙ্গাপুর ১৮৫টা বন্দর পরিচালনা করছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বয়স ১৪০ বছর হয়ে গেছে। দুনিয়াতে অনেকে এই বন্দর চেনে না। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান না চালালে আমরা যে তিমিরে আছি, সে তিমিরেই পড়ে থাকব।

বে টার্মিনালের বিষয়ে নৌউপদেষ্টা বলেন, আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি করতে পারব বলে আশা করি। কারণ, বে-টার্মিনালের জন্য বিশ্বব্যাংক টাকা দিয়েছে, তারা চায় আমরা যেন দ্রুত চুক্তিগুলো শেষ করি। আশা করি, এ বছরের মধ্যেই কাগজপত্রের কাজটা শেষ হয়ে যাবে, পরবর্তী সরকার যখন আসবে, তখন কাজটা শুরু হবে।

এর আগে বন্দর কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে ‘কাস্টমস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এ কর্মশালা আয়োজন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরকার ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাট্রেজি’ প্রণয়নের কাজ করছে, যা এ বছরের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে।

অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত কমিশনার নুসরাত সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।

জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে

রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির প্রভাবে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট–বিওপি) উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ৬২৭ কোটি ডলারে, যা আগের বছর ছিল ৫২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৯.৫ শতাংশ।

এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ১৯১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হবে। তা না হলে চাপ তৈরি হতে পারে।

কুঁড়ার তেল রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক দিতে হবে ২০ শতাংশ

বাংলাদেশ থেকে রাইস ব্র্যান অয়েল বা কুঁড়ার তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে কেউ যদি কুঁড়ার তেল রপ্তানি করতে চায়, তাহলে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক দিতে হবে।

বুধবার এনবিআর কুঁড়ার তেল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

অবশ্য আগেও ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি) আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু জুলাই মাসে সেই শুল্ক আরোপের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ রাইস ব্র্যান অয়েল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়ে আসছেন।

এনবিআরের আজকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ক্ষমতাবলে কুঁড়ার তেল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ হারে রেগুলেটরি শুল্ক আরোপ করা হলো। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত—উভয় ধরনের কুঁড়ার তেল রপ্তানিতে এ শুল্ক আরোপ করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুলের প্রজ্ঞাপন জারি

বিভিন্ন সেবা খাতে গড়ে ৩০ থেকে ৪১ শতাংশ বর্ধিত মাশুলের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপন সোমবার থেকেই কার্যকর করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

প্রজ্ঞাপনে সব ধরনের কনটেইনার হ্যান্ডলিং, জাহাজের আসা-যাওয়া, জেটিতে বার্থিং, বহির্নোঙ্গরে জাহাজ অবস্থান করাসহ মোট ৫৬টি সেবা খাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৩৯ বছর পর বন্দর কর্তৃপক্ষ সেবার মাশুল বাড়ালো। ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। মাশুল বাড়ানোর পরও তা আশপাশের দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।

রিপাবলিক ক্লাব নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ

চট্টগ্রাম বন্দর রিপাবলিক ক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ১৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার)।

চট্টগ্রাম বন্দরে ডিজিটাল পেমেন্ট চালু করেছে এইচএসবিসি

দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (এইচএসবিসি) বাংলাদেশ ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি স্টেকহোল্ডারদের জন্য স্বয়ংক্রিয় ও রিয়েল টাইম পোর্ট পেমেন্ট ডিজিটাল সিস্টেম চালু করেছে।

এই উপলক্ষে এইচএসবিসি এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, শিল্পখাতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, গ্লোবাল পোর্ট অপারেটর, শিপিং ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, টেকনোলজি পার্টনার এবং এইচএসবিসির কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এইচএসবিসির নিরাপদ অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস(এপিআই) ভ্যালিডেশন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের নিরবচ্ছিন্ন আর্থিক লেনদেন সম্পাদনের লক্ষ্যে এইচএসবিসি এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই ডিজিটাল সেবার সূচনা করেছে।

এইচএসবিসির এই ক্যাশলেস ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে উপস্থিত না হয়েও ব্যবহারকারীরা তাদের নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি বিল পরিশোধ করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। যা বন্দর ব্যবহারকারীদের পেমেন্ট প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় বিষয়ে সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, আগামী ৫ বছরে আমাদের বন্দরের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ লক্ষ টিইইউ পণ্য পরিবহন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, সমুদ্র বন্দর যেন আমাদের বাণিজ্য ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পারে, সেজন্য দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রসেসিং সময় কমিয়ে, পেমেন্ট প্রক্রিয়া সহজতর করার মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে সাহায্য করছে। বিনিয়োগে আকর্ষণ বাড়ানো ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে আমাদের অবশ্যই বন্দর ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে।

এইচএসবিসি বাংলাদেশের মার্কেটস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস প্রধান বাশার এম তারেক বলেন, এই অংশীদারিত্ব এইচএসবিসি বাংলাদেশের ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সমাধান প্রদানের অংশ যা দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও কার্যকর করতে সহায়তা করবে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর মাছ রপ্তানি বাড়াবে

নির্মাণাধীন মহেশখালী-মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের উন্নত অবকাঠামো ও লজিস্টিক সুবিধা দেশের মৎস্য ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিখাতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। শিল্পসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য জানান।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগের অংশ সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণে সহায়তা দিচ্ছে জাপান। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমাতে এবং বড় জাহাজ সরাসরি পরিচলানার সুবিধা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

মৎস্য খাতে যা সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ কোল্ড চেইন রক্ষা করে দ্রুত পরিবহন এই খাতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, নতুন বন্দরটি হিমায়িত মাছ ও সামুদ্রিক খাদ্যের মত দ্রুত পচনশীল পণ্যের পরিবহণ সময় ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। ফলে সতেজতার মান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা বিশ্ব বাজারেও আমাদের পণ্য পৌঁছানো সহজ হবে।

মাতারবাড়ির জেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে আমাদের ধরা মাছ খুব কম সময়ের মধ্যে রপ্তানি হবে। এতে আমরা ন্যায্যমূল্য পাব, যা আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।

সামুদ্রিক মাছ ধরা ও এর প্রক্রিয়াজাতকরণ বৈশ্বিক বাজারে বহু বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা হলেও বাংলাদেশে এখনও তেমনভাবে বিকশিত হয়নি।

মহেশখালী-মাতারবাড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (মিডা) প্রতিষ্ঠার ফলে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে।

বিশ্বের মোট মাছের প্রায় ৭ শতাংশ আসে বঙ্গোপসাগর থেকে। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটিরও বেশি মানুষ বঙ্গোপসাগরের ‘ব্লু ইকোনমি’ এর ওপর নির্ভরশীল।

বাংলাদেশ ‘ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশন’ (আইওটিসি)’-এর সদস্য। যে কারণে যা ভারত মহাসাগরের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মাছ ধরার অনুমতি রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট দুই প্রজাতির টুনা মাছের জন্য কোটা পায়। আর অন্য দুই প্রজাতির টুনা ইচ্ছেমত ধরতে পারে। তবে প্রতি বছরই কোটা অপূর্ণ থেকে যায়।

এই সমস্যার সমাধান ও গভীর সমুদ্রে মাছ ধরাকে উৎসাহিত করতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২৮টি লংলাইনার ফিশিং ভেসেল (গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাহাজ) তৈরি বা আমদানির অনুমতি দিয়েছে।

মাতারবাড়ি বন্দর চাঁকড়িয়া চিংড়ি শিল্পের মত বিদ্যমান ও নতুন উদ্যোক্তাদের ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মত দেশে দ্রুত পণ্য পাঠাতে সহায়তা করবে।

মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর রপ্তানি প্রক্রিয়ার সময় ও ব্যয় কমাবে। ফিলে, স্মোকড মাছ, রেডি-টু-ইট সামুদ্রিক খাদ্য ইত্যাদির মত মান সংযোজিত পণ্যের রফতানির পথ প্রশস্ত করবে।

উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যালপ (এক প্রজাতির শামুক) প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রফতানি থেকে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি মিডা’র শক্তিশালী লজিস্টিক সুবিধা দেশে নতুন বিনিয়োগের ঢেউ আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে

বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে। অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। উৎপাদন ও মোড়কীকরণে চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন ২০২৫’ শীর্ষক দুই দিনের এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ঢাকার চীনা দূতাবাস এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সবুর হোসেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ, বাংলাদেশে চীনা এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশনের (সিইএবি) সভাপতি হান কুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এবারের প্রদর্শনীতে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের ৮০টি বুথ রয়েছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চীনের ৩২টি। প্রদর্শনীতে অবকাঠামো, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবহন, লজিস্টিকস ও উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য ও সেবা উপস্থাপন করছে। পাশাপাশি থাকছে উচ্চপর্যায়ের সরকারি ও ব্যবসায়ী পর্যায়ের বৈঠক। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে চীন ও বাংলাদেশের যৌথ সক্ষমতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও আইডিয়া শেয়ার করার প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে এই প্রদর্শনী। এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

চীন ও জাপানের তুলনায় বাংলাদেশের অগ্রগতি-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তৈরি পোশাকসহ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশ। তবে সামগ্রিকভাবে আমরা পিছিয়ে রয়েছি।’

সড়ক অবকাঠামো ও পরিবহন সক্ষমতা বাড়াতে চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন উল্লেখ করে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানুষ মারা যায়, সেটি ভয়াবহ। এ ক্ষেত্রে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও পরিবহনব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। আমাদের অন্যতম উন্নয়ন-সহযোগী চীনের কাছে এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করেছি।

রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেবে এনবিআর

আবদুর রহমান খান

বন্ড লাইসেন্সবিহীন রপ্তানিকারকদের জন্য শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার এনবিআর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু করেছি।

মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের সমস্যা সম্পর্কে মতামত জানার জন্য ‘মিট দ্য বিজনেস’ শীর্ষক সভাটি প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি মাসের দ্বিতীয় বুধবার এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যেসব রপ্তানিকারকদের বন্ড লাইসেন্স নেই তারাও এখন থেকে শুল্ক ছাড়াই কাঁচামাল আমদানি করতে পারবেন। তবে, এজন্য তাদের ব্যাংক থেকে একটি গ্যারান্টি নিতে হবে যে, আমদানি করা এসব কাঁচামাল পরবর্তীতে রপ্তানি করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যাবে না কিংবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন, এ নীতিমালা ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের আইন বিভাগে পাঠানো হয়েছে এবং আশা করছি আগামী সপ্তাহেই এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।

বর্তমান বন্ড ব্যবস্থায় রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানগুলো শুল্কমুক্ত কাঁচামাল ও উপকরণ আমদানি করতে পারে। এসব কাঁচামাল বন্ডেড গুদামে সংরক্ষণ করা হয় এবং রপ্তানির জন্য প্রস্তুত পণ্যে ব্যবহার করা হয়। তবে, কোনো বন্ডধারী প্রতিষ্ঠান এসব আমদানিকৃত কাঁচামাল রপ্তানি না করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করলে তখন তাদের বিপুল পরিমাণ আমদানি শুল্ক পরিশোধ করতে হয়।

আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আগামী বছর থেকেই কর্পোরেট করদাতাদের কর পরিশোধ ব্যবস্থা অনলাইনে চলে যাবে। একই সঙ্গে বন্ড নিরীক্ষা কার্যক্রমও শুরু করা হবে এবং এ লক্ষ্যে এনবিআর নিরলসভাবে কাজ করছে।’

দেশে অতিরিক্ত কর অব্যাহতির সংস্কৃতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, নীতিগতভাবে জরুরি না হলে ভবিষ্যতে কোনো কর অব্যাহতি দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, এনবিআরের কর অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে, এখন কেবল সংসদই যেকোনো কর অব্যাহতি অনুমোদন করতে পারবে।

হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণে নৌবাহিনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর

লালদিয়া–২ এলাকায় বিশেষায়িত হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণের কাজ বাস্তবায়নে নৌবাহিনীর সাথে চুক্তি

দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহনে গতি আনতে এবং বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বুধবার একটি সমঝোতা স্মারক ও একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পৃথক দুই অনুষ্ঠানে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একক পরিচালনায় বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে ও লালদিয়া–২ অঞ্চলে বিশেষায়িত হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণের কাজ বাস্তবায়নে নৌবাহিনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে যৌথভাবে পরিচালনাধীন পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ও এর ৪৮.২৪ একর জায়গা প্রচলিত পদ্ধতিতে লিজ নিয়ে পুরোপুরি এককভাবে পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর ২০৩৫ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ১০ বছরের জন্য বন্দরকে লাইসেন্স প্রদান করা হবে, যা বার্ষিক নবায়নের ভিত্তিতে চলবে। তবে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী মোট ৩০ বছর কার্যকর থাকবে চুক্তির মেয়াদ। এ সময়কালে বন্দর কর্তৃপক্ষ পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এককভাবে পরিচালনা করবে।

পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একক পরিচালনায় বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে সমঝোতা স্মারক

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ মালামাল বর্তমানে সড়ক পথে পরিবাহিত হয়, ফলে সড়কের উপর অতিরিক্ত চাপ এবং পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। পানগাঁও আইসিটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় এককভাবে চালনার মাধ্যমে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী নদীপথ পরিবহন জনপ্রিয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এখানে একটি ফ্রি কটন জোন গড়ে তোলা হবে, যা ব্যবসা–বাণিজ্যের সমপ্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

পৃথক অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পটি “অর্পিত ক্রয়কার্য হিসেবে” বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। জেটিটি লালদিয়া-২ অঞ্চলে নির্মিত হবে এবং এর দৈর্ঘ্য হবে ২৪০ মিটার।

চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন ভারী শিল্পজাত কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিশেষায়িত কোনো জেটি ছিল না। এনসিটি বার্থ নং–৫ সাময়িকভাবে ব্যবহার করা হলেও সেটি মূলত কনটেই্নার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্মিত হয়েছিল। নতুন জেটিটি প্রতি বর্গমিটারে ৫ টন ভার বহন করতে সক্ষম হবে, যেখানে এনসিটি বার্থ নং–৫ এ এই সক্ষমতা ছিল মাত্র ৩ টন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দর ব্যবহারকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে এবং শিল্পোন্নয়নেও গতি আসবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠিত দুটি অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পক্ষে রিয়ার এডমিরাল (অব.) আনোয়ার হোসেন, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশীদসহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক, উপ–প্রকল্প পরিচালক ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।