বাংলাদেশ-ভারত নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন জাতীয় আয় বাড়াবে ১৭%: বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের ও ভারতের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে পারলে বাংলাদেশের জাতীয় আয় ১৭ শতাংশ বেড়ে যাবে। আর ভারতের জাতীয় আয় বাড়বে ৮ শতাংশ। এ জন্য সড়ক, নৌ ও রেলপথের উন্নয়ন করতে হবে। এমনকি পণ্যের চালান যাতে সহজেই সীমান্ত পার হতে পারে, সেই ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

৯ মার্চ বিশ্বব্যাংক ‘সমৃদ্ধির জন্য আন্তঃযোগাযোগ: দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলের সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা চালুর চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। তবে এই জাতীয় আয় বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত আয় বৃদ্ধি নয়। দেশের অভ্যন্তর এবং বিদেশ থেকে একটি দেশ যে আয় করে, এর মোট হিসাব।

প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে ভারত ও বাংলাদেশে একযোগে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিশ্ব ব্যাংক। সেখানে প্রতিবেদনের নানা দিক তুলে ধরেন বিশ^ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ মাটিয়াস হেরেরা ডাপ্পি ও বেসরকারি খাত বিশেষজ্ঞ চার্লস কুনাকা। নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন ব্যবস্থা চালু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারতের একটি কোম্পানি বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করলে যত খরচ হয়, তার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ খরচ কম হয় যদি ওই কোম্পানি ব্রাজিল বা জার্মানির একটি কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা করে। উচ্চ কর, প্যারা ট্যারিফ, অশুল্ক বাধাসহ বিভিন্ন কারণে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের শুল্ক-কর হার বিশ্ব শুল্ক-করের গড় হারের দ্বিগুণ।

ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে মোটর ভেহিকলস এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) চুক্তি পর্যালোচনা করা হয়। এই চুক্তির বাস্তবায়ন শক্তিশালী করতে চারটি সুপারিশ করা হয়। যেমন চালকদের লাইসেন্স ও ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা; একটি আঞ্চলিক পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা; বাণিজ্য ও পরিবহন-সংক্রান্ত কাগজপত্র ডিজিটাল করা এবং বাণিজ্যপথ নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ করা।

সেমিনারে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, ‘অবকাঠামো ঘাটতির কারণে এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত সেবার ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এতে পিছিয়ে পড়া মানুষ নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে পারছে না।’

বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ হলো ভারত, নেপাল, ভুটান ও অন্য পূর্ব এশীয় দেশগুলোর গেটওয়ে। আঞ্চলিক বাণিজ্য, ট্রানজিটসহ অন্যান্য বাণিজ্যসহায়ক কাঠামো উন্নত করে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হতে পারে।

একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ভারতে বিশ^ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জুনায়েদ আহমেদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here