বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের মহীসোপানের দাবির বিষয়ে জাতিসংঘে আপত্তি তুলেছে ভারত। সমুদ্রপৃষ্ঠের যে বেসলাইনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মহীসোপান নির্ধারণ করেছে, তা ভারতের মহীসোপানের একটি অংশ। তাই ভারত জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণবিষয়ক কমিশনে বাংলাদেশের দাবি বিবেচনায় না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। ১৭ এপ্রিল জাতিসংঘের মহীসোপান নির্ধারণ-সংক্রান্ত কমিশনে (সিএলসিএস) ভারত এই আপত্তি জানায়।
ভারতের আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দাবির বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে মিয়ানমার। কিন্তু ভারতের মতো বাংলাদেশের দাবির প্রতি আপত্তি জানায়নি দেশটি। বাংলাদেশ আইনগতভাবে মহীসোপানের যতটা প্রাপ্য, তা থেকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করছে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দুই নিকট প্রতিবেশীর বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশের মহীসোপানের বিষয়টির এখনো সুরাহা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে জাতিসংঘের কাছে মহীসোপানের দাবির বিষয়ে বাংলাদেশ আবেদন জানায়। গত বছরের অক্টোবরে ওই দাবির বিষয়ে সংশোধনী জমা দেয় বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের সিএলসিএস ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভারতের আপত্তিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভূখ-ের যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে মহীসোপান নির্ধারণ করেছে, সেটির মাধ্যমে ভারতের মহীসোপানের একটি অংশ দাবি করছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে যে ‘গ্রে এরিয়া’ রয়েছে, সেটির বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো তথ্য দেয়নি। ‘গ্রে এরিয়া’ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে একটি ছোট্ট অংশ, যেখানে পানির মধ্যে যে সম্পদ রয়েছে, যেমন মাছ, সেটির মালিক ভারত; কিন্তু মাটির নিচে যে খনিজ সম্পদ আছে, সেটির মালিক বাংলাদেশ। এই অংশের পরিমাণ প্রায় ৯০০ বর্গকিলোমিটার।
বাংলাদেশের মহীসোপানের বিষয়ে ভারতের আপত্তির বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার এডমিরাল মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘ভারতের যুক্তিগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিশনে নিজেদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যে বেসলাইনের ভিত্তিতে মহীসোপানের দাবি করেছে, সেটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে আপত্তি জানিয়েছিল। বাংলাদেশের ওই দাবি এখনো বলবৎ আছে।’