কপ২৬ সম্মেলনে সামুদ্রিক জলবায়ুর সুরক্ষার পালে হাওয়া

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে সম্প্রতি হয়ে গেল জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্মেলন (কপ২৬)। সম্মেলন শেষের চুক্তিতে সামুদ্রিক জলবায়ুকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। সামুদ্রিক পরিবেশবাদীরা বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন এবং একে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা একই সঙ্গে সতর্ক করে বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে এখনই পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এই অগ্রগতি কোনো কাজেই আসবে না।

কপ২৬ সম্মেলন শেষে গ্লাসগো ক্লাইমেট প্যাক্ট গ্রহণ করা হয়, যেখানে ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (ইউএনএফসিসিসি) অধীনে সাগরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে সামুদ্রিক জলবায়ুও এই ফ্রেমওয়ার্কের জন্য বিবেচিত হবে। এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে জাতিসংঘের সব কর্মীবাহিনী ও অংশীজন সংস্থাকে সামুদ্রিক জলবায়ুর সমন্বিত ও টেকসই সুরক্ষায় অবদান রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

গ্লাসগো ক্লাইমেট প্যাক্টের প্রারম্ভিকে বলা হয়েছে, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাস্তুসংস্থানের সব অনুষঙ্গ যেমন বনভূমি, সমুদ্র, বরফমণ্ডল ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয় এবং জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’ চুক্তিতে সাগরকেন্দ্রিক পদক্ষেপকে আরও জোরালো করার জন্য বার্ষিক সংলাপ আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে প্রতি বছরের মে/জুন মাসে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। এই সংলাপের ফলাফল বছর শেষের জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে।

এবারের জলবায়ু সম্মেলনে ‘বিকজ দ্য ওশান’ ডিক্লারেশনের তৃতীয় কিস্তিতে ২০টি দেশ স্বাক্ষর করেছে। এই ডিক্লারেশনের মূল প্রতিপাদ্য হলো প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে সাগর, জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের মধ্যে সংযোগ আরও সমুন্নত করা।

সম্মেলনে জানানো হয়েছে, সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষায় গ্লোবাল ফান্ডস ফর কোরাল রিফসের জন্য ১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়ান ওশানের দেশগুলো সামুদ্রিক ও উপকূলীয় জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় গ্রেট ব্লু ওয়াল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সামুদ্রিক জলবায়ুর সুরক্ষায় ২০২২ সালে সার্বভৌম বন্ড ইস্যুর ঘোষণা দিয়েছে ফিজি। এমন আরও কিছু উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো।

তবে সমুদ্র সরক্ষার আন্দোলনকারীদের অনেকে বলছেন, বনভূমি সংরক্ষণে যে পরিমাণ তহবিল বরাদ্দ করা হচ্ছে, সে তুলনায় সমুদ্র তহবিলের আকার অনেকটাই কম। তারা সামুদ্রিক জলবায়ুর সুরক্ষায় আরও বেশি আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন। পাশাপাশি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here