
ছয়টি খাতের ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে পরিবেশবান্ধব কারখানা পুরস্কার বা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ প্রদান করেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চ্যুয়াল যোগ দেন।
শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থা সচল রাখার পাশাপাশি রপ্তানির গতি বৃদ্ধিতে মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মালিক-শ্রমিকসহ সকলকে আমি সব সময় একটা অনুরোধই করব, মালিক-শ্রমিকের একটা সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, মালিকদের সব সময় মনে রাখতে হবে, ‘এই শ্রমিকেরা শ্রম দিয়েই তাঁদের কারখানা চালু রাখেন এবং অর্থ উপার্জনের পথ করে দেন। সেই সঙ্গে শ্রমিকদের এই কথাটা মনে রাখতে হবে যে কারখানা আছে বলেই তাঁরা কাজ করে খেতে পারছেন, তাঁদের পরিবার প্রতিপালন বা নিজেরা আর্থিকভাবে উপার্জন করতে পারছেন। কাজেই কারখানা যদি না চলে তাহলে নিজেদেরই ক্ষতি হবে।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে, সেই কারখানার প্রতি আপনাদের যত্নবান হতে হবে। অনেক সময় আমরা দেখি বাইরে থেকে কিছু কিছু শ্রমিকনেতা বা কোনো কোনো মহল উসকানি দেয় এবং একটা অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে শিল্পকলকারখানা, উৎপাদন ও রপ্তানি যদি সঠিকভাবে চালাতে হয়, তাহলে কিন্তু কারখানাগুলো যাতে যথাযথভাবে চলে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। সেখানে যদি অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে রপ্তানি যেমন বন্ধ হবে, সেখানে কর্মপরিস্থিতি থাকবে না। নিজেরাও কাজ হারাবেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের রেমি হোল্ডিংস, তারাসিমা অ্যাপারেলস, প্লামি ফ্যাশনস, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও, এ আর জিনস প্রোডিউসার, করণী নিট কম্পোজিট, ডিজাইনার ফ্যাশন লিমিটেড, ক্যানপার্ক বাংলাদেশ অ্যাপারেল (ক্যানপার্ক ইউনিট-২), গ্রিন টেক্সটাইল (ইউনিট-৩), ফোর এইচ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, উইসডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড, মাহমুদা অ্যাটায়ার্স, স্নোটেক্স আউটারওয়্যার এবং অকো-টেক্স। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতের হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস পুরস্কার পেয়েছে।
এ ছাড়া চা–শিল্পের গাজীপুর চা–বাগান, লস্করপুর চা–বাগান, জাগছড়া চা–কারখানা এবং নেপচুন চা–বাগান পুরস্কার পেয়েছে। চামড়াজাত পণ্য খাতের অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ও এডিসন ফুটওয়্যার, প্লাস্টিক খাতের বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস, অলপ্লাষ্ট বাংলাদেশ ও ডিউরেবল প্লাস্টিক এবং ওষুধ খাতের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস পরিবেশবান্ধব কারখানার পুরস্কার পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান পুরস্কার বিজয়ী ৩০ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হাতে ক্রেস্ট, মেডেল, সার্টিফিকেট ও ১ লাখ টাকার চেক তুলে দেন।