দেশের সমুদ্র বাণিজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের সাথে ইউরোপের কনটেইনার জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। এতদিন চট্টগ্রাম থেকে ইউরোপে পণ্য যেতে ২৬ থেকে ২৭ দিন লেগে যেত। এখন চট্টগ্রাম থেকে ১৬ দিনে পণ্য পৌঁছাবে ইউরোপে। অর্থাৎ সাশ্রয় হবে ১০ থেকে ১১ দিন। ইতোমধ্যে ইউরোপ থেকে পাঠানো প্রায় এক হাজার টিইইউ খালি কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নামানো হয়েছে। এগুলোতে ইউরোপমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের পণ্য বোঝাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসের শেষের দিকে চট্টগ্রাম-ইতালি রুট পুরোপুরি গতিশীল হবে।
চট্টগ্রাম থেকে পণ্য বোঝাই কনটেইনার জাহাজ সিঙ্গাপুর, কলম্বো, মালয়েশিয়ার পোর্ট ক্ল্যাং ও তানজুম বন্দর হয়ে চলাচল করে। আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই কনটেইনার এসব ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে আসার পর ফিডার জাহাজে বোঝাই করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। একইভাবে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কনটেইনার ফিডার জাহাজের মাধ্যমে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে পাঠানো হয়। তারপর বড় জাহাজে করে ক্রেতাদের দেশে পাঠানো হয়। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে অনেক সময় লাগছে। কোন কারণে সময়মতো ফিডার ভেসেল চলাচল না করলে বড় জাহাজে পণ্য ওঠানো সম্ভব হতো না।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি কমিয়ে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহনে পোশাক শিল্পের বিদেশি ক্রেতারা চট্টগ্রামের সাথে ইউরোপের জাহাজ চলাচল শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম-ইতালি রুট চালু করা হয়েছে। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠান আরআইএফ লাইন ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান ক্যালিপসো কোম্পানিয়া ডি নেভিগেশন চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে জাহাজ চলাচল চালু করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনার নিয়ে সরাসরি ইতালির সমুদ্রবন্দর সিভিটাভিসিয়ায় চলাচল করবে। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে জাহাজ ইউরোপের অন্যান্য বন্দরেও চলাচল করবে প্রাথমিকভাবে দুইটি কনটেইনার জাহাজ দিয়ে রুটটি চালু করা হচ্ছে।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, রপ্তানি পণ্যের ৬০ শতাংশ ইউরোপের দেশগুলোতে যায়। এখন ইউরোপে কম সময়ে বিদেশি ক্রেতাদের হাতে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে। ক্রেতারা দ্রুত পণ্য নিতে চায়। এ উদ্যোগ সফল হলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমাদের তৈরি পোশাক খাত বেশ সুফল পাবে।