মোট সংখ্যার (কম্পেনসেটেড গ্রস টন বা সিজিটি) ভিত্তিতে জাহাজ নির্মাণের বার্ষিক কার্যাদেশে দক্ষিণ কোরিয়াকে ছাড়িয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে চীন। লন্ডনভিত্তিক শিপিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্লার্কসন্সের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে চীন মোট ২ কোটি ২৮ লাখ সিজিটি জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছে, যা আলোচ্য সময়ে মোট বৈশ্বিক কার্যাদেশের (৪ কোটি ৫৭ লাখ সিজিটি) প্রায় ৫০ শতাংশ। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়া কার্যাদেশ পেয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ সিজিটির, যা বৈশ্বিক কার্যাদেশের প্রায় ৩৮ শতাংশ।
২০২১ সালে কনটেইনারবাহী জাহাজ নির্মাণে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল চীনের। ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বেড়ে যাওয়া এক্ষেত্রে তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অন্যদিকে বেশি মুনাফার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া, বিশেষ করে দেশটির শীর্ষ তিন জাহাজনির্মাতা কোম্পানি গত বছর এলএনজি ক্যারিয়ার নির্মাণের দিকে বেশি নজর দিয়েছে। ফলে এই সেগমেন্টে দেশটির আধিপত্যও ছিল চীনের চেয়ে বেশি। গত বছর মোট ৩৭টি এলএনজি ক্যারিয়ার নির্মাণের কার্যাদেশ পেয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, যার মধ্যে ১৬টি ছিল কাতার এনার্জির। ১৫টি কার্যাদেশ ছিল মালয়েশীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানি পেট্রোনাসের।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২১ সালে দক্ষিণ কোরিয়া জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ কিছুটা কম পেয়েছে কারণ তারা মোট সংখ্যার চেয়ে মুনাফা সক্ষমতা বেশি থাকার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছে। তারা নির্দিষ্ট কিছু সেগমেন্টে উচ্চ মূল্য সংযোজনের প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে বেশি আগ্রহী ছিল। এ কারণে কার্যাদেশের সংখ্যা কম থাকলেও দেশটির শীর্ষ তিন জাহাজনির্মাতার মোট বিক্রির আর্থিক পরিমাণ পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর তারা মোট ৪ হাজার ৬০০ কোটি ডলার আয় করেছে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
দক্ষিণ কোরিয়ায় জাহাজ নির্মাণের কার্যাদেশ চলতি বছরও কিছুটা কম থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির বৃহত্তম জাহাজনির্মাতা হুন্দাই হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড ২০২২ সালে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার, যা গত বছর কোম্পানিটির বিক্রির চেয়ে প্রায় ৫৪০ কোটি ডলার কম।