সাপ্লাই চেইনের গতিশীলতায় অবদান রাখবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

গত দুই বছরে অনাকাঙ্ক্ষিত বেশ কিছু ঘটনার কারণে টালমাটাল হয়ে পড়েছে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন। ব্রেক্সিট, নভেল করোনাভাইরাস, কনটেইনার সংকট, জাহাজজট, সাম্প্রতিকতম রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা ইত্যাদি ঘটনার জেরে পণ্য সরবরাহে বিলম্ব দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্টার্টআপ ও প্রতিষ্ঠিত লজিস্টিকস কোম্পানি সমুদ্র পরিবহন খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটাচ্ছে, যেন সাপ্লাই চেইনের স্থবিরতা কেটে যায়।

এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছে ইন্টারোস ইনকরপোরেশন, ফেরো ল্যাবস, ক্লিয়ারনাউ করপোরেশন ইত্যাদি। তারা এমন কিছু সলিউশন হাজির করেছে, যেগুলোর মাধ্যমে সরবরাহকারীরা বিভিন্ন সংকটের সময় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, উৎপাদকরা কাঁচামালের প্রাপ্যতা মনিটর করতে পারে এবং ব্যবসায়ীরা আন্তঃসীমান্তীয় বাণিজ্যে বিভিন্ন দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতাগুলো সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী পাঁচ বছরে সাপ্লাই চেইন কেন্দ্রিক নতুন প্রযুক্তির বাজার ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর ২০২৫ সাল নাগাদ যত নতুন সাপ্লাই চেইন অ্যাপ্লিকেশন দেখা যাবে, তার ৮০ শতাংশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ থাকবে বলে ধারণা করছেন তারা।

শতকোটি ডলারের বেশি বাজারমূল্যের ইন্টারোস সম্ভাবনাময় এই বাজারে অন্যতম সফল একটি স্টার্টআপ। ভার্জিনিয়াভিত্তিক কোম্পানিটি জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৪০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য ব্যবহার হচ্ছে মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, হ্যাকিং বা অন্য কোনো ঘটনার কারণে তাদের কার্যক্রম বিঘ্নিত হলে করপোরেট গ্রাহকরা সেই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে খবর পেয়ে যাচ্ছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর প্রাক্কালেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এর সম্ভাব্য প্রভাব পর্যালোচনা করেছিল ইন্টারোস। সে সময় তারা জানিয়েছিল, ইউক্রেনীয় কোম্পানির সঙ্গে প্রত্যক্ষ সরবরাহ সম্পর্ক রয়েছে প্রায় ৫০০ মার্কিন প্রতিষ্ঠানের। পরবর্তীতে ইন্টারোস জানায়, প্রায় ২০ হাজার মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সেকেন্ড টিয়ার ও প্রায় ১ লাখ মার্কিন প্রতিষ্ঠানের থার্ড টিয়ার ইউক্রেনীয় সাপ্লায়ারের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন আরও অনেক ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সাপ্লাই চেইনের সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা লাভ করা যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী অগ্রীম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারলে যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। এক্ষেত্রে স্টার্টআপগুলো যেসব প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে আসছে, সাপ্লাই চেইনকে গতিশীল রাখতে সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here