রপ্তানির তুলনায় আমদানি বৃদ্ধি, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রথম ৯ মাসে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে।
২০২০-২১ অর্থবছরের এই ৯ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫২৮ কোটি ডলার। আর পুরো অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার।
অর্থনীতিবিদেরা বলেন, পণ্য আমদানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি অনেকটা বেড়ে গেছে। তবে দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তা না হলে সংকটে পড়বে অর্থনীতি।
করোনা মহামারি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই আমদানিতে জোয়ার বইছে। আর এতে আমদানি-রপ্তানির মধ্যে ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার (৮ মে) বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই ৯ মাসে ৪ হাজার ২৭৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩ হাজার ৬৬১ কোটি ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকেরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি। এই হিসাবে অর্থবছরের ৯ মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার।
করোনার পর দেশে সব ধরনের পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। সর্বশেষ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় আরও চড়ছে দাম।
গত বছরের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৬০ ডলার। রোববার (৮ মে) সেই তেল ১১২ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে এর দর ১৩৯ ডলারে উঠে গিয়েছিল। এতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।