সাগরের প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে হাইড্রোজেন তৈরি করবে জাহাজ

এইচটু-ইন্ডাস্ট্রিজের কনসেপ্ট

বিশ্বের সাগর-মহাসাগরে প্লাস্টিক দূষণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন এই সমস্যা দূরীকরণে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়ে আসছে। বিভিন্ন লাভজনক/অলাভজনক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে উদ্যোগী হয়েছে। এই বিষয়ে নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে তারা।

এমনই একটি প্রতিষ্ঠান এইচটু-ইন্ডাস্ট্রিজ। এই স্টার্টআপ কোম্পানিটি হাইড্রোজেন প্রযুক্তির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি এক ঘোষণায় প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নেভাল আর্কিটেকচার কোম্পানি টেকনোলগ সার্ভিসেসের সঙ্গে মিলে তারা নতুন এমন এক জাহাজের কনসেপ্ট তৈরি করেছে, যেটি সাগর থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে সেগুলোকে হাইড্রোজেনে রূপান্তর করতে পারবে।

এইচটু-ইন্ডাস্ট্রিজ এখন জাহাজটির নকশা প্রণয়নের কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে, এই জাহাজের দৈর্ঘ্য ৪৯০ ফুটের বেশি হবে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে দৈর্ঘ্য জানা যাবে নকশা প্রস্তুত হওয়ার পর। এটি নির্ভর করছে জাহাজের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি কত হবে, তার ওপর।

প্রাথমিক ধারণাপত্র অনুযায়ী, জাহাজটি ঘণ্টায় ৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলবে। দুটি ছোট আকৃতির টাগবোট প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের কাজ করবে। তারা ২ মাইল দীর্ঘ একটি জাল টেনে নিয়ে যাবে, যেটি সমুদ্রপৃষ্ঠের পাশাপাশি পানির ৩০ ফুট পর্যন্ত গভীর থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এই প্লাস্টিক একটি কনভেয়রের মাধ্যমে বড় জাহাজের স্টোরেজে গিয়ে জমা হবে। সেই বর্জ্য পরে থার্মোলাইসিসি পদ্ধতিতে হাইড্রোজেনে রূপান্তর করা হবে। এইচটু-ইন্ডাস্ট্রিজ এরই মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে হাইড্রোজেন উৎপাদনের এই প্রক্রিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।

কোম্পানিটির হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ৬০০ কিলোগ্রাম বর্জ্য থেকে আনুমানিক ১০০ কিলোগ্রাম হাইড্রোজেন প্রস্তুত করা যাবে। এই হাইড্রোজেন লিকুইড অর্গানিক হাইড্রোজেন ক্যারিয়ারে (এলওএইচসি) সংরক্ষণ করা হবে। এলওএইচসি হলো এক ধরনের ফ্লুইড, যা হাইড্রোজেন ধারণ করতে পারে। ২০-ফুট কনটেইনারে করে তা পরিবহন করা যায়। এই কনটেইনারগুলো পরে ছোট জাহাজে করে তীরে পাঠানো হবে।

এইচটু-ইন্ডাস্ট্রিজের জাহাজটি চলবে বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে, যেটি হাইড্রোজেন-চার্জড ফ্লুইড ব্যবহার করবে। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে যে এলওএইচসি তৈরি হবে, সেগুলোই জাহাজের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, পর্যাপ্ত বিনিয়োগ পেলে দুই বছরের মধ্যেই জাহাজটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here