অর্থনৈতিক পটপরিবর্তন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের অনন্য নজির স্থাপনকারী সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) সর্বোতভাবে একটি মেরিটাইম নেশন বা উপকূলীয় দেশ বলা চলে। কেবল যে ৮ শতাধিক কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় তটরেখা ও অসংখ্য দ্বীপের জন্যই এই দাবি করা যায়, তা নয়। বরং আরব সাগর ও পারস্য সাগরের কোলে অবস্থিত ৮৩ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটারের দেশটির রয়েছে সমুদ্রকেন্দ্রিক জীবনযাত্রার বর্ণাঢ্য ইতিহাস।
সেই আদিকাল থেকেই সমুদ্রযাত্রা, কাঠের জাহাজ নির্মাণ, মুক্তা ও মৎস্য আহরণ, সমুদ্র বাণিজ্য ইত্যাদি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত দেশটির অধিবাসীরা। বলা যায় আমিরাতের কালানুক্রমিক গৌরবোজ্জ্বল যাত্রায় বড় অবদান রয়েছে সমুদ্রের। এ কারণেই দুবাইয়ের ভূবনবিখ্যাত স্থাপনা বুর্জ আল আরবের বাহ্যিক নকশায় ফুটে উঠেছে জাহাজের ত্রিকোনাকার পালের অবয়ব।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা এখন পর্যন্ত আমিরাতের ভূমিতে সবচেয়ে প্রাচীন যে মানববসতির সন্ধান পেয়েছেন, সেখানেও স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে যে স্থানীয় অধিবাসীরা তাদের জীবিকার জন্য সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ইউএইর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক যেসব প্রত্নসম্পদ পাওয়া গেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-মুক্তা, ঝিনুকের মালা, মাছের মোটিফ ও জাহাজের অবয়বখচিত মাটির পাত্র ইত্যাদি। এছাড়া বাঁকানো বড়শি, মাছ ধরার জালকে পানির নিচে ডুবিয়ে রাখার কাজে ব্যবহৃত পাথর, মাছের কাঁটা ও কচ্ছপের খোলস ইত্যাদির মাধ্যমে আমিরাতের অধিবাসীদের মৎস্যজীবিতার পরিচয় পাওয়া যায়।
প্রত্নতাত্ত্বিক বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে এটা অবিসংবাদিতভাবে প্রমাণিত যে, প্রাচীন সভ্যতাগুলোর সঙ্গে আমিরাতের বণিকদের প্রত্যক্ষ বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল। আমিরাতি নাবিকরা ছিলেন দক্ষ। পর্তুগিজদের আবির্ভাবের বেশ আগে থেকেই ভারত মহাসাগর দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তারা। বিশাল এই জলরাশি সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের গভীরতা ছিল অনেক বেশি, যা পরবর্তীতে অন্যদের জন্য সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
সাগরের প্রতি আমিরাতিদের রয়েছে প্রবল শ্রদ্ধা ও গভীর ভালোবাসা। তাদের এই সমুদ্র ঐতিহ্যের গল্পগাথা সম্পর্কে জানার আগ্রহ রয়েছে অনেকেরই। ওয়েভস অব টাইম বইটি সেই আকাক্সক্ষা অনেকটাই পূরণ করবে। তথ্যবহুল বইটিতে লেখক অত্যন্ত সাবলীলভাবে ইউএইর সমুদ্র ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ট্রাইডেন্ট প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত ১৯০ পৃষ্ঠার শক্ত মলাটের বইটির মূল্য ১৫৪ ডলার।
আইএসবিএন-১০: ১৯০০৭২৪২০০ আই
এসবিএন-১৩: ৯৭৮-১৯০০৭২৪২০৩