কার্বন নিরপেক্ষতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে ক্রুজিং খাত

২০৫০ সাল নাগাদ কার্বনমুক্ত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বৈশ্বিক প্রমোদতরী খাতের। আর সমুদ্র শিল্পে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের জন্য সুবজ জ্বালানি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। তবে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থা উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে আরও কিছু সময় লেগে যাবে। এ নিয়ে আরও গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি রয়েছে। তবে বৈশ্বিক প্রমোদতরী শিল্প সেই অপেক্ষায় বসে থাকতে রাজি নয়। ২০৫০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তারা এরই মধ্যে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং সামনের বছরগুলোতেও এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। খাতসংশ্লিষ্ট ট্রেড গ্রুপ ক্রুজ লাইনস ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের (সিএলআইএ) সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে এই কথা বলা হয়েছে।

‘২০২২ গ্লোবাল ক্রুজ ইন্ডাস্ট্রি এনভায়রনমেন্টাল টেকনোলজিস অ্যান্ড প্র্যাকটিসেস রিপোর্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক বছরে বৈশ্বিক বহরে বেশ কিছু প্রমোদতরী যুক্ত হবে, যেগুলো জিরো-এমিশন প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহার করবে। এছাড়া প্রমোদতরীগুলো যেন নোঙর করা অবস্থায় শোরসাইড ইলেকট্রিসিটি ব্যবহার করতে পারে, সেই লক্ষ্যে বিনিয়োগও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শিল্পায়ন, নগরায়ন ও বাণিজ্যের বিশ্বায়ন একদিকে যেমন আমাদের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে, অন্যদিকে তেমনি উষ্ণায়ন নামের এক আপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। এই উষ্ণায়ন প্রতিরোধে সব ক্ষেত্রেই এখন কার্বন নিঃসরণ কমানোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কার্বনমুক্ত হওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সংকল্প গ্রহণ করেছে বিভিন্ন শিল্পখাত। ক্রুজ ইন্ডাস্ট্রিও এই বৈশ্বিক উদ্যোগে শামিল হয়েছে।

সিএলআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে যেসব প্রমোদতরী বৈশ্বিক বহরে যুক্ত হবে, তার ১৫ শতাংশের বেশি জাহাজে এমন ব্যবস্থা যুক্ত হবে যেগুলোয় ফুয়েল সেল বা ব্যাটারি থেকে শক্তি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এছাড়া এখন থেকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত যেসব প্রমোদতরী সিএলআইএর সদস্য হিসেবে যুক্ত হবে, তার প্রায় ৮৫ শতাংশ জাহাজ শোরসাইড ইলেকট্রিসিটি গ্রহন করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে বার্থিংয়ে থাকা অবস্থায় জাহাজগুলো থেকে নিঃসরণ অনেকটা কমে যাবে।

সিএলআইএ জানিয়েছে, কার্বনমুক্ত ক্রুজিং শিল্প গড়ে তোলার প্রচেষ্টার কেন্দ্রে রয়েছে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি। পরিবেশবান্ধব মেরিন ফুয়েলের উন্নয়ন ও প্রচলনের জন্য নতুন নতুন প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাতে হবে। আশার কথা হলো, এই কাজে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ আসছে। ক্রুজিং শিল্পকে কার্বনমুক্ত করা সম্ভব হলে তা সামগ্রিকভাবে পুরো সমুদ্র শিল্পের কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের প্রচেষ্টাকে গতিশীল করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here