নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বে টার্মিনালের কার্যক্রম ২০২৫ সালের শেষদিকে বা ২০২৬ সালের শুরুতে চালু করতে পারবো। মাস্টারপ্ল্যান ও ডিটেইল ডিজাইনের কাজ শেষ। এখন ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। ডিপিপি প্রণয়ণের কাজ শেষ হলেই দ্রুত এর কাজ শুরু হবে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দরের সিসিটি জেটিতে প্রথমবারের মতো ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ বার্থিংয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের নবনির্মিত ভান্ডার ভবনের উদ্বোধন করেন।
নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ১০ মিটার ড্রাফট নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটি দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক অন্য রকম। জাতির পিতাকে যখন বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অপশন দেওয়া হয়েছিল তিনি যুক্তরাজ্য বেছে নিয়েছিলেন। দেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বন্দরের ইতিহাসেও যুক্তরাজ্যের ভূমিকা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্দর থেমে গেলে দেশ থেমে যায়। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও মেট্রোরেলে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা আছে। ১৪ বছর বাংলাদেশের অগ্রগতির কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের অংশীজনদের দাবি সরকার গুরুত্ব দেয়। ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়। ৪৮ ঘণ্টায় একটি জাহাজে পণ্য ওঠা-নামা শেষ হচ্ছে। দ্রুততার সঙ্গে পিসিটি চালু করতে পারবো। আমরা অপারেটর নিয়োগের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করেছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, করোনাকালে চট্টগ্রাম বন্দরের ৫৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মারা গেছে কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়নি। দেশের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছেন। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে তারা পিছপা হননি।
তিনি আরও বলেন, বে টার্মিনাল করতে যাচ্ছি। আমরা একদিনের জন্যও কাজ থামাইনি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। পোর্টও হবে স্মার্ট। এর জন্য স্মার্ট টিম চাই।

সভাপতির বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, আজ বন্দরের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ‘কমন অ্যাটলাস’ ভিড়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বে টার্মিনাল জাতির চাহিদা। ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। করোনার মধ্যেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। থ্রি মিলিয়ন কনটেইনার ক্লাবে অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছি। বন্দর ব্যবহারকারী ও দেশকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সচেষ্ট। বাংলাদেশের জাহাজ মালিকরা বড় বড় জাহাজ নিয়ে আসছেন। এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর একমুহূর্তও বন্ধ ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় আমরা করোনাকালেও সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, কর্ণফুলী নদীর হাইড্রোলিক সার্ভে পরিচালনাকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. মঞ্জুরুল হক, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম ও শিপিং এজেন্ট অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ।