বাংলাদেশে জ্বালানি, অবকাঠামো, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে কাতারের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা আমাদের অবকাঠামো ও লজিস্টিক খাত বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত রেখেছি।
দোহার সেন্ট রেজিস হোটেলে সোমবার কাতারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিশ্বাস, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ এ খাতে কাতারের বিনিয়োগের সুযোগ আছে। আমরা সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান এবং জ্বালানি বিতরণে কাতারের দক্ষতা থেকেও লাভবান হতে পারি।
কাতার থেকে আরও জ্বালানি আমদানিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের সংকট বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে কঠিন জায়গায় ঠেলে দিয়েছে। আমাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতার থেকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে আগ্রহী। বাংলাদেশে আরও রপ্তানির সুযোগ অন্বেষণ করতে আমরা কাতারকে অনুরোধ করছি।
বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অঞ্চলে বাংলাদেশের বিনিয়োগ ব্যবস্থা সবচেয়ে উদার। ট্যাক্স হলিডে, যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক, রয়্যালটি রেমিট্যান্স, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও ফি, শতভাগ বিদেশী ইকুইটি, অবাধ বহির্গমন নীতি, লভ্যাংশের সম্পূর্ণ প্রত্যাবাসন সুবিধা, মূলধন ফেরতসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছি আমরা
১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং তাতে ঝামেলাহীন বিদেশী বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এক ছাদের নিচে সব সেবা দিচ্ছে। আমাদের সরকার সমন্বিত সুবিধাসহ সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ জায়গা নিয়েছে, তাদের জন্য নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে।
যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি ও লজিস্টিক হাবের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামোয় আমরা প্রচুর বিনিয়োগ করছি। পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী নদীর টানেল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত তৃতীয় টার্মিনাল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকায় মেট্রোরেল ব্যবস্থার মতো মেগা প্রকল্পগুলো আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ। এরই মধ্যে সমগ্র জাতিকে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট কাভারেজের আওতায় নিয়ে এসেছি। আমাদের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া দুটি আলাদা প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাথে নিয়ে যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএসইসি ও বিডা।